Ajker Patrika

অতিরিক্ত ইজিবাইকে যানজট

জুবাইদুল ইসলাম, শেরপুর
অতিরিক্ত ইজিবাইকে যানজট

অতিরিক্ত ইজিবাইকের কারণে সৃষ্ট যানজটে অতিষ্ঠ শেরপুর শহরবাসী। এতে প্রতিদিন চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এ ছাড়া ইজিবাইকের বেপরোয়া চলাচল ও চালকের অদক্ষতার কারণে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা।

তাঁদের দাবি, অটোরিকশা ও ইজিবাইকের বিশৃঙ্খল চলাচলের কারণে যানজট কমছে না। এ জন্য দ্রুত ফুটপাত দখলমুক্ত করাসহ ইজিবাইক চলাচলে শৃঙ্খলার দাবি জানান তাঁরা।

জানা গেছে, সম্প্রতি একসঙ্গে ১০ হাজারের বেশি ব্যাটারিচালিত ইজিবাইকে নম্বরপ্লেট দিয়েছে শেরপুর পৌরসভা ও ১৪টি ইউনিয়ন পরিষদ। এ জন্য যানপ্রতি আদায় করা হয় তিন থেকে পাঁচ হাজার টাকা। শহরে চলাচলের জন্য ইজিবাইক ও অটোরিকশাগুলোকে জোড়-বেজোড় সংখ্যা এবং সাদা ও কমলা রঙে বিভক্ত করা হয়। পৌরসভা ও এর পাশের পাঁচটি ইউনিয়ন পরিষদের লাইসেন্স করা ইজিবাইক ও অটোরিকশার রং ভেদে এক দিন পরপর শহরে চলাচলের কথা থাকলেও মানছে না কেউ। কোনো মনিটরিং না থাকায় ইচ্ছেমতো চলাচল করছে যানবাহনগুলো।

এ ছাড়া অদক্ষ চালকের বেপরোয়া চলাচলের কারণেও সৃষ্টি হচ্ছে যানজট। এ ছাড়া ফুটপাত দখল করে হকাররা বিভিন্ন দোকানপাট বসানোর কারণেও সৃষ্টি হচ্ছে শব্দদূষণ ও যানজটের। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন শেরপুরবাসী।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, শহরের কলেজ মোড়, খড়মপুর, নিউমার্কেট, থানা মোড়, গোয়ালপট্টি মোড় ও খোয়ারপাড় শাপলা চত্বর এলাকায় অবৈধ পার্কিংয়ের কারণে ইজিবাইকই এখন গলার কাঁটা হয়ে উঠছে শেরপুরবাসীর।

শহরের খরমপুর মহল্লার বাসিন্দা জুলফিকার হাসনাত হাসু বলেন, ‘নিউমার্কেট থেকে বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত যেতে সময় লাগে ২০ থেকে ২৫ মিনিট। অথচ দেড় কিলোমিটারের এই রাস্তাটুকু যাতায়াতে সময় লাগার কথা ৫ থেকে ৭ মিনিট। এতে আমাদের সময়ের অপচয় হচ্ছে।’

আরেক বাসিন্দা সুলতান মাহমুদ বলেন, শহরে জনসংখ্যার তুলনায় ইজিবাইকের সংখ্যা এখন অনেক বেশি। প্রতিটি ইজিবাইক একজন বা দুজন যাত্রী নিয়ে চলাচল করে। এ ছাড়া যত্রতত্র যাত্রী ওঠানামার জন্য যানজট লেগেই থাকে।

শিক্ষার্থী মো. জুবায়ের বলেন, স্কুলে যাওয়ার জন্য ৪০ থেকে ৪৫ মিনিট আগে বের হতে হয়। যানজটের কারণে অনেক সময় ক্লাসে পৌঁছতে দেরি হয়ে যায়। 
নিউমার্কেট এলাকার ব্যবসায়ী বাপ্পী দে বলেন, পৌরসভার চেয়ে শহরে ইউনিয়নের গাড়ি বেশি হয়ে গেছে। আর গাড়ির সংখ্যা শহরের তুলনায় অনেক বেশি। 
নাগরিক প্ল্যাটফর্ম জনউদ্যোগ শেরপুর সংগঠনের আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ বলেন, শহরের রাস্তার তুলনায় গাড়ি বেশি। ফুটপাত একদিকে দখলমুক্ত হলে অন্যদিকে দখল শুরু হয়। তাই শহরের যানজট নিরসনে প্রশাসন ও পৌরসভার যৌথ উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন।

জেলা পুলিশের ট্রাফিক সার্জেন্ট মো. রুবেল মিয়া জানান, শহরে যানজট নিরসনে ভোর ছয়টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত বড় ও মাঝারি গাড়ি প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ ছাড়া অবৈধ ইজিবাইক ও অটোরিকশার বিরুদ্ধে অভিযান চলমান রয়েছে।

এ বিষয়ে শেরপুর পৌরসভার মেয়র গোলাম মোহাম্মদ কিবরিয়া লিটন বলেন, নিয়মবহির্ভূতভাবে ইউনিয়ন পরিষদ ইজিবাইক ও অটোরিকশার লাইসেন্স দিচ্ছে। সবার সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে ইউনিয়নের শুধু সীমিতসংখ্যক ইজিবাইক শহরে প্রবেশ করার কথা থাকলেও সে নিয়মটি মানা হচ্ছে না। এর কারণে যানজট বাড়ছে। তবে মাঝেমধ্যেই অভিযান পরিচালনা করে অবৈধ ইজিবাইক জব্দ করা হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত