Ajker Patrika

ছিনতাই ও অপহরণ বেড়েছে

সবুজ শর্মা শাকিল, সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম)
আপডেট : ১৮ ডিসেম্বর ২০২১, ১৪: ৪৫
ছিনতাই ও অপহরণ  বেড়েছে

চট্টগ্রামের কর্নেল হাট থেকে চা পাতা নিতে গত শুক্রবার দুপুরে বের হন ব্যবসায়ী মিরনাদ রহমান (২৮)। তিনি কদমরসুল এলাকা থেকে একটি ভাড়ায় চালিত প্রাইভেট কারে শহরে রওনা দেন। প্রাইভেট কারের চালক পরিকল্পনা অনুযায়ী মাদামবিবিরহাট, ভাটিয়ারী ও ফৌজদারহাট থেকে তিনজন ছিনতাইকারীকে গাড়িতে তোলেন। তাঁরা ব্যবসায়ী মিরনাদকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে তাঁর কাছে থাকা ৬৮ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেন। পরে তাঁর চোখে মলম লাগিয়ে ছেড়ে দেন।

প্রায় ১০ ঘণ্টা পর মিরনাদ রহমানের জ্ঞান ফেরে। উপস্থিত লোকজনের মাধ্যমে তিনি জানতে পারেন ছিনতাইকারীরা তাঁকে কক্সবাজারের চকরিয়ায় ফেলে গেছেন। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় তিনি বিষয়টি পরিবারকে জানালে রাতে তাঁরা তাঁকে বাড়িতে নিয়ে যায়।

শুধু মিরনাদ রহমান নন, মাত্র ৮ দিনের ব্যবধানে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সীতাকুণ্ড অংশে ছিনতাই ও অপহরণের শিকার হয়ে টাকা খুইয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের সিএসহ (গোপন সহকারী) চারজন।

মহাসড়কের সীতাকুণ্ড অংশে হঠাৎ ছিনতাইয়ের ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় জনমনে উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে।

ছিনতাইয়ের শিকার ব্যবসায়ী নেছার আহমেদ বলেন, ‘গত মঙ্গলবার দুপুরের দিকে মাদামবিরিহাট এসসিসি ব্যাংক থেকে একটি গণপরিবহনে বারআউলিয়া এলাকায় ইয়ার্ডে স্ক্র্যাপ লোহা ডেলিভারির জন্য যাচ্ছিলেন। এ সময় মহাসড়কের বারআউলিয়া এলাকায় দুটি মোটরসাইকেলে চারজন ছিনতাইকারী তাঁকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে টাকা ও পে-অর্ডারসহ সাড়ে ১২ লাখ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায়।’

ব্যবসায়ী নেছার আহমেদ আরও বলেন, ছিনতাইয়ের ঘটনার অনুসন্ধানে ঘটনাস্থলে আসে পুলিশ। তবে ব্যাংকের সিসি ক্যামেরা চেক করে কোনো ফুটেজ পাওয়া যায়নি। ব্যাংক ম্যানেজার দাবি করেন, কয়েক দিন আগে ক্যামেরাটি নষ্ট হয়ে গেছে। এ নিয়ে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের (সিএ) তেজেন্দ্র কুমার দেবনাথ বলেন, ছিনতাইকারীরা তাঁকে অপহরণের পর শারীরিক নির্যাতন করেন। তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায়ের পর চোখে মরিচের গুঁড়া লাগিয়ে মহাসড়কের পাশে ফেলে যান ছিনতাইকারীরা।

অপহরণের শিকার হওয়া সংবাদপত্রের এজেন্ট বলেন, ডিবি পরিচয়ে তাঁকে মাইক্রোবাসে তোলার পর তাঁর মোবাইল বন্ধ করে দেন ছিনতাইকারীরা। পরে তাঁর চোখ বেঁধে দীর্ঘ কয়েক ঘণ্টা মহাসড়কে ঘুরিয়ে মাইক্রোবাস থেকে নামিয়ে একটি ঘরে আটকে রাখেন। তাঁরা গত সোমবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে একটি খালি স্ট্যাম্পে জোর করে তাঁর স্বাক্ষর নেন। এ সময় তাঁর কাছ থেকে ৬ হাজার টাকা নিয়ে নেন। পরে অপহরণকারীরা তাঁকে মাইক্রোবাসে করে মাধাইয়া বাজারে ফেলে দিয়ে চলে যান।

সীতাকুণ্ড মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ বলেন, ব্যবসায়ী নেছার আহমদের থেকে নগদ ও পে-অর্ডারসহ সাড়ে ১২ লাখ টাকা ছিনতাই, উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের সিএ-এর কাছ থেকে মুক্তিপণ আদায়সহ সংবাদপত্রের এজেন্টকে অপহরণের ঘটনায় পৃথক মামলা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত