Ajker Patrika

হাসপাতালের ফটকেই ভোগান্তি

নেত্রকোনা প্রতিনিধি
আপডেট : ১০ ডিসেম্বর ২০২১, ১৬: ২২
হাসপাতালের ফটকেই ভোগান্তি

নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালের প্রধান ফটকের সামনেই সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ভ্যান ও রিকশার জটলা। সঙ্গে রয়েছে ভ্রাম্যমাণ দোকান। এতে হাসপাতালের সামনে সৃষ্টি হচ্ছে যানজট। ফলে রোগীদের পোহাতে হচ্ছে ভোগান্তি। সঙ্গে হাসপাতালের ছয়তলা ভবন নির্মাণের কারণে প্রধান প্রবেশপথ দীর্ঘদিন ছিল বন্ধ। এক সপ্তাহ আগে প্রবেশপথটি খুলে দেওয়া হলেও কমছে না দুর্ভোগ।

প্রায় ২৫ লাখ মানুষ নেত্রকোনা সদর হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নেন। হাসপাতালটির পরিসংখ্যান বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গত এক সপ্তাহে প্রতিদিন প্রায় দুই থেকে আড়াই শ রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগে চিকিৎসা নিয়েছেন প্রতিদিন গড়ে ৫০ থেকে ৬০ জন। তবে প্রায় দেড় বছর হাসপাতালের প্রধান ফটক বন্ধ থাকায় চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের নানা ঝামেলা পোহাতে হয়। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তি পোহাতে হয় গর্ভবতী নারী ও প্রসূতি মায়েদের।

গত শুক্রবার শহরের একটি ক্লিনিকে বিজয়া সরকার নামের এক নারীর নরমাল ডেলিভারি হয়। বাচ্চা জন্মের পরেই বাচ্চাটির শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। ক্লিনিকের চিকিৎসক বাচ্চাটিকে নেত্রকোনা সদর হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেন। বাচ্চাটিকে শহরের বারহাট্টা রোড থেকে জয়নগর সদর হাসপাতালে নিয়ে আসেন স্বজনেরা। কিন্তু হাসপাতালে ফটকের সামনে যানজটের কারণে আটকে পড়েন। পরে হেঁটেই বাচ্চাটিকে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়।

বিজয়ার স্বামী বিজয় সরকার বলেন, ‘হাসপাতালে গাড়ি ঢোকা তো দূরের কথা, হেঁটে রোগী নিতেই দুর্ভোগে পড়তে হয়। নির্মাণকাজের জন্য বালুর ট্রাক ঢুকছে। প্রবেশপথে একটি সিমেন্ট বোঝাই ড্রাম ট্রাক আটকে গেছে। ফলে হাসপাতালের ভেতরে ঢুকতে বেগ পেতে হয়।’

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, হাসপাতালে ঢোকার পথে সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও রিকশাসহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহনের জটলা রয়েছে। এখানে নিয়মিত একজন পুলিশ থাকলেও যানবাহন চালকদের সরাতে হিমশিম খেতে হয় তাঁকে। তাঁদের সরিয়ে দিলেও কিছুক্ষণেই মধ্যে আবারও সারি বেঁধে সিএনজিচালক অটোরিকশা ভিড় করে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং পুলিশ কোনো কিছুকেই তোয়াক্কা করেন না তাঁরা।

হাসপাতালের প্রসূতি ওয়ার্ডে চিকিৎসা নিতে আসা লাভলী আক্তার নামের এক গর্ভবতীর মা হোসনে আরা বলেন, ‘মেয়ের চিকিৎসা করাব কী? হাসপাতালে ঢুকতেই জীবন বের হয়ে গেছে।’

দায়িত্বরত আনোয়ার নামের এক পুলিশ কনস্টেবল বলেন, ‘নতুন ভবনটি নির্মাণের কারণে বালু, সিমেন্ট, ইট নিয়ে বড় বড় ট্রাক হাসপাতাল গেটে এসে দাঁড়ায়। সেই সঙ্গে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, অটো ও রিকশা এখানে জটলা বেঁধে থাকে। সরিয়ে দিলেও তারা আবারও এসে জটলা পাকায়। আমার একার পক্ষে সামলানো কঠিন হয়ে পড়ে। যে কারণে রোগীদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়।’

হাসপাতালের গেটের সামনে বাচ্চাদের খেলনা দোকান বসে প্রতিনিয়ত। এ ছাড়া আচার, আমড়া, জাম্বুরাসহ বিভিন্ন ভ্রাম্যমাণ দোকান। হাসপাতালের সামনে সড়কের পাশে অন্তত ৮ থেকে ১০টি চায়ের দোকান থাকায় যানজট লেগেই থাকে। এই ভিড় ঠেলে হাসপাতালে রোগী নিতে হিমশিম খেতে হয় স্বজনদের।

এ ছাড়া হাসপাতালের সামনের সড়কটিও রোগীদের দুর্ভোগের কারণ। জয়নগর জেলা সার্কিট হাউস থেকে নেত্রকোনা সদর হাসপাতাল হেঁটে যেতে সময় লাগে মাত্র ৫ মিনিট। কিন্তু সড়কটি এতই ভাঙাচোরা যে রোগীদের এই পাঁচ মিনিটের পথ যেতে হাঁসফাঁস করতে হয়।

তবে হাসপাতালের রোগীদের বিড়ম্বনার বিষয়টি স্বীকার করে নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আবু সাঈদ মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘প্রধান ফটক খুলে দেওয়া হয়েছে। এরপরও রোগীদের কিছু অসুবিধা হচ্ছে। প্রবেশপথে রোগীদের ভোগান্তি কমাতে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

নেত্রকোনা জেলার সিভিল সার্জন ডা. মো. সেলিম মিয়া বলেন, ‘ছয়তলা ভবনের নির্মাণের জন্য রোগীদের অসুবিধা হচ্ছে। এ জন্য আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখিত। সাধ্য অনুযায়ী যতটুকু করার করছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ঋণ শোধ না করে মরলে উল্টো ১০ হাজার দেব—পরদিন গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ

নেছারাবাদে জামায়াতের ফরম পূরণ আওয়ামী লীগ নেতার

আমেরিকার বিরুদ্ধে লড়তে ৩০ লাখের হাতে অস্ত্র, ৪৫ লাখকে গেরিলা প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন মাদুরো

নির্বাচনে মধ্যপন্থীদের জয়, প্রথম সমকামী প্রধানমন্ত্রী পাচ্ছে নেদারল্যান্ডস

স্থলমাইন বিস্ফোরণে দুই পা উড়ে যাওয়া সেই বিজিবি সদস্য মারা গেছেন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ