Ajker Patrika

বাঁধ ভেঙে প্লাবিত দুই গ্রাম

কামাল হোসেন, কয়রা
আপডেট : ০৬ ডিসেম্বর ২০২১, ১৭: ২৩
বাঁধ ভেঙে প্লাবিত দুই গ্রাম

কয়রা উপজেলার উত্তর বেদকাশি ইউনিয়নের গাতিরঘেরী ও হরিহারপুর গ্রাম আবারও প্লাবিত হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের প্রভাবে বেড়িবাঁধ ভেঙে এ অবস্থা হয়েছে। এতে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে দুই গ্রামের অনন্ত ২০০ পরিবার। ঠিকাদারের গাফিলতিতে এ বাঁধ ভেঙে গেছে বলে পানিবন্দী মানুষেরা অভিযোগ করেছেন।

পানিবন্দী কিছু পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বঙ্গোপসাগরের সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের প্রভাবে শাকবাড়িয়া নদীতে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৪ থেকে ৫ ফুট পানি বৃদ্ধি পায়। নদীতে প্রবল স্রোত ও স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে পানি বেড়ে যাওয়ায় গত শনিবার রাতে হরিহারপুর লঞ্চঘাটের পূর্বপাশ থেকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধ পুনরায় ভেঙে যায়।

চলতি বছরের ২৬ মে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে একই স্থানে ভেঙে যায়। স্থানীয় মানুষের স্বেচ্ছাশ্রমে ভেঙে যাওয়া পয়েন্টটি বাঁধা সম্ভব হয়। ওই স্থানের বেড়িবাঁধ নির্মাণের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড ঠিকাদার নিয়োগ দিয়েছিল। কিন্তু ঠিকাদার যথাসময়ে সঠিকভাবে বাঁধ নির্মাণ না করায় আবার ভেঙে গেল।

সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন (বোর্ড বিভাগ-২) সূত্রে জানা গেছে, জরুরি ভিত্তিতে খুলনার কয়রা উপজেলার পোল্ডার ১৪ / ১ এর হরিপুর লঞ্চঘাটের পূর্বপাশ থেকে ৪১০ মিটার পর্যন্ত টিউব দিয়ে রিং বাঁধ ও মাটি দিয়ে স্লোপ নির্মাণকাজের জন্য প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে মেসার্স জিয়াউল ট্রেডার্স নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে নিয়োগ দেওয়া হয়।

গাতিরঘেরী গ্রামের গণেশ গাইন বলেন, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের পর প্রায় পাঁচ মাস পানিবন্দী ছিলাম। মাসখানেক আগে বাঁধ হওয়ায় মনে করেছিলাম বিধাতা হয়তো আমাদের দিকে মুখ তুলে তাকিয়েছেন। কিন্তু ঠিকাদারের গাফিলতিতে আবারও বাঁধ ভেঙে আমরা পানিবন্দী হয়ে পড়েছি। জানি না এদশা থেকে আবার কবে মুক্ত হব।

হরিহারপুর গ্রামের সিতা মণ্ডল বলেন, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসে ঘরবাড়ি ভেঙে গিয়েছিল। ছয় মাস ধরে খুপরি ঘরে পরিবার নিয়ে বাস করেছি। বাঁধ হওয়ায় নতুন করে ঘর তৈরি করার স্বপ্ন দেখছিলাম। কিন্তু সেটা দুঃস্বপ্ন থেকে গেল। আবারও পানিবন্দী হয়ে পড়েছি।

উত্তর বেদকাশি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বলেন, হরিহরপুর লঞ্চঘাটের পূর্বপাশে ওয়াবদার কাজটি মূল ঠিকাদারের কাছ থেকে কালাম নামে এক শ্রমিক সাব কন্টাক্টে কিনে নেন। তারা টিউবে বালি ভরে রিং বাঁধ দেয়। কিন্তু মাটি দিয়ে স্লোপের কাজ না করে চলে যায়। টিউবের তল দিয়ে ছিদ্র থাকায় রিং বাঁধটি ভেঙে গেছে।

সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (বিভাগ-২) উপ-সহকারী প্রকৌশল মশিউল আবেদিন বলেন, ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের প্রভাবে শাকবাড়িয়া নদীতে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৪ থেকে ৫ ফুট পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় হরিহারপুর লঞ্চঘাটের পূর্বপাশে বেড়িবাঁধ ভেঙে যায়। ওই স্থানে ঠিকাদার নিয়োগ দেওয়া আছে। দ্রুত সময়ের মধ্য ওই এলাকার মানুষকে পানিবন্দী অবস্থা থেকে মুক্ত করা যাবে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার অনিমেষ বিশ্বাস বলেন, শাকবাড়িয়া নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙে গাতিরঘেরী ও হরিহারপুর গ্রাম দুটি প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দী মানুষের জন্য খাদ্য সহায়তা ও কম্বল দেওয়া হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১০০ বছর পর জানা গেল, ‘অপ্রয়োজনীয়’ প্রত্যঙ্গটি নারীর প্রজননের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

‘এই টাকা দিয়ে কী হয়, আমি এত চাপ নিচ্ছি, লাখ পাঁচেক দিতে বলো’, ওসির অডিও ফাঁস

কিশোরগঞ্জে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের এপিএস মোয়াজ্জেমকে অব্যাহতি

ঘন ঘন নাক খুঁটিয়ে স্মৃতিভ্রংশ ডেকে আনছেন না তো!

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত