Ajker Patrika

সেচসংকটে বোরো চাষে কমছে আগ্রহ

ফরিদপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১২: ২৩
সেচসংকটে বোরো চাষে কমছে আগ্রহ

ফরিদপুরে দিন দিন শুষ্ক মৌসুমে ভূগর্ভের পানি পাওয়া দুষ্কর হয়ে উঠছে। এতে চাষাবাদের অর্ধেক খরচ পড়ছে শুধু সেচের পানির জন্যই। আবার ধানের ভালো দাম না পাওয়ায় লোকসানে পড়ে বোরো চাষ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন জেলার কৃষকেরা।

সমীক্ষায় দেখা গেছে, ১০ বছরের এ জেলায় বোরো ধানের আবাদ কমেছে প্রায় ৩০ হাজার হেক্টর। তবে জেলা কৃষি বিভাগ বলছে, বোরোর আবাদ কমলেও অন্য ফসলের আবাদ বেড়েছে।

জেলার ধানচাষিরা জানান, বোরো ধান চাষে সেচের খরচ ছাড়াও শ্রমিক, কীটনাশক এবং সারের দাম বেশি হওয়ায় উৎপাদন খরচ অনেক বেশি পড়ে। অন্যদিকে উৎপাদিত ধানের ন্যায্য মূল্য পাওয়া যায় না। ফলে প্রতি বছরই জেলায় বোরো চাষের পরিমাণ কমছে।

জেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ফরিদপুর জেলার নয়টি উপজেলায় ২০১০-১১ সালে জেলায় বোরো ধানের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৯ হাজার ৪১৭ হেক্টর। এর বিপরীতে আবাদ হয় ৩৮ হাজার ছয় হেক্টর আর ২০২০-২০২১ সালে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৩ হাজার হেক্টর। সেখান আবাদ হয় মাত্র ৭ হাজার ৪০০ হেক্টর। সর্বশেষ চলতি মৌসুমে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২১ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে। বিপরীতে বোরো আবাদ হয়েছে মাত্র ৭ হাজার ৯০০ হেক্টর জমিতে।

বোরো চাষে এই ধসের কারণ জানতে চাইলে ফরিদপুরের সদর উপজেলার চরমাধবদিয়া ইউনিয়নের চাষি হাফিজ মাতুব্বর, মোতালেব মোল্লা, করিম শেখসহ বেশ কয়েকজন কৃষক জানান, গত কয়েক বছর আগে সেচ মেশিন দিয়ে ঘণ্টায় যে পরিমাণ পানি উত্তোলন করা যেত এখন সেখানে তিন ঘণ্টায়ও সেই পরিমাণ পানি তোলা যায় না। আর বোরো চাষে সেচ ছাড়াও জ্বালানির দাম, শ্রমিক খরচও বেশি। অন্যদিকে উৎপাদিত এ ধানের দাম কাঙ্ক্ষিত না হওয়া বোরো চাষে কৃষকদের আগ্রহ কমেছে।

তারা আরও বলেন, ‘তাই আমরা বোরো বাদ দিয়ে এখন অন্য ফসলের দিকে ঝুঁকছি। এই মৌসুমে গম ও মসুরীর চাষ বেড়েছে।’

জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী পার্থ প্রতিম সাহা জানান, ভূগর্ভস্থের পানি বেশি ব্যবহারের ফলে গত কয়েক যুগ ধরে পানি স্তরে নেমে যাচ্ছে। সেচের জন্য যদি কৃষকেরা উপরিভাগের পানি ব্যবহার করেন তাহলে হয়তো ভূগর্ভস্থের পানির লেভেল ঠিক থাকবে।

পার্থ প্রতিম আরও বলেন, এ বিষয়ে এখন থেকেই সংশ্লিষ্ট বিভাগকে পরিকল্পনা করতে হবে। অন্যথায় ভবিষ্যতে বড় সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর উপপরিচালক ড. হযরত আলী জানান, শুষ্ক মৌসুমে ধান চাষ করতে গেলে ভূগর্ভস্থের পানির ওপর নির্ভর করতে হয়। কিন্তু দিন দিন যে হারে পানির স্তর নেমে যাচ্ছে তা কৃষির জন্য শঙ্কা। তবে আশার বিষয় এই যে জেলায় বোরো ধানের আবাদ কমলেও অন্য ফসলের আবাদ বেড়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পুলিশের তিন পদে অতিরিক্ত: তিনজনে একজন বাড়তি

ইরানে সরকার উৎখাতের পরিকল্পনা জানত রাশিয়া, তেহরানে বিতর্ক তুঙ্গে

ভারতে পোশাকের অর্ডার স্থগিত করছে মার্কিন ক্রেতারা, বাংলাদেশ-ভিয়েতনামে কারখানা স্থানান্তরের পরামর্শ

ট্রেনের কেবিনের বালিশ, চাদর, কম্বলের ভাড়া দ্বিগুণ করার চিন্তা

ডোপ টেস্টে পজিটিভ, চবিতে শিক্ষকতা থেকে বাদ দুই প্রার্থী

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত