অরুণ কর্মকার

শেষ পর্যন্ত ভোলায় প্রাকৃতিক গ্যাসের প্রমাণিত মজুতভান্ডার আরও সমৃদ্ধ হলো। ২৬ বছর আগে আবিষ্কৃত শাহবাজপুরের পর ভোলা নর্থ এবং সবশেষে ইলিশা তো স্বতন্ত্র একটি গ্যাসক্ষেত্র হিসেবেই স্বীকৃতি পেল। সব মিলে সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী ভোলায় এখন আবিষ্কৃত গ্যাসের মজুত ২ দশমিক ৩৮ ট্রিলিয়ন ঘনফুট (টিসিএফ)। নিঃসন্দেহে দেশের জন্য এটি খুব ভালো একটি খবর।
এমন একসময় এ সুখবরটি এসেছে, যখন দেশের জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে চলছে একধরনের অস্থিরতা। দেশের ক্ষেত্রগুলো থেকে গ্যাস উত্তোলন ক্রমেই কমছে। কমতে কমতে দৈনিক ২ হাজার ৭৫০ মিলিয়ন ঘনফুট থেকে ২ হাজার ১৫০ মিলিয়নেরও নিচে নেমে এসেছে। এই কমার প্রবণতার মধ্যেও দেশে মাঝেমধ্যে নতুন কোনো কূপে কিংবা পুরোনো কূপ সংস্কার করে কিছু গ্যাস পাওয়া গেছে। তা সত্ত্বেও উৎপাদন কমার ধারা ঠেকানো যায়নি। ফলে দেশে চাহিদার তুলনায় গ্যাসের সরবরাহ ঘাটতি বেড়ে চলেছে।
তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানি করেও এই ঘাটতি পূরণ করা সম্ভব হয়নি। অদূর ভবিষ্যতে হবেও না। কারণ সীমিত অবকাঠামোর কারণে শিগগিরই এলএনজির আমদানি বাড়ানো সম্ভব নয়। বর্তমানে দৈনিক সর্বোচ্চ ১ হাজার মিলিয়ন ঘনফুটের সমপরিমাণ এলএনজি আমদানি করাই সম্ভব। তার বেশি নয়। এলএনজি আমদানির সক্ষমতা বাড়াতে হলে আরও ভাসমান ও স্থলভিত্তিক টার্মিনাল স্থাপন করতে হবে। সেটা সময়সাপেক্ষ ও ব্যয়বহুল। এলএনজি আমদানিও ব্যয়বহুল। কারণ দাম বেশি। তা ছাড়া ডলার-সংকট তো এই সময়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এই সংকট কত দিন চলবে, কেউ বলতে পারে না। কারণ এর সঙ্গে বৈশ্বিক পরিস্থিতির অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক রয়েছে। গণমাধ্যমে খবর বের হয়েছে, পেট্রোবাংলা অর্থসংকটে আছে।
বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) স্বাভাবিক গতিতে জ্বালানি তেল আমদানি করতে পারছে না। তারও কারণ ডলার-সংকট। বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর উৎপাদন সক্ষমতা হুমকির মুখে পড়েছে। তাদের কাছ থেকে বিদ্যুৎ কিনে সময়মতো দাম পরিশোধ করতে পারছে না বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি)। এরও কারণ ডলার-সংকট ও ডলারের উচ্চমূল্য। ফলে বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রের উদ্যোক্তাদের জ্বালানি তেল আমদানির সক্ষমতা সংকুচিত হয়ে পড়েছে।
গ্যাস-তেল-কয়লানির্বিশেষে জ্বালানি-সংকটের কারণে বিদ্যুতের উৎপাদন ঘাটতি অব্যাহত রয়েছে। ইতিমধ্যে ২ হাজার মেগাওয়াট পর্যন্ত লোডশেডিং করতে হয়েছে। আগামী মাসে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি আরও একবার চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এই পরিস্থিতিতে ভোলায় নতুন গ্যাসের সন্ধান এবং স্বতন্ত্র একটি গ্যাসক্ষেত্র (ইলিশা) ঘোষণা বিশেষ কোনো তাৎপর্য বহন করে কি না, চলমান জ্বালানি-সংকট নিরসনে ভোলার এই গ্যাস কতটা কাজে লাগবে, ভোলায় আরও গ্যাস পাওয়ার সম্ভাবনা আছে কি না, এসব বিষয় পর্যালোচনা করে দেখা দরকার।
ইলিশা স্বতন্ত্র গ্যাসক্ষেত্র হওয়ার কারণ এ ক্ষেত্রটির গ্যাসের কাঠামো (স্ট্রাকচার) ভোলার শাহবাজপুর কিংবা ভোলা নর্থ ক্ষেত্রটির সঙ্গে যুক্ত নয়। মজুত মাত্র ২০০ বিলিয়ন ঘনফুট (বিসিএফ)। এটি দেশের ২৯তম গ্যাসক্ষেত্র। অবশ্য পেট্রোবাংলার প্রডাকশন অ্যান্ড মার্কেটিং বিভাগের দৈনিক প্রতিবেদনে ‘প্রোডিউসিং ফিল্ড’ হিসেবে ২২টির নাম উল্লেখ আছে। এর মধ্যেও রূপগঞ্জ ক্ষেত্রটি পুরোপুরি বন্ধ এবং মেঘনা, সালদা, সেমুতাং, সুন্দলপুর ক্ষেত্রগুলোর উৎপাদনের পরিমাণ নগণ্য।
ইলিশা-১ কূপে গ্যাসের সন্ধান পাওয়ার পর এখন ভোলায় গ্যাসকূপের সংখ্যা দাঁড়াল ৯। এবার তিনটি কূপ খনন করেছে রাশিয়ার কোম্পানি গ্যাজপ্রম। এর আগে ছয়টি কূপ খনন করেছে বাপেক্স নিজে। বাপেক্সের হিসাব অনুযায়ী, ভোলায় এখন গ্যাসের প্রমাণিত মজুত ২ দশমিক ৩৮ টিসিএফ (ট্রিলিয়ন ঘনফুট)। দেশে এখন প্রতিবছর গ্যাস ব্যবহারের পরিমাণ প্রায় এক টিসিএফ।
বিশেষজ্ঞদের অভিমত, ভোলার দক্ষিণে মনপুরাসহ বিচ্ছিন্ন দ্বীপাঞ্চল এবং মেঘনা নদীবক্ষেও বিপুল গ্যাসের মজুত রয়েছে। সেই সব এলাকায় নিবিড় অনুসন্ধান চালানো দরকার। তাঁরা মনে করেন, দেশে এখন পর্যন্ত যে পরিমাণ গ্যাস আবিষ্কৃত হয়েছে তার চেয়ে বেশি অনাবিষ্কৃত রয়েছে। এই অনাবিষ্কৃত গ্যাসের বৃহদাংশই রয়েছে ভোলাসহ বেঙ্গল বেসিনে। নিবিড় অনুসন্ধানের মাধ্যমে এই গ্যাস আবিষ্কারের অপেক্ষায় আছি আমরা দেশবাসী।
ভোলার গ্যাস দেশের চলমান জ্বালানি-সংকট নিরসনে তেমন কোনো ভূমিকা রাখতে পারবে না। কারণ ওই গ্যাস দেশের মূল ভূখণ্ডে সরবরাহের কোনো ব্যবস্থা নেই। প্রথম গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কারের পর ভোলায় যে ছয়টি কূপ খনন করা হয়েছে, সেগুলোর দৈনিক মোট উৎপাদনক্ষমতা প্রায় ১২০ মিলিয়ন (১২ কোটি) ঘনফুট। কিন্তু বিদ্যমান দুটি বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ বর্তমানে ভোলায় দৈনিক গ্যাসের চাহিদা সর্বোচ্চ ৬০ মিলিয়ন ঘনফুট, যা তিনটি কূপ থেকেই সরবরাহ করা যায়। ফলে অবশিষ্ট তিনটি কূপ অলস পড়ে আছে। এর পাশাপাশি এখন আরও তিনটি নতুন কূপ খনন সম্পন্ন হয়েছে। ফলে দৈনিক গ্যাস উত্তোলন সক্ষমতা আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু ব্যবহার সীমিত।
সরকার অবশ্য ভোলার কিছু গ্যাস সিএনজি আকারে সিলিন্ডারে করে ঢাকা এবং এর আশপাশের সংকটাপন্ন এলাকার শিল্পকারখানায় সরবরাহের জন্য বেসরকারি কোম্পানি ইন্ট্রাকোর সঙ্গে চুক্তি করেছে। সেই চুক্তি অনুযায়ী, আগামী সেপ্টেম্বর নাগাদ দৈনিক মাত্র ৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সিএনজি আকারে বিশেষ সিলিন্ডারে করে বিশেষায়িত পরিবহন যানে করে তিতাস গ্যাসের সংকটপূর্ণ এলাকায়
শিল্প প্রতিষ্ঠানে সরবরাহ করা হবে। যে শিল্প যত পিএসআই চাপে গ্যাস ব্যবহার করে, সেই শিল্পে সেই চাপে গ্যাস সরবরাহের জন্যও করতে হবে বিশেষ ব্যবস্থা। এরপর আগামী বছর ফেব্রুয়ারি নাগাদ আরও ২০ (মোট ২৫) মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস একই এলাকার শিল্প প্রতিষ্ঠানে সরবরাহ করা হবে। কিন্তু তাতে চলমান গ্যাস-সংকট সমাধানে যেমন উল্লেখযোগ্য কিছু হবে না, তেমনি ভোলার গ্যাসেরও ব্যবহার খুব একটা বাড়বে না। তিতাসের এলাকায় গ্যাসের দৈনিক সরবরাহ ঘাটতি এখন প্রায় ৮০০ মিলিয়ন ঘনফুট।
তবে ভোলার গ্যাস নিয়ে সরকারের বড় পরিকল্পনাও রয়েছে। এই পরিকল্পনার মূল লক্ষ্য পাইপলাইনে ভোলার গ্যাস দেশের মূল ভূখণ্ডে নিয়ে আসা। ভোলা থেকে বরিশাল হয়ে খুলনা পর্যন্ত একটি এবং পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্ত পর্যন্ত আরেকটি পাইপলাইন করা এই পরিকল্পনার অংশবিশেষ। এ রকম একটি প্রকল্প প্রস্তাব তৈরি করা হয়েছে বলেও জানা গেছে।
তবে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজন ভোলা অঞ্চলে কী পরিমাণ গ্যাস মজুত থাকতে পারে তা নির্ধারণ করা।
দীর্ঘ পাইপলাইন করে সমগ্র দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে ২০-২৫ বছর সরবরাহের জন্য বর্তমানে আবিষ্কৃত ২ দশমিক ৩৮ টিসিএফ গ্যাস যথেষ্ট নয়।
অবশ্য ভোলা অঞ্চলে গ্যাসের বিপুল মজুত সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা যে উচ্চ আশা পোষণ করেন তা আগেই উল্লেখ করেছি।
আমাদের দেশে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য দুটি ভূতাত্ত্বিক কাঠামো সম্ভাবনাময়। এর একটি সুরমা বেসিন। অন্যটি বেঙ্গল বেসিন। বৃহত্তর সিলেট, কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নরসিংদীসহ যেসব এলাকায় বিদ্যমান সব গ্যাসক্ষেত্রগুলো আবিষ্কৃত হয়েছে এর সবই সুরমা বেসিনের অন্তর্ভুক্ত। মূলত ওই অঞ্চলেই অনুসন্ধান, আবিষ্কার ও উত্তোলন করে আসা হয়েছে।
সেই তুলনায় বেঙ্গল বেসিনে তেল-গ্যাস অনুসন্ধান অবহেলিত বা উপেক্ষিতই রয়ে গেছে। ফলে একমাত্র ভোলা ছাড়া বেঙ্গল বেসিনে এখন পর্যন্ত তেমন কোনো আবিষ্কার হয়নি। অথচ ভূতাত্ত্বিক, ভূপদার্থবিদ, বিশেষজ্ঞ গবেষক ও প্রকৌশলীরা বেঙ্গল বেসিনকে অত্যন্ত সম্ভাবনাময় মনে করেন। শুধু প্রয়োজন অনুসন্ধান করে তা আবিষ্কার করা।
তবে এই বিশাল কর্মকাণ্ড একা বাপেক্সের পক্ষে করা সম্ভব নয়। এ জন্য দরকার গ্যাজপ্রমের মতো কোনো অংশীদারের সহযোগিতা। সেই সহযোগিতার সম্ভাবনার কথাও আমরা অনেক শুনেছি। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেছে ভিন্ন কিছু। ফলে দেশ ক্রমাগতভাবে জ্বালানি আমদানির বিপজ্জনক নির্ভরশীলতার দিকে ঝুঁকে পড়েছে। দেশের জ্বালানি সম্পদের উন্নয়ন না করা হলে আমদানির এই ঝোঁক আমাদের কোথায় নিয়ে যাবে—তা বলা খুব মুশকিল।
সম্প্রতি ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত জ্বালানি খাতবিষয়ক একটি আলোচনা অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ একটি গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেছেন। তিনি বলেন, গ্যাস অনুসন্ধান ও সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে প্রচুর সময় ও বিপুল বিনিয়োগের প্রয়োজন হলেও অনুসন্ধান কার্যক্রম অব্যাহত রাখার বিকল্প নেই।
দীর্ঘদিন ধরে দেশের বিশেষজ্ঞ-পেশাজীবীরা এ কথাটিই বলে এসেছেন। আগেই এ কাজটি শুরু করা হলে দেশে বর্তমান জ্বালানি-সংকটের এত জটিল রূপ দেখতে হতো না। তবু যদি সরকার এখনো কাজটি শুরু করে এবং অব্যাহতভাবে চালিয়ে যায়, বিলম্বে হলেও তাও সুফল বয়ে আনবে। কথায় আছে না ‘বেটার লেট দ্যান নেভার!’
অরুণ কর্মকার, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক

শেষ পর্যন্ত ভোলায় প্রাকৃতিক গ্যাসের প্রমাণিত মজুতভান্ডার আরও সমৃদ্ধ হলো। ২৬ বছর আগে আবিষ্কৃত শাহবাজপুরের পর ভোলা নর্থ এবং সবশেষে ইলিশা তো স্বতন্ত্র একটি গ্যাসক্ষেত্র হিসেবেই স্বীকৃতি পেল। সব মিলে সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী ভোলায় এখন আবিষ্কৃত গ্যাসের মজুত ২ দশমিক ৩৮ ট্রিলিয়ন ঘনফুট (টিসিএফ)। নিঃসন্দেহে দেশের জন্য এটি খুব ভালো একটি খবর।
এমন একসময় এ সুখবরটি এসেছে, যখন দেশের জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে চলছে একধরনের অস্থিরতা। দেশের ক্ষেত্রগুলো থেকে গ্যাস উত্তোলন ক্রমেই কমছে। কমতে কমতে দৈনিক ২ হাজার ৭৫০ মিলিয়ন ঘনফুট থেকে ২ হাজার ১৫০ মিলিয়নেরও নিচে নেমে এসেছে। এই কমার প্রবণতার মধ্যেও দেশে মাঝেমধ্যে নতুন কোনো কূপে কিংবা পুরোনো কূপ সংস্কার করে কিছু গ্যাস পাওয়া গেছে। তা সত্ত্বেও উৎপাদন কমার ধারা ঠেকানো যায়নি। ফলে দেশে চাহিদার তুলনায় গ্যাসের সরবরাহ ঘাটতি বেড়ে চলেছে।
তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানি করেও এই ঘাটতি পূরণ করা সম্ভব হয়নি। অদূর ভবিষ্যতে হবেও না। কারণ সীমিত অবকাঠামোর কারণে শিগগিরই এলএনজির আমদানি বাড়ানো সম্ভব নয়। বর্তমানে দৈনিক সর্বোচ্চ ১ হাজার মিলিয়ন ঘনফুটের সমপরিমাণ এলএনজি আমদানি করাই সম্ভব। তার বেশি নয়। এলএনজি আমদানির সক্ষমতা বাড়াতে হলে আরও ভাসমান ও স্থলভিত্তিক টার্মিনাল স্থাপন করতে হবে। সেটা সময়সাপেক্ষ ও ব্যয়বহুল। এলএনজি আমদানিও ব্যয়বহুল। কারণ দাম বেশি। তা ছাড়া ডলার-সংকট তো এই সময়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এই সংকট কত দিন চলবে, কেউ বলতে পারে না। কারণ এর সঙ্গে বৈশ্বিক পরিস্থিতির অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক রয়েছে। গণমাধ্যমে খবর বের হয়েছে, পেট্রোবাংলা অর্থসংকটে আছে।
বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) স্বাভাবিক গতিতে জ্বালানি তেল আমদানি করতে পারছে না। তারও কারণ ডলার-সংকট। বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর উৎপাদন সক্ষমতা হুমকির মুখে পড়েছে। তাদের কাছ থেকে বিদ্যুৎ কিনে সময়মতো দাম পরিশোধ করতে পারছে না বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি)। এরও কারণ ডলার-সংকট ও ডলারের উচ্চমূল্য। ফলে বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রের উদ্যোক্তাদের জ্বালানি তেল আমদানির সক্ষমতা সংকুচিত হয়ে পড়েছে।
গ্যাস-তেল-কয়লানির্বিশেষে জ্বালানি-সংকটের কারণে বিদ্যুতের উৎপাদন ঘাটতি অব্যাহত রয়েছে। ইতিমধ্যে ২ হাজার মেগাওয়াট পর্যন্ত লোডশেডিং করতে হয়েছে। আগামী মাসে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি আরও একবার চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এই পরিস্থিতিতে ভোলায় নতুন গ্যাসের সন্ধান এবং স্বতন্ত্র একটি গ্যাসক্ষেত্র (ইলিশা) ঘোষণা বিশেষ কোনো তাৎপর্য বহন করে কি না, চলমান জ্বালানি-সংকট নিরসনে ভোলার এই গ্যাস কতটা কাজে লাগবে, ভোলায় আরও গ্যাস পাওয়ার সম্ভাবনা আছে কি না, এসব বিষয় পর্যালোচনা করে দেখা দরকার।
ইলিশা স্বতন্ত্র গ্যাসক্ষেত্র হওয়ার কারণ এ ক্ষেত্রটির গ্যাসের কাঠামো (স্ট্রাকচার) ভোলার শাহবাজপুর কিংবা ভোলা নর্থ ক্ষেত্রটির সঙ্গে যুক্ত নয়। মজুত মাত্র ২০০ বিলিয়ন ঘনফুট (বিসিএফ)। এটি দেশের ২৯তম গ্যাসক্ষেত্র। অবশ্য পেট্রোবাংলার প্রডাকশন অ্যান্ড মার্কেটিং বিভাগের দৈনিক প্রতিবেদনে ‘প্রোডিউসিং ফিল্ড’ হিসেবে ২২টির নাম উল্লেখ আছে। এর মধ্যেও রূপগঞ্জ ক্ষেত্রটি পুরোপুরি বন্ধ এবং মেঘনা, সালদা, সেমুতাং, সুন্দলপুর ক্ষেত্রগুলোর উৎপাদনের পরিমাণ নগণ্য।
ইলিশা-১ কূপে গ্যাসের সন্ধান পাওয়ার পর এখন ভোলায় গ্যাসকূপের সংখ্যা দাঁড়াল ৯। এবার তিনটি কূপ খনন করেছে রাশিয়ার কোম্পানি গ্যাজপ্রম। এর আগে ছয়টি কূপ খনন করেছে বাপেক্স নিজে। বাপেক্সের হিসাব অনুযায়ী, ভোলায় এখন গ্যাসের প্রমাণিত মজুত ২ দশমিক ৩৮ টিসিএফ (ট্রিলিয়ন ঘনফুট)। দেশে এখন প্রতিবছর গ্যাস ব্যবহারের পরিমাণ প্রায় এক টিসিএফ।
বিশেষজ্ঞদের অভিমত, ভোলার দক্ষিণে মনপুরাসহ বিচ্ছিন্ন দ্বীপাঞ্চল এবং মেঘনা নদীবক্ষেও বিপুল গ্যাসের মজুত রয়েছে। সেই সব এলাকায় নিবিড় অনুসন্ধান চালানো দরকার। তাঁরা মনে করেন, দেশে এখন পর্যন্ত যে পরিমাণ গ্যাস আবিষ্কৃত হয়েছে তার চেয়ে বেশি অনাবিষ্কৃত রয়েছে। এই অনাবিষ্কৃত গ্যাসের বৃহদাংশই রয়েছে ভোলাসহ বেঙ্গল বেসিনে। নিবিড় অনুসন্ধানের মাধ্যমে এই গ্যাস আবিষ্কারের অপেক্ষায় আছি আমরা দেশবাসী।
ভোলার গ্যাস দেশের চলমান জ্বালানি-সংকট নিরসনে তেমন কোনো ভূমিকা রাখতে পারবে না। কারণ ওই গ্যাস দেশের মূল ভূখণ্ডে সরবরাহের কোনো ব্যবস্থা নেই। প্রথম গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কারের পর ভোলায় যে ছয়টি কূপ খনন করা হয়েছে, সেগুলোর দৈনিক মোট উৎপাদনক্ষমতা প্রায় ১২০ মিলিয়ন (১২ কোটি) ঘনফুট। কিন্তু বিদ্যমান দুটি বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ বর্তমানে ভোলায় দৈনিক গ্যাসের চাহিদা সর্বোচ্চ ৬০ মিলিয়ন ঘনফুট, যা তিনটি কূপ থেকেই সরবরাহ করা যায়। ফলে অবশিষ্ট তিনটি কূপ অলস পড়ে আছে। এর পাশাপাশি এখন আরও তিনটি নতুন কূপ খনন সম্পন্ন হয়েছে। ফলে দৈনিক গ্যাস উত্তোলন সক্ষমতা আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু ব্যবহার সীমিত।
সরকার অবশ্য ভোলার কিছু গ্যাস সিএনজি আকারে সিলিন্ডারে করে ঢাকা এবং এর আশপাশের সংকটাপন্ন এলাকার শিল্পকারখানায় সরবরাহের জন্য বেসরকারি কোম্পানি ইন্ট্রাকোর সঙ্গে চুক্তি করেছে। সেই চুক্তি অনুযায়ী, আগামী সেপ্টেম্বর নাগাদ দৈনিক মাত্র ৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সিএনজি আকারে বিশেষ সিলিন্ডারে করে বিশেষায়িত পরিবহন যানে করে তিতাস গ্যাসের সংকটপূর্ণ এলাকায়
শিল্প প্রতিষ্ঠানে সরবরাহ করা হবে। যে শিল্প যত পিএসআই চাপে গ্যাস ব্যবহার করে, সেই শিল্পে সেই চাপে গ্যাস সরবরাহের জন্যও করতে হবে বিশেষ ব্যবস্থা। এরপর আগামী বছর ফেব্রুয়ারি নাগাদ আরও ২০ (মোট ২৫) মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস একই এলাকার শিল্প প্রতিষ্ঠানে সরবরাহ করা হবে। কিন্তু তাতে চলমান গ্যাস-সংকট সমাধানে যেমন উল্লেখযোগ্য কিছু হবে না, তেমনি ভোলার গ্যাসেরও ব্যবহার খুব একটা বাড়বে না। তিতাসের এলাকায় গ্যাসের দৈনিক সরবরাহ ঘাটতি এখন প্রায় ৮০০ মিলিয়ন ঘনফুট।
তবে ভোলার গ্যাস নিয়ে সরকারের বড় পরিকল্পনাও রয়েছে। এই পরিকল্পনার মূল লক্ষ্য পাইপলাইনে ভোলার গ্যাস দেশের মূল ভূখণ্ডে নিয়ে আসা। ভোলা থেকে বরিশাল হয়ে খুলনা পর্যন্ত একটি এবং পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্ত পর্যন্ত আরেকটি পাইপলাইন করা এই পরিকল্পনার অংশবিশেষ। এ রকম একটি প্রকল্প প্রস্তাব তৈরি করা হয়েছে বলেও জানা গেছে।
তবে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজন ভোলা অঞ্চলে কী পরিমাণ গ্যাস মজুত থাকতে পারে তা নির্ধারণ করা।
দীর্ঘ পাইপলাইন করে সমগ্র দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে ২০-২৫ বছর সরবরাহের জন্য বর্তমানে আবিষ্কৃত ২ দশমিক ৩৮ টিসিএফ গ্যাস যথেষ্ট নয়।
অবশ্য ভোলা অঞ্চলে গ্যাসের বিপুল মজুত সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা যে উচ্চ আশা পোষণ করেন তা আগেই উল্লেখ করেছি।
আমাদের দেশে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য দুটি ভূতাত্ত্বিক কাঠামো সম্ভাবনাময়। এর একটি সুরমা বেসিন। অন্যটি বেঙ্গল বেসিন। বৃহত্তর সিলেট, কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নরসিংদীসহ যেসব এলাকায় বিদ্যমান সব গ্যাসক্ষেত্রগুলো আবিষ্কৃত হয়েছে এর সবই সুরমা বেসিনের অন্তর্ভুক্ত। মূলত ওই অঞ্চলেই অনুসন্ধান, আবিষ্কার ও উত্তোলন করে আসা হয়েছে।
সেই তুলনায় বেঙ্গল বেসিনে তেল-গ্যাস অনুসন্ধান অবহেলিত বা উপেক্ষিতই রয়ে গেছে। ফলে একমাত্র ভোলা ছাড়া বেঙ্গল বেসিনে এখন পর্যন্ত তেমন কোনো আবিষ্কার হয়নি। অথচ ভূতাত্ত্বিক, ভূপদার্থবিদ, বিশেষজ্ঞ গবেষক ও প্রকৌশলীরা বেঙ্গল বেসিনকে অত্যন্ত সম্ভাবনাময় মনে করেন। শুধু প্রয়োজন অনুসন্ধান করে তা আবিষ্কার করা।
তবে এই বিশাল কর্মকাণ্ড একা বাপেক্সের পক্ষে করা সম্ভব নয়। এ জন্য দরকার গ্যাজপ্রমের মতো কোনো অংশীদারের সহযোগিতা। সেই সহযোগিতার সম্ভাবনার কথাও আমরা অনেক শুনেছি। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেছে ভিন্ন কিছু। ফলে দেশ ক্রমাগতভাবে জ্বালানি আমদানির বিপজ্জনক নির্ভরশীলতার দিকে ঝুঁকে পড়েছে। দেশের জ্বালানি সম্পদের উন্নয়ন না করা হলে আমদানির এই ঝোঁক আমাদের কোথায় নিয়ে যাবে—তা বলা খুব মুশকিল।
সম্প্রতি ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত জ্বালানি খাতবিষয়ক একটি আলোচনা অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ একটি গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেছেন। তিনি বলেন, গ্যাস অনুসন্ধান ও সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে প্রচুর সময় ও বিপুল বিনিয়োগের প্রয়োজন হলেও অনুসন্ধান কার্যক্রম অব্যাহত রাখার বিকল্প নেই।
দীর্ঘদিন ধরে দেশের বিশেষজ্ঞ-পেশাজীবীরা এ কথাটিই বলে এসেছেন। আগেই এ কাজটি শুরু করা হলে দেশে বর্তমান জ্বালানি-সংকটের এত জটিল রূপ দেখতে হতো না। তবু যদি সরকার এখনো কাজটি শুরু করে এবং অব্যাহতভাবে চালিয়ে যায়, বিলম্বে হলেও তাও সুফল বয়ে আনবে। কথায় আছে না ‘বেটার লেট দ্যান নেভার!’
অরুণ কর্মকার, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক
অরুণ কর্মকার

শেষ পর্যন্ত ভোলায় প্রাকৃতিক গ্যাসের প্রমাণিত মজুতভান্ডার আরও সমৃদ্ধ হলো। ২৬ বছর আগে আবিষ্কৃত শাহবাজপুরের পর ভোলা নর্থ এবং সবশেষে ইলিশা তো স্বতন্ত্র একটি গ্যাসক্ষেত্র হিসেবেই স্বীকৃতি পেল। সব মিলে সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী ভোলায় এখন আবিষ্কৃত গ্যাসের মজুত ২ দশমিক ৩৮ ট্রিলিয়ন ঘনফুট (টিসিএফ)। নিঃসন্দেহে দেশের জন্য এটি খুব ভালো একটি খবর।
এমন একসময় এ সুখবরটি এসেছে, যখন দেশের জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে চলছে একধরনের অস্থিরতা। দেশের ক্ষেত্রগুলো থেকে গ্যাস উত্তোলন ক্রমেই কমছে। কমতে কমতে দৈনিক ২ হাজার ৭৫০ মিলিয়ন ঘনফুট থেকে ২ হাজার ১৫০ মিলিয়নেরও নিচে নেমে এসেছে। এই কমার প্রবণতার মধ্যেও দেশে মাঝেমধ্যে নতুন কোনো কূপে কিংবা পুরোনো কূপ সংস্কার করে কিছু গ্যাস পাওয়া গেছে। তা সত্ত্বেও উৎপাদন কমার ধারা ঠেকানো যায়নি। ফলে দেশে চাহিদার তুলনায় গ্যাসের সরবরাহ ঘাটতি বেড়ে চলেছে।
তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানি করেও এই ঘাটতি পূরণ করা সম্ভব হয়নি। অদূর ভবিষ্যতে হবেও না। কারণ সীমিত অবকাঠামোর কারণে শিগগিরই এলএনজির আমদানি বাড়ানো সম্ভব নয়। বর্তমানে দৈনিক সর্বোচ্চ ১ হাজার মিলিয়ন ঘনফুটের সমপরিমাণ এলএনজি আমদানি করাই সম্ভব। তার বেশি নয়। এলএনজি আমদানির সক্ষমতা বাড়াতে হলে আরও ভাসমান ও স্থলভিত্তিক টার্মিনাল স্থাপন করতে হবে। সেটা সময়সাপেক্ষ ও ব্যয়বহুল। এলএনজি আমদানিও ব্যয়বহুল। কারণ দাম বেশি। তা ছাড়া ডলার-সংকট তো এই সময়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এই সংকট কত দিন চলবে, কেউ বলতে পারে না। কারণ এর সঙ্গে বৈশ্বিক পরিস্থিতির অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক রয়েছে। গণমাধ্যমে খবর বের হয়েছে, পেট্রোবাংলা অর্থসংকটে আছে।
বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) স্বাভাবিক গতিতে জ্বালানি তেল আমদানি করতে পারছে না। তারও কারণ ডলার-সংকট। বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর উৎপাদন সক্ষমতা হুমকির মুখে পড়েছে। তাদের কাছ থেকে বিদ্যুৎ কিনে সময়মতো দাম পরিশোধ করতে পারছে না বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি)। এরও কারণ ডলার-সংকট ও ডলারের উচ্চমূল্য। ফলে বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রের উদ্যোক্তাদের জ্বালানি তেল আমদানির সক্ষমতা সংকুচিত হয়ে পড়েছে।
গ্যাস-তেল-কয়লানির্বিশেষে জ্বালানি-সংকটের কারণে বিদ্যুতের উৎপাদন ঘাটতি অব্যাহত রয়েছে। ইতিমধ্যে ২ হাজার মেগাওয়াট পর্যন্ত লোডশেডিং করতে হয়েছে। আগামী মাসে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি আরও একবার চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এই পরিস্থিতিতে ভোলায় নতুন গ্যাসের সন্ধান এবং স্বতন্ত্র একটি গ্যাসক্ষেত্র (ইলিশা) ঘোষণা বিশেষ কোনো তাৎপর্য বহন করে কি না, চলমান জ্বালানি-সংকট নিরসনে ভোলার এই গ্যাস কতটা কাজে লাগবে, ভোলায় আরও গ্যাস পাওয়ার সম্ভাবনা আছে কি না, এসব বিষয় পর্যালোচনা করে দেখা দরকার।
ইলিশা স্বতন্ত্র গ্যাসক্ষেত্র হওয়ার কারণ এ ক্ষেত্রটির গ্যাসের কাঠামো (স্ট্রাকচার) ভোলার শাহবাজপুর কিংবা ভোলা নর্থ ক্ষেত্রটির সঙ্গে যুক্ত নয়। মজুত মাত্র ২০০ বিলিয়ন ঘনফুট (বিসিএফ)। এটি দেশের ২৯তম গ্যাসক্ষেত্র। অবশ্য পেট্রোবাংলার প্রডাকশন অ্যান্ড মার্কেটিং বিভাগের দৈনিক প্রতিবেদনে ‘প্রোডিউসিং ফিল্ড’ হিসেবে ২২টির নাম উল্লেখ আছে। এর মধ্যেও রূপগঞ্জ ক্ষেত্রটি পুরোপুরি বন্ধ এবং মেঘনা, সালদা, সেমুতাং, সুন্দলপুর ক্ষেত্রগুলোর উৎপাদনের পরিমাণ নগণ্য।
ইলিশা-১ কূপে গ্যাসের সন্ধান পাওয়ার পর এখন ভোলায় গ্যাসকূপের সংখ্যা দাঁড়াল ৯। এবার তিনটি কূপ খনন করেছে রাশিয়ার কোম্পানি গ্যাজপ্রম। এর আগে ছয়টি কূপ খনন করেছে বাপেক্স নিজে। বাপেক্সের হিসাব অনুযায়ী, ভোলায় এখন গ্যাসের প্রমাণিত মজুত ২ দশমিক ৩৮ টিসিএফ (ট্রিলিয়ন ঘনফুট)। দেশে এখন প্রতিবছর গ্যাস ব্যবহারের পরিমাণ প্রায় এক টিসিএফ।
বিশেষজ্ঞদের অভিমত, ভোলার দক্ষিণে মনপুরাসহ বিচ্ছিন্ন দ্বীপাঞ্চল এবং মেঘনা নদীবক্ষেও বিপুল গ্যাসের মজুত রয়েছে। সেই সব এলাকায় নিবিড় অনুসন্ধান চালানো দরকার। তাঁরা মনে করেন, দেশে এখন পর্যন্ত যে পরিমাণ গ্যাস আবিষ্কৃত হয়েছে তার চেয়ে বেশি অনাবিষ্কৃত রয়েছে। এই অনাবিষ্কৃত গ্যাসের বৃহদাংশই রয়েছে ভোলাসহ বেঙ্গল বেসিনে। নিবিড় অনুসন্ধানের মাধ্যমে এই গ্যাস আবিষ্কারের অপেক্ষায় আছি আমরা দেশবাসী।
ভোলার গ্যাস দেশের চলমান জ্বালানি-সংকট নিরসনে তেমন কোনো ভূমিকা রাখতে পারবে না। কারণ ওই গ্যাস দেশের মূল ভূখণ্ডে সরবরাহের কোনো ব্যবস্থা নেই। প্রথম গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কারের পর ভোলায় যে ছয়টি কূপ খনন করা হয়েছে, সেগুলোর দৈনিক মোট উৎপাদনক্ষমতা প্রায় ১২০ মিলিয়ন (১২ কোটি) ঘনফুট। কিন্তু বিদ্যমান দুটি বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ বর্তমানে ভোলায় দৈনিক গ্যাসের চাহিদা সর্বোচ্চ ৬০ মিলিয়ন ঘনফুট, যা তিনটি কূপ থেকেই সরবরাহ করা যায়। ফলে অবশিষ্ট তিনটি কূপ অলস পড়ে আছে। এর পাশাপাশি এখন আরও তিনটি নতুন কূপ খনন সম্পন্ন হয়েছে। ফলে দৈনিক গ্যাস উত্তোলন সক্ষমতা আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু ব্যবহার সীমিত।
সরকার অবশ্য ভোলার কিছু গ্যাস সিএনজি আকারে সিলিন্ডারে করে ঢাকা এবং এর আশপাশের সংকটাপন্ন এলাকার শিল্পকারখানায় সরবরাহের জন্য বেসরকারি কোম্পানি ইন্ট্রাকোর সঙ্গে চুক্তি করেছে। সেই চুক্তি অনুযায়ী, আগামী সেপ্টেম্বর নাগাদ দৈনিক মাত্র ৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সিএনজি আকারে বিশেষ সিলিন্ডারে করে বিশেষায়িত পরিবহন যানে করে তিতাস গ্যাসের সংকটপূর্ণ এলাকায়
শিল্প প্রতিষ্ঠানে সরবরাহ করা হবে। যে শিল্প যত পিএসআই চাপে গ্যাস ব্যবহার করে, সেই শিল্পে সেই চাপে গ্যাস সরবরাহের জন্যও করতে হবে বিশেষ ব্যবস্থা। এরপর আগামী বছর ফেব্রুয়ারি নাগাদ আরও ২০ (মোট ২৫) মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস একই এলাকার শিল্প প্রতিষ্ঠানে সরবরাহ করা হবে। কিন্তু তাতে চলমান গ্যাস-সংকট সমাধানে যেমন উল্লেখযোগ্য কিছু হবে না, তেমনি ভোলার গ্যাসেরও ব্যবহার খুব একটা বাড়বে না। তিতাসের এলাকায় গ্যাসের দৈনিক সরবরাহ ঘাটতি এখন প্রায় ৮০০ মিলিয়ন ঘনফুট।
তবে ভোলার গ্যাস নিয়ে সরকারের বড় পরিকল্পনাও রয়েছে। এই পরিকল্পনার মূল লক্ষ্য পাইপলাইনে ভোলার গ্যাস দেশের মূল ভূখণ্ডে নিয়ে আসা। ভোলা থেকে বরিশাল হয়ে খুলনা পর্যন্ত একটি এবং পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্ত পর্যন্ত আরেকটি পাইপলাইন করা এই পরিকল্পনার অংশবিশেষ। এ রকম একটি প্রকল্প প্রস্তাব তৈরি করা হয়েছে বলেও জানা গেছে।
তবে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজন ভোলা অঞ্চলে কী পরিমাণ গ্যাস মজুত থাকতে পারে তা নির্ধারণ করা।
দীর্ঘ পাইপলাইন করে সমগ্র দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে ২০-২৫ বছর সরবরাহের জন্য বর্তমানে আবিষ্কৃত ২ দশমিক ৩৮ টিসিএফ গ্যাস যথেষ্ট নয়।
অবশ্য ভোলা অঞ্চলে গ্যাসের বিপুল মজুত সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা যে উচ্চ আশা পোষণ করেন তা আগেই উল্লেখ করেছি।
আমাদের দেশে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য দুটি ভূতাত্ত্বিক কাঠামো সম্ভাবনাময়। এর একটি সুরমা বেসিন। অন্যটি বেঙ্গল বেসিন। বৃহত্তর সিলেট, কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নরসিংদীসহ যেসব এলাকায় বিদ্যমান সব গ্যাসক্ষেত্রগুলো আবিষ্কৃত হয়েছে এর সবই সুরমা বেসিনের অন্তর্ভুক্ত। মূলত ওই অঞ্চলেই অনুসন্ধান, আবিষ্কার ও উত্তোলন করে আসা হয়েছে।
সেই তুলনায় বেঙ্গল বেসিনে তেল-গ্যাস অনুসন্ধান অবহেলিত বা উপেক্ষিতই রয়ে গেছে। ফলে একমাত্র ভোলা ছাড়া বেঙ্গল বেসিনে এখন পর্যন্ত তেমন কোনো আবিষ্কার হয়নি। অথচ ভূতাত্ত্বিক, ভূপদার্থবিদ, বিশেষজ্ঞ গবেষক ও প্রকৌশলীরা বেঙ্গল বেসিনকে অত্যন্ত সম্ভাবনাময় মনে করেন। শুধু প্রয়োজন অনুসন্ধান করে তা আবিষ্কার করা।
তবে এই বিশাল কর্মকাণ্ড একা বাপেক্সের পক্ষে করা সম্ভব নয়। এ জন্য দরকার গ্যাজপ্রমের মতো কোনো অংশীদারের সহযোগিতা। সেই সহযোগিতার সম্ভাবনার কথাও আমরা অনেক শুনেছি। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেছে ভিন্ন কিছু। ফলে দেশ ক্রমাগতভাবে জ্বালানি আমদানির বিপজ্জনক নির্ভরশীলতার দিকে ঝুঁকে পড়েছে। দেশের জ্বালানি সম্পদের উন্নয়ন না করা হলে আমদানির এই ঝোঁক আমাদের কোথায় নিয়ে যাবে—তা বলা খুব মুশকিল।
সম্প্রতি ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত জ্বালানি খাতবিষয়ক একটি আলোচনা অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ একটি গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেছেন। তিনি বলেন, গ্যাস অনুসন্ধান ও সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে প্রচুর সময় ও বিপুল বিনিয়োগের প্রয়োজন হলেও অনুসন্ধান কার্যক্রম অব্যাহত রাখার বিকল্প নেই।
দীর্ঘদিন ধরে দেশের বিশেষজ্ঞ-পেশাজীবীরা এ কথাটিই বলে এসেছেন। আগেই এ কাজটি শুরু করা হলে দেশে বর্তমান জ্বালানি-সংকটের এত জটিল রূপ দেখতে হতো না। তবু যদি সরকার এখনো কাজটি শুরু করে এবং অব্যাহতভাবে চালিয়ে যায়, বিলম্বে হলেও তাও সুফল বয়ে আনবে। কথায় আছে না ‘বেটার লেট দ্যান নেভার!’
অরুণ কর্মকার, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক

শেষ পর্যন্ত ভোলায় প্রাকৃতিক গ্যাসের প্রমাণিত মজুতভান্ডার আরও সমৃদ্ধ হলো। ২৬ বছর আগে আবিষ্কৃত শাহবাজপুরের পর ভোলা নর্থ এবং সবশেষে ইলিশা তো স্বতন্ত্র একটি গ্যাসক্ষেত্র হিসেবেই স্বীকৃতি পেল। সব মিলে সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী ভোলায় এখন আবিষ্কৃত গ্যাসের মজুত ২ দশমিক ৩৮ ট্রিলিয়ন ঘনফুট (টিসিএফ)। নিঃসন্দেহে দেশের জন্য এটি খুব ভালো একটি খবর।
এমন একসময় এ সুখবরটি এসেছে, যখন দেশের জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে চলছে একধরনের অস্থিরতা। দেশের ক্ষেত্রগুলো থেকে গ্যাস উত্তোলন ক্রমেই কমছে। কমতে কমতে দৈনিক ২ হাজার ৭৫০ মিলিয়ন ঘনফুট থেকে ২ হাজার ১৫০ মিলিয়নেরও নিচে নেমে এসেছে। এই কমার প্রবণতার মধ্যেও দেশে মাঝেমধ্যে নতুন কোনো কূপে কিংবা পুরোনো কূপ সংস্কার করে কিছু গ্যাস পাওয়া গেছে। তা সত্ত্বেও উৎপাদন কমার ধারা ঠেকানো যায়নি। ফলে দেশে চাহিদার তুলনায় গ্যাসের সরবরাহ ঘাটতি বেড়ে চলেছে।
তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানি করেও এই ঘাটতি পূরণ করা সম্ভব হয়নি। অদূর ভবিষ্যতে হবেও না। কারণ সীমিত অবকাঠামোর কারণে শিগগিরই এলএনজির আমদানি বাড়ানো সম্ভব নয়। বর্তমানে দৈনিক সর্বোচ্চ ১ হাজার মিলিয়ন ঘনফুটের সমপরিমাণ এলএনজি আমদানি করাই সম্ভব। তার বেশি নয়। এলএনজি আমদানির সক্ষমতা বাড়াতে হলে আরও ভাসমান ও স্থলভিত্তিক টার্মিনাল স্থাপন করতে হবে। সেটা সময়সাপেক্ষ ও ব্যয়বহুল। এলএনজি আমদানিও ব্যয়বহুল। কারণ দাম বেশি। তা ছাড়া ডলার-সংকট তো এই সময়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এই সংকট কত দিন চলবে, কেউ বলতে পারে না। কারণ এর সঙ্গে বৈশ্বিক পরিস্থিতির অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক রয়েছে। গণমাধ্যমে খবর বের হয়েছে, পেট্রোবাংলা অর্থসংকটে আছে।
বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) স্বাভাবিক গতিতে জ্বালানি তেল আমদানি করতে পারছে না। তারও কারণ ডলার-সংকট। বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর উৎপাদন সক্ষমতা হুমকির মুখে পড়েছে। তাদের কাছ থেকে বিদ্যুৎ কিনে সময়মতো দাম পরিশোধ করতে পারছে না বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি)। এরও কারণ ডলার-সংকট ও ডলারের উচ্চমূল্য। ফলে বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রের উদ্যোক্তাদের জ্বালানি তেল আমদানির সক্ষমতা সংকুচিত হয়ে পড়েছে।
গ্যাস-তেল-কয়লানির্বিশেষে জ্বালানি-সংকটের কারণে বিদ্যুতের উৎপাদন ঘাটতি অব্যাহত রয়েছে। ইতিমধ্যে ২ হাজার মেগাওয়াট পর্যন্ত লোডশেডিং করতে হয়েছে। আগামী মাসে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি আরও একবার চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এই পরিস্থিতিতে ভোলায় নতুন গ্যাসের সন্ধান এবং স্বতন্ত্র একটি গ্যাসক্ষেত্র (ইলিশা) ঘোষণা বিশেষ কোনো তাৎপর্য বহন করে কি না, চলমান জ্বালানি-সংকট নিরসনে ভোলার এই গ্যাস কতটা কাজে লাগবে, ভোলায় আরও গ্যাস পাওয়ার সম্ভাবনা আছে কি না, এসব বিষয় পর্যালোচনা করে দেখা দরকার।
ইলিশা স্বতন্ত্র গ্যাসক্ষেত্র হওয়ার কারণ এ ক্ষেত্রটির গ্যাসের কাঠামো (স্ট্রাকচার) ভোলার শাহবাজপুর কিংবা ভোলা নর্থ ক্ষেত্রটির সঙ্গে যুক্ত নয়। মজুত মাত্র ২০০ বিলিয়ন ঘনফুট (বিসিএফ)। এটি দেশের ২৯তম গ্যাসক্ষেত্র। অবশ্য পেট্রোবাংলার প্রডাকশন অ্যান্ড মার্কেটিং বিভাগের দৈনিক প্রতিবেদনে ‘প্রোডিউসিং ফিল্ড’ হিসেবে ২২টির নাম উল্লেখ আছে। এর মধ্যেও রূপগঞ্জ ক্ষেত্রটি পুরোপুরি বন্ধ এবং মেঘনা, সালদা, সেমুতাং, সুন্দলপুর ক্ষেত্রগুলোর উৎপাদনের পরিমাণ নগণ্য।
ইলিশা-১ কূপে গ্যাসের সন্ধান পাওয়ার পর এখন ভোলায় গ্যাসকূপের সংখ্যা দাঁড়াল ৯। এবার তিনটি কূপ খনন করেছে রাশিয়ার কোম্পানি গ্যাজপ্রম। এর আগে ছয়টি কূপ খনন করেছে বাপেক্স নিজে। বাপেক্সের হিসাব অনুযায়ী, ভোলায় এখন গ্যাসের প্রমাণিত মজুত ২ দশমিক ৩৮ টিসিএফ (ট্রিলিয়ন ঘনফুট)। দেশে এখন প্রতিবছর গ্যাস ব্যবহারের পরিমাণ প্রায় এক টিসিএফ।
বিশেষজ্ঞদের অভিমত, ভোলার দক্ষিণে মনপুরাসহ বিচ্ছিন্ন দ্বীপাঞ্চল এবং মেঘনা নদীবক্ষেও বিপুল গ্যাসের মজুত রয়েছে। সেই সব এলাকায় নিবিড় অনুসন্ধান চালানো দরকার। তাঁরা মনে করেন, দেশে এখন পর্যন্ত যে পরিমাণ গ্যাস আবিষ্কৃত হয়েছে তার চেয়ে বেশি অনাবিষ্কৃত রয়েছে। এই অনাবিষ্কৃত গ্যাসের বৃহদাংশই রয়েছে ভোলাসহ বেঙ্গল বেসিনে। নিবিড় অনুসন্ধানের মাধ্যমে এই গ্যাস আবিষ্কারের অপেক্ষায় আছি আমরা দেশবাসী।
ভোলার গ্যাস দেশের চলমান জ্বালানি-সংকট নিরসনে তেমন কোনো ভূমিকা রাখতে পারবে না। কারণ ওই গ্যাস দেশের মূল ভূখণ্ডে সরবরাহের কোনো ব্যবস্থা নেই। প্রথম গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কারের পর ভোলায় যে ছয়টি কূপ খনন করা হয়েছে, সেগুলোর দৈনিক মোট উৎপাদনক্ষমতা প্রায় ১২০ মিলিয়ন (১২ কোটি) ঘনফুট। কিন্তু বিদ্যমান দুটি বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ বর্তমানে ভোলায় দৈনিক গ্যাসের চাহিদা সর্বোচ্চ ৬০ মিলিয়ন ঘনফুট, যা তিনটি কূপ থেকেই সরবরাহ করা যায়। ফলে অবশিষ্ট তিনটি কূপ অলস পড়ে আছে। এর পাশাপাশি এখন আরও তিনটি নতুন কূপ খনন সম্পন্ন হয়েছে। ফলে দৈনিক গ্যাস উত্তোলন সক্ষমতা আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু ব্যবহার সীমিত।
সরকার অবশ্য ভোলার কিছু গ্যাস সিএনজি আকারে সিলিন্ডারে করে ঢাকা এবং এর আশপাশের সংকটাপন্ন এলাকার শিল্পকারখানায় সরবরাহের জন্য বেসরকারি কোম্পানি ইন্ট্রাকোর সঙ্গে চুক্তি করেছে। সেই চুক্তি অনুযায়ী, আগামী সেপ্টেম্বর নাগাদ দৈনিক মাত্র ৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সিএনজি আকারে বিশেষ সিলিন্ডারে করে বিশেষায়িত পরিবহন যানে করে তিতাস গ্যাসের সংকটপূর্ণ এলাকায়
শিল্প প্রতিষ্ঠানে সরবরাহ করা হবে। যে শিল্প যত পিএসআই চাপে গ্যাস ব্যবহার করে, সেই শিল্পে সেই চাপে গ্যাস সরবরাহের জন্যও করতে হবে বিশেষ ব্যবস্থা। এরপর আগামী বছর ফেব্রুয়ারি নাগাদ আরও ২০ (মোট ২৫) মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস একই এলাকার শিল্প প্রতিষ্ঠানে সরবরাহ করা হবে। কিন্তু তাতে চলমান গ্যাস-সংকট সমাধানে যেমন উল্লেখযোগ্য কিছু হবে না, তেমনি ভোলার গ্যাসেরও ব্যবহার খুব একটা বাড়বে না। তিতাসের এলাকায় গ্যাসের দৈনিক সরবরাহ ঘাটতি এখন প্রায় ৮০০ মিলিয়ন ঘনফুট।
তবে ভোলার গ্যাস নিয়ে সরকারের বড় পরিকল্পনাও রয়েছে। এই পরিকল্পনার মূল লক্ষ্য পাইপলাইনে ভোলার গ্যাস দেশের মূল ভূখণ্ডে নিয়ে আসা। ভোলা থেকে বরিশাল হয়ে খুলনা পর্যন্ত একটি এবং পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্ত পর্যন্ত আরেকটি পাইপলাইন করা এই পরিকল্পনার অংশবিশেষ। এ রকম একটি প্রকল্প প্রস্তাব তৈরি করা হয়েছে বলেও জানা গেছে।
তবে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজন ভোলা অঞ্চলে কী পরিমাণ গ্যাস মজুত থাকতে পারে তা নির্ধারণ করা।
দীর্ঘ পাইপলাইন করে সমগ্র দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে ২০-২৫ বছর সরবরাহের জন্য বর্তমানে আবিষ্কৃত ২ দশমিক ৩৮ টিসিএফ গ্যাস যথেষ্ট নয়।
অবশ্য ভোলা অঞ্চলে গ্যাসের বিপুল মজুত সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা যে উচ্চ আশা পোষণ করেন তা আগেই উল্লেখ করেছি।
আমাদের দেশে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য দুটি ভূতাত্ত্বিক কাঠামো সম্ভাবনাময়। এর একটি সুরমা বেসিন। অন্যটি বেঙ্গল বেসিন। বৃহত্তর সিলেট, কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নরসিংদীসহ যেসব এলাকায় বিদ্যমান সব গ্যাসক্ষেত্রগুলো আবিষ্কৃত হয়েছে এর সবই সুরমা বেসিনের অন্তর্ভুক্ত। মূলত ওই অঞ্চলেই অনুসন্ধান, আবিষ্কার ও উত্তোলন করে আসা হয়েছে।
সেই তুলনায় বেঙ্গল বেসিনে তেল-গ্যাস অনুসন্ধান অবহেলিত বা উপেক্ষিতই রয়ে গেছে। ফলে একমাত্র ভোলা ছাড়া বেঙ্গল বেসিনে এখন পর্যন্ত তেমন কোনো আবিষ্কার হয়নি। অথচ ভূতাত্ত্বিক, ভূপদার্থবিদ, বিশেষজ্ঞ গবেষক ও প্রকৌশলীরা বেঙ্গল বেসিনকে অত্যন্ত সম্ভাবনাময় মনে করেন। শুধু প্রয়োজন অনুসন্ধান করে তা আবিষ্কার করা।
তবে এই বিশাল কর্মকাণ্ড একা বাপেক্সের পক্ষে করা সম্ভব নয়। এ জন্য দরকার গ্যাজপ্রমের মতো কোনো অংশীদারের সহযোগিতা। সেই সহযোগিতার সম্ভাবনার কথাও আমরা অনেক শুনেছি। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেছে ভিন্ন কিছু। ফলে দেশ ক্রমাগতভাবে জ্বালানি আমদানির বিপজ্জনক নির্ভরশীলতার দিকে ঝুঁকে পড়েছে। দেশের জ্বালানি সম্পদের উন্নয়ন না করা হলে আমদানির এই ঝোঁক আমাদের কোথায় নিয়ে যাবে—তা বলা খুব মুশকিল।
সম্প্রতি ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত জ্বালানি খাতবিষয়ক একটি আলোচনা অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ একটি গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেছেন। তিনি বলেন, গ্যাস অনুসন্ধান ও সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে প্রচুর সময় ও বিপুল বিনিয়োগের প্রয়োজন হলেও অনুসন্ধান কার্যক্রম অব্যাহত রাখার বিকল্প নেই।
দীর্ঘদিন ধরে দেশের বিশেষজ্ঞ-পেশাজীবীরা এ কথাটিই বলে এসেছেন। আগেই এ কাজটি শুরু করা হলে দেশে বর্তমান জ্বালানি-সংকটের এত জটিল রূপ দেখতে হতো না। তবু যদি সরকার এখনো কাজটি শুরু করে এবং অব্যাহতভাবে চালিয়ে যায়, বিলম্বে হলেও তাও সুফল বয়ে আনবে। কথায় আছে না ‘বেটার লেট দ্যান নেভার!’
অরুণ কর্মকার, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২১ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

শেষ পর্যন্ত ভোলায় প্রাকৃতিক গ্যাসের প্রমাণিত মজুতভান্ডার আরও সমৃদ্ধ হলো। ২৬ বছর আগে আবিষ্কৃত শাহবাজপুরের পর ভোলা নর্থ এবং সবশেষে ইলিশা তো স্বতন্ত্র একটি গ্যাসক্ষেত্র হিসেবেই স্বীকৃতি পেল। সব মিলে সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী ভোলায়
২৭ মে ২০২৩
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

শেষ পর্যন্ত ভোলায় প্রাকৃতিক গ্যাসের প্রমাণিত মজুতভান্ডার আরও সমৃদ্ধ হলো। ২৬ বছর আগে আবিষ্কৃত শাহবাজপুরের পর ভোলা নর্থ এবং সবশেষে ইলিশা তো স্বতন্ত্র একটি গ্যাসক্ষেত্র হিসেবেই স্বীকৃতি পেল। সব মিলে সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী ভোলায়
২৭ মে ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২১ দিন আগে
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

শেষ পর্যন্ত ভোলায় প্রাকৃতিক গ্যাসের প্রমাণিত মজুতভান্ডার আরও সমৃদ্ধ হলো। ২৬ বছর আগে আবিষ্কৃত শাহবাজপুরের পর ভোলা নর্থ এবং সবশেষে ইলিশা তো স্বতন্ত্র একটি গ্যাসক্ষেত্র হিসেবেই স্বীকৃতি পেল। সব মিলে সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী ভোলায়
২৭ মে ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২১ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

শেষ পর্যন্ত ভোলায় প্রাকৃতিক গ্যাসের প্রমাণিত মজুতভান্ডার আরও সমৃদ্ধ হলো। ২৬ বছর আগে আবিষ্কৃত শাহবাজপুরের পর ভোলা নর্থ এবং সবশেষে ইলিশা তো স্বতন্ত্র একটি গ্যাসক্ষেত্র হিসেবেই স্বীকৃতি পেল। সব মিলে সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী ভোলায়
২৭ মে ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২১ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫