ড. রাশেদা রওনক খান

ভবিষ্যতের বাংলাদেশ কেমন হবে, স্মার্ট বাংলাদেশ বলতে কী ইঙ্গিত করে, চাইলেই কি স্মার্ট হয়ে যাওয়া যায়? একটি রাষ্ট্রের স্মার্ট হয়ে যাওয়ার যে জার্নি, এটা কি খুব সহজ? কেবল অবকাঠামোগত উন্নয়ন কি একটি রাষ্ট্রকে স্মার্ট করে তুলতে পারে? তাহলে স্মার্ট বাংলাদেশ হতে আর কী কী প্রয়োজন? কীভাবে সেগুলো অর্জন সম্ভব? এসব প্রশ্ন এখনই বারবার সামনে আসা উচিত, যেন স্মার্ট বাংলাদেশ নিয়ে যাঁরা ভাবছেন, তাঁরা কিছুটা ভেবেচিন্তে পরিকল্পনাগুলো করতে পারেন।
স্মার্ট বাংলাদেশের জন্য চারটি ভিত্তি ঠিক করা হয়েছে—প্রথমত, স্মার্ট সিটিজেন অর্থাৎ প্রত্যেক নাগরিক প্রযুক্তি ব্যবহারে দক্ষ হবেন; দ্বিতীয়ত, স্মার্ট ইকোনমি অর্থাৎ অর্থনীতির সব কার্যক্রম হবে প্রযুক্তি ব্যবহার করে; তৃতীয়ত, স্মার্ট গভর্নমেন্ট, যার মাধ্যমে আমরা পরিচালিত হব; এবং সর্বশেষ বলা হচ্ছে, গোটা সমাজই হবে স্মার্ট সোসাইটি!
আজকের আলোচনা এই স্মার্ট সমাজ নিয়ে। আমি এই ‘গোটা সমাজ’ ধারণার ওপর জোর দিতে চাই। এই যে ‘সব’ বা ‘সবাই’ স্মার্ট হওয়ার কথা বলা হচ্ছে, আদতে কি এই ‘সবাই’-এর মাঝে সমাজের পিছিয়ে থাকা মানুষজনকেও অন্তর্ভুক্ত করার প্রচেষ্টা রয়েছে? স্মার্ট সিটিতে কি শহরগুলো সব সবুজ হয়ে উঠবে? দুর্নীতিবাজদের দুর্নীতি কমে যাবে? আর স্মার্ট বাংলাদেশের স্মার্ট নাগরিক কী রকম হবে? সমাজের সব প্রতিষ্ঠান, চিন্তাভাবনা নারীবান্ধব হয়ে উঠবে? রাস্তাঘাট নিরাপদ হবে; যেখানে ছিনতাই, পকেট মারা, ইভ টিজিং—এসব ঘটবে না? হাজার কোটি টাকার ডিজিটাল প্রযুক্তি, অটোমেশন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, অবকাঠামোগত উন্নয়ন—এসবের সমন্বয়ে গড়ে ওঠা স্মার্ট সিটিতে কি মানবসম্পদ উন্নয়নের জায়গা আছে? পরিকল্পনায় যে স্মার্ট বাংলাদেশ, সেই পরিকল্পনার সঙ্গে বাস্তবতার বাংলাদেশের সম্পর্ক কেমন, কতটা দূরে কিংবা কাছে?
ঢাকায় একটু বৃষ্টিতেই যে যানজট আর জলাবদ্ধতা তৈরি হয়, তা কীভাবে দূরীভূত হবে, সেটি কি আছে স্মার্ট সিটির পরিকল্পনায়? ঢাকার বাতাসে যে বিষাক্ততা আমাদের জনজীবনকে অতিষ্ঠ করে তুলছে, তার কী হবে? স্মার্ট শহর গড়ে তুলতে ঢাকা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট প্ল্যান, ডিটেইলড এরিয়া প্ল্যান ইত্যাদি নানা নামে রাজউকের যে ভাবনা, তাতে কি নগর দরিদ্রদের সুলভে আবাসন সুবিধা দেওয়ার বিষয় আছে? রাজউকের গড়ে তোলা বহুতল ভবনের ‘টার্গেট ক্লায়েন্ট’ কারা?
স্মার্ট সিটির কেন্দ্রে অবস্থিত ইনফরমাল ইকোনমির ধারক-বাহক, উচ্চবিত্তদের বাসাবাড়ি ও অফিসে যাঁরা কাজ করে স্মার্ট আবহ তৈরি করেন, সেই সুবিশাল ইনফরমাল ও অধস্তন কর্মী বাহিনীর জন্য ন্যূনতম সুযোগ-সুবিধা কি এই প্ল্যানগুলোতে আছে? সুযোগ-সুবিধা দেওয়া দূরে থাক, এসব পরিকল্পনায় তাঁদের শহরের বাইরে থাকার এবং বাইরে থেকে এসে কাজ করার যে চিন্তা করা হচ্ছে, তা কতটা মানবিক হবে? স্মার্ট সিটিতে মানবিকতার জায়গা কোথায় তাহলে?
স্মার্ট সরকার, স্মার্ট প্রশাসন, স্মার্ট পুলিশিং—এসবের চূড়ান্ত রূপ কেমন হবে? ধারণায়নের ক্ষেত্রে বলা যায়, প্রান্তিক পর্যায়ে সর্বস্তরের মানুষকে এসব প্রশাসনিক সার্ভিস প্রদান নিশ্চিত করা। কিন্তু এই পরিকল্পনায় সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান আসলে মানসিকভাবে কতটা প্রস্তুতি নিয়েছে? উৎপাদন বহুগুণে বাড়ানো, দ্রুত সেবা প্রদান নিশ্চিত করা, অর্থনৈতিক উন্নয়নে গতিশীলতা আনা—কতটা সম্ভব অর্জন করা? যেমন আমাদের পাসপোর্ট এখন সম্পূর্ণ প্রযুক্তিনির্ভর এমআরপিতে রূপান্তর করা হচ্ছে; কিন্তু তা করতে গিয়ে নাগরিকেরা কি নানা ধরনের দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পাচ্ছেন?
নাকি সরকারের বিভিন্ন অফিসে গিয়ে তাঁদের লাল ফিতাবন্ধ ফাইল এক টেবিল থেকে আরেক টেবিলে নিতে ঘুষ দিতে হয়? ডিজিটাল পদ্ধতি কি কোনোভাবে দুর্নীতিবাজদের মনের মাঝে লুকিয়ে থাকা ঘুষের সংস্কৃতিকে রুখতে পারবে? বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের বর্তমানে মূল টার্গেট সরকারি চাকরি পাওয়া এবং পাওয়ার পর অনেকে এই দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। স্মার্ট বাংলাদেশের স্মার্ট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করা স্মার্ট চাকরিজীবীরা যদি এভাবে দুর্নীতিগ্রস্ত হতে থাকেন, তাহলে এই স্মার্টনেসের অর্থ কী দাঁড়াবে?
স্মার্ট রাজনীতির স্বরূপ কেমন হবে এই স্মার্ট বাংলাদেশে? তরুণ রাজনীতিবিদেরা সাধারণের পাশে দাঁড়াতে পারতেন, দিনমজুর, কৃষক, পাটকলশ্রমিক, গৃহহীন মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারতেন, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে আসা দরিদ্র শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়াতেন। ছাত্ররাজনীতি পুরোপুরি ছাত্রদের কল্যাণে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কল্যাণে নিবেদিত হতে পারত।
তাই ভাবি, স্মার্ট বাংলাদেশের রাজনীতি কতটা স্মার্ট হয়ে উঠবে? তারুণ্যের রাজনীতি তো স্মার্ট হওয়ারই কথা, কিন্তু তা কি হচ্ছে? এখনো তরুণেরা নির্বাচনের দিন প্রতিপক্ষকে মারধর করে, ভাবা যায়? সাধারণের সঙ্গে সম্পৃক্ততা ঘটছে কি তারুণ্যের রাজনীতির, নাকি তারুণ্য ছুটছে ‘বড় ভাই’, ‘সহমত ভাই’ সংস্কৃতিতে? সাধারণের সঙ্গে সম্পৃক্ততা না থাকলে এই দেশে ছাত্ররাজনীতির অর্থ কী? কেবল ক্ষমতার সিঁড়ি ভাঙা? তারুণ্য কি ক্ষমতালোভী হয়ে উঠছে?
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অনেক শিক্ষার্থী টাকার অভাবে পরীক্ষা দিতে পারছে না, ঠিকভাবে চলতে পারছে না—সেসব নিয়ে চিন্তা কি ছাত্রসংগঠনগুলোর আছে? জানতে চাওয়ার মতো মন থাকলে বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন শিক্ষার্থী কতটা কষ্টে আছে, অভাবে আছে, তা জানা সম্ভব, কেবল প্রয়োজন দেখার চোখ আর মানবিক মন। সেসব কি এখনকার স্মার্ট ছাত্ররাজনীতি শেখায় ছাত্রদের? সমাজের সাধারণ মানুষের প্রতি যদি নজর না থাকে, চিন্তাভাবনা না থাকে; আগ্রহের বিষয় থাকে কেবল পদ-পদবি নিয়ে মারামারি, হানাহানি আর সেই ক্ষমতায়িত পদের দাপট দেখানো, তাহলে কি সেই ছাত্ররাজনীতিকে স্মার্ট রাজনীতি বলা যাবে?
কেবল ছাত্ররাজনীতি নয়, আমরা সাধারণ মানুষও ইদানীং সবকিছুতেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতি বিশ্বাস ও আনুগত্যের ওপর ভিত্তি করে কথা বলি, অন্ধের মতো। যে নিজস্বতা বোধ থাকা প্রয়োজন, তা যেন হারিয়ে যেতে বসেছে আমাদের। বড় দুই দলের বাইরেও আমাদের জীবন আছে, সেই জীবনের সবকিছুকে যেন এই দলীয় বিবেচনা দিয়েই ভাবতে শিখেছি। ধরা যাক, ফেসবুকে কেউ স্ট্যাটাস দিল, সেটা পড়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের মাথায় কাজ করে, এটা কোন দলের পক্ষে যাচ্ছে বা বিপক্ষে যাচ্ছে! যদি পছন্দের দলের পক্ষে যায়, তাহলে বাহবা আর বিপক্ষে গেলে তো কথাই নেই! শুরু হবে নানা অপকথা।
বয়স্কদের ক্ষেত্রে এসব দেখলে চিন্তিত হতাম না, তরুণদেরও যখন একইভাবে ভাবতে দেখি, তখন ভাবি, পরিবর্তন আসবে কীভাবে, যদি আমরা নিজেরাই পরিবর্তিত না হই? তারুণ্যের চিন্তাভাবনায় স্বকীয়তা না এলে কিন্তু সামনের দিনগুলোতে কোনো আলো থাকবে না। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম কেবল রাজনৈতিক ঘৃণা-বিদ্বেষ কিংবা অপপ্রচারের প্ল্যাটফর্ম নয়, ভালোবাসা-শ্রদ্ধা-মানবতা ছড়িয়ে দেওয়ারও একটি জায়গা হতে পারে। আর এই কাজটি তরুণদেরই, যাদের হাতে আসলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের চাবি।
স্মার্ট বাংলাদেশ মানেই প্রযুক্তির বিকাশ, যার অনেকটুকুই আমরা দেখতে পাচ্ছি। ক্যাশলেস লেনদেন, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, আরও কত নতুন নতুন প্রযুক্তি যে আসছে বা আসবে, তা সময়ই বলে দেবে। একজন সত্যিকারের মানুষ তৈরির জন্য কেবল প্রযুক্তিতে দক্ষ করে গড়ে তুললেই হবে না, তাকে মানবিক মানুষ হিসেবেও তৈরি করতে হবে। মানবিকতাবিহীন সমাজে প্রযুক্তির ব্যাপক প্রসার মানুষের
কল্যাণে আসবে না। স্মার্ট সিটির সিটিজেন কি আধুনিক-মননশীল-সৃজনশীল-নান্দনিকতা চেতনার মানুষ হবে?
আমরা স্বপ্ন দেখতেই ভালোবাসি, তাই আমাদের স্বপ্নে স্মার্ট বাংলাদেশের যে চিত্র আছে, সেখানে ‘সকল’-এর অন্তর্ভুক্তি ঘটুক, নারী-পুরুষ, ধনী-গরিব, ধর্ম-শ্রেণি-নির্বিশেষে সবার কথা চিন্তা করেই তৈরি হোক সব পরিকল্পনা। স্মার্ট ইকোনমিতে ফরমাল এবং ইনফরমাল ইকোনমি যেমন থাকবে, তেমনি ফরমাল ও ইনফরমাল বাসস্থানও থাকুক, যেখানে শহরের অতি দরিদ্র মানুষ তাদের কর্মসংস্থানের আশপাশে বসবাস করার সুযোগ পায়। মানুষ হয়ে উঠুক প্রকৃত অর্থেই স্মার্ট, শুধু বাহ্যিক সৌন্দর্য, প্রকৃত স্মার্টনেস নয়। একজন মানুষ যখন ভেতর থেকে সুন্দর, সাবলীল, দয়ালু, দানশীল, মানবিক, পজিটিভ চিন্তার অধিকারী—তখনই কেবল সত্যিকার অর্থে স্মার্ট হয়ে ওঠে।
এই ধরনের স্মার্ট সিটিজেন তৈরি কীভাবে সম্ভব? আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার যে হাল, তা কি এই শিক্ষা দেয় আদৌ? তাহলে এই স্মার্ট সিটিজেন কোথায় পাব, তার জন্য কি কোনো পরিকল্পনা করা হচ্ছে বা হয়েছে? নতুন প্রজন্ম এই স্মার্ট সিটিজেনে পরিণত হোক, দেশকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে যাক, তেমন স্বপ্নই দেখি। দেশ, সরকার, অর্থনীতি, রাজনীতি হোক সকলের, হোক স্মার্ট, তাহলেই স্মার্ট বাংলাদেশের অবয়ব আমরা দেখতে পাব।
লেখক: শিক্ষক, নৃবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

ভবিষ্যতের বাংলাদেশ কেমন হবে, স্মার্ট বাংলাদেশ বলতে কী ইঙ্গিত করে, চাইলেই কি স্মার্ট হয়ে যাওয়া যায়? একটি রাষ্ট্রের স্মার্ট হয়ে যাওয়ার যে জার্নি, এটা কি খুব সহজ? কেবল অবকাঠামোগত উন্নয়ন কি একটি রাষ্ট্রকে স্মার্ট করে তুলতে পারে? তাহলে স্মার্ট বাংলাদেশ হতে আর কী কী প্রয়োজন? কীভাবে সেগুলো অর্জন সম্ভব? এসব প্রশ্ন এখনই বারবার সামনে আসা উচিত, যেন স্মার্ট বাংলাদেশ নিয়ে যাঁরা ভাবছেন, তাঁরা কিছুটা ভেবেচিন্তে পরিকল্পনাগুলো করতে পারেন।
স্মার্ট বাংলাদেশের জন্য চারটি ভিত্তি ঠিক করা হয়েছে—প্রথমত, স্মার্ট সিটিজেন অর্থাৎ প্রত্যেক নাগরিক প্রযুক্তি ব্যবহারে দক্ষ হবেন; দ্বিতীয়ত, স্মার্ট ইকোনমি অর্থাৎ অর্থনীতির সব কার্যক্রম হবে প্রযুক্তি ব্যবহার করে; তৃতীয়ত, স্মার্ট গভর্নমেন্ট, যার মাধ্যমে আমরা পরিচালিত হব; এবং সর্বশেষ বলা হচ্ছে, গোটা সমাজই হবে স্মার্ট সোসাইটি!
আজকের আলোচনা এই স্মার্ট সমাজ নিয়ে। আমি এই ‘গোটা সমাজ’ ধারণার ওপর জোর দিতে চাই। এই যে ‘সব’ বা ‘সবাই’ স্মার্ট হওয়ার কথা বলা হচ্ছে, আদতে কি এই ‘সবাই’-এর মাঝে সমাজের পিছিয়ে থাকা মানুষজনকেও অন্তর্ভুক্ত করার প্রচেষ্টা রয়েছে? স্মার্ট সিটিতে কি শহরগুলো সব সবুজ হয়ে উঠবে? দুর্নীতিবাজদের দুর্নীতি কমে যাবে? আর স্মার্ট বাংলাদেশের স্মার্ট নাগরিক কী রকম হবে? সমাজের সব প্রতিষ্ঠান, চিন্তাভাবনা নারীবান্ধব হয়ে উঠবে? রাস্তাঘাট নিরাপদ হবে; যেখানে ছিনতাই, পকেট মারা, ইভ টিজিং—এসব ঘটবে না? হাজার কোটি টাকার ডিজিটাল প্রযুক্তি, অটোমেশন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, অবকাঠামোগত উন্নয়ন—এসবের সমন্বয়ে গড়ে ওঠা স্মার্ট সিটিতে কি মানবসম্পদ উন্নয়নের জায়গা আছে? পরিকল্পনায় যে স্মার্ট বাংলাদেশ, সেই পরিকল্পনার সঙ্গে বাস্তবতার বাংলাদেশের সম্পর্ক কেমন, কতটা দূরে কিংবা কাছে?
ঢাকায় একটু বৃষ্টিতেই যে যানজট আর জলাবদ্ধতা তৈরি হয়, তা কীভাবে দূরীভূত হবে, সেটি কি আছে স্মার্ট সিটির পরিকল্পনায়? ঢাকার বাতাসে যে বিষাক্ততা আমাদের জনজীবনকে অতিষ্ঠ করে তুলছে, তার কী হবে? স্মার্ট শহর গড়ে তুলতে ঢাকা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট প্ল্যান, ডিটেইলড এরিয়া প্ল্যান ইত্যাদি নানা নামে রাজউকের যে ভাবনা, তাতে কি নগর দরিদ্রদের সুলভে আবাসন সুবিধা দেওয়ার বিষয় আছে? রাজউকের গড়ে তোলা বহুতল ভবনের ‘টার্গেট ক্লায়েন্ট’ কারা?
স্মার্ট সিটির কেন্দ্রে অবস্থিত ইনফরমাল ইকোনমির ধারক-বাহক, উচ্চবিত্তদের বাসাবাড়ি ও অফিসে যাঁরা কাজ করে স্মার্ট আবহ তৈরি করেন, সেই সুবিশাল ইনফরমাল ও অধস্তন কর্মী বাহিনীর জন্য ন্যূনতম সুযোগ-সুবিধা কি এই প্ল্যানগুলোতে আছে? সুযোগ-সুবিধা দেওয়া দূরে থাক, এসব পরিকল্পনায় তাঁদের শহরের বাইরে থাকার এবং বাইরে থেকে এসে কাজ করার যে চিন্তা করা হচ্ছে, তা কতটা মানবিক হবে? স্মার্ট সিটিতে মানবিকতার জায়গা কোথায় তাহলে?
স্মার্ট সরকার, স্মার্ট প্রশাসন, স্মার্ট পুলিশিং—এসবের চূড়ান্ত রূপ কেমন হবে? ধারণায়নের ক্ষেত্রে বলা যায়, প্রান্তিক পর্যায়ে সর্বস্তরের মানুষকে এসব প্রশাসনিক সার্ভিস প্রদান নিশ্চিত করা। কিন্তু এই পরিকল্পনায় সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান আসলে মানসিকভাবে কতটা প্রস্তুতি নিয়েছে? উৎপাদন বহুগুণে বাড়ানো, দ্রুত সেবা প্রদান নিশ্চিত করা, অর্থনৈতিক উন্নয়নে গতিশীলতা আনা—কতটা সম্ভব অর্জন করা? যেমন আমাদের পাসপোর্ট এখন সম্পূর্ণ প্রযুক্তিনির্ভর এমআরপিতে রূপান্তর করা হচ্ছে; কিন্তু তা করতে গিয়ে নাগরিকেরা কি নানা ধরনের দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পাচ্ছেন?
নাকি সরকারের বিভিন্ন অফিসে গিয়ে তাঁদের লাল ফিতাবন্ধ ফাইল এক টেবিল থেকে আরেক টেবিলে নিতে ঘুষ দিতে হয়? ডিজিটাল পদ্ধতি কি কোনোভাবে দুর্নীতিবাজদের মনের মাঝে লুকিয়ে থাকা ঘুষের সংস্কৃতিকে রুখতে পারবে? বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের বর্তমানে মূল টার্গেট সরকারি চাকরি পাওয়া এবং পাওয়ার পর অনেকে এই দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। স্মার্ট বাংলাদেশের স্মার্ট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করা স্মার্ট চাকরিজীবীরা যদি এভাবে দুর্নীতিগ্রস্ত হতে থাকেন, তাহলে এই স্মার্টনেসের অর্থ কী দাঁড়াবে?
স্মার্ট রাজনীতির স্বরূপ কেমন হবে এই স্মার্ট বাংলাদেশে? তরুণ রাজনীতিবিদেরা সাধারণের পাশে দাঁড়াতে পারতেন, দিনমজুর, কৃষক, পাটকলশ্রমিক, গৃহহীন মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারতেন, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে আসা দরিদ্র শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়াতেন। ছাত্ররাজনীতি পুরোপুরি ছাত্রদের কল্যাণে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কল্যাণে নিবেদিত হতে পারত।
তাই ভাবি, স্মার্ট বাংলাদেশের রাজনীতি কতটা স্মার্ট হয়ে উঠবে? তারুণ্যের রাজনীতি তো স্মার্ট হওয়ারই কথা, কিন্তু তা কি হচ্ছে? এখনো তরুণেরা নির্বাচনের দিন প্রতিপক্ষকে মারধর করে, ভাবা যায়? সাধারণের সঙ্গে সম্পৃক্ততা ঘটছে কি তারুণ্যের রাজনীতির, নাকি তারুণ্য ছুটছে ‘বড় ভাই’, ‘সহমত ভাই’ সংস্কৃতিতে? সাধারণের সঙ্গে সম্পৃক্ততা না থাকলে এই দেশে ছাত্ররাজনীতির অর্থ কী? কেবল ক্ষমতার সিঁড়ি ভাঙা? তারুণ্য কি ক্ষমতালোভী হয়ে উঠছে?
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অনেক শিক্ষার্থী টাকার অভাবে পরীক্ষা দিতে পারছে না, ঠিকভাবে চলতে পারছে না—সেসব নিয়ে চিন্তা কি ছাত্রসংগঠনগুলোর আছে? জানতে চাওয়ার মতো মন থাকলে বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন শিক্ষার্থী কতটা কষ্টে আছে, অভাবে আছে, তা জানা সম্ভব, কেবল প্রয়োজন দেখার চোখ আর মানবিক মন। সেসব কি এখনকার স্মার্ট ছাত্ররাজনীতি শেখায় ছাত্রদের? সমাজের সাধারণ মানুষের প্রতি যদি নজর না থাকে, চিন্তাভাবনা না থাকে; আগ্রহের বিষয় থাকে কেবল পদ-পদবি নিয়ে মারামারি, হানাহানি আর সেই ক্ষমতায়িত পদের দাপট দেখানো, তাহলে কি সেই ছাত্ররাজনীতিকে স্মার্ট রাজনীতি বলা যাবে?
কেবল ছাত্ররাজনীতি নয়, আমরা সাধারণ মানুষও ইদানীং সবকিছুতেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতি বিশ্বাস ও আনুগত্যের ওপর ভিত্তি করে কথা বলি, অন্ধের মতো। যে নিজস্বতা বোধ থাকা প্রয়োজন, তা যেন হারিয়ে যেতে বসেছে আমাদের। বড় দুই দলের বাইরেও আমাদের জীবন আছে, সেই জীবনের সবকিছুকে যেন এই দলীয় বিবেচনা দিয়েই ভাবতে শিখেছি। ধরা যাক, ফেসবুকে কেউ স্ট্যাটাস দিল, সেটা পড়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের মাথায় কাজ করে, এটা কোন দলের পক্ষে যাচ্ছে বা বিপক্ষে যাচ্ছে! যদি পছন্দের দলের পক্ষে যায়, তাহলে বাহবা আর বিপক্ষে গেলে তো কথাই নেই! শুরু হবে নানা অপকথা।
বয়স্কদের ক্ষেত্রে এসব দেখলে চিন্তিত হতাম না, তরুণদেরও যখন একইভাবে ভাবতে দেখি, তখন ভাবি, পরিবর্তন আসবে কীভাবে, যদি আমরা নিজেরাই পরিবর্তিত না হই? তারুণ্যের চিন্তাভাবনায় স্বকীয়তা না এলে কিন্তু সামনের দিনগুলোতে কোনো আলো থাকবে না। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম কেবল রাজনৈতিক ঘৃণা-বিদ্বেষ কিংবা অপপ্রচারের প্ল্যাটফর্ম নয়, ভালোবাসা-শ্রদ্ধা-মানবতা ছড়িয়ে দেওয়ারও একটি জায়গা হতে পারে। আর এই কাজটি তরুণদেরই, যাদের হাতে আসলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের চাবি।
স্মার্ট বাংলাদেশ মানেই প্রযুক্তির বিকাশ, যার অনেকটুকুই আমরা দেখতে পাচ্ছি। ক্যাশলেস লেনদেন, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, আরও কত নতুন নতুন প্রযুক্তি যে আসছে বা আসবে, তা সময়ই বলে দেবে। একজন সত্যিকারের মানুষ তৈরির জন্য কেবল প্রযুক্তিতে দক্ষ করে গড়ে তুললেই হবে না, তাকে মানবিক মানুষ হিসেবেও তৈরি করতে হবে। মানবিকতাবিহীন সমাজে প্রযুক্তির ব্যাপক প্রসার মানুষের
কল্যাণে আসবে না। স্মার্ট সিটির সিটিজেন কি আধুনিক-মননশীল-সৃজনশীল-নান্দনিকতা চেতনার মানুষ হবে?
আমরা স্বপ্ন দেখতেই ভালোবাসি, তাই আমাদের স্বপ্নে স্মার্ট বাংলাদেশের যে চিত্র আছে, সেখানে ‘সকল’-এর অন্তর্ভুক্তি ঘটুক, নারী-পুরুষ, ধনী-গরিব, ধর্ম-শ্রেণি-নির্বিশেষে সবার কথা চিন্তা করেই তৈরি হোক সব পরিকল্পনা। স্মার্ট ইকোনমিতে ফরমাল এবং ইনফরমাল ইকোনমি যেমন থাকবে, তেমনি ফরমাল ও ইনফরমাল বাসস্থানও থাকুক, যেখানে শহরের অতি দরিদ্র মানুষ তাদের কর্মসংস্থানের আশপাশে বসবাস করার সুযোগ পায়। মানুষ হয়ে উঠুক প্রকৃত অর্থেই স্মার্ট, শুধু বাহ্যিক সৌন্দর্য, প্রকৃত স্মার্টনেস নয়। একজন মানুষ যখন ভেতর থেকে সুন্দর, সাবলীল, দয়ালু, দানশীল, মানবিক, পজিটিভ চিন্তার অধিকারী—তখনই কেবল সত্যিকার অর্থে স্মার্ট হয়ে ওঠে।
এই ধরনের স্মার্ট সিটিজেন তৈরি কীভাবে সম্ভব? আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার যে হাল, তা কি এই শিক্ষা দেয় আদৌ? তাহলে এই স্মার্ট সিটিজেন কোথায় পাব, তার জন্য কি কোনো পরিকল্পনা করা হচ্ছে বা হয়েছে? নতুন প্রজন্ম এই স্মার্ট সিটিজেনে পরিণত হোক, দেশকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে যাক, তেমন স্বপ্নই দেখি। দেশ, সরকার, অর্থনীতি, রাজনীতি হোক সকলের, হোক স্মার্ট, তাহলেই স্মার্ট বাংলাদেশের অবয়ব আমরা দেখতে পাব।
লেখক: শিক্ষক, নৃবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
ড. রাশেদা রওনক খান

ভবিষ্যতের বাংলাদেশ কেমন হবে, স্মার্ট বাংলাদেশ বলতে কী ইঙ্গিত করে, চাইলেই কি স্মার্ট হয়ে যাওয়া যায়? একটি রাষ্ট্রের স্মার্ট হয়ে যাওয়ার যে জার্নি, এটা কি খুব সহজ? কেবল অবকাঠামোগত উন্নয়ন কি একটি রাষ্ট্রকে স্মার্ট করে তুলতে পারে? তাহলে স্মার্ট বাংলাদেশ হতে আর কী কী প্রয়োজন? কীভাবে সেগুলো অর্জন সম্ভব? এসব প্রশ্ন এখনই বারবার সামনে আসা উচিত, যেন স্মার্ট বাংলাদেশ নিয়ে যাঁরা ভাবছেন, তাঁরা কিছুটা ভেবেচিন্তে পরিকল্পনাগুলো করতে পারেন।
স্মার্ট বাংলাদেশের জন্য চারটি ভিত্তি ঠিক করা হয়েছে—প্রথমত, স্মার্ট সিটিজেন অর্থাৎ প্রত্যেক নাগরিক প্রযুক্তি ব্যবহারে দক্ষ হবেন; দ্বিতীয়ত, স্মার্ট ইকোনমি অর্থাৎ অর্থনীতির সব কার্যক্রম হবে প্রযুক্তি ব্যবহার করে; তৃতীয়ত, স্মার্ট গভর্নমেন্ট, যার মাধ্যমে আমরা পরিচালিত হব; এবং সর্বশেষ বলা হচ্ছে, গোটা সমাজই হবে স্মার্ট সোসাইটি!
আজকের আলোচনা এই স্মার্ট সমাজ নিয়ে। আমি এই ‘গোটা সমাজ’ ধারণার ওপর জোর দিতে চাই। এই যে ‘সব’ বা ‘সবাই’ স্মার্ট হওয়ার কথা বলা হচ্ছে, আদতে কি এই ‘সবাই’-এর মাঝে সমাজের পিছিয়ে থাকা মানুষজনকেও অন্তর্ভুক্ত করার প্রচেষ্টা রয়েছে? স্মার্ট সিটিতে কি শহরগুলো সব সবুজ হয়ে উঠবে? দুর্নীতিবাজদের দুর্নীতি কমে যাবে? আর স্মার্ট বাংলাদেশের স্মার্ট নাগরিক কী রকম হবে? সমাজের সব প্রতিষ্ঠান, চিন্তাভাবনা নারীবান্ধব হয়ে উঠবে? রাস্তাঘাট নিরাপদ হবে; যেখানে ছিনতাই, পকেট মারা, ইভ টিজিং—এসব ঘটবে না? হাজার কোটি টাকার ডিজিটাল প্রযুক্তি, অটোমেশন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, অবকাঠামোগত উন্নয়ন—এসবের সমন্বয়ে গড়ে ওঠা স্মার্ট সিটিতে কি মানবসম্পদ উন্নয়নের জায়গা আছে? পরিকল্পনায় যে স্মার্ট বাংলাদেশ, সেই পরিকল্পনার সঙ্গে বাস্তবতার বাংলাদেশের সম্পর্ক কেমন, কতটা দূরে কিংবা কাছে?
ঢাকায় একটু বৃষ্টিতেই যে যানজট আর জলাবদ্ধতা তৈরি হয়, তা কীভাবে দূরীভূত হবে, সেটি কি আছে স্মার্ট সিটির পরিকল্পনায়? ঢাকার বাতাসে যে বিষাক্ততা আমাদের জনজীবনকে অতিষ্ঠ করে তুলছে, তার কী হবে? স্মার্ট শহর গড়ে তুলতে ঢাকা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট প্ল্যান, ডিটেইলড এরিয়া প্ল্যান ইত্যাদি নানা নামে রাজউকের যে ভাবনা, তাতে কি নগর দরিদ্রদের সুলভে আবাসন সুবিধা দেওয়ার বিষয় আছে? রাজউকের গড়ে তোলা বহুতল ভবনের ‘টার্গেট ক্লায়েন্ট’ কারা?
স্মার্ট সিটির কেন্দ্রে অবস্থিত ইনফরমাল ইকোনমির ধারক-বাহক, উচ্চবিত্তদের বাসাবাড়ি ও অফিসে যাঁরা কাজ করে স্মার্ট আবহ তৈরি করেন, সেই সুবিশাল ইনফরমাল ও অধস্তন কর্মী বাহিনীর জন্য ন্যূনতম সুযোগ-সুবিধা কি এই প্ল্যানগুলোতে আছে? সুযোগ-সুবিধা দেওয়া দূরে থাক, এসব পরিকল্পনায় তাঁদের শহরের বাইরে থাকার এবং বাইরে থেকে এসে কাজ করার যে চিন্তা করা হচ্ছে, তা কতটা মানবিক হবে? স্মার্ট সিটিতে মানবিকতার জায়গা কোথায় তাহলে?
স্মার্ট সরকার, স্মার্ট প্রশাসন, স্মার্ট পুলিশিং—এসবের চূড়ান্ত রূপ কেমন হবে? ধারণায়নের ক্ষেত্রে বলা যায়, প্রান্তিক পর্যায়ে সর্বস্তরের মানুষকে এসব প্রশাসনিক সার্ভিস প্রদান নিশ্চিত করা। কিন্তু এই পরিকল্পনায় সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান আসলে মানসিকভাবে কতটা প্রস্তুতি নিয়েছে? উৎপাদন বহুগুণে বাড়ানো, দ্রুত সেবা প্রদান নিশ্চিত করা, অর্থনৈতিক উন্নয়নে গতিশীলতা আনা—কতটা সম্ভব অর্জন করা? যেমন আমাদের পাসপোর্ট এখন সম্পূর্ণ প্রযুক্তিনির্ভর এমআরপিতে রূপান্তর করা হচ্ছে; কিন্তু তা করতে গিয়ে নাগরিকেরা কি নানা ধরনের দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পাচ্ছেন?
নাকি সরকারের বিভিন্ন অফিসে গিয়ে তাঁদের লাল ফিতাবন্ধ ফাইল এক টেবিল থেকে আরেক টেবিলে নিতে ঘুষ দিতে হয়? ডিজিটাল পদ্ধতি কি কোনোভাবে দুর্নীতিবাজদের মনের মাঝে লুকিয়ে থাকা ঘুষের সংস্কৃতিকে রুখতে পারবে? বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের বর্তমানে মূল টার্গেট সরকারি চাকরি পাওয়া এবং পাওয়ার পর অনেকে এই দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। স্মার্ট বাংলাদেশের স্মার্ট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করা স্মার্ট চাকরিজীবীরা যদি এভাবে দুর্নীতিগ্রস্ত হতে থাকেন, তাহলে এই স্মার্টনেসের অর্থ কী দাঁড়াবে?
স্মার্ট রাজনীতির স্বরূপ কেমন হবে এই স্মার্ট বাংলাদেশে? তরুণ রাজনীতিবিদেরা সাধারণের পাশে দাঁড়াতে পারতেন, দিনমজুর, কৃষক, পাটকলশ্রমিক, গৃহহীন মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারতেন, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে আসা দরিদ্র শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়াতেন। ছাত্ররাজনীতি পুরোপুরি ছাত্রদের কল্যাণে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কল্যাণে নিবেদিত হতে পারত।
তাই ভাবি, স্মার্ট বাংলাদেশের রাজনীতি কতটা স্মার্ট হয়ে উঠবে? তারুণ্যের রাজনীতি তো স্মার্ট হওয়ারই কথা, কিন্তু তা কি হচ্ছে? এখনো তরুণেরা নির্বাচনের দিন প্রতিপক্ষকে মারধর করে, ভাবা যায়? সাধারণের সঙ্গে সম্পৃক্ততা ঘটছে কি তারুণ্যের রাজনীতির, নাকি তারুণ্য ছুটছে ‘বড় ভাই’, ‘সহমত ভাই’ সংস্কৃতিতে? সাধারণের সঙ্গে সম্পৃক্ততা না থাকলে এই দেশে ছাত্ররাজনীতির অর্থ কী? কেবল ক্ষমতার সিঁড়ি ভাঙা? তারুণ্য কি ক্ষমতালোভী হয়ে উঠছে?
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অনেক শিক্ষার্থী টাকার অভাবে পরীক্ষা দিতে পারছে না, ঠিকভাবে চলতে পারছে না—সেসব নিয়ে চিন্তা কি ছাত্রসংগঠনগুলোর আছে? জানতে চাওয়ার মতো মন থাকলে বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন শিক্ষার্থী কতটা কষ্টে আছে, অভাবে আছে, তা জানা সম্ভব, কেবল প্রয়োজন দেখার চোখ আর মানবিক মন। সেসব কি এখনকার স্মার্ট ছাত্ররাজনীতি শেখায় ছাত্রদের? সমাজের সাধারণ মানুষের প্রতি যদি নজর না থাকে, চিন্তাভাবনা না থাকে; আগ্রহের বিষয় থাকে কেবল পদ-পদবি নিয়ে মারামারি, হানাহানি আর সেই ক্ষমতায়িত পদের দাপট দেখানো, তাহলে কি সেই ছাত্ররাজনীতিকে স্মার্ট রাজনীতি বলা যাবে?
কেবল ছাত্ররাজনীতি নয়, আমরা সাধারণ মানুষও ইদানীং সবকিছুতেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতি বিশ্বাস ও আনুগত্যের ওপর ভিত্তি করে কথা বলি, অন্ধের মতো। যে নিজস্বতা বোধ থাকা প্রয়োজন, তা যেন হারিয়ে যেতে বসেছে আমাদের। বড় দুই দলের বাইরেও আমাদের জীবন আছে, সেই জীবনের সবকিছুকে যেন এই দলীয় বিবেচনা দিয়েই ভাবতে শিখেছি। ধরা যাক, ফেসবুকে কেউ স্ট্যাটাস দিল, সেটা পড়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের মাথায় কাজ করে, এটা কোন দলের পক্ষে যাচ্ছে বা বিপক্ষে যাচ্ছে! যদি পছন্দের দলের পক্ষে যায়, তাহলে বাহবা আর বিপক্ষে গেলে তো কথাই নেই! শুরু হবে নানা অপকথা।
বয়স্কদের ক্ষেত্রে এসব দেখলে চিন্তিত হতাম না, তরুণদেরও যখন একইভাবে ভাবতে দেখি, তখন ভাবি, পরিবর্তন আসবে কীভাবে, যদি আমরা নিজেরাই পরিবর্তিত না হই? তারুণ্যের চিন্তাভাবনায় স্বকীয়তা না এলে কিন্তু সামনের দিনগুলোতে কোনো আলো থাকবে না। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম কেবল রাজনৈতিক ঘৃণা-বিদ্বেষ কিংবা অপপ্রচারের প্ল্যাটফর্ম নয়, ভালোবাসা-শ্রদ্ধা-মানবতা ছড়িয়ে দেওয়ারও একটি জায়গা হতে পারে। আর এই কাজটি তরুণদেরই, যাদের হাতে আসলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের চাবি।
স্মার্ট বাংলাদেশ মানেই প্রযুক্তির বিকাশ, যার অনেকটুকুই আমরা দেখতে পাচ্ছি। ক্যাশলেস লেনদেন, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, আরও কত নতুন নতুন প্রযুক্তি যে আসছে বা আসবে, তা সময়ই বলে দেবে। একজন সত্যিকারের মানুষ তৈরির জন্য কেবল প্রযুক্তিতে দক্ষ করে গড়ে তুললেই হবে না, তাকে মানবিক মানুষ হিসেবেও তৈরি করতে হবে। মানবিকতাবিহীন সমাজে প্রযুক্তির ব্যাপক প্রসার মানুষের
কল্যাণে আসবে না। স্মার্ট সিটির সিটিজেন কি আধুনিক-মননশীল-সৃজনশীল-নান্দনিকতা চেতনার মানুষ হবে?
আমরা স্বপ্ন দেখতেই ভালোবাসি, তাই আমাদের স্বপ্নে স্মার্ট বাংলাদেশের যে চিত্র আছে, সেখানে ‘সকল’-এর অন্তর্ভুক্তি ঘটুক, নারী-পুরুষ, ধনী-গরিব, ধর্ম-শ্রেণি-নির্বিশেষে সবার কথা চিন্তা করেই তৈরি হোক সব পরিকল্পনা। স্মার্ট ইকোনমিতে ফরমাল এবং ইনফরমাল ইকোনমি যেমন থাকবে, তেমনি ফরমাল ও ইনফরমাল বাসস্থানও থাকুক, যেখানে শহরের অতি দরিদ্র মানুষ তাদের কর্মসংস্থানের আশপাশে বসবাস করার সুযোগ পায়। মানুষ হয়ে উঠুক প্রকৃত অর্থেই স্মার্ট, শুধু বাহ্যিক সৌন্দর্য, প্রকৃত স্মার্টনেস নয়। একজন মানুষ যখন ভেতর থেকে সুন্দর, সাবলীল, দয়ালু, দানশীল, মানবিক, পজিটিভ চিন্তার অধিকারী—তখনই কেবল সত্যিকার অর্থে স্মার্ট হয়ে ওঠে।
এই ধরনের স্মার্ট সিটিজেন তৈরি কীভাবে সম্ভব? আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার যে হাল, তা কি এই শিক্ষা দেয় আদৌ? তাহলে এই স্মার্ট সিটিজেন কোথায় পাব, তার জন্য কি কোনো পরিকল্পনা করা হচ্ছে বা হয়েছে? নতুন প্রজন্ম এই স্মার্ট সিটিজেনে পরিণত হোক, দেশকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে যাক, তেমন স্বপ্নই দেখি। দেশ, সরকার, অর্থনীতি, রাজনীতি হোক সকলের, হোক স্মার্ট, তাহলেই স্মার্ট বাংলাদেশের অবয়ব আমরা দেখতে পাব।
লেখক: শিক্ষক, নৃবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

ভবিষ্যতের বাংলাদেশ কেমন হবে, স্মার্ট বাংলাদেশ বলতে কী ইঙ্গিত করে, চাইলেই কি স্মার্ট হয়ে যাওয়া যায়? একটি রাষ্ট্রের স্মার্ট হয়ে যাওয়ার যে জার্নি, এটা কি খুব সহজ? কেবল অবকাঠামোগত উন্নয়ন কি একটি রাষ্ট্রকে স্মার্ট করে তুলতে পারে? তাহলে স্মার্ট বাংলাদেশ হতে আর কী কী প্রয়োজন? কীভাবে সেগুলো অর্জন সম্ভব? এসব প্রশ্ন এখনই বারবার সামনে আসা উচিত, যেন স্মার্ট বাংলাদেশ নিয়ে যাঁরা ভাবছেন, তাঁরা কিছুটা ভেবেচিন্তে পরিকল্পনাগুলো করতে পারেন।
স্মার্ট বাংলাদেশের জন্য চারটি ভিত্তি ঠিক করা হয়েছে—প্রথমত, স্মার্ট সিটিজেন অর্থাৎ প্রত্যেক নাগরিক প্রযুক্তি ব্যবহারে দক্ষ হবেন; দ্বিতীয়ত, স্মার্ট ইকোনমি অর্থাৎ অর্থনীতির সব কার্যক্রম হবে প্রযুক্তি ব্যবহার করে; তৃতীয়ত, স্মার্ট গভর্নমেন্ট, যার মাধ্যমে আমরা পরিচালিত হব; এবং সর্বশেষ বলা হচ্ছে, গোটা সমাজই হবে স্মার্ট সোসাইটি!
আজকের আলোচনা এই স্মার্ট সমাজ নিয়ে। আমি এই ‘গোটা সমাজ’ ধারণার ওপর জোর দিতে চাই। এই যে ‘সব’ বা ‘সবাই’ স্মার্ট হওয়ার কথা বলা হচ্ছে, আদতে কি এই ‘সবাই’-এর মাঝে সমাজের পিছিয়ে থাকা মানুষজনকেও অন্তর্ভুক্ত করার প্রচেষ্টা রয়েছে? স্মার্ট সিটিতে কি শহরগুলো সব সবুজ হয়ে উঠবে? দুর্নীতিবাজদের দুর্নীতি কমে যাবে? আর স্মার্ট বাংলাদেশের স্মার্ট নাগরিক কী রকম হবে? সমাজের সব প্রতিষ্ঠান, চিন্তাভাবনা নারীবান্ধব হয়ে উঠবে? রাস্তাঘাট নিরাপদ হবে; যেখানে ছিনতাই, পকেট মারা, ইভ টিজিং—এসব ঘটবে না? হাজার কোটি টাকার ডিজিটাল প্রযুক্তি, অটোমেশন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, অবকাঠামোগত উন্নয়ন—এসবের সমন্বয়ে গড়ে ওঠা স্মার্ট সিটিতে কি মানবসম্পদ উন্নয়নের জায়গা আছে? পরিকল্পনায় যে স্মার্ট বাংলাদেশ, সেই পরিকল্পনার সঙ্গে বাস্তবতার বাংলাদেশের সম্পর্ক কেমন, কতটা দূরে কিংবা কাছে?
ঢাকায় একটু বৃষ্টিতেই যে যানজট আর জলাবদ্ধতা তৈরি হয়, তা কীভাবে দূরীভূত হবে, সেটি কি আছে স্মার্ট সিটির পরিকল্পনায়? ঢাকার বাতাসে যে বিষাক্ততা আমাদের জনজীবনকে অতিষ্ঠ করে তুলছে, তার কী হবে? স্মার্ট শহর গড়ে তুলতে ঢাকা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট প্ল্যান, ডিটেইলড এরিয়া প্ল্যান ইত্যাদি নানা নামে রাজউকের যে ভাবনা, তাতে কি নগর দরিদ্রদের সুলভে আবাসন সুবিধা দেওয়ার বিষয় আছে? রাজউকের গড়ে তোলা বহুতল ভবনের ‘টার্গেট ক্লায়েন্ট’ কারা?
স্মার্ট সিটির কেন্দ্রে অবস্থিত ইনফরমাল ইকোনমির ধারক-বাহক, উচ্চবিত্তদের বাসাবাড়ি ও অফিসে যাঁরা কাজ করে স্মার্ট আবহ তৈরি করেন, সেই সুবিশাল ইনফরমাল ও অধস্তন কর্মী বাহিনীর জন্য ন্যূনতম সুযোগ-সুবিধা কি এই প্ল্যানগুলোতে আছে? সুযোগ-সুবিধা দেওয়া দূরে থাক, এসব পরিকল্পনায় তাঁদের শহরের বাইরে থাকার এবং বাইরে থেকে এসে কাজ করার যে চিন্তা করা হচ্ছে, তা কতটা মানবিক হবে? স্মার্ট সিটিতে মানবিকতার জায়গা কোথায় তাহলে?
স্মার্ট সরকার, স্মার্ট প্রশাসন, স্মার্ট পুলিশিং—এসবের চূড়ান্ত রূপ কেমন হবে? ধারণায়নের ক্ষেত্রে বলা যায়, প্রান্তিক পর্যায়ে সর্বস্তরের মানুষকে এসব প্রশাসনিক সার্ভিস প্রদান নিশ্চিত করা। কিন্তু এই পরিকল্পনায় সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান আসলে মানসিকভাবে কতটা প্রস্তুতি নিয়েছে? উৎপাদন বহুগুণে বাড়ানো, দ্রুত সেবা প্রদান নিশ্চিত করা, অর্থনৈতিক উন্নয়নে গতিশীলতা আনা—কতটা সম্ভব অর্জন করা? যেমন আমাদের পাসপোর্ট এখন সম্পূর্ণ প্রযুক্তিনির্ভর এমআরপিতে রূপান্তর করা হচ্ছে; কিন্তু তা করতে গিয়ে নাগরিকেরা কি নানা ধরনের দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পাচ্ছেন?
নাকি সরকারের বিভিন্ন অফিসে গিয়ে তাঁদের লাল ফিতাবন্ধ ফাইল এক টেবিল থেকে আরেক টেবিলে নিতে ঘুষ দিতে হয়? ডিজিটাল পদ্ধতি কি কোনোভাবে দুর্নীতিবাজদের মনের মাঝে লুকিয়ে থাকা ঘুষের সংস্কৃতিকে রুখতে পারবে? বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের বর্তমানে মূল টার্গেট সরকারি চাকরি পাওয়া এবং পাওয়ার পর অনেকে এই দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। স্মার্ট বাংলাদেশের স্মার্ট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করা স্মার্ট চাকরিজীবীরা যদি এভাবে দুর্নীতিগ্রস্ত হতে থাকেন, তাহলে এই স্মার্টনেসের অর্থ কী দাঁড়াবে?
স্মার্ট রাজনীতির স্বরূপ কেমন হবে এই স্মার্ট বাংলাদেশে? তরুণ রাজনীতিবিদেরা সাধারণের পাশে দাঁড়াতে পারতেন, দিনমজুর, কৃষক, পাটকলশ্রমিক, গৃহহীন মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারতেন, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে আসা দরিদ্র শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়াতেন। ছাত্ররাজনীতি পুরোপুরি ছাত্রদের কল্যাণে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কল্যাণে নিবেদিত হতে পারত।
তাই ভাবি, স্মার্ট বাংলাদেশের রাজনীতি কতটা স্মার্ট হয়ে উঠবে? তারুণ্যের রাজনীতি তো স্মার্ট হওয়ারই কথা, কিন্তু তা কি হচ্ছে? এখনো তরুণেরা নির্বাচনের দিন প্রতিপক্ষকে মারধর করে, ভাবা যায়? সাধারণের সঙ্গে সম্পৃক্ততা ঘটছে কি তারুণ্যের রাজনীতির, নাকি তারুণ্য ছুটছে ‘বড় ভাই’, ‘সহমত ভাই’ সংস্কৃতিতে? সাধারণের সঙ্গে সম্পৃক্ততা না থাকলে এই দেশে ছাত্ররাজনীতির অর্থ কী? কেবল ক্ষমতার সিঁড়ি ভাঙা? তারুণ্য কি ক্ষমতালোভী হয়ে উঠছে?
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অনেক শিক্ষার্থী টাকার অভাবে পরীক্ষা দিতে পারছে না, ঠিকভাবে চলতে পারছে না—সেসব নিয়ে চিন্তা কি ছাত্রসংগঠনগুলোর আছে? জানতে চাওয়ার মতো মন থাকলে বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন শিক্ষার্থী কতটা কষ্টে আছে, অভাবে আছে, তা জানা সম্ভব, কেবল প্রয়োজন দেখার চোখ আর মানবিক মন। সেসব কি এখনকার স্মার্ট ছাত্ররাজনীতি শেখায় ছাত্রদের? সমাজের সাধারণ মানুষের প্রতি যদি নজর না থাকে, চিন্তাভাবনা না থাকে; আগ্রহের বিষয় থাকে কেবল পদ-পদবি নিয়ে মারামারি, হানাহানি আর সেই ক্ষমতায়িত পদের দাপট দেখানো, তাহলে কি সেই ছাত্ররাজনীতিকে স্মার্ট রাজনীতি বলা যাবে?
কেবল ছাত্ররাজনীতি নয়, আমরা সাধারণ মানুষও ইদানীং সবকিছুতেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতি বিশ্বাস ও আনুগত্যের ওপর ভিত্তি করে কথা বলি, অন্ধের মতো। যে নিজস্বতা বোধ থাকা প্রয়োজন, তা যেন হারিয়ে যেতে বসেছে আমাদের। বড় দুই দলের বাইরেও আমাদের জীবন আছে, সেই জীবনের সবকিছুকে যেন এই দলীয় বিবেচনা দিয়েই ভাবতে শিখেছি। ধরা যাক, ফেসবুকে কেউ স্ট্যাটাস দিল, সেটা পড়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের মাথায় কাজ করে, এটা কোন দলের পক্ষে যাচ্ছে বা বিপক্ষে যাচ্ছে! যদি পছন্দের দলের পক্ষে যায়, তাহলে বাহবা আর বিপক্ষে গেলে তো কথাই নেই! শুরু হবে নানা অপকথা।
বয়স্কদের ক্ষেত্রে এসব দেখলে চিন্তিত হতাম না, তরুণদেরও যখন একইভাবে ভাবতে দেখি, তখন ভাবি, পরিবর্তন আসবে কীভাবে, যদি আমরা নিজেরাই পরিবর্তিত না হই? তারুণ্যের চিন্তাভাবনায় স্বকীয়তা না এলে কিন্তু সামনের দিনগুলোতে কোনো আলো থাকবে না। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম কেবল রাজনৈতিক ঘৃণা-বিদ্বেষ কিংবা অপপ্রচারের প্ল্যাটফর্ম নয়, ভালোবাসা-শ্রদ্ধা-মানবতা ছড়িয়ে দেওয়ারও একটি জায়গা হতে পারে। আর এই কাজটি তরুণদেরই, যাদের হাতে আসলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের চাবি।
স্মার্ট বাংলাদেশ মানেই প্রযুক্তির বিকাশ, যার অনেকটুকুই আমরা দেখতে পাচ্ছি। ক্যাশলেস লেনদেন, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, আরও কত নতুন নতুন প্রযুক্তি যে আসছে বা আসবে, তা সময়ই বলে দেবে। একজন সত্যিকারের মানুষ তৈরির জন্য কেবল প্রযুক্তিতে দক্ষ করে গড়ে তুললেই হবে না, তাকে মানবিক মানুষ হিসেবেও তৈরি করতে হবে। মানবিকতাবিহীন সমাজে প্রযুক্তির ব্যাপক প্রসার মানুষের
কল্যাণে আসবে না। স্মার্ট সিটির সিটিজেন কি আধুনিক-মননশীল-সৃজনশীল-নান্দনিকতা চেতনার মানুষ হবে?
আমরা স্বপ্ন দেখতেই ভালোবাসি, তাই আমাদের স্বপ্নে স্মার্ট বাংলাদেশের যে চিত্র আছে, সেখানে ‘সকল’-এর অন্তর্ভুক্তি ঘটুক, নারী-পুরুষ, ধনী-গরিব, ধর্ম-শ্রেণি-নির্বিশেষে সবার কথা চিন্তা করেই তৈরি হোক সব পরিকল্পনা। স্মার্ট ইকোনমিতে ফরমাল এবং ইনফরমাল ইকোনমি যেমন থাকবে, তেমনি ফরমাল ও ইনফরমাল বাসস্থানও থাকুক, যেখানে শহরের অতি দরিদ্র মানুষ তাদের কর্মসংস্থানের আশপাশে বসবাস করার সুযোগ পায়। মানুষ হয়ে উঠুক প্রকৃত অর্থেই স্মার্ট, শুধু বাহ্যিক সৌন্দর্য, প্রকৃত স্মার্টনেস নয়। একজন মানুষ যখন ভেতর থেকে সুন্দর, সাবলীল, দয়ালু, দানশীল, মানবিক, পজিটিভ চিন্তার অধিকারী—তখনই কেবল সত্যিকার অর্থে স্মার্ট হয়ে ওঠে।
এই ধরনের স্মার্ট সিটিজেন তৈরি কীভাবে সম্ভব? আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার যে হাল, তা কি এই শিক্ষা দেয় আদৌ? তাহলে এই স্মার্ট সিটিজেন কোথায় পাব, তার জন্য কি কোনো পরিকল্পনা করা হচ্ছে বা হয়েছে? নতুন প্রজন্ম এই স্মার্ট সিটিজেনে পরিণত হোক, দেশকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে যাক, তেমন স্বপ্নই দেখি। দেশ, সরকার, অর্থনীতি, রাজনীতি হোক সকলের, হোক স্মার্ট, তাহলেই স্মার্ট বাংলাদেশের অবয়ব আমরা দেখতে পাব।
লেখক: শিক্ষক, নৃবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২০ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

ভবিষ্যতের বাংলাদেশ কেমন হবে, স্মার্ট বাংলাদেশ বলতে কী ইঙ্গিত করে, চাইলেই কি স্মার্ট হয়ে যাওয়া যায়? একটি রাষ্ট্রের স্মার্ট হয়ে যাওয়ার যে জার্নি, এটা কি খুব সহজ? কেবল অবকাঠামোগত উন্নয়ন কি একটি রাষ্ট্রকে স্মার্ট করে তুলতে পারে?
২৫ জুলাই ২০২৩
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

ভবিষ্যতের বাংলাদেশ কেমন হবে, স্মার্ট বাংলাদেশ বলতে কী ইঙ্গিত করে, চাইলেই কি স্মার্ট হয়ে যাওয়া যায়? একটি রাষ্ট্রের স্মার্ট হয়ে যাওয়ার যে জার্নি, এটা কি খুব সহজ? কেবল অবকাঠামোগত উন্নয়ন কি একটি রাষ্ট্রকে স্মার্ট করে তুলতে পারে?
২৫ জুলাই ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২০ দিন আগে
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভবিষ্যতের বাংলাদেশ কেমন হবে, স্মার্ট বাংলাদেশ বলতে কী ইঙ্গিত করে, চাইলেই কি স্মার্ট হয়ে যাওয়া যায়? একটি রাষ্ট্রের স্মার্ট হয়ে যাওয়ার যে জার্নি, এটা কি খুব সহজ? কেবল অবকাঠামোগত উন্নয়ন কি একটি রাষ্ট্রকে স্মার্ট করে তুলতে পারে?
২৫ জুলাই ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২০ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

ভবিষ্যতের বাংলাদেশ কেমন হবে, স্মার্ট বাংলাদেশ বলতে কী ইঙ্গিত করে, চাইলেই কি স্মার্ট হয়ে যাওয়া যায়? একটি রাষ্ট্রের স্মার্ট হয়ে যাওয়ার যে জার্নি, এটা কি খুব সহজ? কেবল অবকাঠামোগত উন্নয়ন কি একটি রাষ্ট্রকে স্মার্ট করে তুলতে পারে?
২৫ জুলাই ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২০ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫