Ajker Patrika

পরিণয়

সম্পাদকীয়
পরিণয়

আন্না নামের কমবয়সী মেয়েটি দস্তইয়েভ্স্কির মনে আলো জ্বেলেছিল। তখন ‘ক্রাইম অ্যান্ড পানিশমেন্ট’ লিখছেন দস্তইয়েভ্স্কি। আন্না ডিকটেশন নিচ্ছিলেন, তাই লেখার কাজটা এগোচ্ছিল ভালো। আন্নার বাড়িতে জমিয়ে আড্ডা দিতেন তিনি। বৈঠকি গল্পে তাঁর 
তুলনা মেলা ভার। আন্নার মা, বোনেরা উৎকর্ণ হয়ে গল্প শুনত।

এর মধ্যে একদিন যখন গল্প বুনে চলেছেন দস্তইয়েভ্স্কি, তখন আন্নার সঙ্গে কথা হচ্ছিল। ‘আমার গল্পের নায়িকা নায়কের চেয়ে একেবারে আলাদা প্রকৃতির।’

আন্না বললের, ‘খুব সুন্দরী নিশ্চয়?’

দস্তইয়েভ্স্কি বললেন, ‘না, আমার নায়িকা সুন্দরীর দলে পড়ে না। তবে মিয়ানো চেহারা নয়। ত্বকে লাবণ্য আছে।’

‘বড্ড রং চড়িয়ে আঁকছেন আপনার নায়িকাকে।’

‘উঁহু, আমার চেনা মানুষ। আমি তাকে ভালো করে জেনেশুনেই নায়িকা করেছি। শোনো, আমার আর্টিস্ট নায়ক শিল্পীমহলের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে জমায়েতে, মজলিশে নায়িকার সঙ্গে মেলামেশার সুযোগ পাচ্ছিল। যতই মেলামেশা করছিল, ততই ভালোবাসছিল, ততই তার প্রত্যয় দৃঢ় হচ্ছিল, এই মেয়েকে পেলে সে সুখী হবে।’

নায়ক ছিল বয়স্ক, নায়িকা কম বয়সী। ফলে সংশয় তো রয়েছেই। দস্তইয়েভ্স্কি বলে চলেন, ‘তরুণী যদি তাঁকে ভালোবাসা দেয়, তবে কি তা ত্যাগ স্বীকার হবে না? রুগ্‌ণ ঋণগ্রস্ত এক আর্টিস্টের সঙ্গে নিজেকে জড়িয়েছে বলে তাঁর কি অনুশোচনা হবে না? এ রকম অসম বয়সী ভালোবাসাও কি হয়?’

আন্না বললেন, ‘হয়। আমার মতে অসম্ভব নয়। ভালোবাসার কোনো শর্ত হয় না।’ 
দস্তইয়েভ্স্কি বললেন, ‘তুমি কি সত্যিই বিশ্বাস করো 
তুমি যা বললে?’ তারপর দ্বিধাগ্রস্ত কণ্ঠে বললেন, ‘আচ্ছা, 
তার জায়গায় নিজেকে কল্পনা করো তো। ধরো আমিই 
সেই আর্টিস্ট, তুমিই সেই নায়িকা! আমি তোমাকে আমার 
স্ত্রী হতে বলছি।’

বিহ্বল হয়ে পড়েন আন্না। তিনি বলেন, ‘আমি তোমাকে ভালোবাসি। আমি তোমাকে সারা জীবন ভালো বাসব।’তাঁদের বয়সে ছিল ২৫ বছরের ব্যবধান। দস্তইয়েভ্স্কি যখন মারা যান, আন্নার বয়স তখন মাত্র ৩৭ বছর। 

সূত্র: যজ্ঞেশ্বর রায়, লেখকের লেখক দস্তইয়েভ্স্কি, পৃষ্ঠা ৩৭৬-৩৭৮

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ইউটিউবে ১০০০ ভিউতে আয় কত

বাকৃবির ৫৭ শিক্ষকসহ ১৫৪ জনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা

স্ত্রী রাজি নন, সাবেক সেনাপ্রধান হারুনের মরদেহের ময়নাতদন্ত হবে না: পুলিশ

বাংলাদেশে ফেরত পাঠাতে পারে সরকার, ভয়ে কলকাতায় দিলীপ কুমারের আত্মহত্যা

সাবেক সেনাপ্রধান হারুন ছিলেন চট্টগ্রাম ক্লাবের গেস্ট হাউসে, দরজা ভেঙে বিছানায় মিলল তাঁর লাশ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত