Ajker Patrika

বারবার একই ফল, বিজয়ী দলের নাম অস্ট্রেলিয়া

বোরহান জাবেদ, ঢাকা
আপডেট : ১৬ নভেম্বর ২০২১, ১২: ০১
বারবার একই ফল, বিজয়ী  দলের নাম অস্ট্রেলিয়া

২০১৫, ২০১৯ ও ২০২১–সর্বশেষ তিনটি বিশ্বকাপ একই বিন্দুতে এসে মিলেছে। তিনটিতেই হারের পিঠে নিউজিল্যান্ডের নাম। দুটিতে প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়া, একটিতে ইংল্যান্ড। ইংলিশদের বিপক্ষে তাও অদ্ভুত এক সমীকরণের ফাঁদে কাটা পড়ে কিউইদের স্বপ্ন। বাকি দুটিতে অত দূর যাওয়ার প্রয়োজনই পড়েনি। অজিদের সামনে দুবারই অসহায় আত্মসমর্পণ করতে হয়েছে।

তবে অস্ট্রেলিয়ার সামনে নিউজিল্যান্ডের এমন ভেঙে পড়া নতুন নয়। নকআউট পর্বে এবারের বিশ্বকাপ নিয়ে অজিদের বিপক্ষে ১৭ ম্যাচের সবকটিতেই হার তো সে কথাই বলছে। কোনোটিতে কিউইরা হয় টস জিতে ব্যাটিং বেছে নিয়ে, না হয় অস্ট্রেলিয়া তাদের ব্যাটিংয়ে পাঠিয়ে কার্যসম্পাদন করেছে।

এবার দুবাইয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে যেমন টস হেরে আগে ব্যাটিং করে সর্বোচ্চ রানের লক্ষ্য দিয়েও অজিদের আটকাতে পারেনি। ম্যাচ হারের কারণ হিসেবে অবশ্য টস হারের কথাও উঠছে। তবে পরে ব্যাটিং করলেও কি আদৌ কেন উইলিয়ামসনদের ভাগ্য পরিবর্তন হতো?

এখনকার নিউজিল্যান্ড দলটা মূলত ব্রেন্ডন ম্যাককালামের হাতে গড়া। সেটাকে আরও শাণিত করে এক সুতোয় গেঁথেছেন উইলিয়ামসন। জাতি হিসেবে কিউইরা যেমন শান্ত-সৌম্য, এই দলটাও তার ব্যতিক্রম নয়। দাম্ভিকতাকে কখনোই নিজেদের বৈশিষ্ট্য মানেনি তারা। এর বিপরীত অস্ট্রেলিয়া। এই দাম্ভিকতা দিয়েই অ্যালান বোর্ডার থেকে হালের ডেভিড ওয়ার্নাররা বিশ্বজয় করেছেন। ব্যাটিংয়ে আক্রমণকে একমাত্র সংজ্ঞা মানলেও দল হিসেবে নিউজিল্যান্ডকে অস্ট্রেলিয়া নয়, বরং নিজেদের চেতনা ধারণ করে এগিয়ে যাওয়ার কথা বলেছিলেন ম্যাককালাম। সেই পথেই হাঁটছেন তাঁর উত্তরসূরি উইলিয়ামসনও।

এই গুণের কারণেই যে দলের বিপক্ষেই হোক না কেন সমর্থকের অভাব পড়ে না নিউজিল্যান্ডের। অন্য দলগুলোর সঙ্গে কিউইদের এই শক্তির জায়গাটা আবার অস্ট্রেলিয়ার কাছে দুর্বলতা! যে দুর্বলতায় বারবার অস্ট্রেলিয়া বাধায় আটকা পড়ছে নিউজিল্যান্ড। এক সময় ভারতের ওপর নিয়মিত ছড়ি ঘোরানো অজিরা এখন সেই ভারতের সঙ্গে পেরে ওঠে না। ভারতের জন্য ‘কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলার’ যে কাজটা সৌরভ গাঙ্গুলি সূচনা করেছিলেন, সেটাই এগিয়ে নিচ্ছেন বিরাট কোহলি। অস্ট্রেলিয়ার আগ্রাসন অস্ট্রেলিয়াকে দেখিয়েই তাদের মাটিতে সর্বশেষ দুটি টেস্ট সিরিজ জিতেছে ভারত।

এই কৌশল অবশ্য পূর্বসূরিদের কাছ থেকেও নিতে পারেন উইলিয়ামসনরা। ১৯৯২ বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে অ্যালান বোর্ডারের অস্ট্রেলিয়াকে এই টোটকায় তো হারিয়েছিল মার্টিন ক্রোর নিউজিল্যান্ড। ম্যাচের আগে বিশ্বকাপের প্রচারমূলক ফটো স্যুট ছিল দুই দলের। তো একই ট্রেনে গন্তব্যে যেতে হয় দুই দলকে। ট্রেন থেকে নেমে কিউই কোচ ওয়ারেন লিস একটা শব্দও খরচ না করে অজিদের পাশ কাটিয়ে নিজেদের জায়গায় চলে যান। প্রতিপক্ষের সঙ্গে অজিরা যে কাজটা প্রতিনিয়ত করে, সেটাই নিজেদের সঙ্গে হতে দেখে হয়তো ভালোভাবে নিতে পারেননি বোর্ডার-ডিন জোন্সরা।

স্টিফেন ফ্লেমিংয়ের নিউজিল্যান্ডও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সাফল্য পেয়েছে। যেখানে ডিওন ন্যাশ, স্টক স্টাইরিসদের আগ্রাসনের ব্যাপারটা উঠে আসে। এখানেই কি অজিদের সঙ্গে পিছিয়ে যাচ্ছেন উইলিয়ামসনরা? সুপার টুয়েলভে ভারতকে বিদায় করে পাকিস্তানকে সঙ্গী করে সেমিতে উঠেছিল নিউজিল্যান্ড। আবুধাবিতে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে লর্ডসের প্রতিশোধও নেয়। কিন্তু ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার সামনে পড়তেই যেন ‘পুরোনো রোগ’ পেয়ে বসে কিউইদের মনে। তবে কি এরপর থেকে অজিদের বিপক্ষে সাফল্যের দেখা পেতে আগ্রাসনকেই ঢাল হিসেবে বেছে নেবেন উইলিয়ামসনরা?

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত