Ajker Patrika

চাপ নয়, বাংলাদেশের ভাবনায় শুধুই শিরোপা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
চাপ নয়, বাংলাদেশের ভাবনায় শুধুই শিরোপা

এমন নয় যে ভারতের বিপক্ষে কখনো জয় পায়নি বাংলাদেশের নারী ফুটবল দল; বরং বাংলাদেশের মেয়েদের ফুটবলে অনেক ঐতিহাসিক জয়ের প্রতিপক্ষ ছিল প্রতিবেশী দেশের দল। তবু নামটা ‘ভারত’ বলেই অবচেতন মনে চাপ জেঁকে বসে মনে। যে চাপ আফঈদা খন্দকাররা গ্রুপ পর্বে ভারতকে একবার হারিয়ে অনেকটা কাটিয়ে উঠেছিলেন। 

গ্রুপ পর্বে ভার‍তকে হারিয়েই ২০২৪ অনূর্ধ্ব-১৯ নারী সাফের ফাইনাল নিশ্চিত করেছিল স্বাগতিক বাংলাদেশ। সেই একই প্রতিপক্ষের মুখোমুখি সাইফুল বারী টিটুর দল। আজ কমলাপুরের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহি মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে ম্যাচ শুরু হবে সন্ধ্যা ৬টায়।
সাফের এই টুর্নামেন্ট কখনো অনূর্ধ্ব-১৮, অনূর্ধ্ব-১৯ আবার কখনো অনূর্ধ্ব-২০ ফরম্যাটে হয়েছে চারবার। একবার ছাড়া বাকি তিন শিরোপা এসেছে বাংলাদেশের ঘরে। ২০২২ সালে লাল-সবুজের মেয়েরা একমাত্র শিরোপা হারিয়েছিল এই ভারতের কাছেই। ভারতের এই দলে আছেন অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপ খেলা চার ফুটবলার। ‘ভারত’ নামের চাপে গ্রুপ পর্বে ভালো খেলেও গোল বের করতে অতিরিক্ত সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছে স্বাগতিকদের। মোসাম্মৎ সাগরিকার গোলে ভারতকে ১-০ গোলে হারিয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করেছে সাইফুল বারী টিটুর দল। সাগরিকা টুর্নামেন্টে এখন পর্যন্ত ৩ গোল করে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ গোলদাতা। একমাত্র অপরাজিত দল হিসেবে ফাইনালে এসেছে স্বাগতিকেরা।

অপরাজিত থাকলেও গ্রুপ পর্ব আর ফাইনালের চিত্র সম্পূর্ণ আলাদা। ফাইনালে থাকে শিরোপা জেতার আর দর্শকের কাছে নিজেদের প্রমাণের তাগিদ। সেই চাপ মাথা থেকে সরিয়ে অধিনায়ক হিসেবে প্রথম শিরোপা জিততে চাইছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক আফঈদা খন্দকার, ‘ফাইনাল ম্যাচের আগে যতটুকু টেনশন থাকার ততটুকুই আছে, এর বেশি না। ফাইনালে চাপ নিলে বেশি চাপ নেওয়া হবে। চাপ নিচ্ছি না।’ তিনি বরং ম্যাচটা উপভোগের মন্ত্রে খেলতে চান, ‘এই ম্যাচে সুযোগ কম আসবে। যে 

সুযোগ আসবে, সেটাই কাজে লাগাতে হবে। সবাই ভাবে, ভারতের নাম শুনলে আমরা ভয় পাই! আসলে বিষয়টা তা নয়। ভারত যেমন খেলে, আমরাও তেমনই খেলি। গত ম্যাচেও আপনারা দেখেছেন।’

আমাদের মেয়েরা ভীত নয়: শুক্লা দত্ত

কালকের (আজকের) ম্যাচটা যেমন ওদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি আমাদের কাছেও। বাংলাদেশ তো আমাদের সঙ্গে ম্যাচ খেলে প্রস্তুতি নিয়েছে। আমাদের প্রস্তুতিটাও ঠিক একইভাবে হচ্ছে। আমাদের মেয়েরা মোটেও ভীত নয়। মেয়েরা জেতার চেষ্টাই করবে। একটা ম্যাচ হেরেছি, ওরা ভালো করেই বুঝতে পারছে, কোথায় ওদের ভুল। বাংলাদেশ নিঃসন্দেহে ভালো দল, এটা আগেও বলেছি। ওদের প্রত্যেকের দিকে নজর আছে।

আমার বাবা-মা ফরিদপুর থেকে ভারতে গেছেন। মা-বাবার কাছ থেকে গল্প শুনেছি, আমার দেশের গল্প, ফরিদপুরের গল্প। আমি যখন এই দেশে আসি, তখন তাঁদের কথা মনে পড়ে। তাঁরা কেউ বেঁচে নেই। তাঁরা এই দেশেরই লোক। সত্যি বলতে আমি নিজেকে এই দেশেরই মনে করি।

কোচ, ভারত অনূর্ধ্ব-১৯ নারী ফুটবল দল: সাইফুল বারী টিটু

চ্যাম্পিয়ন হতে হলে প্রতিটা ম্যাচই জিততে হবে। ফাইনালের বিষয়টা ভিন্ন। সাসপেনশন, ইনজুরি; এ ছাড়া এক দিন পরপর খেলায় ক্লান্তি জমতে বাধ্য। মেয়েরা খুব বেশি উজ্জীবিত। ওরা এর আগেও চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। আমার মনে হয় ওদের খুব বেশি কিছু বলতে হবে না। ওরা জানে, ওদের কী করতে হবে। ফাইনালের আগে দুই দলই টুর্নামেন্টে একবার মুখোমুখি হওয়ায় দুই দলের জন্যই ম্যাচটা কঠিন। ভারত আমাদের বিপক্ষে খেলেছে, আমরা খেলেছি। দুই দলই পরস্পরকে নিয়ে বিশ্লেষণ করার সময় পেয়েছে। ওদের সঙ্গে একজন অ্যানালিস্টও আছে দেখলাম। ফাইনালে একটা স্নায়ুচাপের বিষয় থাকে। তবে আমি আমাদের মেয়েদের যতটুকু দেখেছি, তাদের মধ্যে কোনো চাপ নেই। তারা ম্যাচটা উপভোগ করতে চায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত