Ajker Patrika

তিন মিনিটের জন্য বেরিয়ে লাশ হয়ে ফেরে ইমরান

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
Thumbnail image

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থানার দক্ষিণ সাহেবপাড়ায় কাপড়ের ব্যবসা করেন সোয়াব মিয়া। সেখানেই পরিবারসহ থাকেন। কিন্তু ১৭ বছরের ছেলে ইমরান থাকত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার রামপুর গ্রামে, দাদির সঙ্গে। গত ২০ জুলাই ইমরান সিদ্ধিরগঞ্জ গিয়েছিল মা-বাবার কাছে।

তখন চলছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। আন্দোলন দমাতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের গুলিতে হতাহত হন অনেকে। 

২০ জুলাই বিকেলে মাত্র তিন মিনিটের জন্য বাইরে বের হয়ে দোকানে যাচ্ছিল ইমরান। মুহূর্তেই একটি গুলি তার বুকে বিদ্ধ হয়। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেন। সেখানে তার মৃত্যু হয়। এক দিন পর ২২ জুলাই সন্ধ্যায় তার লাশ গ্রামের বাড়িতে নিয়ে দাফন করা হয়।

ইমরান হাফেজি শেষ করে হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার জিরুন্ডা মানপুর তোফাইলিয়া সিনিয়র মাদ্রাসায় অষ্টম শ্রেণিতে পড়ত। সম্প্রতি ইমরানের বাড়ি গিয়ে দেখা যায় দোচালা একটি টিনের ঘর।

বাড়ির উঠানে বসে চোখের পানি মুছতে মুছতে দাদি নিহারা বেগম বলেন, ‘কিতা আর কমু, আমার বুকের ধন কাইড়া নিছে। নারায়ণগঞ্জ যাওনের আগের দিন আমার গলায় ধইরা কইছিন, দাদি, আমি আবার কিছুদিন পর বাড়িত আইয়া পড়ুম। তুমি চিন্তা কইরো না। আমার নাতি বাড়িত আইছে ঠিকই, কিন্তু লাশ হইয়া।’

ইমরানের বাবা সোয়াব মিয়া বলেন, ‘ইমরান সেদিন কইছিল, তিন মিনিট সময় দিবানি, একটু দোকানে যামু। একটা সেভেন আপ খাইয়া আবার আইসা পড়ুম। কিন্তু এই যাওয়া যে শেষ যাওয়া হইব, কেডা জানত।’ এ সময় তিনি ছেলে হত্যার বিচার দাবি করেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ দিদারুল আলম বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে জেলার ২০ জন নিহতের একটি খসড়া তালিকা আমরা পেয়েছিলাম। পরে যাচাই-বাছাই করা হয়। এর মধ্যে তালিকায় ৩ নম্বরে আছে নাসিরনগরের হাফেজ ইমরান। তার নামটি শহীদদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়টি সুপারিশসহ গৃহীত হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত