নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

উপজেলা নির্বাচনে দলীয় সংসদ সদস্য (এমপি) ও মন্ত্রীর পরিবারের সদস্য ও নিকটাত্মীয়দের প্রার্থী না হওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। এমনকি যাঁরা এরই মধ্যে প্রার্থী হয়েছেন, তাঁদেরও নির্বাচন থেকে সরে যেতে বলা হয়েছে। কিন্তু দলের এই নির্দেশনা মানছেন না কেউ।
আজকের পত্রিকার নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্য অনুযায়ী, গতকাল পর্যন্ত ৩৩টি উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ৪৭ জন প্রার্থীর খোঁজ পাওয়া গেছে, যাঁরা স্থানীয় এমপির স্বজন ও নিকটাত্মীয়। এ ছাড়া তফসিল হয়নি এমন বেশ কিছু উপজেলায় এমপিদের আরও ২৬ জন আত্মীয় সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে গণসংযোগসহ নানা তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। স্বজনদের প্রার্থী হওয়া নিয়ে এরই মধ্যে অপ্রীতিকর ঘটনায় বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখোমুখিও হয়েছেন কোনো কোনো মন্ত্রী-এমপি।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতো স্থানীয় সরকার নির্বাচনও প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক করতে এবার উপজেলায় নৌকা প্রতীক দিচ্ছে না আওয়ামী লীগ। প্রার্থিতা উন্মুক্ত করে দেওয়ার সুবাদে উপজেলা নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখতে চান এমপিরা। এ জন্য চেয়ারম্যান পদে নিজের আত্মীয়-স্বজন ও পরিবারের সদস্যদের মাঠে রাখছেন তাঁরা। এ ক্ষেত্রে দলের নিষেধও শুনছেন না অনেকেই। বিষয়টি নিয়ে ৩০ এপ্রিল আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে বিশদ আলোচনা হবে বলে দলীয় একটি সূত্র জানিয়েছে। সেখানে যেসব এমপি দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করবেন, তাঁদের বিষয়ে কী কী সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে, সেই সিদ্ধান্তও নেওয়া হতে পারে।
জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মুহাম্মদ ফারুক খান বলেন, দল থেকে যে সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়েছে, তা মানা সকলের জন্য বাধ্যতামূলক। তা মানা না হলে দলীয় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এক সদস্য বলেন, যেসব এমপি-মন্ত্রী দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে নিজের স্বজনদের উপজেলা নির্বাচনের মাঠে রাখবেন, তাঁরা ভবিষ্যতে রাজনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। দল তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে। আগামী নির্বাচনে তাঁদের মনোনয়নও হুমকির মুখে পড়তে পারে।
চার ধাপে অনুষ্ঠিত হবে এবারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। এরই মধ্যে তিন ধাপের তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। দ্বিতীয় ধাপের ১৬১ উপজেলায় মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া শেষ হয়েছে গতকাল রোববার। অন্যদিকে প্রথম ধাপের ১৫০টি উপজেলায় মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন আজ সোমবার। এই ধাপের ভোট আগামী ৮ মে।
গতকাল পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, মাগুরার শালিখায় এমপির একজন আত্মীয় প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। এ ছাড়া নাটোরের সিংড়ায় আলোচিত চেয়ারম্যান প্রার্থী লুৎফুল হাবিব রুবেল প্রার্থিতা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন। এর বাইরে কোনো উপজেলা থেকে এমপির স্বজনদের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের ঘোষণা আসেনি। উল্টো স্বজনদের প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করার ঘোষণা দিয়েছেন কোনো কোনো এমপি।
নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলায় প্রার্থী হয়েছেন স্থানীয় এমপি একরামুল করিম চৌধুরীর ছেলে আতাহার ইশরাক সাবাব চৌধুরী। ছেলে মনোনয়ন প্রত্যাহার করবেন না বলে এরই মধ্যে জানিয়ে দিয়েছেন এমপি একরামুল। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আমার ছেলে ভোট করবে। ও এখন ২৮ বছরের ছেলে। সে যে আমার কথা শুনবে, এমন কোনো কথা তো নেই।’ একরামুল হকের স্ত্রী কামরুন নাহার শিউলী কবিরহাট উপজেলার বর্তমান চেয়ারম্যান। টানা তিনবারের চেয়ারম্যান শিউলী এবারও ওই উপজেলায় প্রার্থী হচ্ছেন।
নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলায় প্রার্থী হয়েছেন স্থানীয় এমপি মোহাম্মদ আলীর স্ত্রী আয়েশা ফেরদাউস ও তাঁদের বড় ছেলে আশিক আলী। এ উপজেলার বর্তমান চেয়ারম্যান মাহবুব মোর্শেদ লিটন। তিনি মোহাম্মদ আলীর ছোট ভাই। ভাতিজার সমর্থনে এবার লিটন মনোনয়নপত্র দাখিল করেননি। এখন এমপির স্ত্রী ও ছেলে মনোনয়ন প্রত্যাহার করলে উপজেলার চেয়ারম্যান পদে আবারও তফসিল ঘোষণা করতে হবে।
মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘আমাদের এখানে আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ। দলের কেউ মনোনয়ন দাখিল করেনি। রানিং চেয়ারম্যান আমার ছোট ভাই। সে তার ভাতিজার নাম প্রস্তাব করেছে। এখন আমি এখানে কী করব? এখন যদি কেউ না থাকে (স্ত্রী ও ছেলে প্রত্যাহার করলে) তাহলে কি উপজেলাটি ফাঁকা যাবে? আমাদের এখানে চিত্র ভিন্ন।’
জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বলেন, ‘এখন আমরা চেষ্টা করছি এমপিদের স্বজনেরা যাতে মনোনয়ন প্রত্যাহার করে। যদি কেউ প্রত্যাহার না করে, তাহলে কোনো যাতে এমপি উপজেলা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করতে না পারে, সেই ব্যাপারে সাংগঠনিক পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
মাদারীপুর সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন দাখিল করেছেন মাদারীপুর-২ আসনের এমপি শাজাহান খানের বড় ছেলে আসিবুর রহমান খান। এমপির চাচাতো ভাই সাবেক চেয়ারম্যান পাভেলুর রহমান শফিক খানও চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন। এই উপজেলার বর্তমান চেয়ারম্যান এমপির আপন ছোট ভাই অ্যাডভোকেট ওবাইদুর রহমান খান।
এ প্রসঙ্গে শাজাহান খান বলেন, ‘মাদারীপুরে (সদর) চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন একজন আমার ছেলে অন্য প্রার্থী আমার চাচাতো ভাই। সিদ্ধান্ত মতে, দুজনেই নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না। তবে এখন এ প্রসঙ্গে আমি আর কিছু বলতে চাই না।’
কুষ্টিয়া সদর উপজেলায় চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কুষ্টিয়া সদর আসনের এমপি মাহবুব উল আলম হানিফের চাচাতো ভাই ও বর্তমান চেয়ারম্যান আতাউর রহমান আতা। কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায় চেয়ারম্যান প্রার্থী হচ্ছেন স্থানীয় এমপি রেজাউল হক চৌধুরীর ছোট ভাই বুলবুল আহমেদ টোকেন চৌধুরী।
বরিশালের আগৈলঝাড়ায় এমপি আবুল হাসানাত আবদুল্লাহর ছেলে আশিক আবদুল্লাহ, পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলায় এমপি মো. মকবুল হোসেনের ছেলে গোলাম হাসনায়েন রাসেল, বেড়া উপজেলায় পাবনা-১ আসনের এমপি ও ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকুর আপন ছোট ভাই আব্দুল বাতেন এবং ভাতিজা আব্দুল কাদের সবুজ প্রার্থী হয়েছেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হকের ফুফাতো ভাই সাইদুর রহমান স্বপন ও তাঁর সাবেক এপিএস বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান রাশেদুল কায়ছার ভূঁইয়া জীবন। একইভাবে বাঞ্ছারামপুরে বর্তমান এমপি ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী ক্যাপ্টেন (অব.) এ বি তাজুল ইসলামের বোনের ছেলে কাজী জাদিদ-আল-রহমান জনি ও ভাইয়ের ছেলে আমিনুল ইসলাম তুষার ভোট করছেন।
রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলা পরিষদের বিদায়ী চেয়ারম্যান ফজলে রাব্বী সুইট স্থানীয় এমপি আবুল কালাম মো. আহসানুল হক চৌধুরী ডিউকের নিকটাত্মীয়। এমপি ডিউকের চাচাতো ভাই হাসান তবিকুর চৌধুরী পলিনও এবার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী।
নড়াইলের কালিয়া উপজেলার বর্তমান মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সোহেলী পারভিন নিরী নড়াইল-১ আসনের এমপি কবিরুল হক মুক্তির ভাগনি। এবারও একই পদে নির্বাচন করছেন নিরী। লক্ষ্মীপুর-২ আসনের এমপি নুরউদ্দিন চৌধুরী নয়নের ভগ্নিপতি বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মামুনুর রশিদ রায়পুর উপজেলায় আবারও প্রার্থী হয়েছেন। তাঁর মামা হুমায়ুন কবির পাটওয়ারী সদর উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন। এই উপজেলায় প্রার্থী হয়েছেন চেয়ারম্যান এ কে এম সালাহ উদ্দিন টিপু। তিনি এমপির ফুফাতো শ্যালক।
চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলায় চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের এমপি আলী আজগার টগরের আপন ভাই বর্তমান চেয়ারম্যান মো. আলী মুনছুর বাবু, চাচাতো চাচা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. সহিদুল ইসলাম এবং মো. আবু তালেব মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
এবারও দলীয় সিদ্ধান্ত না মেনে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তৃতীয়বারের মতো নির্বাচন করছেন বর্তমান সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মো. ইসরাফিল হোসেন। তিনি মানিকগঞ্জ-৩ আসনের এমপি ও সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের ফুফাতো ভাই।
কুমিল্লার হোমনা উপজেলার বর্তমান চেয়ারম্যান রেহেনা মজিদ স্থানীয় এমপি অধ্যাপক আব্দুল মজিদের স্ত্রী। কুমিল্লার সদর দক্ষিণ উপজেলার বর্তমান চেয়ারম্যান গোলাম সারোয়ার সাবেক অর্থমন্ত্রী ও বর্তমান এমপি আ হ ম মুস্তফা কামালের ছোট ভাই। মুরাদনগর উপজেলার বর্তমান চেয়ারম্যান ডক্টর আহসানুল আলম সরকার বর্তমান এমপি জাহাঙ্গীর আলম সরকারের ছেলে। লাকসাম উপজেলার বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান মো. মহব্বত আলী পুনরায় এ পদে প্রার্থী হয়েছেন। তিনি স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলামের শ্যালক।
চৌদ্দগ্রাম উপজেলার বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান এ বি এম বাহার সাবেক রেলপথমন্ত্রী ও বর্তমান এমপি মুজিবুল হকের ভাতিজা। মনোহরগঞ্জ উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলামের ভাতিজা আমিরুল ইসলাম।
পিরোজপুরের নাজিরপুরে উপজেলা পারিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন পিরোজপুর-১ আসনের এমপির ভাই এস এম নূরে আলম সিদ্দিকী।
শরীয়তপুর-১ আসনের এমপি ইকবাল হোসেন অপুর চাচাতো ভাই বিল্লাল হোসেন দিপু মিয়া শরীয়তপুর সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
ভোলার লালমোহনে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান প্রার্থী বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান আবুল হোসেন রিমন ভোলা-৩ আসনের এমপি নুরুন্নবী চৌধুরী শাওনের ফুফাতো ভাই। আরেক চেয়ারম্যান প্রার্থী নজরুল ইসলাম লাবু এমপির চাচাতো ভাই। বোরহানউদ্দিন উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান আবুল কালাম এমপি তোফায়েল আহমেদের ভগ্নিপতি। তিনি এবারও চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী।
রাঙামাটির ১০টি, বান্দরবানের ৭টি ও খুলনার ৯টি উপজেলার একটিতেও মন্ত্রী-এমপির স্বজনদের প্রার্থী হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। খাগড়াছড়ির ৯টি উপজেলার মধ্যে শুধু রামগড়ে চেয়ারম্যান পদে পুনরায় প্রার্থী হয়েছেন বর্তমান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বিশ্ব প্রদীপ কারবারী। তিনি সম্পর্কে পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরার জামাতা।
চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন চাঁদপুর-২ আসনের এমপি মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার ভাতিজার স্ত্রী লাভলী চৌধুরী। তিনি ছাড়া আর কেউ এই পদে মনোনয়নপত্র জমা দেননি।

উপজেলা নির্বাচনে দলীয় সংসদ সদস্য (এমপি) ও মন্ত্রীর পরিবারের সদস্য ও নিকটাত্মীয়দের প্রার্থী না হওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। এমনকি যাঁরা এরই মধ্যে প্রার্থী হয়েছেন, তাঁদেরও নির্বাচন থেকে সরে যেতে বলা হয়েছে। কিন্তু দলের এই নির্দেশনা মানছেন না কেউ।
আজকের পত্রিকার নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্য অনুযায়ী, গতকাল পর্যন্ত ৩৩টি উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ৪৭ জন প্রার্থীর খোঁজ পাওয়া গেছে, যাঁরা স্থানীয় এমপির স্বজন ও নিকটাত্মীয়। এ ছাড়া তফসিল হয়নি এমন বেশ কিছু উপজেলায় এমপিদের আরও ২৬ জন আত্মীয় সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে গণসংযোগসহ নানা তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। স্বজনদের প্রার্থী হওয়া নিয়ে এরই মধ্যে অপ্রীতিকর ঘটনায় বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখোমুখিও হয়েছেন কোনো কোনো মন্ত্রী-এমপি।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতো স্থানীয় সরকার নির্বাচনও প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক করতে এবার উপজেলায় নৌকা প্রতীক দিচ্ছে না আওয়ামী লীগ। প্রার্থিতা উন্মুক্ত করে দেওয়ার সুবাদে উপজেলা নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখতে চান এমপিরা। এ জন্য চেয়ারম্যান পদে নিজের আত্মীয়-স্বজন ও পরিবারের সদস্যদের মাঠে রাখছেন তাঁরা। এ ক্ষেত্রে দলের নিষেধও শুনছেন না অনেকেই। বিষয়টি নিয়ে ৩০ এপ্রিল আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে বিশদ আলোচনা হবে বলে দলীয় একটি সূত্র জানিয়েছে। সেখানে যেসব এমপি দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করবেন, তাঁদের বিষয়ে কী কী সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে, সেই সিদ্ধান্তও নেওয়া হতে পারে।
জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মুহাম্মদ ফারুক খান বলেন, দল থেকে যে সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়েছে, তা মানা সকলের জন্য বাধ্যতামূলক। তা মানা না হলে দলীয় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এক সদস্য বলেন, যেসব এমপি-মন্ত্রী দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে নিজের স্বজনদের উপজেলা নির্বাচনের মাঠে রাখবেন, তাঁরা ভবিষ্যতে রাজনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। দল তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে। আগামী নির্বাচনে তাঁদের মনোনয়নও হুমকির মুখে পড়তে পারে।
চার ধাপে অনুষ্ঠিত হবে এবারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। এরই মধ্যে তিন ধাপের তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। দ্বিতীয় ধাপের ১৬১ উপজেলায় মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া শেষ হয়েছে গতকাল রোববার। অন্যদিকে প্রথম ধাপের ১৫০টি উপজেলায় মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন আজ সোমবার। এই ধাপের ভোট আগামী ৮ মে।
গতকাল পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, মাগুরার শালিখায় এমপির একজন আত্মীয় প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। এ ছাড়া নাটোরের সিংড়ায় আলোচিত চেয়ারম্যান প্রার্থী লুৎফুল হাবিব রুবেল প্রার্থিতা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন। এর বাইরে কোনো উপজেলা থেকে এমপির স্বজনদের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের ঘোষণা আসেনি। উল্টো স্বজনদের প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করার ঘোষণা দিয়েছেন কোনো কোনো এমপি।
নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলায় প্রার্থী হয়েছেন স্থানীয় এমপি একরামুল করিম চৌধুরীর ছেলে আতাহার ইশরাক সাবাব চৌধুরী। ছেলে মনোনয়ন প্রত্যাহার করবেন না বলে এরই মধ্যে জানিয়ে দিয়েছেন এমপি একরামুল। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আমার ছেলে ভোট করবে। ও এখন ২৮ বছরের ছেলে। সে যে আমার কথা শুনবে, এমন কোনো কথা তো নেই।’ একরামুল হকের স্ত্রী কামরুন নাহার শিউলী কবিরহাট উপজেলার বর্তমান চেয়ারম্যান। টানা তিনবারের চেয়ারম্যান শিউলী এবারও ওই উপজেলায় প্রার্থী হচ্ছেন।
নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলায় প্রার্থী হয়েছেন স্থানীয় এমপি মোহাম্মদ আলীর স্ত্রী আয়েশা ফেরদাউস ও তাঁদের বড় ছেলে আশিক আলী। এ উপজেলার বর্তমান চেয়ারম্যান মাহবুব মোর্শেদ লিটন। তিনি মোহাম্মদ আলীর ছোট ভাই। ভাতিজার সমর্থনে এবার লিটন মনোনয়নপত্র দাখিল করেননি। এখন এমপির স্ত্রী ও ছেলে মনোনয়ন প্রত্যাহার করলে উপজেলার চেয়ারম্যান পদে আবারও তফসিল ঘোষণা করতে হবে।
মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘আমাদের এখানে আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ। দলের কেউ মনোনয়ন দাখিল করেনি। রানিং চেয়ারম্যান আমার ছোট ভাই। সে তার ভাতিজার নাম প্রস্তাব করেছে। এখন আমি এখানে কী করব? এখন যদি কেউ না থাকে (স্ত্রী ও ছেলে প্রত্যাহার করলে) তাহলে কি উপজেলাটি ফাঁকা যাবে? আমাদের এখানে চিত্র ভিন্ন।’
জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বলেন, ‘এখন আমরা চেষ্টা করছি এমপিদের স্বজনেরা যাতে মনোনয়ন প্রত্যাহার করে। যদি কেউ প্রত্যাহার না করে, তাহলে কোনো যাতে এমপি উপজেলা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করতে না পারে, সেই ব্যাপারে সাংগঠনিক পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
মাদারীপুর সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন দাখিল করেছেন মাদারীপুর-২ আসনের এমপি শাজাহান খানের বড় ছেলে আসিবুর রহমান খান। এমপির চাচাতো ভাই সাবেক চেয়ারম্যান পাভেলুর রহমান শফিক খানও চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন। এই উপজেলার বর্তমান চেয়ারম্যান এমপির আপন ছোট ভাই অ্যাডভোকেট ওবাইদুর রহমান খান।
এ প্রসঙ্গে শাজাহান খান বলেন, ‘মাদারীপুরে (সদর) চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন একজন আমার ছেলে অন্য প্রার্থী আমার চাচাতো ভাই। সিদ্ধান্ত মতে, দুজনেই নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না। তবে এখন এ প্রসঙ্গে আমি আর কিছু বলতে চাই না।’
কুষ্টিয়া সদর উপজেলায় চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কুষ্টিয়া সদর আসনের এমপি মাহবুব উল আলম হানিফের চাচাতো ভাই ও বর্তমান চেয়ারম্যান আতাউর রহমান আতা। কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায় চেয়ারম্যান প্রার্থী হচ্ছেন স্থানীয় এমপি রেজাউল হক চৌধুরীর ছোট ভাই বুলবুল আহমেদ টোকেন চৌধুরী।
বরিশালের আগৈলঝাড়ায় এমপি আবুল হাসানাত আবদুল্লাহর ছেলে আশিক আবদুল্লাহ, পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলায় এমপি মো. মকবুল হোসেনের ছেলে গোলাম হাসনায়েন রাসেল, বেড়া উপজেলায় পাবনা-১ আসনের এমপি ও ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকুর আপন ছোট ভাই আব্দুল বাতেন এবং ভাতিজা আব্দুল কাদের সবুজ প্রার্থী হয়েছেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হকের ফুফাতো ভাই সাইদুর রহমান স্বপন ও তাঁর সাবেক এপিএস বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান রাশেদুল কায়ছার ভূঁইয়া জীবন। একইভাবে বাঞ্ছারামপুরে বর্তমান এমপি ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী ক্যাপ্টেন (অব.) এ বি তাজুল ইসলামের বোনের ছেলে কাজী জাদিদ-আল-রহমান জনি ও ভাইয়ের ছেলে আমিনুল ইসলাম তুষার ভোট করছেন।
রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলা পরিষদের বিদায়ী চেয়ারম্যান ফজলে রাব্বী সুইট স্থানীয় এমপি আবুল কালাম মো. আহসানুল হক চৌধুরী ডিউকের নিকটাত্মীয়। এমপি ডিউকের চাচাতো ভাই হাসান তবিকুর চৌধুরী পলিনও এবার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী।
নড়াইলের কালিয়া উপজেলার বর্তমান মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সোহেলী পারভিন নিরী নড়াইল-১ আসনের এমপি কবিরুল হক মুক্তির ভাগনি। এবারও একই পদে নির্বাচন করছেন নিরী। লক্ষ্মীপুর-২ আসনের এমপি নুরউদ্দিন চৌধুরী নয়নের ভগ্নিপতি বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মামুনুর রশিদ রায়পুর উপজেলায় আবারও প্রার্থী হয়েছেন। তাঁর মামা হুমায়ুন কবির পাটওয়ারী সদর উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন। এই উপজেলায় প্রার্থী হয়েছেন চেয়ারম্যান এ কে এম সালাহ উদ্দিন টিপু। তিনি এমপির ফুফাতো শ্যালক।
চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলায় চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের এমপি আলী আজগার টগরের আপন ভাই বর্তমান চেয়ারম্যান মো. আলী মুনছুর বাবু, চাচাতো চাচা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. সহিদুল ইসলাম এবং মো. আবু তালেব মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
এবারও দলীয় সিদ্ধান্ত না মেনে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তৃতীয়বারের মতো নির্বাচন করছেন বর্তমান সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মো. ইসরাফিল হোসেন। তিনি মানিকগঞ্জ-৩ আসনের এমপি ও সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের ফুফাতো ভাই।
কুমিল্লার হোমনা উপজেলার বর্তমান চেয়ারম্যান রেহেনা মজিদ স্থানীয় এমপি অধ্যাপক আব্দুল মজিদের স্ত্রী। কুমিল্লার সদর দক্ষিণ উপজেলার বর্তমান চেয়ারম্যান গোলাম সারোয়ার সাবেক অর্থমন্ত্রী ও বর্তমান এমপি আ হ ম মুস্তফা কামালের ছোট ভাই। মুরাদনগর উপজেলার বর্তমান চেয়ারম্যান ডক্টর আহসানুল আলম সরকার বর্তমান এমপি জাহাঙ্গীর আলম সরকারের ছেলে। লাকসাম উপজেলার বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান মো. মহব্বত আলী পুনরায় এ পদে প্রার্থী হয়েছেন। তিনি স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলামের শ্যালক।
চৌদ্দগ্রাম উপজেলার বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান এ বি এম বাহার সাবেক রেলপথমন্ত্রী ও বর্তমান এমপি মুজিবুল হকের ভাতিজা। মনোহরগঞ্জ উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলামের ভাতিজা আমিরুল ইসলাম।
পিরোজপুরের নাজিরপুরে উপজেলা পারিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন পিরোজপুর-১ আসনের এমপির ভাই এস এম নূরে আলম সিদ্দিকী।
শরীয়তপুর-১ আসনের এমপি ইকবাল হোসেন অপুর চাচাতো ভাই বিল্লাল হোসেন দিপু মিয়া শরীয়তপুর সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
ভোলার লালমোহনে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান প্রার্থী বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান আবুল হোসেন রিমন ভোলা-৩ আসনের এমপি নুরুন্নবী চৌধুরী শাওনের ফুফাতো ভাই। আরেক চেয়ারম্যান প্রার্থী নজরুল ইসলাম লাবু এমপির চাচাতো ভাই। বোরহানউদ্দিন উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান আবুল কালাম এমপি তোফায়েল আহমেদের ভগ্নিপতি। তিনি এবারও চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী।
রাঙামাটির ১০টি, বান্দরবানের ৭টি ও খুলনার ৯টি উপজেলার একটিতেও মন্ত্রী-এমপির স্বজনদের প্রার্থী হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। খাগড়াছড়ির ৯টি উপজেলার মধ্যে শুধু রামগড়ে চেয়ারম্যান পদে পুনরায় প্রার্থী হয়েছেন বর্তমান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বিশ্ব প্রদীপ কারবারী। তিনি সম্পর্কে পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরার জামাতা।
চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন চাঁদপুর-২ আসনের এমপি মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার ভাতিজার স্ত্রী লাভলী চৌধুরী। তিনি ছাড়া আর কেউ এই পদে মনোনয়নপত্র জমা দেননি।
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

উপজেলা নির্বাচনে দলীয় সংসদ সদস্য (এমপি) ও মন্ত্রীর পরিবারের সদস্য ও নিকটাত্মীয়দের প্রার্থী না হওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। এমনকি যাঁরা এরই মধ্যে প্রার্থী হয়েছেন, তাঁদেরও নির্বাচন থেকে সরে যেতে বলা হয়েছে। কিন্তু দলের এই নির্দেশনা মানছেন না কেউ।
আজকের পত্রিকার নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্য অনুযায়ী, গতকাল পর্যন্ত ৩৩টি উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ৪৭ জন প্রার্থীর খোঁজ পাওয়া গেছে, যাঁরা স্থানীয় এমপির স্বজন ও নিকটাত্মীয়। এ ছাড়া তফসিল হয়নি এমন বেশ কিছু উপজেলায় এমপিদের আরও ২৬ জন আত্মীয় সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে গণসংযোগসহ নানা তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। স্বজনদের প্রার্থী হওয়া নিয়ে এরই মধ্যে অপ্রীতিকর ঘটনায় বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখোমুখিও হয়েছেন কোনো কোনো মন্ত্রী-এমপি।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতো স্থানীয় সরকার নির্বাচনও প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক করতে এবার উপজেলায় নৌকা প্রতীক দিচ্ছে না আওয়ামী লীগ। প্রার্থিতা উন্মুক্ত করে দেওয়ার সুবাদে উপজেলা নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখতে চান এমপিরা। এ জন্য চেয়ারম্যান পদে নিজের আত্মীয়-স্বজন ও পরিবারের সদস্যদের মাঠে রাখছেন তাঁরা। এ ক্ষেত্রে দলের নিষেধও শুনছেন না অনেকেই। বিষয়টি নিয়ে ৩০ এপ্রিল আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে বিশদ আলোচনা হবে বলে দলীয় একটি সূত্র জানিয়েছে। সেখানে যেসব এমপি দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করবেন, তাঁদের বিষয়ে কী কী সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে, সেই সিদ্ধান্তও নেওয়া হতে পারে।
জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মুহাম্মদ ফারুক খান বলেন, দল থেকে যে সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়েছে, তা মানা সকলের জন্য বাধ্যতামূলক। তা মানা না হলে দলীয় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এক সদস্য বলেন, যেসব এমপি-মন্ত্রী দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে নিজের স্বজনদের উপজেলা নির্বাচনের মাঠে রাখবেন, তাঁরা ভবিষ্যতে রাজনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। দল তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে। আগামী নির্বাচনে তাঁদের মনোনয়নও হুমকির মুখে পড়তে পারে।
চার ধাপে অনুষ্ঠিত হবে এবারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। এরই মধ্যে তিন ধাপের তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। দ্বিতীয় ধাপের ১৬১ উপজেলায় মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া শেষ হয়েছে গতকাল রোববার। অন্যদিকে প্রথম ধাপের ১৫০টি উপজেলায় মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন আজ সোমবার। এই ধাপের ভোট আগামী ৮ মে।
গতকাল পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, মাগুরার শালিখায় এমপির একজন আত্মীয় প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। এ ছাড়া নাটোরের সিংড়ায় আলোচিত চেয়ারম্যান প্রার্থী লুৎফুল হাবিব রুবেল প্রার্থিতা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন। এর বাইরে কোনো উপজেলা থেকে এমপির স্বজনদের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের ঘোষণা আসেনি। উল্টো স্বজনদের প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করার ঘোষণা দিয়েছেন কোনো কোনো এমপি।
নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলায় প্রার্থী হয়েছেন স্থানীয় এমপি একরামুল করিম চৌধুরীর ছেলে আতাহার ইশরাক সাবাব চৌধুরী। ছেলে মনোনয়ন প্রত্যাহার করবেন না বলে এরই মধ্যে জানিয়ে দিয়েছেন এমপি একরামুল। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আমার ছেলে ভোট করবে। ও এখন ২৮ বছরের ছেলে। সে যে আমার কথা শুনবে, এমন কোনো কথা তো নেই।’ একরামুল হকের স্ত্রী কামরুন নাহার শিউলী কবিরহাট উপজেলার বর্তমান চেয়ারম্যান। টানা তিনবারের চেয়ারম্যান শিউলী এবারও ওই উপজেলায় প্রার্থী হচ্ছেন।
নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলায় প্রার্থী হয়েছেন স্থানীয় এমপি মোহাম্মদ আলীর স্ত্রী আয়েশা ফেরদাউস ও তাঁদের বড় ছেলে আশিক আলী। এ উপজেলার বর্তমান চেয়ারম্যান মাহবুব মোর্শেদ লিটন। তিনি মোহাম্মদ আলীর ছোট ভাই। ভাতিজার সমর্থনে এবার লিটন মনোনয়নপত্র দাখিল করেননি। এখন এমপির স্ত্রী ও ছেলে মনোনয়ন প্রত্যাহার করলে উপজেলার চেয়ারম্যান পদে আবারও তফসিল ঘোষণা করতে হবে।
মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘আমাদের এখানে আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ। দলের কেউ মনোনয়ন দাখিল করেনি। রানিং চেয়ারম্যান আমার ছোট ভাই। সে তার ভাতিজার নাম প্রস্তাব করেছে। এখন আমি এখানে কী করব? এখন যদি কেউ না থাকে (স্ত্রী ও ছেলে প্রত্যাহার করলে) তাহলে কি উপজেলাটি ফাঁকা যাবে? আমাদের এখানে চিত্র ভিন্ন।’
জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বলেন, ‘এখন আমরা চেষ্টা করছি এমপিদের স্বজনেরা যাতে মনোনয়ন প্রত্যাহার করে। যদি কেউ প্রত্যাহার না করে, তাহলে কোনো যাতে এমপি উপজেলা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করতে না পারে, সেই ব্যাপারে সাংগঠনিক পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
মাদারীপুর সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন দাখিল করেছেন মাদারীপুর-২ আসনের এমপি শাজাহান খানের বড় ছেলে আসিবুর রহমান খান। এমপির চাচাতো ভাই সাবেক চেয়ারম্যান পাভেলুর রহমান শফিক খানও চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন। এই উপজেলার বর্তমান চেয়ারম্যান এমপির আপন ছোট ভাই অ্যাডভোকেট ওবাইদুর রহমান খান।
এ প্রসঙ্গে শাজাহান খান বলেন, ‘মাদারীপুরে (সদর) চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন একজন আমার ছেলে অন্য প্রার্থী আমার চাচাতো ভাই। সিদ্ধান্ত মতে, দুজনেই নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না। তবে এখন এ প্রসঙ্গে আমি আর কিছু বলতে চাই না।’
কুষ্টিয়া সদর উপজেলায় চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কুষ্টিয়া সদর আসনের এমপি মাহবুব উল আলম হানিফের চাচাতো ভাই ও বর্তমান চেয়ারম্যান আতাউর রহমান আতা। কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায় চেয়ারম্যান প্রার্থী হচ্ছেন স্থানীয় এমপি রেজাউল হক চৌধুরীর ছোট ভাই বুলবুল আহমেদ টোকেন চৌধুরী।
বরিশালের আগৈলঝাড়ায় এমপি আবুল হাসানাত আবদুল্লাহর ছেলে আশিক আবদুল্লাহ, পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলায় এমপি মো. মকবুল হোসেনের ছেলে গোলাম হাসনায়েন রাসেল, বেড়া উপজেলায় পাবনা-১ আসনের এমপি ও ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকুর আপন ছোট ভাই আব্দুল বাতেন এবং ভাতিজা আব্দুল কাদের সবুজ প্রার্থী হয়েছেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হকের ফুফাতো ভাই সাইদুর রহমান স্বপন ও তাঁর সাবেক এপিএস বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান রাশেদুল কায়ছার ভূঁইয়া জীবন। একইভাবে বাঞ্ছারামপুরে বর্তমান এমপি ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী ক্যাপ্টেন (অব.) এ বি তাজুল ইসলামের বোনের ছেলে কাজী জাদিদ-আল-রহমান জনি ও ভাইয়ের ছেলে আমিনুল ইসলাম তুষার ভোট করছেন।
রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলা পরিষদের বিদায়ী চেয়ারম্যান ফজলে রাব্বী সুইট স্থানীয় এমপি আবুল কালাম মো. আহসানুল হক চৌধুরী ডিউকের নিকটাত্মীয়। এমপি ডিউকের চাচাতো ভাই হাসান তবিকুর চৌধুরী পলিনও এবার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী।
নড়াইলের কালিয়া উপজেলার বর্তমান মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সোহেলী পারভিন নিরী নড়াইল-১ আসনের এমপি কবিরুল হক মুক্তির ভাগনি। এবারও একই পদে নির্বাচন করছেন নিরী। লক্ষ্মীপুর-২ আসনের এমপি নুরউদ্দিন চৌধুরী নয়নের ভগ্নিপতি বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মামুনুর রশিদ রায়পুর উপজেলায় আবারও প্রার্থী হয়েছেন। তাঁর মামা হুমায়ুন কবির পাটওয়ারী সদর উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন। এই উপজেলায় প্রার্থী হয়েছেন চেয়ারম্যান এ কে এম সালাহ উদ্দিন টিপু। তিনি এমপির ফুফাতো শ্যালক।
চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলায় চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের এমপি আলী আজগার টগরের আপন ভাই বর্তমান চেয়ারম্যান মো. আলী মুনছুর বাবু, চাচাতো চাচা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. সহিদুল ইসলাম এবং মো. আবু তালেব মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
এবারও দলীয় সিদ্ধান্ত না মেনে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তৃতীয়বারের মতো নির্বাচন করছেন বর্তমান সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মো. ইসরাফিল হোসেন। তিনি মানিকগঞ্জ-৩ আসনের এমপি ও সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের ফুফাতো ভাই।
কুমিল্লার হোমনা উপজেলার বর্তমান চেয়ারম্যান রেহেনা মজিদ স্থানীয় এমপি অধ্যাপক আব্দুল মজিদের স্ত্রী। কুমিল্লার সদর দক্ষিণ উপজেলার বর্তমান চেয়ারম্যান গোলাম সারোয়ার সাবেক অর্থমন্ত্রী ও বর্তমান এমপি আ হ ম মুস্তফা কামালের ছোট ভাই। মুরাদনগর উপজেলার বর্তমান চেয়ারম্যান ডক্টর আহসানুল আলম সরকার বর্তমান এমপি জাহাঙ্গীর আলম সরকারের ছেলে। লাকসাম উপজেলার বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান মো. মহব্বত আলী পুনরায় এ পদে প্রার্থী হয়েছেন। তিনি স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলামের শ্যালক।
চৌদ্দগ্রাম উপজেলার বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান এ বি এম বাহার সাবেক রেলপথমন্ত্রী ও বর্তমান এমপি মুজিবুল হকের ভাতিজা। মনোহরগঞ্জ উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলামের ভাতিজা আমিরুল ইসলাম।
পিরোজপুরের নাজিরপুরে উপজেলা পারিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন পিরোজপুর-১ আসনের এমপির ভাই এস এম নূরে আলম সিদ্দিকী।
শরীয়তপুর-১ আসনের এমপি ইকবাল হোসেন অপুর চাচাতো ভাই বিল্লাল হোসেন দিপু মিয়া শরীয়তপুর সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
ভোলার লালমোহনে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান প্রার্থী বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান আবুল হোসেন রিমন ভোলা-৩ আসনের এমপি নুরুন্নবী চৌধুরী শাওনের ফুফাতো ভাই। আরেক চেয়ারম্যান প্রার্থী নজরুল ইসলাম লাবু এমপির চাচাতো ভাই। বোরহানউদ্দিন উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান আবুল কালাম এমপি তোফায়েল আহমেদের ভগ্নিপতি। তিনি এবারও চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী।
রাঙামাটির ১০টি, বান্দরবানের ৭টি ও খুলনার ৯টি উপজেলার একটিতেও মন্ত্রী-এমপির স্বজনদের প্রার্থী হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। খাগড়াছড়ির ৯টি উপজেলার মধ্যে শুধু রামগড়ে চেয়ারম্যান পদে পুনরায় প্রার্থী হয়েছেন বর্তমান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বিশ্ব প্রদীপ কারবারী। তিনি সম্পর্কে পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরার জামাতা।
চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন চাঁদপুর-২ আসনের এমপি মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার ভাতিজার স্ত্রী লাভলী চৌধুরী। তিনি ছাড়া আর কেউ এই পদে মনোনয়নপত্র জমা দেননি।

উপজেলা নির্বাচনে দলীয় সংসদ সদস্য (এমপি) ও মন্ত্রীর পরিবারের সদস্য ও নিকটাত্মীয়দের প্রার্থী না হওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। এমনকি যাঁরা এরই মধ্যে প্রার্থী হয়েছেন, তাঁদেরও নির্বাচন থেকে সরে যেতে বলা হয়েছে। কিন্তু দলের এই নির্দেশনা মানছেন না কেউ।
আজকের পত্রিকার নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্য অনুযায়ী, গতকাল পর্যন্ত ৩৩টি উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ৪৭ জন প্রার্থীর খোঁজ পাওয়া গেছে, যাঁরা স্থানীয় এমপির স্বজন ও নিকটাত্মীয়। এ ছাড়া তফসিল হয়নি এমন বেশ কিছু উপজেলায় এমপিদের আরও ২৬ জন আত্মীয় সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে গণসংযোগসহ নানা তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। স্বজনদের প্রার্থী হওয়া নিয়ে এরই মধ্যে অপ্রীতিকর ঘটনায় বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখোমুখিও হয়েছেন কোনো কোনো মন্ত্রী-এমপি।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতো স্থানীয় সরকার নির্বাচনও প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক করতে এবার উপজেলায় নৌকা প্রতীক দিচ্ছে না আওয়ামী লীগ। প্রার্থিতা উন্মুক্ত করে দেওয়ার সুবাদে উপজেলা নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখতে চান এমপিরা। এ জন্য চেয়ারম্যান পদে নিজের আত্মীয়-স্বজন ও পরিবারের সদস্যদের মাঠে রাখছেন তাঁরা। এ ক্ষেত্রে দলের নিষেধও শুনছেন না অনেকেই। বিষয়টি নিয়ে ৩০ এপ্রিল আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে বিশদ আলোচনা হবে বলে দলীয় একটি সূত্র জানিয়েছে। সেখানে যেসব এমপি দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করবেন, তাঁদের বিষয়ে কী কী সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে, সেই সিদ্ধান্তও নেওয়া হতে পারে।
জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মুহাম্মদ ফারুক খান বলেন, দল থেকে যে সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়েছে, তা মানা সকলের জন্য বাধ্যতামূলক। তা মানা না হলে দলীয় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এক সদস্য বলেন, যেসব এমপি-মন্ত্রী দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে নিজের স্বজনদের উপজেলা নির্বাচনের মাঠে রাখবেন, তাঁরা ভবিষ্যতে রাজনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। দল তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে। আগামী নির্বাচনে তাঁদের মনোনয়নও হুমকির মুখে পড়তে পারে।
চার ধাপে অনুষ্ঠিত হবে এবারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। এরই মধ্যে তিন ধাপের তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। দ্বিতীয় ধাপের ১৬১ উপজেলায় মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া শেষ হয়েছে গতকাল রোববার। অন্যদিকে প্রথম ধাপের ১৫০টি উপজেলায় মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন আজ সোমবার। এই ধাপের ভোট আগামী ৮ মে।
গতকাল পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, মাগুরার শালিখায় এমপির একজন আত্মীয় প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। এ ছাড়া নাটোরের সিংড়ায় আলোচিত চেয়ারম্যান প্রার্থী লুৎফুল হাবিব রুবেল প্রার্থিতা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন। এর বাইরে কোনো উপজেলা থেকে এমপির স্বজনদের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের ঘোষণা আসেনি। উল্টো স্বজনদের প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করার ঘোষণা দিয়েছেন কোনো কোনো এমপি।
নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলায় প্রার্থী হয়েছেন স্থানীয় এমপি একরামুল করিম চৌধুরীর ছেলে আতাহার ইশরাক সাবাব চৌধুরী। ছেলে মনোনয়ন প্রত্যাহার করবেন না বলে এরই মধ্যে জানিয়ে দিয়েছেন এমপি একরামুল। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আমার ছেলে ভোট করবে। ও এখন ২৮ বছরের ছেলে। সে যে আমার কথা শুনবে, এমন কোনো কথা তো নেই।’ একরামুল হকের স্ত্রী কামরুন নাহার শিউলী কবিরহাট উপজেলার বর্তমান চেয়ারম্যান। টানা তিনবারের চেয়ারম্যান শিউলী এবারও ওই উপজেলায় প্রার্থী হচ্ছেন।
নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলায় প্রার্থী হয়েছেন স্থানীয় এমপি মোহাম্মদ আলীর স্ত্রী আয়েশা ফেরদাউস ও তাঁদের বড় ছেলে আশিক আলী। এ উপজেলার বর্তমান চেয়ারম্যান মাহবুব মোর্শেদ লিটন। তিনি মোহাম্মদ আলীর ছোট ভাই। ভাতিজার সমর্থনে এবার লিটন মনোনয়নপত্র দাখিল করেননি। এখন এমপির স্ত্রী ও ছেলে মনোনয়ন প্রত্যাহার করলে উপজেলার চেয়ারম্যান পদে আবারও তফসিল ঘোষণা করতে হবে।
মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘আমাদের এখানে আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ। দলের কেউ মনোনয়ন দাখিল করেনি। রানিং চেয়ারম্যান আমার ছোট ভাই। সে তার ভাতিজার নাম প্রস্তাব করেছে। এখন আমি এখানে কী করব? এখন যদি কেউ না থাকে (স্ত্রী ও ছেলে প্রত্যাহার করলে) তাহলে কি উপজেলাটি ফাঁকা যাবে? আমাদের এখানে চিত্র ভিন্ন।’
জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বলেন, ‘এখন আমরা চেষ্টা করছি এমপিদের স্বজনেরা যাতে মনোনয়ন প্রত্যাহার করে। যদি কেউ প্রত্যাহার না করে, তাহলে কোনো যাতে এমপি উপজেলা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করতে না পারে, সেই ব্যাপারে সাংগঠনিক পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
মাদারীপুর সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন দাখিল করেছেন মাদারীপুর-২ আসনের এমপি শাজাহান খানের বড় ছেলে আসিবুর রহমান খান। এমপির চাচাতো ভাই সাবেক চেয়ারম্যান পাভেলুর রহমান শফিক খানও চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন। এই উপজেলার বর্তমান চেয়ারম্যান এমপির আপন ছোট ভাই অ্যাডভোকেট ওবাইদুর রহমান খান।
এ প্রসঙ্গে শাজাহান খান বলেন, ‘মাদারীপুরে (সদর) চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন একজন আমার ছেলে অন্য প্রার্থী আমার চাচাতো ভাই। সিদ্ধান্ত মতে, দুজনেই নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না। তবে এখন এ প্রসঙ্গে আমি আর কিছু বলতে চাই না।’
কুষ্টিয়া সদর উপজেলায় চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কুষ্টিয়া সদর আসনের এমপি মাহবুব উল আলম হানিফের চাচাতো ভাই ও বর্তমান চেয়ারম্যান আতাউর রহমান আতা। কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায় চেয়ারম্যান প্রার্থী হচ্ছেন স্থানীয় এমপি রেজাউল হক চৌধুরীর ছোট ভাই বুলবুল আহমেদ টোকেন চৌধুরী।
বরিশালের আগৈলঝাড়ায় এমপি আবুল হাসানাত আবদুল্লাহর ছেলে আশিক আবদুল্লাহ, পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলায় এমপি মো. মকবুল হোসেনের ছেলে গোলাম হাসনায়েন রাসেল, বেড়া উপজেলায় পাবনা-১ আসনের এমপি ও ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকুর আপন ছোট ভাই আব্দুল বাতেন এবং ভাতিজা আব্দুল কাদের সবুজ প্রার্থী হয়েছেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হকের ফুফাতো ভাই সাইদুর রহমান স্বপন ও তাঁর সাবেক এপিএস বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান রাশেদুল কায়ছার ভূঁইয়া জীবন। একইভাবে বাঞ্ছারামপুরে বর্তমান এমপি ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী ক্যাপ্টেন (অব.) এ বি তাজুল ইসলামের বোনের ছেলে কাজী জাদিদ-আল-রহমান জনি ও ভাইয়ের ছেলে আমিনুল ইসলাম তুষার ভোট করছেন।
রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলা পরিষদের বিদায়ী চেয়ারম্যান ফজলে রাব্বী সুইট স্থানীয় এমপি আবুল কালাম মো. আহসানুল হক চৌধুরী ডিউকের নিকটাত্মীয়। এমপি ডিউকের চাচাতো ভাই হাসান তবিকুর চৌধুরী পলিনও এবার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী।
নড়াইলের কালিয়া উপজেলার বর্তমান মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সোহেলী পারভিন নিরী নড়াইল-১ আসনের এমপি কবিরুল হক মুক্তির ভাগনি। এবারও একই পদে নির্বাচন করছেন নিরী। লক্ষ্মীপুর-২ আসনের এমপি নুরউদ্দিন চৌধুরী নয়নের ভগ্নিপতি বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মামুনুর রশিদ রায়পুর উপজেলায় আবারও প্রার্থী হয়েছেন। তাঁর মামা হুমায়ুন কবির পাটওয়ারী সদর উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন। এই উপজেলায় প্রার্থী হয়েছেন চেয়ারম্যান এ কে এম সালাহ উদ্দিন টিপু। তিনি এমপির ফুফাতো শ্যালক।
চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলায় চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের এমপি আলী আজগার টগরের আপন ভাই বর্তমান চেয়ারম্যান মো. আলী মুনছুর বাবু, চাচাতো চাচা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. সহিদুল ইসলাম এবং মো. আবু তালেব মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
এবারও দলীয় সিদ্ধান্ত না মেনে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তৃতীয়বারের মতো নির্বাচন করছেন বর্তমান সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মো. ইসরাফিল হোসেন। তিনি মানিকগঞ্জ-৩ আসনের এমপি ও সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের ফুফাতো ভাই।
কুমিল্লার হোমনা উপজেলার বর্তমান চেয়ারম্যান রেহেনা মজিদ স্থানীয় এমপি অধ্যাপক আব্দুল মজিদের স্ত্রী। কুমিল্লার সদর দক্ষিণ উপজেলার বর্তমান চেয়ারম্যান গোলাম সারোয়ার সাবেক অর্থমন্ত্রী ও বর্তমান এমপি আ হ ম মুস্তফা কামালের ছোট ভাই। মুরাদনগর উপজেলার বর্তমান চেয়ারম্যান ডক্টর আহসানুল আলম সরকার বর্তমান এমপি জাহাঙ্গীর আলম সরকারের ছেলে। লাকসাম উপজেলার বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান মো. মহব্বত আলী পুনরায় এ পদে প্রার্থী হয়েছেন। তিনি স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলামের শ্যালক।
চৌদ্দগ্রাম উপজেলার বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান এ বি এম বাহার সাবেক রেলপথমন্ত্রী ও বর্তমান এমপি মুজিবুল হকের ভাতিজা। মনোহরগঞ্জ উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলামের ভাতিজা আমিরুল ইসলাম।
পিরোজপুরের নাজিরপুরে উপজেলা পারিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন পিরোজপুর-১ আসনের এমপির ভাই এস এম নূরে আলম সিদ্দিকী।
শরীয়তপুর-১ আসনের এমপি ইকবাল হোসেন অপুর চাচাতো ভাই বিল্লাল হোসেন দিপু মিয়া শরীয়তপুর সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
ভোলার লালমোহনে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান প্রার্থী বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান আবুল হোসেন রিমন ভোলা-৩ আসনের এমপি নুরুন্নবী চৌধুরী শাওনের ফুফাতো ভাই। আরেক চেয়ারম্যান প্রার্থী নজরুল ইসলাম লাবু এমপির চাচাতো ভাই। বোরহানউদ্দিন উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান আবুল কালাম এমপি তোফায়েল আহমেদের ভগ্নিপতি। তিনি এবারও চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী।
রাঙামাটির ১০টি, বান্দরবানের ৭টি ও খুলনার ৯টি উপজেলার একটিতেও মন্ত্রী-এমপির স্বজনদের প্রার্থী হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। খাগড়াছড়ির ৯টি উপজেলার মধ্যে শুধু রামগড়ে চেয়ারম্যান পদে পুনরায় প্রার্থী হয়েছেন বর্তমান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বিশ্ব প্রদীপ কারবারী। তিনি সম্পর্কে পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরার জামাতা।
চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন চাঁদপুর-২ আসনের এমপি মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার ভাতিজার স্ত্রী লাভলী চৌধুরী। তিনি ছাড়া আর কেউ এই পদে মনোনয়নপত্র জমা দেননি।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

উপজেলা নির্বাচনে দলীয় সংসদ সদস্য (এমপি) ও মন্ত্রীর পরিবারের সদস্য ও নিকটাত্মীয়দের প্রার্থী না হওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। এমনকি যাঁরা এরই মধ্যে প্রার্থী হয়েছেন, তাঁদেরও নির্বাচন থেকে সরে যেতে বলা হয়েছে। কিন্তু দলের এই নির্দেশনা মানছেন না কেউ।
২২ এপ্রিল ২০২৪
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

উপজেলা নির্বাচনে দলীয় সংসদ সদস্য (এমপি) ও মন্ত্রীর পরিবারের সদস্য ও নিকটাত্মীয়দের প্রার্থী না হওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। এমনকি যাঁরা এরই মধ্যে প্রার্থী হয়েছেন, তাঁদেরও নির্বাচন থেকে সরে যেতে বলা হয়েছে। কিন্তু দলের এই নির্দেশনা মানছেন না কেউ।
২২ এপ্রিল ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

উপজেলা নির্বাচনে দলীয় সংসদ সদস্য (এমপি) ও মন্ত্রীর পরিবারের সদস্য ও নিকটাত্মীয়দের প্রার্থী না হওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। এমনকি যাঁরা এরই মধ্যে প্রার্থী হয়েছেন, তাঁদেরও নির্বাচন থেকে সরে যেতে বলা হয়েছে। কিন্তু দলের এই নির্দেশনা মানছেন না কেউ।
২২ এপ্রিল ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

উপজেলা নির্বাচনে দলীয় সংসদ সদস্য (এমপি) ও মন্ত্রীর পরিবারের সদস্য ও নিকটাত্মীয়দের প্রার্থী না হওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। এমনকি যাঁরা এরই মধ্যে প্রার্থী হয়েছেন, তাঁদেরও নির্বাচন থেকে সরে যেতে বলা হয়েছে। কিন্তু দলের এই নির্দেশনা মানছেন না কেউ।
২২ এপ্রিল ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫