ভারতীয় সিনেমার নতুন আলোচনা বিক্রান্ত রোনা

ভারতজুড়ে নতুন আলোচনায় কন্নড় সিনেমা ‘বিক্রান্ত রোনা’। আলোচনার মূল দুটি কারণ রয়েছে। কিচ্চা সুদীপ ও বলিউড অভিনেত্রী জ্যাকলিন ফার্নান্দেজ অভিনীত দক্ষিণী সিনেমাটি মুক্তির মাত্র পাঁচ দিনেই বিশ্বব্যাপী এর আয় ১০০ কোটি রুপিতে পৌঁছেছে! যে অঙ্ক ছুঁতে বলিউডের সিনেমার নাজেহাল অবস্থা। দ্বিতীয় কারণ হলো, অজয় দেবগনের সঙ্গে সুদীপের বাগ্‌যুদ্ধ। নিজের ভাষার সিনেমা নিয়ে সুদীপ গর্ব করেছিলেন। সেই সিনেমা কেমন হলো, তা জানতেও অনেক দর্শক সিনেমাটি দেখতে যাচ্ছে। দর্শক নিরাশ হয়নি। বাহবা কুড়িয়ে তুমুল ব্যবসাও করছে এই সিনেমা। হিন্দি, কন্নড়, তেলুগু ও তামিল ভাষায় মুক্তি পেয়েছে বিক্রান্ত রোনা।

সিনেমার শুরুতেই হাড় হিম করা এক দৃশ্য। জঙ্গলের একটা রাস্তায় গাড়ি খারাপ হয়, গাড়িতে বসা বাচ্চাসহ এক নারী। পরের দৃশ্যে গাছে ঝুলতে দেখা যায় একটি শিশুর মৃতদেহ। স্পষ্ট হয় সিনেমার গল্প। এ গল্প এমন গ্রামের, যেখানে একের পর এক শিশু অপহরণ করা হচ্ছে। তারপর তাদের মৃতদেহ পাওয়া যাচ্ছে। একটি বিশেষ বাড়িকে ঘিরে রহস্য। গ্রামের মানুষের ধারণা, সেখানে রয়েছে ব্রহ্মরাক্ষসের বাস। সেই গ্রামে হাজির হয় পুলিশ অফিসার বিক্রান্ত। এই চরিত্রে অভিনয় করেছেন সিনেমার নায়ক সুদীপ। তার সঙ্গেও আছে একটি বাচ্চা মেয়ে। সত্যিই কি গ্রামে ব্রহ্মরাক্ষস আছে? নাকি অন্য কোনো রহস্য?

সিনেমাটির মূল শক্তি দৃশ্যনির্মাণ। একের পর এক দৃশ্য যেভাবে সাজানো হয়েছে, তাতে শিরদাঁড়া টানটান করে দেখতে হয়। এর সঙ্গে আছে চমৎকার চিত্রগ্রহণ আর আবহসংগীত। 

সিনেমাটি সুপারহিরো থ্রিডি ঘরানার। যার ভিজ্যুয়াল ইফেক্টস নিয়ে কাজ করেছেন আট শতাধিক শিল্পী। সিনেমার মূল শক্তি দৃশ্যনির্মাণ। একের পর এক দৃশ্য যেভাবে সাজানো হয়েছে, তাতে শিরদাঁড়া টানটান করে দেখতে হয়। এর সঙ্গে আছে চমৎকার চিত্রগ্রহণ আর আবহসংগীত। সিনেমায় পুলিশ অফিসারের চরিত্রে বেশ মানিয়েছে সুদীপকে। জ্যাকলিন ছিলেন লাস্যময়ী। অনেক দিন পর তিনি সিনেমায় ফিরেছেন।

ভারতীয় সিনেমা সমালোচকেরা বলছেন, যদি প্রশ্ন করা হয়, এই সিনেমা কি ‘আরআরআর’ বা ‘কেজিএফ’-এর সঙ্গে পাল্লা দিতে পারে? তা হলে উত্তর হবে, ‘না’। কিন্তু সিনেমাটি এই বছর মুক্তি পাওয়া ৮০ শতাংশ হিন্দি সিনেমার চেয়ে এগিয়ে রয়েছে। কলকাতার গণমাধ্যমগুলো বলছে, পশ্চিমবঙ্গের অধিকাংশ সিনেমা যেখানে ‘টেলিফিল্মে’ পরিণত হচ্ছে, সেখানে বড় সিনেমা দেখার পিপাসা মেটায় এই সিনেমা। ভারতের বহু ভাষা ও সংস্কৃতি রয়েছে, সেটা ঘুচিয়ে সর্বভারতীয় দর্শকের মনে ঢুকে পড়ার লড়াইয়ে দক্ষিণী সিনেমা এখন এক নম্বর, তারই আরেকটি উদাহরণ হয়ে উঠছে সুদীপের এই সিনেমা।