Ajker Patrika

কাজ শেষ না করে বিল আদায়, মান নিয়ে ক্ষোভ

ফুলবাড়িয়া (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি 
আপডেট : ২৪ জুলাই ২০২২, ১৬: ০৯
কাজ শেষ না করে বিল আদায়, মান নিয়ে ক্ষোভ

ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায় গ্রামীণ সড়ক হেরিংবোন বন্ডকরণের (দ্বিতীয় পর্যায়) পাঁচটি প্রকল্পের কাজে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। একটি প্রকল্পও দরপত্র অনুযায়ী বাস্তবায়ন হয়নি। এ ছাড়া কাজ বাকি রেখে কাগজে শেষ দেখিয়ে বিল আদায় করা হয়েছে। অন্যদিকে নিম্নমানের কাজ নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দা ও প্রকল্পসংশ্লিষ্টরা।

প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার রাধাকানাই ইউনিয়নের খালইপুড়া গ্রামের মুজিবুর রহমানের দোকানের মোড় থেকে সিদ্দিকের বাড়ি পর্যন্ত এইচবিবি ১ হাজার ২০০ মিটার সড়কের কাজ পায় মেসার্স ফাহাদ এন্টারপ্রাইজ। প্রকল্পের নীতিমালা অনুয়ায়ী, ৩০ জুনের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা। তবে কাজ বাকি থাকলেও কাগজপত্রে তা শেষ দেখিয়ে বিল তোলার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার (পিআইও) বিরুদ্ধে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২১-২২ অর্থবছরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় ফুলবাড়িয়া উপজেলার ৩ হাজার ২০০ মিটার গ্রামীণ সড়ক এইচবিবিকরণের জন্য ১ কোটি ৯১ লাখ ৮৭ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। এইচবিবি প্রকল্পের আওতায় সড়কে মাটি খনন করার পর রুলিং করে বালু দিয়ে পুনরায় রুলিং শেষে ইটের গাঁথুনি দেওয়ার কথা। কিন্তু বাস্তবে এসবের কিছুই করা হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে।

সরেজমিন প্রকল্প ঘুরে ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তদারকি না থাকায় প্রকল্পের কাজে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়েছে। ঠিকাদারদের ইচ্ছেমতো কাজ করেছেন। নিম্নমানের ইট আর বালুর বদলে বেশির ভাগ বিট মাটির ব্যবহার করা হয়েছে। মাটি খনন করার পর ৯ ইঞ্চি বালু ব্যবহার করার কথা থাকলে ৪ থেকে ৫ ইঞ্চি বিট বালুর ব্যবহার করা হয়েছে প্রায় প্রতিটি কাজে। কোনো কোনো স্থানে এর চেয়েও কম বালুর ব্যবহার করা হয়েছে। এ ছাড়া সড়কের কাজে প্যালাসাইডিংও ঠিকমতো করা হয়নি। কাজ সমাপ্তের এক মাস না যেতেই অনেক স্থানে দেবে যাচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, রাস্তার কাজে ব্যবহার করা ইটের মান খুবই খারাপ, বালুর ব্যবহার করা হয়েছে প্রয়োজনের চেয়েও কম। যে কারণে এক মাসের মধ্যেই রাস্তা দেবে গেছে কয়েক স্থানে।

যোগাযোগ করা হলে মেসার্স ফাহাদ এন্টারপ্রাইজের ঠিকাদার আহসান হাবিব বলেন, ‘কাজের বিল তোলা হয়েছে ঠিকই, তবে কোনো অনিয়ম হয়নি। কিছু কাজ বাকি রয়েছে, সেগুলো চলছে।’

মেসার্স ফাল্গুনি ব্রাদার্সের পক্ষ থেকে বলা হয়, কিছু জায়গায় কাজের সমস্যা হয়েছে, এগুলো পুনরায় করে দেওয়া হবে। এ ছাড়া মাঝখানের কিছু রাস্তা আগের করা ছিল, যে কারণে দেখতে কাজের সমস্যা মনে হচ্ছে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. শাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘কাজের মান খারাপ হলে, উঠিয়ে আবার করানো হবে।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহা. নাহিদুল করিম বলেন, ‘বালু, ইট নিম্নমানের ছিল। এসব উঠিয়ে আবারও কাজ করতে বলেছি। কাজ তদারকি করার জন্য সবসময় ওখানে লোক থাকবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত