Ajker Patrika

গুরুসদয় দত্ত

সম্পাদকীয়
গুরুসদয় দত্ত

গুরুসদয় দত্ত ব্রতচারী আন্দোলনের প্রবর্তক, লেখক, লোকসংস্কৃতি সংগ্রাহক ও সম্পাদক ছিলেন। তাঁর জন্ম ১৮৮২ সালের ১০ মে তৎকালীন সিলেটের করিমগঞ্জের বীরশ্রী গ্রামে। ছোটবেলা থেকে তিনি খুব মেধাবী ছিলেন। তাঁর শিক্ষাজীবন শুরু হয় গ্রামের মাইনর স্কুলে। এরপর তিনি সিলেটের ইংরেজি স্কুল থেকে এন্ট্রান্স, কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে এফএ পাস করেন। উভয় পরীক্ষায় তিনি মেধাতালিকায় প্রথম হন। ১৯০৩ সালে উচ্চশিক্ষার জন্য ইংল্যান্ড যান এবং সেখানে তিনি কিছুদিন একটি কলেজে অধ্যাপনা করেন। ইন্ডিয়ান সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় কৃতিত্বের সঙ্গে উত্তীর্ণ হন। এরপর তিনি দেশে ফিরে এসে বঙ্গীয় সরকারের সচিব, জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। যখন যে জেলায় দায়িত্বে থেকেছেন, তখন সেই জেলার লোকশিল্প আর সংস্কৃতির সন্ধানে প্রবৃত্ত হয়েছেন।

ব্রিটিশের রাজকর্মচারী হলেও গুরুসদয় দত্ত বিভিন্ন সময় স্বদেশের মানুষের পক্ষে দাঁড়িয়েছেন। হাওড়ার লিলুয়ায় কারখানার শ্রমিকদের ওপরে পুলিশের অতর্কিত গুলি চালানোর বিচারের দায়িত্ব ছিল তাঁর ওপরে। বিনা প্ররোচনায় গুলি চালানোর আদেশ দেওয়ার জন্য ইংরেজ পুলিশ কর্মকর্তাকেই দায়ী করেন তিনি। আবার ময়মনসিংহে চাকরি করার সময় গান্ধীজির লবণ আন্দোলনে যোগদানকারীদের কঠোর হাতে দমন করার নির্দেশ এলেও তিনি তাতে কর্ণপাত করেননি। ফলে শাস্তিস্বরূপ তাঁকে বদলি করা হয়।

১৯২৫ ও ১৯২৯ সালে তিনি ‘বাংলা লক্ষ্মী’ ও ‘গ্রামের ডাক’ নামে দুটি পত্রিকা প্রকাশনা শুরু করেন। এসব পত্রিকায় মূলত কৃষি ও গ্রামীণ সমস্যা; নারীদের সমস্যা এবং এর থেকে উত্তরণ নিয়ে লেখা প্রকাশ করা হতো।

১৯৩২ সালে গুরুসদয় দত্ত ব্রতচারী আন্দোলন গড়ে তোলেন। এই আন্দোলনের মূল লক্ষ্য ছিল জাতি-ধর্ম-বর্ণ-বয়সনির্বিশেষে মানুষের মধ্যে একটি বৈশ্বিক নাগরিকত্ববোধ ও জাতীয় চেতনা প্রতিষ্ঠা করা। ব্রতচারীর পঞ্চব্রত হলো—জ্ঞান, শ্রম, সত্য, ঐক্য ও আনন্দ।

জাতীয় চেতনাবাদী এ মানুষটি ১৯৪১ সালের ২৫ মে মৃত্যুবরণ করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত