Ajker Patrika

শীতে স্থবির জনজীবন

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি
আপডেট : ০৬ জানুয়ারি ২০২২, ০৯: ২৩
শীতে স্থবির জনজীবন

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১১ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এদিকে সময়ের সঙ্গে বাড়ছে শীতের তীব্রতাও। কুয়াশায় মোড়ানো সকাল দেখতে অনেকটা রাতের মতো। গাছের পাতা ও টিনের চালে বৃষ্টির ফোঁটার মতো পড়ছে কুয়াশা। শ্রীমঙ্গলের আবহাওয়া কর্মকর্তা আনিছুর রহমান আবহাওয়ার এ তথ্য জানান।

দিনের বেলায় যানবাহন চলাচল করে হেডলাইট জ্বালিয়ে। কিছু অংশে এতটায় কুয়াশা থাকে যে হেডলাইট জ্বালানো অবস্থায়ও কিছু দেখা যায় না। কুয়াশার সঙ্গে হালকা বাতাস থাকায় শীতের তীব্রতা বেশি। কুয়াশার ঘন অন্ধকার ভেদ করে শ্রমজীবী মানুষ কাঁধে কোদাল, টুকরি নিয়ে ছুটছেন কাজে। গতকাল বুধবার সকাল সাড়ে নয়টায় এমন চিত্র দেখা যায়।

টানা কয়েক দিন থেকে কনকনে শীত ও হিমেল হাওয়ার কারণে মৌলভীবাজারে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। জেলার ওপর দিয়ে বইছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। সকালবেলা অতিরিক্ত ঠান্ডায় বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের হয় না। সকালে ও রাতে খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণ করেন। ঘন কুয়াশার কারণে সকাল ও রাতের পুরোটা সময় রাস্তায় যানবাহন চলাচল করছে হেডলাইট জ্বালিয়ে।

পিকআপ ভ্যানচালক শহীদ মিয়া বলেন, ‘ট্রিপ নিয়ে রাজনগর থেকে কিশোরগঞ্জ যাচ্ছি। এত কুয়াশা হেডলাইট জ্বালিয়েও কাজ হচ্ছে না। এ জন্য ধীরে ধীরে যাচ্ছি। এতে এক ঘণ্টার পথে অতিরিক্ত সময় লাগছে তিন ঘণ্টা।’

ব্যবসায়ী জিল্লুল হাসান বলেন, ‘সারা দিন সোয়েটার পরতে হয়। রোদ থাকলেও তেজ কম, ফলে দোকানের ভেতর ঠান্ডা লাগে।’

শীতের তীব্রতায় বরাবরের মতো সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বৃদ্ধ ও শিশুরা। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চল ও প্রত্যন্ত এলাকায়। পাশাপাশি ছিন্নমূল ও দিনমজুরেরা পড়েছেন সীমাহীন ভোগান্তিতে। কনকনে শীত ও হিমেল হাওয়ার কারণে হাওরপাড় ও চা-বাগান এলাকার শ্রমজীবী মানুষ ভোগান্তিতে রয়েছেন।

কাওয়াদীঘি হাওর অধ্যুষিত ফতেপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান নকুল চন্দ্র দাশ বলেন, ‘হাওরের মানুষকে ১২ মাস লড়াই করে টিকে থাকতে হয়। শীতে ঠান্ডার সঙ্গে আর বর্ষায় পানির সঙ্গে। তাদের যে পরিমাণ সহযোগিতা পাওয়ার অধিকার রয়েছে, সে সহযোগিতা তারা কখনো পায় না। আমাদের স্বল্প বরাদ্দ থেকে শীত-বর্ষায় অতি দরিদ্র দেখে মানুষকে সহায়তা করি।’

শ্রীমঙ্গল আবহাওয়া অফিস কর্মকর্তা আনিছুর রহমান জানান, মৌলভীবাজারে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বইছে। গতকাল বুধবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১১ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

শীতজনিত রোগে প্রতিদিন জেলার বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, প্রাইভেট ক্লিনিক ও মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে শিশু ও বয়স্করা নিয়মিত ভর্তি হচ্ছেন। পাশাপাশি শীতের প্রকোপ মোকাবিলায় নিম্নবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্ত ছুটছেন গরম কাপড়ের দোকানে। প্রতিদিনই ভিড় বাড়ছে ছোট-বড় ও ভ্রাম্যমাণ এসব দোকানে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত