Ajker Patrika

কর্মসৃজন প্রকল্পে শ্রমিক নিয়োগে অনিয়ম

ইসলামপুর (জামালপুর) প্রতিনিধি
আপডেট : ২২ জানুয়ারি ২০২২, ১৩: ১১
কর্মসৃজন প্রকল্পে শ্রমিক নিয়োগে অনিয়ম

জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার চরগোয়ালিনী ইউনিয়নে অতিদরিদ্রদের জন্য ৪০ দিনের কর্মসংস্থান কর্মসূচি গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন (ইজিপিপি) প্রকল্পে বরাদ্দ অনুযায়ী শ্রমিক নিয়োগ না দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চরগোয়ালিনী ইউপিতে ইজিপিপির চারটি প্রকল্পের বিপরীতে বরাদ্দ আসে ২৭ লাখ ৬৮ হাজার টাকা। এসব প্রকল্পের আওতায় ১৭৩ জন অতিদরিদ্র শ্রমিকের সুবিধা পাওয়ার কথা। প্রকল্প বাস্তবায়নে সার্বিক তত্ত্বাবধানে রয়েছেন ইউপি চেয়ারম্যান।

প্রকল্পের কার্যাদেশে উল্লেখ রয়েছে, দরিদ্র জনগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত ব্যক্তি যাঁর কাজের সামর্থ্য আছে এবং ভূমিহীন। বাড়ি ছাড়া ৫ শতাংশের কম পরিমাণ জমি আছে। যে ব্যক্তির মাসিক আয় ৪ হাজার টাকার কম অথবা যাঁর মাছ চাষের জন্য পুকুর বা কোনো প্রাণিসম্পদ নেই। মজুর, রাজমিস্ত্রি, কাঠমিস্ত্রি, ইলেকট্রিক মিস্ত্রি, গ্যাস মিস্ত্রি এবং কারখানা শ্রমিক অথবা যাঁর অন্য কোনো কাজের সুযোগ নেই। এমন অদক্ষ নারী-পুরুষ নির্বিশেষে একটি পরিবার থেকে মাত্র একজন এই কাজের জন্য নির্বাচিত হবেন।

৩৫ সেন্টিমিটার মাটি কাটার চুক্তিতে প্রতিদিন মাথাপিছু ৪০০ টাকা মজুরির ভিত্তিতে অতিদরিদ্র শ্রমিকেরা ৪০ দিন মাটি কাটার কাজ করার সুবিধা পাবেন প্রকল্পের আওতায়। বৃহস্পতি ও শুক্রবার ছাড়া প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত শ্রমিকদের মাটি কাটার কথা।

গত বুধবার সরেজমিনে দেখা যায়, ৫৭ নম্বর প্রকল্প দেওয়া হয়েছে চরগোয়ালিনী ইউনিয়নের পিরিজপুর হাবিলের বাড়ি থেকে ঈদগাহ মাঠ হয়ে নদীপাড় গুজুর দোকান পর্যন্ত রাস্তা মেরামত। এ প্রকল্পে ৪৭ জন শ্রমিকের বিপরীতে বরাদ্দ আসে ৭ লাখ ৫২ হাজার টাকা। প্রকল্পটিতে কাজ করতে দেখা যায় ৪৭ জন শ্রমিকের মধ্যে মাত্র ৮ জনকে।

অপরদিকে, ৫৮ নম্বর প্রকল্প দেওয়া হয় লক্ষ্মীপুর বালুরচর চরপাড়া নদীপাড় থেকে জামে মসজিদ হয়ে শেওড়াগাছ পর্যন্ত রাস্তা মেরামত। এ প্রকল্পে ৪০ জন শ্রমিকের বিপরীতে বরাদ্দ দেওয়া হয় ৬ লাখ ৪০ হাজার টাকা। এতে ৪০ জন শ্রমিকের মধ্যে ২৮ জনকে রাস্তায় মাটি কাটার কাজ করতে দেখা যায়।

পিরিজপুর গ্রামের আকবর আলী, হোসেন শেখ ও আমীর উদ্দিন বলেন, ‘শুনেছি এলাকার অতিদরিদ্র এবং মৌসুমি বেকার শ্রমিক পরিবারের জন্য সরকার ইজিপিপি প্রকল্প বরাদ্দ দিয়েছে। কিন্তু ইউপি চেয়ারম্যান আমাদের মতো অতিদরিদ্র শ্রমিকদের প্রকল্পের কাজে নিয়োগ দেননি।’

ডিগ্রিরচর নতুনপাড়া গ্রামের হইবর আলী, নাজমা বেগম ও মনিরা খাতুন বলেন, ‘রাস্তা মেরামত করতে কোনো শ্রমিককে দেখা যায়নি। প্রকল্পে কাদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, সেটাও আমরা জানি না।’

তবে চরগোয়ালিনী ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল্লাহ সরকার বলেন, ‘নিয়মানুযায়ী শ্রমিক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। যথাযথভাবে প্রকল্পের কাজ করা হবে।’

প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মেহেদী হাসান টিটু বলেন, কার্যাদেশ অনুযায়ী প্রকল্পের কাজ না করা হলে, টাকা উত্তোলন করতে দেওয়া হবে না। প্রকল্পের কাজ যথাযথভাবে না হলে, সরকারের টাকা ফেরত দেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত