Ajker Patrika

গরু-খাসির মাংসে যক্ষ্মার জীবাণু, ঝুঁকিতে মানুষ

ইলিয়াস আহমেদ, ময়মনসিংহ
আপডেট : ১৮ মে ২০২২, ১৪: ০১
গরু-খাসির মাংসে যক্ষ্মার জীবাণু, ঝুঁকিতে মানুষ

বাজারে বিক্রি করা গরু এবং খাসির মাংসে মিলেছে যক্ষ্মার জীবাণু। এতে ঝুঁকিতে রয়েছে মানুষ। সম্প্রতি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় উঠে এসেছে এমন তথ্য। সে ক্ষেত্রে মাংস বিক্রির জন্য জবাই করা এসব পশুকে আগে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞেরা। পরীক্ষা-নিরীক্ষায় রোগমুক্ত প্রমাণ হলে তবেই পশুগুলো জবাই করার পরামর্শ দিয়েছেন তাঁরা।

গবেষণা সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা গেছে, গরু ও খাসির মাংস নিয়ে ২০১৩ সাল থেকে গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক দল গবেষক। প্রতি বছর সারা দেশে এক থেকে দেড় শ গরু ছাগল পরীক্ষা করে শতকরা ৩ ভাগ গরু এবং শতকরা ১৫ ভাগ ছাগলে যক্ষ্মার জীবাণু পান তাঁরা। তাঁদের গবেষণায় দেখা যায় যক্ষ্মার জীবাণু প্রাণী থেকে মানুষের শরীরে ছড়ায়। এ কারণে বাজারে গরু, খাসি ও ছাগল জবাই করার আগে পরীক্ষা-নিরীক্ষা প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন গবেষক দল। এ ছাড়া ঝুঁকি এড়াতে বেশি তাপ দিয়ে মাংস রান্নার করার কথা বলছেন তাঁরা।

গবেষক দলের প্রধান বিএইউ রিসার্চ সিস্টেমের (বাউরেস) পরিচালক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যাথলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. আবু হাদি নূর আলী খান বলেন, দীর্ঘ গবেষণায় জবাই করে বাজারে বিক্রি করা পশুর যক্ষ্মার জীবাণু পাওয়া গেছে। তবে এতে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। সবাইকে সচেতন হলে এটা প্রতিরোধ করা সম্ভব। গরু ও খাসি জবাইয়ের আগে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে নিতে হবে। মাংস প্রক্রিয়াজাতকরণ এবং রান্না করার ক্ষেত্রেও সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

অধ্যাপক ড. আবু হাদি নূর আলী খান আরও বলেন, এসব জীবাণু মানুষের শরীরে দীর্ঘদিন অবস্থান করলেও এর লক্ষণ সহজে প্রকাশ পায় না। এজন্য এটি মানুষের জন্য আরও মারাত্মক।

জেলা সিভিল সার্জন নজরুল ইসলাম বলেন, যাঁরা কাঁচা দুধ খান এবং যাঁরা মাংস প্রক্রিয়াজাতকরণের কাজে জড়িত, তাঁরা বেশি ঝুঁকিতে রয়েছেন। তবে উচ্চ তাপমাত্রায় মাংস রান্না করে খেলে ঝুঁকি নেই। পরামর্শ হিসেবে ডা. নজরুল ইসলাম আরও বলেন, মানবস্বাস্থ্য ঝুঁকিমুক্ত রাখার জন্য পশু জবাইয়ের আগে পশুচিকিৎসকের কাছ থেকে ছাড়পত্র নিতে হবে।

ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের মেডিকেল অফিসার আশফিয়া আমরিন বলেন, মাংস প্রক্রিয়াজাতকরণ এলাকা এবং বাড়ির রান্নাঘর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। পাশাপাশি হাতে গ্লাভস পরে মাংস প্রক্রিয়াজাতকরণ এবং মাংস রান্না করতে হবে। মুখে পরতে হবে মাস্ক। এরপর সাবান-পানি দিয়ে হাতসহ প্রয়োজনীয় অংশ ভালোভাবে ধুয়ে ফেলতে হবে। তবেই পশু থেকে আসা যক্ষ্মার জীবাণু থেকে রক্ষা মিলবে।

ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইউনুস আলী বলেন, মাংসে যক্ষ্মার জীবাণু রোধে নগরীতে কসাইখানা বৃদ্ধির পাশাপাশি পশু পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য একটি পরীক্ষাগার স্থাপন করা হবে। পশু পরীক্ষার জন্য ভেটেরিনারি সার্জন নিয়োগ করারও পরিকল্পনা রয়েছে তাঁদের। সবাইকে সচেতন হয়ে যক্ষ্মার ঝুঁকি মোকাবিলার আহ্বান জানান তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ