Ajker Patrika

মতলব দক্ষিণে বিলুপ্তির পথে বেতশিল্প

মতলব দক্ষিণ (চাঁদপুর) প্রতিনিধি
আপডেট : ১২ জুন ২০২২, ১০: ৫৫
মতলব দক্ষিণে বিলুপ্তির পথে বেতশিল্প

চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলার বিভিন্ন বাড়ির পেছনে বাঁশঝাড়, গাবগাছসহ অযত্নে বেড়ে ওঠা অন্যান্য গাছ এখন আর তেমন দেখা যায় না। এই বেতগাছও এখন বিলুপ্তির পথে।

গ্রামের কৃষকের অতি প্রয়োজনীয় গাছ হিসেবে পরিচিত বেতগাছ। বেত দিয়ে বিভিন্ন হস্তশিল্প যেমন চেয়ার, টেবিল, মোড়া, ডালা, কুলা, চাঙারি, হাতপাখা, চালুনি, টোকা, গোলা, ডোল, ডুলা, আউড়ি, চাঁচ, ধামা, পাতি, বই রাখার তাক, সোফা, দোলনা, খাট, ঝুড়ি, টেবিল ল্যাম্প, ল্যাম্পশেড ইত্যাদি তৈরি করা হয়। এটি গৃহনির্মাণ কাজেও ব্যবহার হয়। বিশেষ করে রেস্তোরাঁ বা অফিসের শৌখিন পার্টিশন হিসেবে এর ব্যাপক ব্যবহার আছে। এ ছাড়া লম্বা বেত ফালা করে নানা কিছু বাঁধার কাজেও ব্যবহার করা হয়। কিন্তু কালের আবর্তে মানুষ তার প্রয়োজনে ঝোপ-ঝাড়ের সংখ্যা কমিয়ে ফেলেছে।

জানা গেছে, কয়েক বছর আগেও মতলব দক্ষিণ উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারে কৃষকেরা বেত বিক্রি করার জন্য আসতেন। একটি ২০-২২ হাত লম্বা বেত আগে বিক্রি হতো ২০-২৫ টাকায়। কিন্তু আজ সে বেত ২০০ টাকা দিলেও পাওয়া যাচ্ছে না।

উপজেলার চাপাতলি গ্রামের বাসিন্দা মাসুদ ব্যাপারী বলেন, কয়েক বছর আগেও তিনি তাদের বাড়ির পেছনের গ্রামের বিভিন্ন স্থানে বেতগাছের বাগান দেখেছেন। কিন্তু এসবের চাহিদা কমে যাওয়ায় আজ এ বাগানগুলো আর দেখা যায় না। শহরায়ন ও নগরায়নের কারণে আজ মানুষ এসব বাগান উজাড় করে ফেলেছেন।

কালিকাপুর গ্রামের জসিম প্রধানিয়া নামে এক ব্যক্তি বলেন, তাঁরা ছোটবেলায় বেতফল দিয়ে খেলাধুলার পাশাপাশি এগুলো শখ করে খেয়েছেন অনেক। কিন্তু বর্তমানে এগুলো আর চোখে পড়ে না। নতুন প্রজন্মের সোনামনিরা এ গাছ ও ফল থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বেত ব্যবসায়ী সিরাজ ব্যাপারী বলেন, ‘আমি এ ব্যবসার সঙ্গে প্রায় ২০ বছর জড়িত। কয়েক বছর আগেও ওড়া বা ধামার চারদিক মজবুত করে গিঁট দেওয়ার জন্য বেত ব্যবহার করা হতো।’

বেতের স্থান দখল করেছে প্লাস্টিকের দড়ি বা রশি। জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে মানুষ বাড়ির আশপাশের ঝোপঝাড় কেটে পরিষ্কার করে সেখানে ঘরবাড়ি তৈরি করছেন। এতে যেমন প্রকৃতি থেকে হারিয়ে যাচ্ছে একটি প্রয়োজনীয় প্রজাতির লতানো গাছ, তেমনি হারাচ্ছে প্রকৃতির ভারসাম্য।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফয়সাল মোহাম্মদ আলী বলেন, রেস্তোরাঁ বা অফিসের কক্ষে শৌখিন পার্টিশন হিসেবে এর ব্যাপক ব্যবহার রয়েছে। এ ছাড়া লম্বা বেত ফালা করে নানা কিছু বাঁধার কাজেও ব্যবহার হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত