Ajker Patrika

তেলের বাজারে ধাক্কা, ব্যারেলে কমল ১০ ডলার

রয়টার্স, লন্ডন
আপডেট : ২৮ নভেম্বর ২০২১, ১১: ০২
তেলের বাজারে ধাক্কা, ব্যারেলে কমল ১০ ডলার

করোনাভাইরাসের নতুন ধরনটি পুঁজিবাজারের মতো বৈশ্বিক তেলের বাজারেও বড় ধরনের ধাক্কা দিয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এই ধরনকে ‘উদ্বেগজনক’ ঘোষণা দেওয়ার পরপরই বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ-নিষেধাজ্ঞার পথে হাঁটার ঘোষণা দেয়। তার সঙ্গে সঙ্গেই বৈশ্বিক জ্বালানি তেলের বাজারে বড় ধরনের দরপতন ঘটে। এক ধাক্কায় জ্বালানি তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ১০ মার্কিন ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৮৫৮ টাকা) কমেছে। ২০২০ সালের এপ্রিলের পর এই প্রথম এক দিনে তেলের দাম এতটা পড়ল।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা গত শুক্রবার করোনার নতুন ধরনটিকে ‘উদ্বেগজনক ধরন’-এর তালিকাভুক্ত করে। তার পরপরই বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম ধরনভেদে ব্যারেলপ্রতি ৯ দশমিক ৫০ ডলার থেকে ১০ দশমিক ২৪ ডলার কমে ৭২ দশমিক ৭২ ডলার থেকে ৬৮ দশমিক ১৫ ডলার হয়েছে। অর্থাৎ অপরিশোধিত তেলের ধরনভেদে এক দিনে দরপতন ঘটেছে ১১ দশমিক ৬ শতাংশ থেকে ১৩ দশমিক ১ শতাংশ।

এ নিয়ে এক সপ্তাহে তেলের দাম ধরনভেদে কমল ৮ শতাংশ থেকে ১০ দশমিক ৪ শতাংশ।

জাপানের টোকিওভিত্তিক ব্যাংকিং হোল্ডিং কোম্পানি মিজোহুর ভবিষ্যৎ জ্বালানি বিভাগের পরিচালক বব ইয়াওগের বলেছেন, করোনার এই ধরনের কারণে তেলের বাজার এখন সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় পড়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কভিত্তিক বিদেশি মুদ্রা বিনিময় প্রতিষ্ঠান ওএএনডিএ-এর বাজার বিশ্লেষক ক্রেইগ আলরাম বলেন, ‘সবচেয়ে বড় ভয় হলো, করোনার নতুন ধরনটি টিকার সুরক্ষা ফাঁকি দিতে পারে বলে উদ্বেগ ছড়িয়েছে। তা সত্যি হলে, যেসব দেশ ব্যাপকভাবে টিকা দিয়ে তার সুফল পাওয়ার পথে রয়েছে, সেসব দেশ বড় ধরনের ধাক্কা খাবে।’ তাঁর মতে, এই উদ্বেগও তেলের বাজারে প্রভাব ফেলেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র গত শুক্রবার জানায়, করোনার নতুন ধরনের কারণে তেলের বাজারে যে প্রভাব পড়েছে, তা পর্যবেক্ষণ করছে তেল রপ্তানিকারক দেশগুলোর জোট ওপেক ও এর মিত্র দেশগুলো। তেলের বাজার-সম্পর্কিত নীতি নির্ধারণে আগামী ২ ডিসেম্বর বৈঠকে বসার কথা রয়েছে এই জোটের। তবে তার আগেই বাজারে আরও বড় ধরনের ধাক্কা লাগতে পারে বলে উদ্বেগে রয়েছে ওপেকের কয়েকটি সদস্যরাষ্ট্র।

বৈশ্বিক বাজারে তেলের দাম অব্যাহতভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ আন্তর্জাতিক জ্বালানি সংস্থার (আইইএ) সদস্যরাষ্ট্রগুলো বাজারে তেলের কৌশলগত সরবরাহ বৃদ্ধির ঘোষণা দেয়। এরপর তেলের দাম খুব ধীরে কমতে শুরু করে। ওপেকের একটি সূত্র বলেছে, ওপেকের ২ ডিসেম্বরের বৈঠকে জানুয়ারি ও তার পরবর্তী সময়ে তেলের দৈনিক উৎপাদন বাড়িয়ে ৪ লাখ ব্যারেল পর্যন্ত করার পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে। তার আগেই করোনার নতুন ধরন ধাক্কা দিল।

যুক্তরাজ্যের ম্যানচেস্টারভিত্তিক অনলাইন বিনিয়োগ প্ল্যাটফর্ম এজে বেল-এর বিনিয়োগ পরিচালক রাস মৌল্ড ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ানকে বলেছেন, ‘তেলের বাজারে দরপতন বার্তা দিচ্ছে যে, করোনার নতুন ধরনের কারণে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড কমে আসার শঙ্কায় রয়েছে। অর্থাৎ বৈশ্বিক অর্থনীতি ছন্দপতনের আশঙ্কায় পড়েছে তেলের বাজার।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত