ফয়সাল শাহরিয়ার
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক গবেষক
‘জন্ম আমার ধন্য হলো মাগো...
তোমার বুকে মরতে পারি,
বুকেই যদি রাখো, মাগো’
—স্বাধীন বাংলা বেতারের প্রখ্যাত গীতিকার নয়ীম গহর
৬ জুলাই, ১৯৭১। অতলস্পর্শ যন্ত্রণার সমুদ্র থেকে ধীরে ধীরে ভেসে উঠছিলেন ভৈরব অঞ্চলের তরুণ মুক্তিযোদ্ধা নুরুল হক নুরু। একসময় অস্পষ্ট আলোর বলয় তাঁর দৃষ্টিতে ধরা পড়ে। নুরু কৈশোরে স্থানীয় বিহারিদের কাছ থেকে সামান্য উর্দু শিখেছিলেন। বহু কষ্টে চোখ খুলে তিনি দেখতে পান তাঁর বিছানার চারদিকে দাঁড়িয়ে আছে রাজাকার ও পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর কয়েকজন সৈনিক। ক্রমেই নুরুর দৃষ্টি নিজের শরীরের দিকে গেলে তিনি স্তম্ভিত হয়ে যান। গ্রেনেডের আঘাতে তাঁর বাঁ হাত প্রায় সম্পূর্ণ উড়ে গেছে, দুই পা ক্ষতবিক্ষত, সারা শরীরে ব্যান্ডেজ। অত্যন্ত ধীরগতিতে তাঁর মনে পড়ে কয়েক দিন আগে ভৈরব অঞ্চলের কুখ্যাত রাজাকার মমতাজ পাগলাকে অপসারণের লক্ষ্যে গিয়েছিলেন তাঁরা তিন তরুণ মুক্তিযোদ্ধা।
এরই ফলে তাঁর এই ক্ষতবিক্ষত দেহ। কিন্তু রাজাকার মমতাজ পাগলার সম্ভাব্য পরিণতি প্রসঙ্গে চিন্তা করার কোনো অবকাশ পেলেন না তরুণ মুক্তিযোদ্ধা নুরু। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর মধ্যবয়স্ক এক হাবিলদার মন্তব্য করলেন, ‘দেখো, শালা মুক্তিকো হোশ আ গায়া।’ পরক্ষণেই হাবিলদারটি মুক্তিযোদ্ধা নুরুর ঝাঁকড়া চুলের মুঠি ধরে গর্জন করে উঠলেন, ‘বোল শালা বাঙালি..., পাকিস্তান জিন্দাবাদ।’ অত্যধিক রক্তক্ষরণের জন্য নুরু আদৌ কোনো শব্দ উচ্চারণ করার মতো শক্তি অনুভব করছিলেন না শরীরে, তবু তিনি শরীরের সব শক্তি এক বিন্দুতে এনে চিৎকার করে উঠলেন, ‘জয় বাংলা।’ ক্রোধে পাঞ্জাবি হাবিলদারটির মুখ লাল হয়ে গেল। তিনি তাঁর বুট দিয়ে চেপে ধরলেন নুরুর ক্ষতবিক্ষত বাঁ হাত। ‘শালা বাঙালি..., ম্যায় তুঝে আদব সিখাউঙ্গা’, হাবিলদারটি গর্জন করে উঠলেন। জ্ঞান হারানোর আগে নুরুর চোখে ভেসে উঠল সহযোদ্ধা আতিকুর রহমান ও মোহনের মুখ। কোথায় আছেন তাঁরা?
নুরুল হক নুরুর সহযোদ্ধা আতিকুর রহমান ১৯৭১ সালে ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি প্রথম বর্ষের ছাত্র। তাঁর বাবা তখন কিশোরগঞ্জের আজিমউদ্দিন হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক। আতিকুর রহমান ১৯৫১ সালে কিশোরগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬৮ সালে কিশোরগঞ্জের আজিমউদ্দিন হাইস্কুল থেকে এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পরে তিনি কিশোরগঞ্জ গুরুদয়াল কলেজ থেকে ১৯৭০ সালে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ১৯৭০ সালেই তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে প্রথম বর্ষে ভর্তি হন।
পুরো দেশ তখন মুক্তির আকাঙ্ক্ষায় উত্তাল। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ পাকিস্তান জাতীয় পরিষদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের পরে ক্রমেই স্পষ্ট হয়ে ওঠে যে পাকিস্তান সরকার কোনোভাবেই সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরে আগ্রহী নয়। এ অবস্থায় পাকিস্তানের সামরিক শাসক ইয়াহিয়া খান ১৯৭১ সালের ১ মার্চ জাতীয় পরিষদের অধিবেশন স্থগিত ঘোষণা করলে শুরু হয় অসহযোগ আন্দোলন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তরুণ আতিকুর রহমান কিশোরগঞ্জে বাড়িতে ফেরেন।
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে নিরস্ত্র বাঙালির ওপরে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সর্বাত্মক আক্রমণ শুরু হওয়ার সময় দ্বিতীয় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের অবস্থান ছিল জয়দেবপুর রাজবাড়িতে। দ্বিতীয় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড হিসেবে কর্মরত ছিলেন তৎকালীন মেজর সফিউল্লাহ (পরে মেজর জেনারেল, বীর উত্তম)। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের ঘটনাবলির পরিপ্রেক্ষিতে ২৮ মার্চ সকালে দ্বিতীয় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট জয়দেবপুর থেকে টাঙ্গাইল হয়ে ২৯ মার্চ ময়মনসিংহে পৌঁছায়। ৩০ মার্চ দ্বিতীয় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট ময়মনসিংহ থেকে কিশোরগঞ্জে গিয়ে অবস্থান নেয়।
উপরিউক্ত ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পাকিস্তানিরা প্রায় দুই ব্যাটালিয়ন সৈন্য মেঘনা অববাহিকায় নিয়োজিত করে। ১৯৭১ সালের ১৬ এপ্রিল পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর দুই কোম্পানি সৈন্য হেলিকপ্টারের মাধ্যমে আশুগঞ্জে দ্বিতীয় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের পেছনে অবস্থান নেয়। ফলে ভৈরবের পতন অনিবার্য হয়ে ওঠে।
নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়, কুখ্যাত মমতাজ পাগলা ১৫ এপ্রিল পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারে করে আশুগঞ্জে অবতরণ করে এবং ওই অঞ্চলে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে।
তরুণ আতিকুর রহমান ভৈরবের পতনের পর প্রতিবেশী দেশে সামরিক প্রশিক্ষণের জন্য যান এবং প্রশিক্ষণ শেষে ২৮ জুন দেশে ফিরে আসেন। ভৈরবে ত্রাসের রাজত্বের কারণে মুক্তিবাহিনী কর্তৃক মমতাজ পাগলাকে ‘শাস্তি’ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। তিন তরুণ মুক্তিযোদ্ধা আতিকুর রহমান, নুরু ও মোহন স্বেচ্ছায় সেই দায়িত্ব নেন। ৪ জুলাই মমতাজ পাগলা তাঁর কয়েকজন সহযোগীসহ যখন একটি কক্ষে সভায় ব্যস্ত, তখন তিন তরুণ মুক্তিযোদ্ধা সভাস্থল ঘেরাও করেন। আতিকের স্টেনগানের গুলিতে মমতাজ পাগলা তাঁর ছয় সহযোগীসহ নিহত হয়। কিন্তু নুরুর নিক্ষেপ করা গ্রেনেডের বিস্ফোরণে দুর্ভাগ্যক্রমে আতিক ও নুরু দুজনই গুরুতর আহত হন। আতিক ঘটনাস্থলে মারা গেলেও তাঁর মরদেহের কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি।
গুরুতর আহত অবস্থায় মুক্তিযোদ্ধা নুরু পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর হাতে বন্দী হন। পাকিস্তানি সেনাবাহিনী এবং তাদের স্থানীয় সহযোগীরা নুরুকে একটি গাড়ির পেছনে বেঁধে ভৈরববাজার প্রদক্ষিণ করে এবং তাঁর ছবি তুলে রাখে। অমানুষিক অত্যাচারের পর মুক্তিযোদ্ধা নুরুকে আশুগঞ্জে নিয়ে হত্যার পরে মাটিচাপা দেওয়া হয়। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় অর্জিত হওয়ার পর পরিবারের সদস্যরা আশুগঞ্জ থেকে শহীদ নুরুর মরদেহ নিয়ে এসে নরসিংদী জেলার বেলাবতে তাঁর পৈতৃক ভিটায় সমাধিস্থ করেন।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক গবেষক
‘জন্ম আমার ধন্য হলো মাগো...
তোমার বুকে মরতে পারি,
বুকেই যদি রাখো, মাগো’
—স্বাধীন বাংলা বেতারের প্রখ্যাত গীতিকার নয়ীম গহর
৬ জুলাই, ১৯৭১। অতলস্পর্শ যন্ত্রণার সমুদ্র থেকে ধীরে ধীরে ভেসে উঠছিলেন ভৈরব অঞ্চলের তরুণ মুক্তিযোদ্ধা নুরুল হক নুরু। একসময় অস্পষ্ট আলোর বলয় তাঁর দৃষ্টিতে ধরা পড়ে। নুরু কৈশোরে স্থানীয় বিহারিদের কাছ থেকে সামান্য উর্দু শিখেছিলেন। বহু কষ্টে চোখ খুলে তিনি দেখতে পান তাঁর বিছানার চারদিকে দাঁড়িয়ে আছে রাজাকার ও পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর কয়েকজন সৈনিক। ক্রমেই নুরুর দৃষ্টি নিজের শরীরের দিকে গেলে তিনি স্তম্ভিত হয়ে যান। গ্রেনেডের আঘাতে তাঁর বাঁ হাত প্রায় সম্পূর্ণ উড়ে গেছে, দুই পা ক্ষতবিক্ষত, সারা শরীরে ব্যান্ডেজ। অত্যন্ত ধীরগতিতে তাঁর মনে পড়ে কয়েক দিন আগে ভৈরব অঞ্চলের কুখ্যাত রাজাকার মমতাজ পাগলাকে অপসারণের লক্ষ্যে গিয়েছিলেন তাঁরা তিন তরুণ মুক্তিযোদ্ধা।
এরই ফলে তাঁর এই ক্ষতবিক্ষত দেহ। কিন্তু রাজাকার মমতাজ পাগলার সম্ভাব্য পরিণতি প্রসঙ্গে চিন্তা করার কোনো অবকাশ পেলেন না তরুণ মুক্তিযোদ্ধা নুরু। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর মধ্যবয়স্ক এক হাবিলদার মন্তব্য করলেন, ‘দেখো, শালা মুক্তিকো হোশ আ গায়া।’ পরক্ষণেই হাবিলদারটি মুক্তিযোদ্ধা নুরুর ঝাঁকড়া চুলের মুঠি ধরে গর্জন করে উঠলেন, ‘বোল শালা বাঙালি..., পাকিস্তান জিন্দাবাদ।’ অত্যধিক রক্তক্ষরণের জন্য নুরু আদৌ কোনো শব্দ উচ্চারণ করার মতো শক্তি অনুভব করছিলেন না শরীরে, তবু তিনি শরীরের সব শক্তি এক বিন্দুতে এনে চিৎকার করে উঠলেন, ‘জয় বাংলা।’ ক্রোধে পাঞ্জাবি হাবিলদারটির মুখ লাল হয়ে গেল। তিনি তাঁর বুট দিয়ে চেপে ধরলেন নুরুর ক্ষতবিক্ষত বাঁ হাত। ‘শালা বাঙালি..., ম্যায় তুঝে আদব সিখাউঙ্গা’, হাবিলদারটি গর্জন করে উঠলেন। জ্ঞান হারানোর আগে নুরুর চোখে ভেসে উঠল সহযোদ্ধা আতিকুর রহমান ও মোহনের মুখ। কোথায় আছেন তাঁরা?
নুরুল হক নুরুর সহযোদ্ধা আতিকুর রহমান ১৯৭১ সালে ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি প্রথম বর্ষের ছাত্র। তাঁর বাবা তখন কিশোরগঞ্জের আজিমউদ্দিন হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক। আতিকুর রহমান ১৯৫১ সালে কিশোরগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬৮ সালে কিশোরগঞ্জের আজিমউদ্দিন হাইস্কুল থেকে এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পরে তিনি কিশোরগঞ্জ গুরুদয়াল কলেজ থেকে ১৯৭০ সালে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ১৯৭০ সালেই তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে প্রথম বর্ষে ভর্তি হন।
পুরো দেশ তখন মুক্তির আকাঙ্ক্ষায় উত্তাল। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ পাকিস্তান জাতীয় পরিষদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের পরে ক্রমেই স্পষ্ট হয়ে ওঠে যে পাকিস্তান সরকার কোনোভাবেই সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরে আগ্রহী নয়। এ অবস্থায় পাকিস্তানের সামরিক শাসক ইয়াহিয়া খান ১৯৭১ সালের ১ মার্চ জাতীয় পরিষদের অধিবেশন স্থগিত ঘোষণা করলে শুরু হয় অসহযোগ আন্দোলন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তরুণ আতিকুর রহমান কিশোরগঞ্জে বাড়িতে ফেরেন।
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে নিরস্ত্র বাঙালির ওপরে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সর্বাত্মক আক্রমণ শুরু হওয়ার সময় দ্বিতীয় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের অবস্থান ছিল জয়দেবপুর রাজবাড়িতে। দ্বিতীয় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড হিসেবে কর্মরত ছিলেন তৎকালীন মেজর সফিউল্লাহ (পরে মেজর জেনারেল, বীর উত্তম)। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের ঘটনাবলির পরিপ্রেক্ষিতে ২৮ মার্চ সকালে দ্বিতীয় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট জয়দেবপুর থেকে টাঙ্গাইল হয়ে ২৯ মার্চ ময়মনসিংহে পৌঁছায়। ৩০ মার্চ দ্বিতীয় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট ময়মনসিংহ থেকে কিশোরগঞ্জে গিয়ে অবস্থান নেয়।
উপরিউক্ত ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পাকিস্তানিরা প্রায় দুই ব্যাটালিয়ন সৈন্য মেঘনা অববাহিকায় নিয়োজিত করে। ১৯৭১ সালের ১৬ এপ্রিল পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর দুই কোম্পানি সৈন্য হেলিকপ্টারের মাধ্যমে আশুগঞ্জে দ্বিতীয় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের পেছনে অবস্থান নেয়। ফলে ভৈরবের পতন অনিবার্য হয়ে ওঠে।
নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়, কুখ্যাত মমতাজ পাগলা ১৫ এপ্রিল পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারে করে আশুগঞ্জে অবতরণ করে এবং ওই অঞ্চলে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে।
তরুণ আতিকুর রহমান ভৈরবের পতনের পর প্রতিবেশী দেশে সামরিক প্রশিক্ষণের জন্য যান এবং প্রশিক্ষণ শেষে ২৮ জুন দেশে ফিরে আসেন। ভৈরবে ত্রাসের রাজত্বের কারণে মুক্তিবাহিনী কর্তৃক মমতাজ পাগলাকে ‘শাস্তি’ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। তিন তরুণ মুক্তিযোদ্ধা আতিকুর রহমান, নুরু ও মোহন স্বেচ্ছায় সেই দায়িত্ব নেন। ৪ জুলাই মমতাজ পাগলা তাঁর কয়েকজন সহযোগীসহ যখন একটি কক্ষে সভায় ব্যস্ত, তখন তিন তরুণ মুক্তিযোদ্ধা সভাস্থল ঘেরাও করেন। আতিকের স্টেনগানের গুলিতে মমতাজ পাগলা তাঁর ছয় সহযোগীসহ নিহত হয়। কিন্তু নুরুর নিক্ষেপ করা গ্রেনেডের বিস্ফোরণে দুর্ভাগ্যক্রমে আতিক ও নুরু দুজনই গুরুতর আহত হন। আতিক ঘটনাস্থলে মারা গেলেও তাঁর মরদেহের কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি।
গুরুতর আহত অবস্থায় মুক্তিযোদ্ধা নুরু পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর হাতে বন্দী হন। পাকিস্তানি সেনাবাহিনী এবং তাদের স্থানীয় সহযোগীরা নুরুকে একটি গাড়ির পেছনে বেঁধে ভৈরববাজার প্রদক্ষিণ করে এবং তাঁর ছবি তুলে রাখে। অমানুষিক অত্যাচারের পর মুক্তিযোদ্ধা নুরুকে আশুগঞ্জে নিয়ে হত্যার পরে মাটিচাপা দেওয়া হয়। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় অর্জিত হওয়ার পর পরিবারের সদস্যরা আশুগঞ্জ থেকে শহীদ নুরুর মরদেহ নিয়ে এসে নরসিংদী জেলার বেলাবতে তাঁর পৈতৃক ভিটায় সমাধিস্থ করেন।
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫পাকিস্তানে ভারতের হামলার সমালোচনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চীনও এই হামলাকে ‘দুঃখজনক’ বলে অভিহিত করেছে। উদ্বেগ জানিয়েছে জাতিসংঘও। উত্তেজনা যেন আরও না বাড়ে, সে জন্য দুই পক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ, ফ্রান্সসহ বিভিন্ন দেশ। এদিকে ভারতের অবস্থানকে সমর্থন করেছে...
০৮ মে ২০২৫