Ajker Patrika

যাত্রা দিয়ে শুরু

সম্পাদকীয়
যাত্রা দিয়ে শুরু

উত্তমকুমারের শৈশবে পরিবারে দারিদ্র্য ছিল, কিন্তু পরিবারের সবাই মিলে হাসি-ঠাট্টাও হতো অনেক। বসত গল্পের আসর। হতো থিয়েটার। বাড়িতেই ছিল এক শখের থিয়েটার। নাম ছিল সুহৃদ সমাজ। মূলত যাত্রাগানই করত সেই দল।

যাত্রার রিহার্সাল দেখার ঝোঁক হলো উত্তমের। কিন্তু যে সময় ক্লাবে যাত্রার মহড়া হয়, সেই সময় তো পড়াশোনার জন্য বসতে হয় বই নিয়ে। মা-বাবার শাসনের পাশাপাশি দিদিও তো চোখে চোখে রাখেন উত্তমকে। তাই রীতিমতো চোরের মতো লুকিয়ে যাত্রা দেখতে চলে যেতেন তিনি। ক্লাবঘরে ঢুকতেন না, বের করে দেওয়ার ভয়ে। বাইরে থেকেই অভিনয় শুনতেন। জানালার ফাঁক দিয়ে অথবা দরজা একটু ফাঁক করে যাত্রা দেখতে থাকেন উত্তম। মুখস্থ করতে থাকেন সংলাপ।

একদিন ধরা পড়ে গেলেন দিদির হাতে। 
দিদি বললেন, ‘কী রে, রোজ কোথায় যাস?’

দিদি মা-বাবাকে বলে দিলে তো ভারি বিপদ। তাই উত্তম বললেন, ‘সে একটা ভারি মজার জায়গায় যাই।’

‘আমি সব জানি।’ 
 ‘কলা জানিস!’

দিদি মুখ গম্ভীর করে বললেন, ‘তুই রোজ জ্যাঠামশাইদের ক্লাবে যাস।’

দিদি যে সব জেনে গেছেন, সে ব্যাপারে উত্তমের মনে আর কোনো সন্দেহ থাকে না। এবার দিদির সঙ্গে সন্ধি হয়ে যায়। দিদির মুখে মুখে আর তর্ক করবেন না বলে কথা দেন উত্তম। তারপর দিদিকে যাত্রার সংলাপ শোনাতে থাকেন। দিদি হেসে কুটি কুটি হয়ে বললেন, ‘শুধু সংলাপ আউড়াচ্ছিস কেন, যাত্রা করতে হয় ঘুরে ঘুরে, বুঝলি হাঁদারাম?’

কথাটা ভাবিয়ে তুলল উত্তমকে। দিদি তো মিথ্যে বলছেন না! সংলাপের সঙ্গে অভিনয়ও চলতে থাকল এবার।এদিকে সুহৃদ সমাজে জ্যাঠামশাইয়ের হাতেই ধরা পড়ে গেলেন উত্তম। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, ‘বাইরে দাঁড়িয়ে আছিস কেন? থিয়েটার শিখতে চাস বুঝি? আয় আয় ভেতরে আয়।’

সেদিন থেকে ঘরে ঢুকেই যাত্রা দেখা শুরু হলো। দিদিকে কথাটা বলায় তিনিও খুব খুশি হলেন। 

সূত্র: উত্তমকুমার, আমার আমি, পৃষ্ঠা ১৩-১৬

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জমকালো দোতলা বাড়িতে দূতাবাস, সামনে সারি সারি কূটনৈতিক গাড়ি—৭ বছর পর জানা গেল ভুয়া

বেনজীরের এক ফ্ল্যাটেই ১৯ ফ্রিজ, আরও বিপুল ব্যবহার সামগ্রী উঠছে নিলামে

অবশেষে রাজি ভারত, ‘জিতেছে বাংলাদেশ’

ছেলের লাশ পেতে পুলিশের হয়রানির শিকার হতে হয়েছে

ই-মেইলে একযোগে ৫৪৭ ব্যাংক কর্মকর্তা চাকরিচ্যুত, পুনর্বহালের দাবি

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত