Ajker Patrika

মাদারীপুরে ধুকছে স্বাস্থ্যসেবা

সাগর হোসেন তামিম, মাদারীপুর
আপডেট : ১৭ অক্টোবর ২০২১, ১০: ০৩
মাদারীপুরে ধুকছে স্বাস্থ্যসেবা

মাদারীপুর সদর হাসপাতালসহ অন্য উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলো নানা সমস্যায় জর্জরিত। একদিকে চিকিৎসক ও দক্ষ জনবল সংকট। অন্যদিকে প্রয়োজনীয় ওষুধের অভাব। আর চিকিৎসা সরঞ্জাম নষ্ট থাকায় কাঙ্ক্ষিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে রোগীরা। নানা ধরনের সংকট থাকায় জেলার সরকারি হাসপাতালগুলোতে সেবা নিতে আসা রোগীদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়।

মাদারীপুর সদর হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে হাসপাতালটি ১০০ শয্যার হলেও জনবল রয়েছে ৫০ শয্যারও কম। শিশু বিশেষজ্ঞ, চক্ষু বিশেষজ্ঞ, রেডিওলজিস্ট, ফিজিওথেরাপিসহ গুরুত্বপূর্ণ বিভাগের চিকিৎসক নেই। ইসিজি মেশিনটিও নষ্ট। দক্ষ টেকনিশিয়ান না থাকায় করা যাচ্ছে না আলট্রাসোনোগ্রাম ও উন্নতমানের পরীক্ষা। নষ্ট হচ্ছে আধুনিক যন্ত্রপাতি। ফলে রোগীদের ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল বা ঢাকায় দৌড়াতে হচ্ছে। এদিকে ৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন ছয় তলা ভবন নির্মাণ করে ২৫০ শয্যায় উন্নতিকরণের লক্ষ্য থাকলেও দুই বছরে শুরু হয়নি কার্যক্রম।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জেলার সদর হাসপাতালসহ তিনটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রয়েছে। যেখানে রয়েছে জনবল সংকট। কোনো হাসপাতালেই নেই নির্দিষ্টসংখ্যক চিকিৎসক। নার্স সংকট তো রয়েছেই। নেই প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জামও।

মাদারীপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রহিম মুন্সী বলেন, ‘কোনো সিট খালি নেই। তাই জরুরি বিভাগে ডাক্তার দেখাইয়া চলে যাচ্ছি। অনেকে হাসপাতালের মেঝেতে শুয়ে আছেন। এভাবে জেলা সদর হাসপাতালে হলে কীভাবে আমরা চিকিৎসা নেব। এর থেকে বাড়ি চলে যাওয়াই ভালো।’

সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রুবেল হোসেন বলেন, ‘লোকজন হাসপাতালে সেবা নিতে এসে প্রবেশপথেই ময়লা-আবর্জনা দেখতে পাচ্ছেন। হাসপাতালের ভেতরেও নানা জায়গায় ময়লা ফেলে রাখা হচ্ছে। এতে রোগীরা আরও অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের নীরব থাকাটা অত্যন্ত দুঃখজনক।’

সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার নূরুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের সদর হাসপাতালে ২২ জন মেডিকেল অফিসার থাকার কথা, সেখানে আছে ১৪ জন। আমরা বারবার স্বাস্থ্য বিভাগে বিষয়টি লিখিতভাবে জানিয়েছি। এরপরও চিকিৎসক পাচ্ছি না। এর কারণে অনেক সময় রোগীদের যথাযথ চিকিৎসা সেবা দিতে পারি না।’

রাজৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা প্রদীপ চন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘চার বছর আগে রাজৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নতিকরণ হয়েছে। এতে বেড আর খাবার বেড়েছে, কিন্তু লোকবল বাড়েনি। সেই আগের মতোই চিকিৎসক, নার্স আর কর্মচারীদের দিয়ে ৫০ শয্যা চালাচ্ছি।’

লোকবল সংকটে মুখ থুবড়ে পড়েছে কালকিনি ও শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স দুটিও। তবে শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক সংকট নেই। অবকাঠামো উন্নত হলে সেখানে চিকিৎসার মান আরও বাড়বে বলে দাবি স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা শশাঙ্ক চন্দ্র ঘোষের।

ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন একরামুল কবির বলেন, ‘আমরা জোর চেষ্টা করছি, সদর হাসপাতালটি ২৫০ শয্যা করার। ইতিমধ্যে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন পেয়েছি। এখন শুধু স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে লোকবল নিয়োগ দিলেই চালু করা সম্ভাব্য হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

যুদ্ধের পর এ যেন এক নতুন ইরান, জনগণের মতো বদলে গেছে সরকারও

তেহরান ওপর থেকে সুন্দর, একদিন যেতে চাই: ইরানে বোমা ফেলা ইসরায়েলি পাইলট

ইরানের পরমাণু কর্মসূচিতে ৩০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের কথা ভাবছেন ট্রাম্প

সাইপ্রাসে বিপুল জমি কিনছে ইসরায়েলিরা, দেশ বেদখলের শঙ্কা রাজনীতিবিদদের

হোয়াটসঅ্যাপের ব্যবহার নিষিদ্ধ করল বিমান বাংলাদেশ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত