Ajker Patrika

চ্যালেঞ্জের মুখে আ.লীগ প্রার্থী

মীর মো. মহিব্বুল্লাহ, পটুয়াখালী
আপডেট : ১৫ অক্টোবর ২০২২, ১৪: ১৫
চ্যালেঞ্জের মুখে আ.লীগ প্রার্থী

পটুয়াখালী জেলা পরিষদ নির্বাচনে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্রার্থী খলিলুর রহমান মোহন। বরিশাল বিভাগের ছয় জেলার পাঁচটিতে আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলেও পটুয়াখালীতে তা সম্ভব হয়নি।

পটুয়াখালীতে আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্রার্থীর বিপরীতে পদবঞ্চিত এক যুবলীগ নেতাসহ দুজন স্বতন্ত্র প্রার্থী দাঁড়িয়েছেন। তাঁদের কাছ থেকে বড় চ্যালেঞ্জে পড়তে পারেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী, এমনটিই ধারণা করা হচ্ছে। কোনো কারণে দলীয় প্রার্থীর পরাজয় হলে কেন্দ্রে জবাবদিহি নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন জেলা আওয়ামী লীগের নেতারা।

এদিকে নির্বাচনের প্রচারণা শেষ হবে আজ শনিবার রাত ৮টায়। তাই এখন চলছে শেষ মুহূর্তের প্রচারণা।

জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সুলতান আহমেদ মৃধা বলেন, ‘আমরা প্রতিটি উপজেলায় মতবিনিময় সভা করেছি আমাদের প্রার্থীকে নিয়ে। ইতিমধ্যে ইউনিয়ন পর্যায়ে ভোটারদের কাছেও গেছি। এখনো আমাদের কার্যক্রম চলছে। ১৭ অক্টোবর বিজয়ী হয়ে আমরা ঘরে ফিরব, এটি সুনিশ্চিত।’

এদিকে দলীয় নেতা-কর্মী ও ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ-সমর্থিত আনারস প্রতীকের প্রার্থী খলিলুর রহমান মোহন গত মেয়াদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে দলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে দূরত্ব সৃষ্টি করেন। ৫ বছরে জেলা পরিষদের ভোটারদের সঙ্গে যোগাযোগ ও সমন্বয়ও কম থাকার অভিযোগও রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।

মির্জাগঞ্জের মাধবখালী ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মারুফ মোল্লা বলেন, ‘আমরা তো গতবার ভোটই দিতে পারলাম না। তাই মোহন ভাই আমাদের সঙ্গে যোগাযোগও করেননি, এবার নির্বাচন আসছে তাই এখন যোগাযোগ শুরু করেছেন।’

রাঙ্গাবালী বড় বাইশদিয়া ইউপি চেয়ারম্যান ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘মোহন ভাই গত বছর যে উন্নয়ন করতে পারেননি সেগুলো এ বছর করবেন। তাই প্রধানমন্ত্রী তাঁকে মনোনয়ন দিয়েছেন। এর বাইরে তো আমরা যেতে পারব না। আশা করি, নির্বাচিত হয়ে বরাদ্দ পেলে আমাদের নিয়েই কাজ করবেন।’

স্বতন্ত্র প্রার্থী ঘোড়া প্রতীকের হাফিজুর রহমান বলেন, ‘আমার পরিবার আওয়ামী লীগের সমর্থক, দলের জন্য আমিসহ আমার পরিবারের সদস্যরা জেলও খেটেছি। আমি যুবলীগের সদস্য ছিলাম, এবার সভাপতি প্রার্থী হয়েছি; কিন্তু ষড়যন্ত্র করে আমাকে কোনো পদে রাখেনি। অনেকটা কষ্ট পেয়ে আমি আজ নির্বাচন করছি এবং আমাকে ভোটাররা চাচ্ছেন।’

কাপ-পিরিচ প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী মাকসুদুর রহমান বলেন, ‘সুষ্ঠু ভোট হলে কখনোই আমার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা জয়ী হতে পারবেন না। তাই তাঁরা ভোটারদের কালো টাকার অফার করছেন। যদি কালো টাকা দিয়ে ভোট কিনতে চান তা হলে এই ভোট নিয়ে শঙ্কা থেকেই যাবে।’

আওয়ামী লীগ-সমর্থিত আনারস প্রতীকের প্রার্থী খলিলুর রহমান মোহন বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে সমর্থন করেছেন। ইনশা আল্লাহ আমিই বিজয়ী হব। শুধু চ্যালেঞ্জিং মনে হচ্ছে আমার প্রতিদ্বন্দ্বী এক প্রার্থী কালো টাকার মালিক, তিনি ভোট কিনতে পারেন এবং সবাইকে বলে যাচ্ছেন।’

এদিকে জেলা পরিষদ নির্বাচনকে ঘিরে পটুয়াখালীতে চেয়ারম্যান ও সদস্যদের প্রচারণা জমে উঠেছে, আর এই প্রচারণা শেষ হবে আজ শনিবার রাত ৮টায়। তাই চলছে শেষ মুহূর্তের প্রচারণা। প্রার্থীরা প্রত্যন্ত অঞ্চলে থাকা ইউনিয়ন পরিষদগুলোতে গিয়ে ভোটপ্রার্থনা করছেন।

এদিকে নির্বাচন সুষ্ঠু করতে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের সঙ্গে গত বৃহস্পতিবার বিকেলে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত মতবিনিময় সভা করেছে জেলা প্রশাসন ও জেলা নির্বাচন অফিস।

সভায় জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ কামাল হোসেন জানান, ১৫ অক্টোবর রাত ৮টা পর্যন্ত প্রচারণা চালানো যাবে, আর ১৭ অক্টোবর সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ কামাল হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কেউ নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করলে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সুষ্ঠু এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানে আমরা বদ্ধপরিকর।’

উল্লেখ্য, পটুয়াখালী জেলা পরিষদ নির্বাচনে সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে সাতজন এবং সাধারণ আসনে ২৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এই নির্বাচনে মোট ১০৮৩ জন ভোটার ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত