Ajker Patrika

স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পরিদর্শন-পরিকল্পনা

সম্পাদকীয়
স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পরিদর্শন-পরিকল্পনা

দেশের স্বাস্থ্য খাতের অসুস্থতার খবর কারও অজানা নয়। গণমাধ্যমে চিকিৎসক, চিকিৎসাব্যবস্থার খারাপ অবস্থা নিয়ে নিয়মিতই খবর ছাপা হয়। সরকারি হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোয় অনিয়ম ও দুর্নীতি ব্যতিক্রমহীনভাবে চলছে। জেলা-উপজেলায় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রয়োজনীয় উপযুক্ত চিকিৎসকের অভাব দূর হয় না কখনো। কারণ নামীদামি চিকিৎসকেরা মফস্বলে থাকতে চান না। ওষুধসহ প্রয়োজনীয় উপকরণের অভাবের খবরও পুরোনো।

সাধারণ মানুষের চিকিৎসাসেবা পাওয়া কঠিন ব্যাপার। গ্রামগঞ্জে অনেক মানুষকেই আধুনিক চিকিৎসাসেবা বঞ্চিত হয়ে জীবন কাটাতে হয়। গরিব-অসচ্ছল মানুষদের সহায় হাতুড়ে চিকিৎসক। শুধু বিনা চিকিৎসায় মানুষ মারা যায় তা-ই নয়, ভুল চিকিৎসায় মানুষের মৃত্যুর খবরও প্রায়ই পাওয়া যায়।

এই ভুল চিকিৎসার অভিযোগ নামকরা হাসপাতালে পাস করা কোনো কোনো ডাক্তারের বিরুদ্ধেও শোনা যায় মাঝে মাঝেই। চিকিৎসকদের আচার-আচরণ বা ব্যবহার নিয়েও রোগীদের অভিযোগের অন্ত নেই।

সরকারি হাসপাতাল ও চিকিৎসাকেন্দ্রগুলোর জন্য কেনাকাটায় দুর্নীতিরও কোনো সীমা-পরিসীমা নেই। একদিকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা উপকরণের অভাবে যেমন সেবাদানে বিঘ্ন ঘটে, আবার অন্য দিকে উপকরণ কেনা হলেও প্রয়োজনীয় দক্ষ লোকবলের অভাবে সেগুলো বছরের পর বছর অব্যবহৃত অবস্থায় নষ্ট হওয়ার খবরও পাওয়া যায়। যথাযথ পরিকল্পনা ও সঠিক বাস্তবায়ন না হওয়া একটি রীতি হয়ে দাঁড়িয়েছে। ব্যবস্থাপনার গলদ ও ত্রুটি দূর করার কোনো উদ্যোগ দেখা যায় না বলেই স্বাস্থ্য খাতের রোগ-বালাই দূর না হয়ে তা অব্যাহতভাবেই চলছে।

যাঁদের সামর্থ্য আছে, তাঁরা হয় বেসরকারি হাসপাতাল কিংবা বিদেশে গিয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। আমাদের দেশে বেসরকারি হাসপাতালগুলোর সেবার মান নিয়েও কথা আছে। কোনো কোনো হাসপাতালে রোগীর গলা কাটার ব্যবস্থাও আছে বলে শোনা যায়।

চিকিৎসা খাতে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে বলেও একাধিক বার খবর বের হয়েছে। এই সিন্ডিকেটের হাতে নিয়ন্ত্রণশক্তি চলে যাওয়ায় ভালো কিছু হওয়া দুরূহ হয়ে পড়েছে। বলা হয়, ক্ষমতার নানা অলিগলিতে এই সিন্ডিকেটের অবাধ চলাফেরার কারণে তাদের ক্ষমতাও অপরিসীম। এই খাঁচা ভাঙা সহজ নয় বলেই মনে করা হয়।

অবস্থা যখন প্রায় অনিরাময়যোগ্য হয়ে উঠেছে, তখন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে দেশের একজন প্রবীণ, অভিজ্ঞ, সৎ হিসেবে পরিচিত চিকিৎসক ডা. সামন্ত লাল সেনের ওপর। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডা. সেনের ওপর আস্থা রেখেছেন। এখন দেখার বিষয় ডা. সেন চিকিৎসাক্ষেত্রে কতটা শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে পারেন। তিনি যেহেতু দলীয় রাজনীতির বৃত্তবন্দী মানুষ নন, পেশাদার দক্ষ মানুষ, সেহেতু তিনি পারবেন বলে অনেকেই বিশ্বাস করেন।

স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন ৪ জুলাই এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, ‘আমি প্রধানমন্ত্রীকে বলেছি, সপ্তাহে দুদিন, সোম ও মঙ্গলবার ঢাকায় থাকব। বাকি কয়দিন সারা দেশের চিকিৎসাব্যবস্থা পরিদর্শন করব। আমি যদি গ্রামের স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে উন্নত করতে পারি, যদি উপজেলা, জেলার কমিউনিটি ক্লিনিক ও হাসপাতালগুলোয় যথাযথ চিকিৎসা হয়, তাহলে ঢাকা শহরে রোগীর ভিড় হবে না।’

আমরা গ্রামের স্বাস্থ্যসেবা-ব্যবস্থাকে উন্নত করার জন্য মন্ত্রীর পরিকল্পনার সাফল্য কামনা করি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শ্বশুরকে জামাতার ফোন: ‘আপনার মেয়েকে মাইরা ফেলছি, লাশ নিয়ে যান’

টিউলিপের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণ দিতে ব্যর্থ দুদক: আইনজীবী

স্ত্রীকে হত্যার পর লাশ সেপটিক ট্যাংকে ফেলে গেলেন ইমামতি করতে

ঢাবির সিন্ডিকেটে সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিলের চূড়ান্ত অনুমোদন

ঐতিহাসিক শিমলা চুক্তি বাতিল করল পাকিস্তান, এর প্রভাব কী

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত