Ajker Patrika

আবারও ডুবল গাতিরঘেরী

 কয়রা (খুলনা) প্রতিনিধি 
আপডেট : ০৬ ডিসেম্বর ২০২১, ১৬: ৩০
আবারও ডুবল গাতিরঘেরী

শাকবেড়িয়া নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙে খুলনার কয়রা উপজেলার উত্তর বেদকাশি ইউনিয়নের গাতিরঘেরী ও হরিহারপুর গ্রাম আবারও প্লাবিত হয়েছে। এতে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে দুই গ্রামের অন্তত ২০০ পরিবার। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, বেড়িবাঁধ নির্মাণে ঠিকাদারের গাফিলতির কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

পানিবন্দী পরিবারগুলোর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বঙ্গপোসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের প্রভাবে শাকবাড়িয়া নদীতে স্বাভাবিক উচ্চতার চেয়ে ৪ থেকে ৫ ফুট বেশি উচ্চতায় পানি প্রবাহিত হতে থাকে। নদীতে প্রবল স্রোত ও স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পাওয়ায় গত শনিবার রাতে হরিহারপুর লঞ্চঘাটের পূর্বপাশ থেকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বেড়িবাঁধ পুনরায় ভেঙে যায়। 
জানা গেছে, চলতি বছরের ২৬ মে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে বেড়ি বাঁধের একই জায়গা ভেঙে যায়। ওই সময় স্থানীয় মানুষের স্বেচ্ছাশ্রমে ভেঙে যাওয়া পয়েন্টটি মেরামত করা হয়। পরে বেড়িবাঁধের ক্ষতিগ্রস্ত ওই স্থানটি পুনরায় নির্মাণের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড ঠিকাদার নিয়োগ দিয়েছিল। কিন্তু ঠিকাদার যথাসময়ে সঠিকভাবে বাঁধ নির্মাণ না করায় আবার তা আবার ভেঙে যায়।

সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, হরিহারপুর লঞ্চঘাটের পূর্বপাশ থেকে ৪১০ মিটার পর্যন্ত  ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ পুনর্নির্মাণের জন্য মেসার্স জিয়াউল ট্রেডার্স নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। নির্মাণকাজের ব্যয় ধরা হয় প্রায় ৫০ লাখ টাকা।
গাতিরঘেরী গ্রামের গণেশ গাইন বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের পর প্রায় পাঁচ মাস পানিবন্দী ছিলাম। মাসখানেক আগে বাঁধ পুনর্নির্মাণ হওয়ায় মনে করেছিলাম বিধাতা হয়তো আমাদের দিকে মুখ তুলে তাকিয়েছেন। কিন্তু ঠিকাদারের গাফিলতিতে আবারও বাঁধ ভেঙে আমরা পানিবন্দী হয়ে পড়েছি। জানি না এ দশা থেকে আবার কবে মুক্ত হব।’

হরিহারপুর গ্রামের সিতা মণ্ডল বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় ইয়াসে ঘরবাড়ি ভেসে গেয়েছিল। ছয় মাস ধরে পরিবার নিয়ে ঝুপড়ি ঘরে বাস করেছি। বাঁধ হওয়ায় নতুন করে ঘর তৈরির স্বপ্ন দেখছিলাম। কিন্তু সেটা দুঃস্বপ্নই থেকে গেল। আবারও পানিবন্দী হয়ে পড়েছি।’

উত্তর বেদকাশি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জানান, বেড়িবাঁধ পুনর্নির্মাণের কাজটি মূল ঠিকাদারের কাছ থেকে কালাম নামের এক শ্রমিক সাব কন্টাক্টে কিনে নিয়েছিলেন। টিউবে বালি ভরে রিং বাঁধ তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু অসাবধানতাবশত টিউবের তল দিয়ে পানি ঢুকে বেড়িবাঁধটি আবারও ভেঙে গেছে।

সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (বিভাগ-২) উপসহকারী প্রকৌশল মশিউল আবেদিন বলেন, ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের প্রভাবে শাকবাড়িয়া নদীতে স্বাভাবিক উচ্চতার চেয়ে ৪ থেকে ৫ ফুট উঁচু দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এতে হরিহারপুর লঞ্চঘাটের পূর্বপাশের বেড়িবাঁধের একটা অংশ ভেঙে গেছে। এর আগেও ওই স্থানটি ভেঙে গিয়েছিল। পুনর্নির্মাণের জন্য ঠিকাদার নিয়োগ দেওয়া আছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে এলাকার মানুষকে পানিবন্দী অবস্থা থেকে মুক্ত করা যাবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনিমেষ বিশ্বাস জানান, শাকবাড়িয়া নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙে গাতিরঘেরী ও হরিহারপুর গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দী মানুষের জন্য খাদ্যসহায়তা ও কম্বল দেওয়া হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১০০ বছর পর জানা গেল, ‘অপ্রয়োজনীয়’ প্রত্যঙ্গটি নারীর প্রজননের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

‘এই টাকা দিয়ে কী হয়, আমি এত চাপ নিচ্ছি, লাখ পাঁচেক দিতে বলো’, ওসির অডিও ফাঁস

কিশোরগঞ্জে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের এপিএস মোয়াজ্জেমকে অব্যাহতি

ঘন ঘন নাক খুঁটিয়ে স্মৃতিভ্রংশ ডেকে আনছেন না তো!

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত