Ajker Patrika

কার্ড দিতে টাকা আদায়

গঙ্গাচড়া ও তারাগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট : ২৩ মার্চ ২০২২, ১৫: ১০
কার্ড দিতে টাকা আদায়

গঙ্গাচড়ায় ভর্তুকি মূল্যে টিসিবির পণ্য বিতরণের জন্য ফ্যামিলি কার্ড দিতে টাকা আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রতি কার্ডের বিপরীতে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা নেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে কোলকোন্দ ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে উপকারভোগীরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে অভিযোগ করেছেন।

ইউএনওর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গঙ্গাচড়ার ৯ ইউনিয়নে টিসিবির পণ্য বিক্রির জন্য প্রায় ২৫ হাজার উপকারভোগী নির্বাচন করা হয়। ইউনিয়নের জনপ্রতিনিধিরা এই তালিকা তৈরি করেছেন। তালিকার বিপরীতে ইউএনওর কার্যালয় থেকে কার্ড জনপ্রতিনিধিদের সরবরাহ করা হয়। উপকারভোগীরা সেই কার্ড সংগ্রহ করে টিসিবির ন্যায্যমূল্যের পণ্য ডিলারদের কাছ থেকে সংগ্রহ করছেন। কিন্তু অভিযোগ উঠেছে, কোলকোন্দ ইউনিয়নের জনপ্রতিনিধিরা ওই কার্ড উপকারভোগীদের দেওয়ার সময় টাকা আদায় করেছেন।

গত সোমবার কোলকোন্দের পীরেরহাট বাজারে দ্বিতীয় দিনের মতো টিসিবির পণ্য বিক্রি করা হয়। সেখানে গেলে দেখা যায় অব্যবস্থাপনার চিত্র। রোদে দাঁড়িয়ে লোকজন ঠেলাঠেলি করে পণ্য কিনছিলেন।

এ সময় মাস্টারপাড়া গ্রামের শান্তনা রানী অভিযোগ করে বলেন, ‘হামরা কি কার্ড মাংনায় পাছি? কার্ড নেওয়ার সময় তো মেম্বারোক আড়াই শ টাকা দিছি। এখন ফির ঠেলাঠেলি করি মাল নিবার নাগোছে। গরিবের ভালো একটেও নাই।’

শান্তনার সঙ্গে সুর মিলিয়ে দক্ষিণ কোলকোন্দ পূর্বপাড়া গ্রামের গোলাপী বেগম বলেন, ‘মোরওটে হামার এলাকার মিজান মেম্বার কার্ড দিবার সময় উন্নয়নের করবে কয়া ২০০ টাকা নিছে। টাকা ছাড়া কার্ড দিবার চায়ে না। ওই জন্যে বাধ্য হয়া ২০০ টাকা দিয়া কার্ড নিছুন।’

এ ছাড়া রিতা রানী, ফরিদুল ইসলাম, বিষ্ণু কুমার বর্মণসহ অন্তত ২০ জন অভিযোগ করেন, চেয়ারম্যান ও সদস্যরা ২০০ টাকা চৌকিদারি ট্যাক্স এবং ৫০ টাকা নাশতা খাওয়ার জন্য আদায় করেছেন। কিন্তু তাঁদের কোনো রসিদ দেওয়া হয়নি। একপ্রকার বাধ্য হয়ে তাঁরা টাকা দিয়েছেন। যাঁরা টাকা দিতে অপরাগত জানিয়েছিলেন তাঁদের কার্ড পাওয়ার ক্ষেত্রে ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। টাকা না দেওয়ায় অনেককে কার্ড দেওয়া হয়নি।

পীরেরহাট বাজারে টিসিবির পণ্য বিক্রির দেখভালের দায়িত্বে থাকা ট্যাগ অফিসার উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী শারাবান তহুরা বলেন, ‘কার্ড বিতরণের ক্ষেত্রে টাকা নেওয়ার বিষয়টি পণ্য নিতে আসা লোকজন আমাকে মৌখিকভাবে জানিয়েছেন।’

এ বিষয়ে কোলকোন্দ ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মিজানুর রহমান মোবাইল ফোনে বলেন, ‘ইউনিয়নের সব ওয়ার্ডের মেম্বারেরা কার্ড দিয়ে টাকা নিয়েছে। তাই আমিও নিয়েছি।’

কার্ড দিয়ে টাকা নেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে কোলকোন্দ ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ বলেন, ‘কার্ড দিয়ে চৌকিদারি ট্যাক্স নিতে আমি বলেছি। তবে এই টাকা নেওয়াটা অবৈধ হয়েছে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইউএনও এরশাদ উদ্দিন ফোনে বলেন, ‘কার্ড দিয়ে টাকা নেওয়ার কোনো বিধান নেই। এ বিষয়ে কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি। টাকা নেওয়ার অভিযোগের সত্যতা পেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত