Ajker Patrika

ভরা মৌসুমে অস্থির চালের বাজার, আড়াই হাজার মিলারকে আনা হচ্ছে ঢাকায়

উবায়দুল্লাহ বাদল, ঢাকা
আপডেট : ২৬ জুলাই ২০২৪, ১০: ৪৪
ভরা মৌসুমে অস্থির চালের বাজার, আড়াই হাজার মিলারকে আনা হচ্ছে ঢাকায়

ভরা মৌসুমেও অস্থির হয়ে উঠেছে চালের বাজার। সব ধরনের চালে সাম্প্রতিক সময়ে কেজিপ্রতি দাম বেড়েছে ৬ থেকে ৮ টাকা পর্যন্ত। সরকারি হিসাবে মোটা চালের কেজি ৫২ টাকা হলেও খুচরা বাজারে ৬০ টাকার কমে মিলছে না চাল।

এমন বেসামাল অবস্থায় বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে দেশের আড়াই হাজার চালকল মালিক (মিলার) ও করপোরেট চাল ব্যবসায়ীদের নিয়ে বৈঠক করবে খাদ্য মন্ত্রণালয়। সেখানে বিদ্যমান ‘খাদ্যদ্রব্য উৎপাদন, মজুত, স্থানান্তর, পরিবহন, সরবরাহ, বিতরণ ও বিপণন (ক্ষতিকর কার্যক্রম প্রতিরোধ) আইন, ২০১৩’-এর বিধান ও শাস্তির বিষয়ে আলোচনা হবে। অবৈধ মজুতের বিরুদ্ধে সতর্ক করা হবে চাল ব্যবসায়ীদের। এ ছাড়া চালের বাজার স্থিতিশীল রাখতে কোটা সংস্কার আন্দোলন ও কারফিউর কারণে বন্ধ থাকা ওএমএস (খোলাবাজারে বিক্রি) কর্মসূচি আগামী সোমবার (২৯ জুলাই) চালু করা হচ্ছে। খাদ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে এসব তথ্য।

উল্লিখিত বিষয়ের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। গতকাল বৃহস্পতিবার নিজ দপ্তরে তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘চালের দাম বেড়েছে। কোটা আন্দোলন ও কারফিউর কারণে অটো রাইস মিলগুলো বন্ধ ছিল। তবে গত রাত থেকে সরবরাহ শুরু হয়েছে। এ মুহূর্তে চালের দাম বাড়ার কোনো কারণ নেই। এখনো আমাদের গুদামে ১৬ লাখ ৮১ হাজার ২৩৪ টন খাদ্য মজুত আছে। এ ছাড়া কয়েক লাখ টন চাল-গম আমদানি প্রক্রিয়াধীন। সুতরাং শিগগির চালের বাজার স্থিতিশীল হবে।’

বাজার সহনীয় করতে কী পদক্ষেপ নিচ্ছেন—এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, সারা দেশের চালকল মালিক ও করপোরেট চাল ব্যবসায়ীদের ঢাকায় আনা হচ্ছে। ২৮ জুলাই রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলনকেন্দ্রে তাঁদের নিয়ে বৈঠক করার কথা ছিল। কোটা আন্দোলন ও পরবর্তী পরিস্থিতির কারণে স্থগিত করা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেই এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে বাজার নিয়ন্ত্রণ, অবৈধ চাল মজুত এ-সংক্রান্ত আইনের বাস্তবায়ন ও তাঁদের সচেতনতার বিষয়ে আলোচনা হবে। ওই বৈঠকে করপোরেট চাল ব্যবসায়ীদেরও ডাকা হবে। এ ছাড়া বন্ধ থাকা ওএমএস কর্মসূচি আগামী সোমবার থেকে রাজধানীসহ দেশের সব বিভাগীয় ও জেলা শহরে একযোগে চালু হবে। এতে চালের দাম কমে যাবে।

জানা গেছে, দেশে বোরো ধানের ভরা মৌসুম চলছে। বোরো ধান ও চাল সংগ্রহ করছে সরকার। আমন চালও আছে বাজারে। এই ভরা মৌসুমেও পাইকারি বাজারে মানভেদে ৫০ কেজির বস্তায় চালের দাম বেড়েছে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত। এরই মধ্যে ১৮ জুলাই থেকে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দেশে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়। এ কারণে সবকিছুর সঙ্গে ওএমএস কর্মসূচিও বন্ধ রাখা হয়। এতে প্রভাব পড়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দামে। সবকিছুর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ে চালের দামও। সব ধরনের চালে কেজিপ্রতি ৬ থেকে ৮ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।

রাজধানীর কয়েকটি বাজারের পাইকারি চাল বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বাজারে মোটা চাল ইরি কিংবা নূরজাহান স্বর্ণা সিদ্ধ চালের দাম বস্তাপ্রতি (৫০ কেজি) ৪০০ থেকে ৫০০ টাকার মতো বেড়েছে। এই চালের বড় অংশের ভোক্তা হচ্ছে দরিদ্র ও নিম্নমধ্যবিত্তরা। তাঁদের অভিযোগ, কয়েকটি বড় শিল্পগ্রুপ থেকে শুরু করে মিলার পর্যায়ে ধানের বড় মজুত তৈরি করে সিন্ডিকেট কারসাজির মাধ্যমে চালের দাম বাড়ানো হচ্ছে। এ ছাড়া প্যাকেজিংয়ের নামে সাধারণ চালই বেশি দামে বিক্রি করা হচ্ছে।

তবে অবৈধ মজুতের কথা অস্বীকার করেছেন বাংলাদেশ অটো মেজর অ্যান্ড হাসকিং মিল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক এইচ আর খান পাঠান। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এ মুহূর্তে চালের দাম বাড়ার কোনো কারণ নেই। বাজারের খুচরা চাল ব্যবসায়ীরা সুযোগ পেলেই চালের দাম বাড়িয়ে দেন। তাঁরা কোটা আন্দোলন ও কারফিউর আগে চাল কিনে কারফিউর সময় বেশি দামে বিক্রি করছেন। এ জন্য কি মিলারেরা দায়ী?’ এ বিষয়ে সরকারের নজরদারি বাড়ানোর দরকার বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ফেল করায় বকা খেয়ে বাড়ি ছাড়ে বাংলাদেশি কিশোরী, ভারতে ৩ মাসে ২০০ লোকের ধর্ষণ

‘বিচারপতি খায়রুলকে হাতকড়া পরানো মানে পুরো বিচার বিভাগকে হাতকড়া পরানো’

রাহুল ও প্রিয়াঙ্কা গান্ধী আটক

কোথাও ঘুরতে ইচ্ছা করলে আমাকে জানাবে—ছাত্রীকে খুবি অধ্যাপক

আগামী সপ্তাহের মধ্যে ৫ ইসলামী ব্যাংক একীভূত করার প্রক্রিয়া শুরু: গভর্নর

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত