Ajker Patrika

দেরিতে কলেজে যাওয়ার শাস্তি শিক্ষককে মারধর!

ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি
দেরিতে কলেজে যাওয়ার শাস্তি শিক্ষককে মারধর!

কলেজে দেরিতে আসার কারণে পাবনার ঈশ্বরদীর এক কলেজশিক্ষককে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে। গতকাল মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সলিমপুর ডিগ্রি কলেজে এ ঘটনা ঘটে। অভিযোগ রয়েছে, অধ্যক্ষ রবিউল আলম সাবানের কক্ষে ওই কলেজের বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রহমতুল্লাহকে লাঞ্ছিত করা হয়।

এ ঘটনায় গতকাল দুপুরে কলেজে পরিচালনা কমিটির সভাপতি, সদস্য, শিক্ষকেরা, অধ্যক্ষ ও লাঞ্ছিত শিক্ষককে নিয়ে জরুরি সভা হয়। সভায় বিষয়টি ‘ভুল-বোঝাবুঝি’ আখ্যা দিয়ে অধ্যক্ষ দুঃখ প্রকাশ করেন।

সভায় উপস্থিত ছিলেন কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ঈশ্বরদী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ মিন্টু, পাবনা জেলা পরিষদ সদস্য তৌফিকুজ্জামান রতন মহলদারসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।

কলেজের কয়েকজন শিক্ষক জানান, নিয়ম অনুযায়ী শিক্ষকদের সকাল ১০টার মধ্যে কলেজে এসে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করার কথা। কিন্তু গতকাল কলেজশিক্ষক রহমতুল্লাহ সকাল সোয়া ১০টার দিকে অধ্যক্ষের কক্ষে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করতে যান। এরই মধ্যে অধ্যক্ষ ওই শিক্ষককে দেরিতে আসার জন্য খাতায় অনুপস্থিত করেন। এতে শিক্ষক রহমতুল্লাহ অধ্যক্ষকে বলেন, তাঁর পারিবারিক অসুস্থতা ও সড়কে যানজটের কারণে ১৫ মিনিট বিলম্ব হয়েছে।

এ বিষয়ে শিক্ষক রহমতুল্লাহ বলেন, তাঁর ক্লাস ছিল বেলা একটার পর। এ জন্য তিনি সকাল সোয়া ১০টায় মধ্যে কলেজে আসেন। এটা হয়তো তাঁর ভুল ছিল। তারপরও বিলম্বে আসার কারণে তিনি নৈমিত্তিক ছুটি দাবি করে দরখাস্ত দিতে চান অধ্যক্ষকে। না হলে খাতায় স্বাক্ষর করতে দেওয়ার অনুরোধ জানান। এ কথা শোনার পর অধ্যক্ষ ক্ষিপ্ত হয়ে তাঁকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। গালিগালাজ করতে নিষেধ করলে অধ্যক্ষ উত্তেজিত হয়ে তাঁকে চড়-কিল-ঘুষি মারতে থাকেন। তিনি মাটিতে পড়ে গেলে তাঁকে লাথিও মারেন অধ্যক্ষ। একপর্যায়ে পাশের কক্ষ থেকে তিনজন শিক্ষক ছুটে এসে তাঁকে উদ্ধার করেন। মারপিটের কারণে ঠোঁটে ক্ষতও হয়েছে বলে দাবি করেন।

রহমতুল্লাহ বলেন, অধ্যক্ষ মাঝেমধ্যেই শিক্ষকদের লাঞ্ছিত ও অশালীন ভাষায় গালিগালাজ করেন। এ ঘটনায় তিনি কোনো মামলা বা অভিযোগ করবেন না। কলেজ পরিচালনা কমিটি যে সিদ্ধান্ত নেবে, তিনি তা মেনে নেবেন বলে জানান।

সভায় উপস্থিত ব্যবস্থাপনা কমিটির এক সদস্য বলেন, অধ্যক্ষ মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। তবে তিনি দেরিতে আসায় শিক্ষককে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন; কিন্তু মারধর করেননি। 
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সেলিম আক্তার বলেন, শিক্ষক অনিয়ম করলে চাকরিবিধি অনুযায়ী অধ্যক্ষ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন; কিন্তু তিনি কাউকে মারধর করতে পারেন না। এই অন্যায়ের জন্য অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হতে পারে।

অভিযোগ সম্পর্কে অধ্যক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাঁর মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পি এম ইমরুল কায়েস বলেন, ‘ঘটনা সম্পর্কে এখনো আমাকে জানানো হয়নি। তবে এ নিয়ে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত সড়ক কার্পেটিং বিচারপতি খিজির হায়াতের, প্রমাণ পেয়েছে দুদক

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

এনবিআর চেয়ারম্যানের কক্ষের সামনে কর্মকর্তাদের অবস্থান

‘ভারতে ঢুকে’ পাকিস্তানি সেনাদের গুলি, সীমান্তে সংঘাত গড়াল ষষ্ঠ দিনে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত