Ajker Patrika

ট্রেন, মাইক্রোবাস ও ১১টি লাশ

সম্পাদকীয়
আপডেট : ৩১ জুলাই ২০২২, ১১: ১৬
ট্রেন, মাইক্রোবাস ও ১১টি লাশ

সকালে দেখা গেল তাঁদের হাসিমুখের ছবি। দুপুর গড়াতে না গড়াতেই হাসিমুখ আর রইল না। তরতাজা প্রাণগুলো লাশ হয়ে গেল। তোলা হলো সেই ছবিও। গতকালের আজকের পত্রিকার

প্রথম পৃষ্ঠায় ছবি দুটো ছাপা হয়েছে। মর্মান্তিক ঘটনাটি ইতিমধ্যেই নাড়িয়ে দিয়েছে দেশবাসীর মন। চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের খৈয়াছড়া ঝরনা দেখতে গিয়েছিলেন ১৬ জন। ফেরার পথে শুক্রবার দুপুরে ঝরনা এলাকায় রেলক্রসিংয়ে ট্রেনের ধাক্কায় ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে তাঁদের বহন করা মাইক্রোবাসটি। মহানগর প্রভাতী নামের ট্রেনটি প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে টেনে নিয়ে যায় মাইক্রোবাসটিকে। ১৬ যাত্রীর মধ্যে ১১ জনই আর বেঁচে নেই। বলা হচ্ছে, এ দুর্ঘটনাটি সংঘটিত হয়েছে একজন গেটম্যানের অনুপস্থিতিতে। শুধু একজন মানুষের দায়িত্বহীনতার জন্য যদি অকালে ১১ জনের মৃত্যু হয়, তাহলে ঘটনাটিকে গুরুত্বের সঙ্গে নিতে হবে। স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ঘটনার সময় গেটম্যান সাদ্দাম হোসেন ছিলেন না। লেভেল ক্রসিংয়ের বার ফেলা ছিল না। তাই না বুঝেই মাইক্রোবাসটি রেললাইনে উঠে যায়।

রেলওয়ে সাদ্দামকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে। তাঁকে আটক করা হয়েছে। রেলওয়ে পুলিশ তাঁর বিরুদ্ধে মামলাও করেছে। দেখা যাক, তদন্তে সত্য বেরিয়ে আসে কি না। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হলেই সাদ্দামের পেতে হবে কঠোর শাস্তি। কিন্তু সেই কঠোর শাস্তি এই ১১ জন মানুষকে আর ফিরিয়ে আনতে পারবে না।

এমন ঘটনা এর আগেও ঘটেছে, একই এলাকায়, বারইয়ারহাট রেলক্রসিংয়ে। চার বছর আগে, ২০১৮ সালের ২ সেপ্টেম্বর ভোরে একটি যাত্রীবাহী বাস কোনো সংকেত না পেয়ে রেললাইনে উঠে পড়েছিল। সেখানে ছিল না কোনো প্রতিবন্ধক-দণ্ড। ট্রেন এসে বাসটিকে ধাক্কা দিয়ে নিয়ে যায় আধা কিলোমিটার দূরে। ঘটনাস্থলেই মারা যান দুজন। আরও ২০ জন হয়েছিলেন আহত।

দায়িত্বে অবহেলার কারণে এমন সব দুর্ঘটনা হতে পারে, যা আদৌ কেউ ভাবতে পারে না। কিন্তু মিরসরাইয়ে ঘটে যাওয়া ট্রেন দুর্ঘটনার ব্যাপারটা খুব সহজে অনুমেয়। একটা রেল ক্রসিংয়ে গেটম্যান থাকবেন না, কোনো শক্ত প্রতিবন্ধক-দণ্ড থাকবে না, ট্রেন এলে রেললাইন পারাপারের সময় যেকোনো যানের ওই ট্রেনের সঙ্গে সংঘর্ষ হবে—এ কেমন কথা!

সরকারি কাজে গাফিলতির কথা প্রায়ই শোনা যায়। ট্রেন এলে সড়কপথ বন্ধ করে দেওয়ার ওপর মানুষের বাঁচা-মরা নির্ভর করে। কাজটি যিনি করেন, তাঁর ওপর মানুষের জীবন-মরণ নির্ভর করে, এ কথা সম্ভবত গেটম্যানদের ঠিকমতো বোঝানো যায়নি। দেশের বিভিন্ন জায়গায় ট্রেন দুর্ঘটনায় প্রাণ হারানো মানুষদের নিয়ে আলোচনা করতে গেলেই এ ধরনের গাফিলতি ঠিকই চোখে পড়বে।

সাদ্দাম হোসেন ঘটনার সময় উপস্থিত ছিলেন বলে দাবি করলেও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, দুর্ঘটনার পর জুমার নামাজ শেষ করে এসে তিনি উদ্ধারকাজে অংশ নেন। এত বড় একটি দুর্ঘটনার প্রকৃত দায় কার, সেটা বের করা জরুরি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জমকালো দোতলা বাড়িতে দূতাবাস, সামনে সারি সারি কূটনৈতিক গাড়ি—৭ বছর পর জানা গেল ভুয়া

অবশেষে রাজি ভারত, ‘জিতেছে বাংলাদেশ’

বেনজীরের এক ফ্ল্যাটেই ১৯ ফ্রিজ, আরও বিপুল ব্যবহার সামগ্রী উঠছে নিলামে

ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতাকে শুভেচ্ছা জানাতে বিমানবন্দরে পলাতক আসামি

বাংলাদেশ ব্যাংকে নারীদের শর্ট স্লিভ ড্রেস ও লেগিংস নিষেধ, পরতে হবে ‘শালীন’ পোশাক-হিজাব

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত