Ajker Patrika

কোন্দলে বিএনপিতে স্থবিরতা ৭ বছর ধরে আহ্বায়ক কমিটি মিরসরাইয়ে

নুরুল আলম, মিরসরাই (চট্টগ্রাম) 
আপডেট : ০৯ অক্টোবর ২০২১, ১২: ০৩
Thumbnail image

৭ বছর ধরে আহ্বায়ক কমিটি দিয়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) কার্যক্রম চলছে চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলায়। এই কমিটির সময়ে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনসহ সর্বশেষ দুই পৌরসভা নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল বিএনপি। এসব নির্বাচনে একটিরও ফলাফল বিএনপির পক্ষে আসেনি ওঠেনি। ৭ বছরের মধ্যেও উপজেলা বিএনপির সম্মেলন করতে না পারায় নেতাদের মধ্যকার কোন্দল বেড়েছে।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি ভেঙে দ্রুত সময়ের মধ্যে নতুন আহ্বায়ক কমিটির ঘোষণা দিতে পারে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপি। ২০০৮ সালে ১৬ ইউনিয়নে সম্মেলন করার জন্য চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি অধ্যাপক ডা. নুরুন্নবীকে মিরসরাই উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক করা হয়। এই কমিটির ব্যবস্থাপনায় ২০০৯ সালে তৃণমূলের কাউন্সিলের মাধ্যমে উপজেলা বিএনপির সম্মেলন হয়। এতে ১৬টি ইউনিয়নের কাউন্সিলরদের সরাসরি ভোটে সভাপতি হিসেবে নুরুল আমিন ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নুরুল আমিন নির্বাচিত হন। এরপর ২০১৪ সালে সেই কমিটি ভেঙে দিয়ে নুরুল আমিনকে আহ্বায়ক ও চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন সেলিমকে সদস্য সচিব করে ৯০ দিনের জন্য বর্তমান আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপি। তবে সম্মেলনের মাধ্যমে বিগত ৭ বছরেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করতে পারেনি বর্তমান আহ্বায়ক কমিটি। এই সময়ে উপজেলার ১৬টি ইউনিয়নে আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। তার মধ্যে ৮টি ইউনিয়নে সম্মেলন করা হলেও বাকি ৮টি ইউনিয়নের কমিটি গঠন স্থগিত রয়েছে।

উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের বিএনপির কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কমিটিতে বিগত আন্দোলন-সংগ্রামে অংশ নেওয়া নবীনদের নেতৃত্বে দেখতে চান তাঁরা। ত্যাগীদের কমিটিতে মূল্যায়ন না হলে কোন্দল পিছু ছাড়বে না বলে মনে করেন তাঁরা। বর্তমানে তিনটি ধারায় বিভক্ত উপজেলা বিএনপি। একাদশ সংসদ নির্বাচনে দল মনোনীত প্রার্থী নুরুল আমিন, মিরসরাই উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক নুরুল আমিন ও প্রয়াত এম আলাউদ্দিনের অনুসারীরা এই তিনটি ধারার নেতৃত্বে রয়েছেন। এঁদের একসঙ্গে না করে কমিটি হলে কোন্দল আরও বেড়ে যাবে বলে মনে করেন নেতা-কর্মীরা।

সম্ভাব্য কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে বর্তমান আহ্বায়ক নুরুল আমিন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের মনোনীত প্রার্থী নুরুল আমিন, আবদুল আউয়াল চৌধুরী, শাহীদুল ইসলাম চৌধুরী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. আলমগীরের নাম আলোচনায় রয়েছে। আর সদস্য সচিব হিসেবে বর্তমান সদস্য সচিব সালাউদ্দিন সেলিম, গাজী নিজাম উদ্দিনের নাম ঘুরেফিরে আসছে।

বর্তমান কমিটির সদস্য সচিব সালাউদ্দিন সেলিম বলেন, ‘আমরা দায়িত্ব নেওয়ার পর ১৬টি ইউনিয়নে আহ্বায়ক কমিটি করেছি। ৮টি ইউনিয়নের সম্মেলন করেছি। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে কাজ করেছি। এ ছাড়া কেন্দ্রীয় কর্মসূচি পালনে সাধ্যমতো চেষ্টা করেছি।’

বিগত একাদশ সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী ছিলেন নুরুল আমিন। তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘৯০ দিনের জন্য গঠিত আহ্বায়ক কমিটি ৮ বছরেও পারেনি ১৬টি ইউনিয়নের সম্মেলন করতে। ৪টি ইউনিয়নে অংশগ্রহণমূলক ভোটাভুটিতে কমিটি করেছে। ৪টি ইউনিয়নে একতরফা কমিটি করেছে। আহ্বায়ক নিজের ইউনিয়নে সম্মেলন দিয়ে অজ্ঞাত কারণে স্থগিত করেছেন। ৮ বছরেও সেই রহস্য উদ্ঘাটন হয়নি। সদস্য সচিবও নিজের ইউনিয়নে সম্মেলন করতে ব্যর্থ হয়েছেন। ৮ বছরের আহ্বায়ক কমিটির সফলতা আর কী বলব?’

উপজেলা বিএনপির কমিটি গঠনের বিষয়ে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম আকবর খন্দকারের ব্যক্তিগত মোবাইল ফোন নম্বরে একাধিকবার কল দিয়েও সংযোগ পাওয়া যায়নি।

আগামী ১১ নভেম্বর দ্বিতীয় ধাপে ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সারা দেশের মতো মিরসরাইয়ের ১৬টি ইউপিরও তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। অন্য দলগুলো যখন এখানে নির্বাচনের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত, বিএনপি নেতারা তখন ঘর সামলাতেই হিমশিম খাচ্ছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত