সাকিব–লিটনদের বার্তা হাথুরুর

পাঁচ দিনের বিরতির মধ্যে গতকালই বাংলাদেশ মাঠে এল। বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ৮টায় অনুশীলন শুরুর কিছুক্ষণ পরেই প্রেমাদাসায় নামল বৃষ্টি। অনুশীলন অসমাপ্ত রেখেই সাকিবরা ফিরে গেলেন টিম হোটেলে। টুর্নামেন্টে নিজেদের আর কোনো সমীকরণ নেই, বাংলাদেশের কাছে এশিয়া কাপের গুরুত্বও যেন হারিয়েছে।

গতকাল তবু মাঠে এসেছিল বাংলাদেশ, আজ কোনো অনুশীলনের পরিকল্পনাই নেই টিম ম্যানেজমেন্টের। কাল ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের ম্যাচটা আপাত-গুরুত্বহীন। এই ম্যাচে হারানোর কিছু নেই। তবে পাওয়ার আছে অনেক। গতকাল বিকেলে টিম হোটেলে সাংবাদিকদের সেটিই বলছিলেন তাওহীদ হৃদয়, ‘যেটা চলে গেছে, সেটা নিয়ে ভাবি না। বর্তমানে থাকার চেষ্টা করি। সামনে ভারতের সঙ্গে খেলা। চেষ্টা করব ভালোভাবে শেষ করার। এখান থেকে একটা ভালো ফল নিয়ে যেন যেতে পারি।’

এশিয়া কাপ শুরুর আগ থেকেই চোট, অসুস্থতায় গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়দের হারাতে শুরু করেছে বাংলাদেশ। টুর্নামেন্টের শেষ দিকে এসেও নিস্তার নেই। ভারত ম্যাচের আগে বাংলাদেশ পাচ্ছে না দলের অভিজ্ঞ ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিমকে। সন্তানসম্ভবা স্ত্রীর পাশে থাকতে দেশে ফিরে যাওয়া মুশফিক আর ফিরছেন না কলম্বোয়, সে কথা গতকালই জানিয়েছে বিসিবি। মুশফিকের অনুপস্থিতিতে লোয়ার মিডল অর্ডারে দায়িত্ব আরও বেড়ে গেছে হৃদয়ের। ২২ বছর বয়সী ব্যাটার অবশ্য বিষয়টি এভাবে দেখেন না, ‘ওভাবে চিন্তা করি না, কার কারণে আমার দায়িত্ব বেড়ে যাচ্ছে। নিজের প্রক্রিয়ায় থাকার চেষ্টা করি। যেন দলে অবদান রাখতে পারি।’ তবে তিনি মানছেন, মুশফিক দলে না থাকায় বড় ধাক্কাই খেয়েছে দল, ‘মুশফিক ভাই নেই, এটা অবশ্য আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জিং হবে। যেহেতু তিনি একজন অভিজ্ঞ খেলোয়াড়। তাঁর জায়গায় যে খেলবে, যতটা পারা যায় যেন তাঁর ঘাটতি পুষিয়ে নেওয়া যায়।’ 

গত বিপিএলে দুর্দান্ত খেলে জাতীয় দলে আসা হৃদয় নিজেকে চিনিয়েছেন গত ছয় মাসে একাধিক দ্বিপক্ষীয় সিরিজে। কিন্তু এশিয়া কাপে ধারাবাহিক ভালো তিনি করতে পারেননি। ২০, ০, ২ রানের পর প্রেমাদাসায় শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তাঁর ব্যাট হেসেছে। কিন্তু দল হারায় বৃথা গেছে ৮২ রানের ইনিংসটি। লঙ্কানদের বিপক্ষে ভালো খেলেও তাই হৃদয়ের মনে অতৃপ্তি, ‘অবশ্যই হতাশার। আমার ইনিংসটা কোনো কাজের না। যদি জিততাম, নিজের কাছে তৃপ্তি কাজ করত। সামনে যদি এমন সুযোগ আসে, চেষ্টা করব ওখান থেকে ম্যাচটা শেষ করে আসতে।’

যতই দ্বিপক্ষীয় সিরিজ আর এশিয়া কাপ-বিশ্বকাপের মধ্যে পার্থক্য থাকুক, হৃদয় তা মানতে নারাজ। তাঁর কাছে সব ম্যাচই সমান। বললেন, ‘এখানে আরও ভালো প্রতিপক্ষ মোকাবিলা করলাম। অনেক অভিজ্ঞ বোলার খেললাম। পরিবেশ-পরিস্থিতি আলাদা থাকে। তবে একজন খেলোয়াড় হিসেবে মনে করি, প্রতিটি দিন, প্রতি ম্যাচ, প্রতি বল এক। কে প্রতিপক্ষ, সেটা না দেখে বল দেখে খেলার চেষ্টা করি। সেটা হতে পারে বিশ্বকাপ, এশিয়া কাপ কিংবা ছোট সিরিজে।’ 

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হারের পর পাঁচ দিনের বিরতিতে হোটেলে প্রতিটি ক্রিকেটারের সঙ্গে আলাদা বসেছেন কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। দলের সবার সঙ্গে কী আলোচনা হয়েছে, সেটি হৃদয় বলতে না পারলেও তাঁকে কী বার্তা দিয়েছেন কোচ, সেটা খুলেই বললেন, ‘সবার সঙ্গে এক এক করে বসেছিলেন। কার সঙ্গে কী কথা হয়েছে, আমার পক্ষে বলা সম্ভব নয়। আমার সঙ্গে যতটুকু কথা হয়েছে, সব সময় যেটা বলেন, সাহস নিয়ে খেলতে। যেটা আমি খেলি। তিনি বলেছেন, প্রতি ম্যাচে রান পাবে না, পারফর্ম করবে না। কিন্তু নিজের ক্যারেক্টার পরিবর্তন করবে না।’

হৃদয়ের মতো পুরো দলকেই একই বার্তা দেওয়ার কথা হাথুরুর।