
আজকের পত্রিকা: গণ-অভ্যুত্থানে আপনারাও ছিলেন। কিন্তু সরকার গঠনে আপনারা নেই কেন?
রুহিন হোসেন প্রিন্স: সরকার গঠন করার সময় আমরা বলেছিলাম, আমরাসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে পরামর্শ করে সেটা করা হোক। কিন্তু সেটা হয়নি। এখন বরং প্রশ্ন আসছে, এটা কারা ও কীভাবে করল? সেটা কিন্তু আমরা আগে এবং এখনো জানতে পারিনি। সরকার কীভাবে গঠিত হলো, এটা বড় প্রশ্ন হিসেবে মানুষের সামনে আছে। আর আমাদের তো এ সরকারে থাকার কোনো কারণ নেই। গণ-অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী সব রাজনৈতিক দল ও গ্রুপের কাছে জাতীয় সরকার গঠনের প্রশ্ন এলে এবং সে অনুযায়ী জাতীয় সরকার গঠিত হলে প্রশ্ন আসতে পারত—আমরা নেই কেন! এই প্রশ্ন এখন অপ্রাসঙ্গিক।
আজকের পত্রিকা: তাহলে এই অন্তর্বর্তী সরকারকে আপনি কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?
রুহিন হোসেন প্রিন্স: অন্তর্বর্তী সরকারকে মূল্যায়নের এখনো সময় আসেনি। আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে। কিন্তু আমরা এর গঠনকালীন বিষয় নিয়ে কথা বলতে পারি। এই সরকার গঠনের সময় আমাদের সঙ্গে কথা না বললেও ছাত্র, শ্রমিক, জনতার একটি রক্তক্ষয়ী গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে যে সরকার গঠিত হয়েছে, তার প্রতি আমরা সমর্থন ব্যক্ত করেছি। শুরু থেকে এখন পর্যন্ত তাদের কার্যক্রমে আমরা অসন্তুষ্ট। তারপরও আমরা এ সরকারের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রেখেছি। আমরা আশা করব, এ সরকারের প্রধান কাজ হবে একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য নির্বাচন ব্যবস্থার আমূল সংস্কার করা এবং বাংলাদেশকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য গণতান্ত্রিক সংস্কার। আর সেগুলোর রূপরেখা তৈরির জন্য সবার সঙ্গে কথা বলা দরকার। এই প্রত্যাশাগুলো আমরা রাখছি।
আজকের পত্রিকা: অন্তর্বর্তী সরকার একটা বড় আন্তর্জাতিক শক্তির আশীর্বাদপুষ্ট বলে অভিযোগ। তারপরেও কেন আপনারা তাদের সমর্থন করছেন?
রুহিন হোসেন প্রিন্স: আগেই বলেছি, এ সরকার নিয়ে এখনই কোনো পূর্ণাঙ্গ মূল্যায়ন করতে চাই না। সাধারণভাবে যেহেতু এ সরকার গণ-অভ্যুত্থানের পরিণতিতে গঠিত হয়েছে, সে জন্য আমরা তাদের সমর্থন করছি। আর এই সরকার তো কমিউনিস্ট পার্টি বা বামপন্থীদের সরকার না। তাদের নিয়ে আমাদের নানা প্রশ্ন আছে। ভবিষ্যতে যখন আমরা এদের নিয়ে মূল্যায়ন করব, সেটা আরও স্পষ্ট হবে।
আর একটা কথা বলতে চাই, গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে গঠিত সরকার জনগণের প্রত্যাশা পূরণে আন্তরিক হবে, এটাই স্বাভাবিক। গত দুই মাসে কিছু দৃশ্যমান পজিটিভ কাজ করার কথা থাকলেও সেটা তারা করতে পারল না কেন? আমি সহজ করে বলতে চাই, এ সরকার যে গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে গঠিত সেই আন্দোলনে ছাত্র, শ্রমিক ও জনতার স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন ছিল। এখন খবর পাওয়া যাচ্ছে, ছাত্রদের মধ্যে গঠিত একটা ক্ষুদ্র অংশ এর সব সাংগঠনিক চিন্তা করত। কিন্তু মনে রাখতে হবে, গণ-অভ্যুত্থান ঘটেছে ব্যাপক মানুষের অংশগ্রহণে। এই আন্দোলনের পেছনে যদি আমরা সব শ্রেণি-পেশার শক্তিকে সংগঠিত করতে পারতাম, তাহলে কিন্তু আমাদের নেতৃত্বেরও প্রভাব থাকত।
আগস্টের গণ-অভ্যুত্থান স্বতঃস্ফূর্ত হলেও এখন শোনা যাচ্ছে এর নেপথ্যে ছিল দক্ষিণপন্থী ও প্রতিক্রিয়াশীল শক্তি। এখন দেখা যাচ্ছে, অনেক ক্ষেত্রে ওই দক্ষিণপন্থী ও প্রতিক্রিয়াশীল শক্তি প্রভাব বিস্তার করছে। আমরা কিন্তু সরকারকে হুঁশিয়ার করে বলেছি, আপনারা যদি তাদের প্রভাবে এই অন্তর্বর্তী সরকার পরিচালনা করতে চান, তাহলে গণ-অভ্যুত্থানের চেতনাকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হবে এবং এটা গ্রহণযোগ্যতা পাবে না। উদাহরণ দিয়ে বলা যায়, পাঠ্যপুস্তক কমিটি গঠন ও বাতিল করা, সংবিধান সংস্কার কমিটির প্রধান হিসেবে প্রথম যাঁর নাম প্রস্তাব করা হলো, পরবর্তী সময়ে তাঁকেই আবার বাদ দেওয়া। দেখা যাচ্ছে, বিভিন্ন জায়গায় এক দখলদারত্বের বিদায়ে নতুন আরেক দখলদারত্ব কায়েম হচ্ছে। অনেক জায়গায় শিক্ষকদের বিরুদ্ধে অমানবিক আচরণের ঘটনা ঘটেছে। বিভিন্ন জায়গায় প্রতিক্রিয়াশীল শক্তি জেঁকে বসছে—এ সবকিছুই কিন্তু এই গণ-অভ্যুত্থানের চেতনাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।
আজকের পত্রিকা: ১৫ বছরের শাসনামলে আওয়ামী লীগ স্বৈরাচারী হয়ে উঠেছিল। কিন্তু এটাই কি বাংলাদেশে প্রথম স্বৈরাচার? বারবার স্বৈরাচারী শাসন কেন আসে?
রুহিন হোসেন প্রিন্স: এটা তো প্রথম স্বৈরাচার নয়। আমরা স্বৈরাচারী আইয়ুব খানের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছি। স্বৈরাচারী এরশাদ সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছি। আমরা বিভিন্ন সময়ে যারা সামরিক আইন জারি করে শাসনক্ষমতায় এসেছে, তাদের বিরুদ্ধেও আন্দোলন করেছি। কিন্তু এবারের বিষয়টা হয়েছে, আওয়ামী লীগ দীর্ঘ সময় ধরে ক্ষমতায় থেকে কর্তৃত্ববাদী এবং ভয়ের রাজত্ব কায়েম করে জনগণকে মর্যাদাহীন করেছে। সবচেয়ে বড় ব্যাপার হলো, যেভাবে হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে তারা ক্ষমতায় থাকতে চেয়েছে, যেটা অতীতে কখনো ঘটেনি। এ কারণে শেখ হাসিনা কর্তৃত্ববাদী, স্বৈরাচার এবং ফ্যাসিস্ট হিসেবে জনগণের কাছে প্রতিভাত হয়েছেন।
আর স্বৈরাচারী শাসন তো একটা ব্যবস্থা। আমাদের প্রচলিত যে সাংবিধানিক ব্যবস্থা, সেটাই কিন্তু দিনদিন স্বৈরাচার হিসেবে গড়ে তুলতে সহায়তা করে। আমরা বামপন্থীরা অতীতে এবং এখনো যে আন্দোলন করছি এবং স্লোগান তুলেছি, ‘দুঃশাসন হটাও, ব্যবস্থা বদলাও’—এর জন্য বামপন্থী বিকল্প গড়ে তোলার কথা বলে আসছি। কিন্তু আমরা তো ব্যবস্থাটার বদল করতে পারিনি।
আমরা বলি, রাজনীতি হলো উপরিকাঠামো আর অর্থনীতি হলো এর ভিত্তিকাঠামো। যদি আমাদের অর্থনীতির কাঠামোটা এমন থাকে, যেখানে যে কেউ লুটপাট করতে পারে এবং কাঠামোটা যদি দুর্বৃত্তায়িত রাজনীতি দিয়ে আবদ্ধ হতে হয়, মানে উৎপাদনের সঙ্গে সম্পর্ক না থেকে অসৎ আমলা আর অসৎ ব্যবসায়ীরা যদি অসৎ উপায়ে উপার্জন করেন, তাহলে এই দুর্বৃত্তায়িত অর্থনীতি আবার দুর্বৃত্তায়িত রাজনীতিরই জন্ম দেয়, যা অবশ্যম্ভাবীভাবে কর্তৃত্ববাদী ও স্বৈরাচারী রাজনীতি প্রতিষ্ঠা করে। এটা ভাঙতে হলে অনেকগুলো জায়গায় হাত দিতে হবে, নইলে নতুন রাজনীতি নির্মাণ করা সম্ভব না। যেমন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান, নির্বাচনীব্যবস্থা সংস্কার যত দিন পর্যন্ত না করতে পারছি, তত দিন পর্যন্ত স্বৈরাচারী ব্যবস্থাটা তৈরি হওয়ার সুযোগ চালু থাকবে।
আজকের পত্রিকা: আওয়ামী লীগ ক্ষমতা থেকে সরতেই বিএনপি দখলদারি চালাচ্ছে। সরকার ধর্মীয় রাজনীতির সঙ্গে আপস করছে। এগুলোকে কীভাবে দেখছেন?
রুহিন হোসেন প্রিন্স: এ দুটোই অগ্রহণযোগ্য। আমাদের অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধানের সঙ্গে গত ১২ আগস্ট দেখা করার সুযোগ হয়েছিল। আমাদের দলের পক্ষ থেকে আমি তাঁকে পরিষ্কার করে বলেছিলাম, এই গণ-অভ্যুত্থানে কোনো দল বা গোষ্ঠী জয়ী হয়নি। সুতরাং এক দখলদারের পরিবর্তে আরেক দখলদার আসবে, সেটাকে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। সুতরাং আপনারা নির্দেশ দেন, কেউ যদি জোর করে দখল করে, তাদের উচ্ছেদ করা হবে। প্রশাসনে নিয়োগ, বদলির ক্ষেত্রেও নীতিমালা প্রণয়নের ভিত্তিতে দলনিরপেক্ষ, যোগ্য ও দক্ষ ব্যক্তিদের নিয়োগ দিতে হবে।
আমার কাছে মনে হয়, এ সরকারের বড় দুর্বলতা হলো, কোনো কোনো ক্ষেত্রে সাম্প্রদায়িক অপশক্তি এবং দীর্ঘ সময় ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপিকে কিছু কিছু জায়গায় প্রশ্রয় দেওয়ার কারণে তারা বিভিন্ন অপকর্ম করার সুযোগ পাচ্ছে। আমরা মনে করি, এখনই এসব দমন করা দরকার। তা না হলে গণ-অভ্যুত্থানই প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে দাঁড়াবে।
আজকের পত্রিকা: সংবিধান সংশোধন নাকি সংবিধান নতুন করে লেখা উচিত?
রুহিন হোসেন প্রিন্স: প্রথম কথা হলো, আমূল পরিবর্তনের রায় এদের কে দিয়েছে? আমূল পরিবর্তনের কথা কোনো ব্যক্তি বললে আমি প্রশ্ন তুলতে পারি না। যারা মুক্তিযুদ্ধ মানে না, তারা তো এই সংবিধান ছুড়ে ফেলে দিতে চাইবে। আর এটাকে শুধু একটা গঠনতন্ত্র বলে সংবিধান বাতিল করে দেওয়া কিন্তু তাদের লক্ষ্য।
এ সরকারের কোনো ম্যান্ডেট নেই যে তারা সংবিধান পুনর্লিখন করবে। কিন্তু আমরা মনে করি, বাহাত্তরের সংবিধানের মূল চারটা ভিত্তি হলো আমাদের মুক্তিযুদ্ধের অর্জন। আমরা বামপন্থীরা দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছি, আমাদের সংবিধানের অনেক অসম্পূর্ণতা আছে, সেসব দূর করতে হবে। সংস্কার করা নিয়ে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। এই সংবিধানের কোন কোন বিষয় সংস্কার হতে পারে, সেসব নিয়ে আলোচনা হতে পারে এবং প্রয়োজনীয় সংস্কার করতে হবে। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে যে চার মূলনীতি, সেটাকে ঠিক রেখে। এর বাইরে কেউ যদি সংবিধান পুনর্লিখনের মাধ্যমে সংবিধান ছুড়ে দিতে চায়, আমরা তাদের সাবধান করে দিতে চাই, এটা আমরা করতে দেব না।
আজকের পত্রিকা: অরাজকতাও তো চলছে। পরিবর্তনের আশা কি রাখতে পারছেন?
রুহিন হোসেন প্রিন্স: আমি আপনার সঙ্গে যে মুহূর্তে কথা বলছি এবং সরকার যেভাবে চলছে, তাতে পরিবর্তনের কোনো আলামত দেখছি না। এটা আমার এক নম্বর কথা। দুই নম্বর কথা হচ্ছে, আমরা অনেক আগে থেকে বলে আসছি, কিছু করতে হলে রাজনৈতিক দলগুলোকে আস্থায় নিয়ে করতে হবে। কিন্তু সরকার মনে হয় রাজনৈতিক দলগুলোকে উপেক্ষা করছে। তারা সবার সরকার না বলে একটা অংশের সরকার বলছে।
এমনকি বেশ কিছু সংস্কারের কমিটি করা হলো আমাদের সঙ্গে কথা না বলে। জনগণের তাৎক্ষণিক সমস্যা, যেমন দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, জানমালের নিরাপত্তা এবং দখলদারত্ব যদি উচ্ছেদ করতে পারে, তাহলে অরাজক পরিস্থিতি কিছুটা হলেও নিয়ন্ত্রণ করা যাবে বলে আমার ধারণা।

আজকের পত্রিকা: গণ-অভ্যুত্থানে আপনারাও ছিলেন। কিন্তু সরকার গঠনে আপনারা নেই কেন?
রুহিন হোসেন প্রিন্স: সরকার গঠন করার সময় আমরা বলেছিলাম, আমরাসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে পরামর্শ করে সেটা করা হোক। কিন্তু সেটা হয়নি। এখন বরং প্রশ্ন আসছে, এটা কারা ও কীভাবে করল? সেটা কিন্তু আমরা আগে এবং এখনো জানতে পারিনি। সরকার কীভাবে গঠিত হলো, এটা বড় প্রশ্ন হিসেবে মানুষের সামনে আছে। আর আমাদের তো এ সরকারে থাকার কোনো কারণ নেই। গণ-অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী সব রাজনৈতিক দল ও গ্রুপের কাছে জাতীয় সরকার গঠনের প্রশ্ন এলে এবং সে অনুযায়ী জাতীয় সরকার গঠিত হলে প্রশ্ন আসতে পারত—আমরা নেই কেন! এই প্রশ্ন এখন অপ্রাসঙ্গিক।
আজকের পত্রিকা: তাহলে এই অন্তর্বর্তী সরকারকে আপনি কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?
রুহিন হোসেন প্রিন্স: অন্তর্বর্তী সরকারকে মূল্যায়নের এখনো সময় আসেনি। আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে। কিন্তু আমরা এর গঠনকালীন বিষয় নিয়ে কথা বলতে পারি। এই সরকার গঠনের সময় আমাদের সঙ্গে কথা না বললেও ছাত্র, শ্রমিক, জনতার একটি রক্তক্ষয়ী গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে যে সরকার গঠিত হয়েছে, তার প্রতি আমরা সমর্থন ব্যক্ত করেছি। শুরু থেকে এখন পর্যন্ত তাদের কার্যক্রমে আমরা অসন্তুষ্ট। তারপরও আমরা এ সরকারের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রেখেছি। আমরা আশা করব, এ সরকারের প্রধান কাজ হবে একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য নির্বাচন ব্যবস্থার আমূল সংস্কার করা এবং বাংলাদেশকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য গণতান্ত্রিক সংস্কার। আর সেগুলোর রূপরেখা তৈরির জন্য সবার সঙ্গে কথা বলা দরকার। এই প্রত্যাশাগুলো আমরা রাখছি।
আজকের পত্রিকা: অন্তর্বর্তী সরকার একটা বড় আন্তর্জাতিক শক্তির আশীর্বাদপুষ্ট বলে অভিযোগ। তারপরেও কেন আপনারা তাদের সমর্থন করছেন?
রুহিন হোসেন প্রিন্স: আগেই বলেছি, এ সরকার নিয়ে এখনই কোনো পূর্ণাঙ্গ মূল্যায়ন করতে চাই না। সাধারণভাবে যেহেতু এ সরকার গণ-অভ্যুত্থানের পরিণতিতে গঠিত হয়েছে, সে জন্য আমরা তাদের সমর্থন করছি। আর এই সরকার তো কমিউনিস্ট পার্টি বা বামপন্থীদের সরকার না। তাদের নিয়ে আমাদের নানা প্রশ্ন আছে। ভবিষ্যতে যখন আমরা এদের নিয়ে মূল্যায়ন করব, সেটা আরও স্পষ্ট হবে।
আর একটা কথা বলতে চাই, গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে গঠিত সরকার জনগণের প্রত্যাশা পূরণে আন্তরিক হবে, এটাই স্বাভাবিক। গত দুই মাসে কিছু দৃশ্যমান পজিটিভ কাজ করার কথা থাকলেও সেটা তারা করতে পারল না কেন? আমি সহজ করে বলতে চাই, এ সরকার যে গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে গঠিত সেই আন্দোলনে ছাত্র, শ্রমিক ও জনতার স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন ছিল। এখন খবর পাওয়া যাচ্ছে, ছাত্রদের মধ্যে গঠিত একটা ক্ষুদ্র অংশ এর সব সাংগঠনিক চিন্তা করত। কিন্তু মনে রাখতে হবে, গণ-অভ্যুত্থান ঘটেছে ব্যাপক মানুষের অংশগ্রহণে। এই আন্দোলনের পেছনে যদি আমরা সব শ্রেণি-পেশার শক্তিকে সংগঠিত করতে পারতাম, তাহলে কিন্তু আমাদের নেতৃত্বেরও প্রভাব থাকত।
আগস্টের গণ-অভ্যুত্থান স্বতঃস্ফূর্ত হলেও এখন শোনা যাচ্ছে এর নেপথ্যে ছিল দক্ষিণপন্থী ও প্রতিক্রিয়াশীল শক্তি। এখন দেখা যাচ্ছে, অনেক ক্ষেত্রে ওই দক্ষিণপন্থী ও প্রতিক্রিয়াশীল শক্তি প্রভাব বিস্তার করছে। আমরা কিন্তু সরকারকে হুঁশিয়ার করে বলেছি, আপনারা যদি তাদের প্রভাবে এই অন্তর্বর্তী সরকার পরিচালনা করতে চান, তাহলে গণ-অভ্যুত্থানের চেতনাকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হবে এবং এটা গ্রহণযোগ্যতা পাবে না। উদাহরণ দিয়ে বলা যায়, পাঠ্যপুস্তক কমিটি গঠন ও বাতিল করা, সংবিধান সংস্কার কমিটির প্রধান হিসেবে প্রথম যাঁর নাম প্রস্তাব করা হলো, পরবর্তী সময়ে তাঁকেই আবার বাদ দেওয়া। দেখা যাচ্ছে, বিভিন্ন জায়গায় এক দখলদারত্বের বিদায়ে নতুন আরেক দখলদারত্ব কায়েম হচ্ছে। অনেক জায়গায় শিক্ষকদের বিরুদ্ধে অমানবিক আচরণের ঘটনা ঘটেছে। বিভিন্ন জায়গায় প্রতিক্রিয়াশীল শক্তি জেঁকে বসছে—এ সবকিছুই কিন্তু এই গণ-অভ্যুত্থানের চেতনাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।
আজকের পত্রিকা: ১৫ বছরের শাসনামলে আওয়ামী লীগ স্বৈরাচারী হয়ে উঠেছিল। কিন্তু এটাই কি বাংলাদেশে প্রথম স্বৈরাচার? বারবার স্বৈরাচারী শাসন কেন আসে?
রুহিন হোসেন প্রিন্স: এটা তো প্রথম স্বৈরাচার নয়। আমরা স্বৈরাচারী আইয়ুব খানের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছি। স্বৈরাচারী এরশাদ সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছি। আমরা বিভিন্ন সময়ে যারা সামরিক আইন জারি করে শাসনক্ষমতায় এসেছে, তাদের বিরুদ্ধেও আন্দোলন করেছি। কিন্তু এবারের বিষয়টা হয়েছে, আওয়ামী লীগ দীর্ঘ সময় ধরে ক্ষমতায় থেকে কর্তৃত্ববাদী এবং ভয়ের রাজত্ব কায়েম করে জনগণকে মর্যাদাহীন করেছে। সবচেয়ে বড় ব্যাপার হলো, যেভাবে হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে তারা ক্ষমতায় থাকতে চেয়েছে, যেটা অতীতে কখনো ঘটেনি। এ কারণে শেখ হাসিনা কর্তৃত্ববাদী, স্বৈরাচার এবং ফ্যাসিস্ট হিসেবে জনগণের কাছে প্রতিভাত হয়েছেন।
আর স্বৈরাচারী শাসন তো একটা ব্যবস্থা। আমাদের প্রচলিত যে সাংবিধানিক ব্যবস্থা, সেটাই কিন্তু দিনদিন স্বৈরাচার হিসেবে গড়ে তুলতে সহায়তা করে। আমরা বামপন্থীরা অতীতে এবং এখনো যে আন্দোলন করছি এবং স্লোগান তুলেছি, ‘দুঃশাসন হটাও, ব্যবস্থা বদলাও’—এর জন্য বামপন্থী বিকল্প গড়ে তোলার কথা বলে আসছি। কিন্তু আমরা তো ব্যবস্থাটার বদল করতে পারিনি।
আমরা বলি, রাজনীতি হলো উপরিকাঠামো আর অর্থনীতি হলো এর ভিত্তিকাঠামো। যদি আমাদের অর্থনীতির কাঠামোটা এমন থাকে, যেখানে যে কেউ লুটপাট করতে পারে এবং কাঠামোটা যদি দুর্বৃত্তায়িত রাজনীতি দিয়ে আবদ্ধ হতে হয়, মানে উৎপাদনের সঙ্গে সম্পর্ক না থেকে অসৎ আমলা আর অসৎ ব্যবসায়ীরা যদি অসৎ উপায়ে উপার্জন করেন, তাহলে এই দুর্বৃত্তায়িত অর্থনীতি আবার দুর্বৃত্তায়িত রাজনীতিরই জন্ম দেয়, যা অবশ্যম্ভাবীভাবে কর্তৃত্ববাদী ও স্বৈরাচারী রাজনীতি প্রতিষ্ঠা করে। এটা ভাঙতে হলে অনেকগুলো জায়গায় হাত দিতে হবে, নইলে নতুন রাজনীতি নির্মাণ করা সম্ভব না। যেমন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান, নির্বাচনীব্যবস্থা সংস্কার যত দিন পর্যন্ত না করতে পারছি, তত দিন পর্যন্ত স্বৈরাচারী ব্যবস্থাটা তৈরি হওয়ার সুযোগ চালু থাকবে।
আজকের পত্রিকা: আওয়ামী লীগ ক্ষমতা থেকে সরতেই বিএনপি দখলদারি চালাচ্ছে। সরকার ধর্মীয় রাজনীতির সঙ্গে আপস করছে। এগুলোকে কীভাবে দেখছেন?
রুহিন হোসেন প্রিন্স: এ দুটোই অগ্রহণযোগ্য। আমাদের অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধানের সঙ্গে গত ১২ আগস্ট দেখা করার সুযোগ হয়েছিল। আমাদের দলের পক্ষ থেকে আমি তাঁকে পরিষ্কার করে বলেছিলাম, এই গণ-অভ্যুত্থানে কোনো দল বা গোষ্ঠী জয়ী হয়নি। সুতরাং এক দখলদারের পরিবর্তে আরেক দখলদার আসবে, সেটাকে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। সুতরাং আপনারা নির্দেশ দেন, কেউ যদি জোর করে দখল করে, তাদের উচ্ছেদ করা হবে। প্রশাসনে নিয়োগ, বদলির ক্ষেত্রেও নীতিমালা প্রণয়নের ভিত্তিতে দলনিরপেক্ষ, যোগ্য ও দক্ষ ব্যক্তিদের নিয়োগ দিতে হবে।
আমার কাছে মনে হয়, এ সরকারের বড় দুর্বলতা হলো, কোনো কোনো ক্ষেত্রে সাম্প্রদায়িক অপশক্তি এবং দীর্ঘ সময় ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপিকে কিছু কিছু জায়গায় প্রশ্রয় দেওয়ার কারণে তারা বিভিন্ন অপকর্ম করার সুযোগ পাচ্ছে। আমরা মনে করি, এখনই এসব দমন করা দরকার। তা না হলে গণ-অভ্যুত্থানই প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে দাঁড়াবে।
আজকের পত্রিকা: সংবিধান সংশোধন নাকি সংবিধান নতুন করে লেখা উচিত?
রুহিন হোসেন প্রিন্স: প্রথম কথা হলো, আমূল পরিবর্তনের রায় এদের কে দিয়েছে? আমূল পরিবর্তনের কথা কোনো ব্যক্তি বললে আমি প্রশ্ন তুলতে পারি না। যারা মুক্তিযুদ্ধ মানে না, তারা তো এই সংবিধান ছুড়ে ফেলে দিতে চাইবে। আর এটাকে শুধু একটা গঠনতন্ত্র বলে সংবিধান বাতিল করে দেওয়া কিন্তু তাদের লক্ষ্য।
এ সরকারের কোনো ম্যান্ডেট নেই যে তারা সংবিধান পুনর্লিখন করবে। কিন্তু আমরা মনে করি, বাহাত্তরের সংবিধানের মূল চারটা ভিত্তি হলো আমাদের মুক্তিযুদ্ধের অর্জন। আমরা বামপন্থীরা দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছি, আমাদের সংবিধানের অনেক অসম্পূর্ণতা আছে, সেসব দূর করতে হবে। সংস্কার করা নিয়ে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। এই সংবিধানের কোন কোন বিষয় সংস্কার হতে পারে, সেসব নিয়ে আলোচনা হতে পারে এবং প্রয়োজনীয় সংস্কার করতে হবে। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে যে চার মূলনীতি, সেটাকে ঠিক রেখে। এর বাইরে কেউ যদি সংবিধান পুনর্লিখনের মাধ্যমে সংবিধান ছুড়ে দিতে চায়, আমরা তাদের সাবধান করে দিতে চাই, এটা আমরা করতে দেব না।
আজকের পত্রিকা: অরাজকতাও তো চলছে। পরিবর্তনের আশা কি রাখতে পারছেন?
রুহিন হোসেন প্রিন্স: আমি আপনার সঙ্গে যে মুহূর্তে কথা বলছি এবং সরকার যেভাবে চলছে, তাতে পরিবর্তনের কোনো আলামত দেখছি না। এটা আমার এক নম্বর কথা। দুই নম্বর কথা হচ্ছে, আমরা অনেক আগে থেকে বলে আসছি, কিছু করতে হলে রাজনৈতিক দলগুলোকে আস্থায় নিয়ে করতে হবে। কিন্তু সরকার মনে হয় রাজনৈতিক দলগুলোকে উপেক্ষা করছে। তারা সবার সরকার না বলে একটা অংশের সরকার বলছে।
এমনকি বেশ কিছু সংস্কারের কমিটি করা হলো আমাদের সঙ্গে কথা না বলে। জনগণের তাৎক্ষণিক সমস্যা, যেমন দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, জানমালের নিরাপত্তা এবং দখলদারত্ব যদি উচ্ছেদ করতে পারে, তাহলে অরাজক পরিস্থিতি কিছুটা হলেও নিয়ন্ত্রণ করা যাবে বলে আমার ধারণা।

আজকের পত্রিকা: গণ-অভ্যুত্থানে আপনারাও ছিলেন। কিন্তু সরকার গঠনে আপনারা নেই কেন?
রুহিন হোসেন প্রিন্স: সরকার গঠন করার সময় আমরা বলেছিলাম, আমরাসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে পরামর্শ করে সেটা করা হোক। কিন্তু সেটা হয়নি। এখন বরং প্রশ্ন আসছে, এটা কারা ও কীভাবে করল? সেটা কিন্তু আমরা আগে এবং এখনো জানতে পারিনি। সরকার কীভাবে গঠিত হলো, এটা বড় প্রশ্ন হিসেবে মানুষের সামনে আছে। আর আমাদের তো এ সরকারে থাকার কোনো কারণ নেই। গণ-অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী সব রাজনৈতিক দল ও গ্রুপের কাছে জাতীয় সরকার গঠনের প্রশ্ন এলে এবং সে অনুযায়ী জাতীয় সরকার গঠিত হলে প্রশ্ন আসতে পারত—আমরা নেই কেন! এই প্রশ্ন এখন অপ্রাসঙ্গিক।
আজকের পত্রিকা: তাহলে এই অন্তর্বর্তী সরকারকে আপনি কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?
রুহিন হোসেন প্রিন্স: অন্তর্বর্তী সরকারকে মূল্যায়নের এখনো সময় আসেনি। আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে। কিন্তু আমরা এর গঠনকালীন বিষয় নিয়ে কথা বলতে পারি। এই সরকার গঠনের সময় আমাদের সঙ্গে কথা না বললেও ছাত্র, শ্রমিক, জনতার একটি রক্তক্ষয়ী গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে যে সরকার গঠিত হয়েছে, তার প্রতি আমরা সমর্থন ব্যক্ত করেছি। শুরু থেকে এখন পর্যন্ত তাদের কার্যক্রমে আমরা অসন্তুষ্ট। তারপরও আমরা এ সরকারের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রেখেছি। আমরা আশা করব, এ সরকারের প্রধান কাজ হবে একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য নির্বাচন ব্যবস্থার আমূল সংস্কার করা এবং বাংলাদেশকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য গণতান্ত্রিক সংস্কার। আর সেগুলোর রূপরেখা তৈরির জন্য সবার সঙ্গে কথা বলা দরকার। এই প্রত্যাশাগুলো আমরা রাখছি।
আজকের পত্রিকা: অন্তর্বর্তী সরকার একটা বড় আন্তর্জাতিক শক্তির আশীর্বাদপুষ্ট বলে অভিযোগ। তারপরেও কেন আপনারা তাদের সমর্থন করছেন?
রুহিন হোসেন প্রিন্স: আগেই বলেছি, এ সরকার নিয়ে এখনই কোনো পূর্ণাঙ্গ মূল্যায়ন করতে চাই না। সাধারণভাবে যেহেতু এ সরকার গণ-অভ্যুত্থানের পরিণতিতে গঠিত হয়েছে, সে জন্য আমরা তাদের সমর্থন করছি। আর এই সরকার তো কমিউনিস্ট পার্টি বা বামপন্থীদের সরকার না। তাদের নিয়ে আমাদের নানা প্রশ্ন আছে। ভবিষ্যতে যখন আমরা এদের নিয়ে মূল্যায়ন করব, সেটা আরও স্পষ্ট হবে।
আর একটা কথা বলতে চাই, গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে গঠিত সরকার জনগণের প্রত্যাশা পূরণে আন্তরিক হবে, এটাই স্বাভাবিক। গত দুই মাসে কিছু দৃশ্যমান পজিটিভ কাজ করার কথা থাকলেও সেটা তারা করতে পারল না কেন? আমি সহজ করে বলতে চাই, এ সরকার যে গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে গঠিত সেই আন্দোলনে ছাত্র, শ্রমিক ও জনতার স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন ছিল। এখন খবর পাওয়া যাচ্ছে, ছাত্রদের মধ্যে গঠিত একটা ক্ষুদ্র অংশ এর সব সাংগঠনিক চিন্তা করত। কিন্তু মনে রাখতে হবে, গণ-অভ্যুত্থান ঘটেছে ব্যাপক মানুষের অংশগ্রহণে। এই আন্দোলনের পেছনে যদি আমরা সব শ্রেণি-পেশার শক্তিকে সংগঠিত করতে পারতাম, তাহলে কিন্তু আমাদের নেতৃত্বেরও প্রভাব থাকত।
আগস্টের গণ-অভ্যুত্থান স্বতঃস্ফূর্ত হলেও এখন শোনা যাচ্ছে এর নেপথ্যে ছিল দক্ষিণপন্থী ও প্রতিক্রিয়াশীল শক্তি। এখন দেখা যাচ্ছে, অনেক ক্ষেত্রে ওই দক্ষিণপন্থী ও প্রতিক্রিয়াশীল শক্তি প্রভাব বিস্তার করছে। আমরা কিন্তু সরকারকে হুঁশিয়ার করে বলেছি, আপনারা যদি তাদের প্রভাবে এই অন্তর্বর্তী সরকার পরিচালনা করতে চান, তাহলে গণ-অভ্যুত্থানের চেতনাকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হবে এবং এটা গ্রহণযোগ্যতা পাবে না। উদাহরণ দিয়ে বলা যায়, পাঠ্যপুস্তক কমিটি গঠন ও বাতিল করা, সংবিধান সংস্কার কমিটির প্রধান হিসেবে প্রথম যাঁর নাম প্রস্তাব করা হলো, পরবর্তী সময়ে তাঁকেই আবার বাদ দেওয়া। দেখা যাচ্ছে, বিভিন্ন জায়গায় এক দখলদারত্বের বিদায়ে নতুন আরেক দখলদারত্ব কায়েম হচ্ছে। অনেক জায়গায় শিক্ষকদের বিরুদ্ধে অমানবিক আচরণের ঘটনা ঘটেছে। বিভিন্ন জায়গায় প্রতিক্রিয়াশীল শক্তি জেঁকে বসছে—এ সবকিছুই কিন্তু এই গণ-অভ্যুত্থানের চেতনাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।
আজকের পত্রিকা: ১৫ বছরের শাসনামলে আওয়ামী লীগ স্বৈরাচারী হয়ে উঠেছিল। কিন্তু এটাই কি বাংলাদেশে প্রথম স্বৈরাচার? বারবার স্বৈরাচারী শাসন কেন আসে?
রুহিন হোসেন প্রিন্স: এটা তো প্রথম স্বৈরাচার নয়। আমরা স্বৈরাচারী আইয়ুব খানের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছি। স্বৈরাচারী এরশাদ সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছি। আমরা বিভিন্ন সময়ে যারা সামরিক আইন জারি করে শাসনক্ষমতায় এসেছে, তাদের বিরুদ্ধেও আন্দোলন করেছি। কিন্তু এবারের বিষয়টা হয়েছে, আওয়ামী লীগ দীর্ঘ সময় ধরে ক্ষমতায় থেকে কর্তৃত্ববাদী এবং ভয়ের রাজত্ব কায়েম করে জনগণকে মর্যাদাহীন করেছে। সবচেয়ে বড় ব্যাপার হলো, যেভাবে হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে তারা ক্ষমতায় থাকতে চেয়েছে, যেটা অতীতে কখনো ঘটেনি। এ কারণে শেখ হাসিনা কর্তৃত্ববাদী, স্বৈরাচার এবং ফ্যাসিস্ট হিসেবে জনগণের কাছে প্রতিভাত হয়েছেন।
আর স্বৈরাচারী শাসন তো একটা ব্যবস্থা। আমাদের প্রচলিত যে সাংবিধানিক ব্যবস্থা, সেটাই কিন্তু দিনদিন স্বৈরাচার হিসেবে গড়ে তুলতে সহায়তা করে। আমরা বামপন্থীরা অতীতে এবং এখনো যে আন্দোলন করছি এবং স্লোগান তুলেছি, ‘দুঃশাসন হটাও, ব্যবস্থা বদলাও’—এর জন্য বামপন্থী বিকল্প গড়ে তোলার কথা বলে আসছি। কিন্তু আমরা তো ব্যবস্থাটার বদল করতে পারিনি।
আমরা বলি, রাজনীতি হলো উপরিকাঠামো আর অর্থনীতি হলো এর ভিত্তিকাঠামো। যদি আমাদের অর্থনীতির কাঠামোটা এমন থাকে, যেখানে যে কেউ লুটপাট করতে পারে এবং কাঠামোটা যদি দুর্বৃত্তায়িত রাজনীতি দিয়ে আবদ্ধ হতে হয়, মানে উৎপাদনের সঙ্গে সম্পর্ক না থেকে অসৎ আমলা আর অসৎ ব্যবসায়ীরা যদি অসৎ উপায়ে উপার্জন করেন, তাহলে এই দুর্বৃত্তায়িত অর্থনীতি আবার দুর্বৃত্তায়িত রাজনীতিরই জন্ম দেয়, যা অবশ্যম্ভাবীভাবে কর্তৃত্ববাদী ও স্বৈরাচারী রাজনীতি প্রতিষ্ঠা করে। এটা ভাঙতে হলে অনেকগুলো জায়গায় হাত দিতে হবে, নইলে নতুন রাজনীতি নির্মাণ করা সম্ভব না। যেমন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান, নির্বাচনীব্যবস্থা সংস্কার যত দিন পর্যন্ত না করতে পারছি, তত দিন পর্যন্ত স্বৈরাচারী ব্যবস্থাটা তৈরি হওয়ার সুযোগ চালু থাকবে।
আজকের পত্রিকা: আওয়ামী লীগ ক্ষমতা থেকে সরতেই বিএনপি দখলদারি চালাচ্ছে। সরকার ধর্মীয় রাজনীতির সঙ্গে আপস করছে। এগুলোকে কীভাবে দেখছেন?
রুহিন হোসেন প্রিন্স: এ দুটোই অগ্রহণযোগ্য। আমাদের অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধানের সঙ্গে গত ১২ আগস্ট দেখা করার সুযোগ হয়েছিল। আমাদের দলের পক্ষ থেকে আমি তাঁকে পরিষ্কার করে বলেছিলাম, এই গণ-অভ্যুত্থানে কোনো দল বা গোষ্ঠী জয়ী হয়নি। সুতরাং এক দখলদারের পরিবর্তে আরেক দখলদার আসবে, সেটাকে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। সুতরাং আপনারা নির্দেশ দেন, কেউ যদি জোর করে দখল করে, তাদের উচ্ছেদ করা হবে। প্রশাসনে নিয়োগ, বদলির ক্ষেত্রেও নীতিমালা প্রণয়নের ভিত্তিতে দলনিরপেক্ষ, যোগ্য ও দক্ষ ব্যক্তিদের নিয়োগ দিতে হবে।
আমার কাছে মনে হয়, এ সরকারের বড় দুর্বলতা হলো, কোনো কোনো ক্ষেত্রে সাম্প্রদায়িক অপশক্তি এবং দীর্ঘ সময় ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপিকে কিছু কিছু জায়গায় প্রশ্রয় দেওয়ার কারণে তারা বিভিন্ন অপকর্ম করার সুযোগ পাচ্ছে। আমরা মনে করি, এখনই এসব দমন করা দরকার। তা না হলে গণ-অভ্যুত্থানই প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে দাঁড়াবে।
আজকের পত্রিকা: সংবিধান সংশোধন নাকি সংবিধান নতুন করে লেখা উচিত?
রুহিন হোসেন প্রিন্স: প্রথম কথা হলো, আমূল পরিবর্তনের রায় এদের কে দিয়েছে? আমূল পরিবর্তনের কথা কোনো ব্যক্তি বললে আমি প্রশ্ন তুলতে পারি না। যারা মুক্তিযুদ্ধ মানে না, তারা তো এই সংবিধান ছুড়ে ফেলে দিতে চাইবে। আর এটাকে শুধু একটা গঠনতন্ত্র বলে সংবিধান বাতিল করে দেওয়া কিন্তু তাদের লক্ষ্য।
এ সরকারের কোনো ম্যান্ডেট নেই যে তারা সংবিধান পুনর্লিখন করবে। কিন্তু আমরা মনে করি, বাহাত্তরের সংবিধানের মূল চারটা ভিত্তি হলো আমাদের মুক্তিযুদ্ধের অর্জন। আমরা বামপন্থীরা দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছি, আমাদের সংবিধানের অনেক অসম্পূর্ণতা আছে, সেসব দূর করতে হবে। সংস্কার করা নিয়ে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। এই সংবিধানের কোন কোন বিষয় সংস্কার হতে পারে, সেসব নিয়ে আলোচনা হতে পারে এবং প্রয়োজনীয় সংস্কার করতে হবে। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে যে চার মূলনীতি, সেটাকে ঠিক রেখে। এর বাইরে কেউ যদি সংবিধান পুনর্লিখনের মাধ্যমে সংবিধান ছুড়ে দিতে চায়, আমরা তাদের সাবধান করে দিতে চাই, এটা আমরা করতে দেব না।
আজকের পত্রিকা: অরাজকতাও তো চলছে। পরিবর্তনের আশা কি রাখতে পারছেন?
রুহিন হোসেন প্রিন্স: আমি আপনার সঙ্গে যে মুহূর্তে কথা বলছি এবং সরকার যেভাবে চলছে, তাতে পরিবর্তনের কোনো আলামত দেখছি না। এটা আমার এক নম্বর কথা। দুই নম্বর কথা হচ্ছে, আমরা অনেক আগে থেকে বলে আসছি, কিছু করতে হলে রাজনৈতিক দলগুলোকে আস্থায় নিয়ে করতে হবে। কিন্তু সরকার মনে হয় রাজনৈতিক দলগুলোকে উপেক্ষা করছে। তারা সবার সরকার না বলে একটা অংশের সরকার বলছে।
এমনকি বেশ কিছু সংস্কারের কমিটি করা হলো আমাদের সঙ্গে কথা না বলে। জনগণের তাৎক্ষণিক সমস্যা, যেমন দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, জানমালের নিরাপত্তা এবং দখলদারত্ব যদি উচ্ছেদ করতে পারে, তাহলে অরাজক পরিস্থিতি কিছুটা হলেও নিয়ন্ত্রণ করা যাবে বলে আমার ধারণা।

আজকের পত্রিকা: গণ-অভ্যুত্থানে আপনারাও ছিলেন। কিন্তু সরকার গঠনে আপনারা নেই কেন?
রুহিন হোসেন প্রিন্স: সরকার গঠন করার সময় আমরা বলেছিলাম, আমরাসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে পরামর্শ করে সেটা করা হোক। কিন্তু সেটা হয়নি। এখন বরং প্রশ্ন আসছে, এটা কারা ও কীভাবে করল? সেটা কিন্তু আমরা আগে এবং এখনো জানতে পারিনি। সরকার কীভাবে গঠিত হলো, এটা বড় প্রশ্ন হিসেবে মানুষের সামনে আছে। আর আমাদের তো এ সরকারে থাকার কোনো কারণ নেই। গণ-অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী সব রাজনৈতিক দল ও গ্রুপের কাছে জাতীয় সরকার গঠনের প্রশ্ন এলে এবং সে অনুযায়ী জাতীয় সরকার গঠিত হলে প্রশ্ন আসতে পারত—আমরা নেই কেন! এই প্রশ্ন এখন অপ্রাসঙ্গিক।
আজকের পত্রিকা: তাহলে এই অন্তর্বর্তী সরকারকে আপনি কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?
রুহিন হোসেন প্রিন্স: অন্তর্বর্তী সরকারকে মূল্যায়নের এখনো সময় আসেনি। আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে। কিন্তু আমরা এর গঠনকালীন বিষয় নিয়ে কথা বলতে পারি। এই সরকার গঠনের সময় আমাদের সঙ্গে কথা না বললেও ছাত্র, শ্রমিক, জনতার একটি রক্তক্ষয়ী গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে যে সরকার গঠিত হয়েছে, তার প্রতি আমরা সমর্থন ব্যক্ত করেছি। শুরু থেকে এখন পর্যন্ত তাদের কার্যক্রমে আমরা অসন্তুষ্ট। তারপরও আমরা এ সরকারের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রেখেছি। আমরা আশা করব, এ সরকারের প্রধান কাজ হবে একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য নির্বাচন ব্যবস্থার আমূল সংস্কার করা এবং বাংলাদেশকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য গণতান্ত্রিক সংস্কার। আর সেগুলোর রূপরেখা তৈরির জন্য সবার সঙ্গে কথা বলা দরকার। এই প্রত্যাশাগুলো আমরা রাখছি।
আজকের পত্রিকা: অন্তর্বর্তী সরকার একটা বড় আন্তর্জাতিক শক্তির আশীর্বাদপুষ্ট বলে অভিযোগ। তারপরেও কেন আপনারা তাদের সমর্থন করছেন?
রুহিন হোসেন প্রিন্স: আগেই বলেছি, এ সরকার নিয়ে এখনই কোনো পূর্ণাঙ্গ মূল্যায়ন করতে চাই না। সাধারণভাবে যেহেতু এ সরকার গণ-অভ্যুত্থানের পরিণতিতে গঠিত হয়েছে, সে জন্য আমরা তাদের সমর্থন করছি। আর এই সরকার তো কমিউনিস্ট পার্টি বা বামপন্থীদের সরকার না। তাদের নিয়ে আমাদের নানা প্রশ্ন আছে। ভবিষ্যতে যখন আমরা এদের নিয়ে মূল্যায়ন করব, সেটা আরও স্পষ্ট হবে।
আর একটা কথা বলতে চাই, গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে গঠিত সরকার জনগণের প্রত্যাশা পূরণে আন্তরিক হবে, এটাই স্বাভাবিক। গত দুই মাসে কিছু দৃশ্যমান পজিটিভ কাজ করার কথা থাকলেও সেটা তারা করতে পারল না কেন? আমি সহজ করে বলতে চাই, এ সরকার যে গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে গঠিত সেই আন্দোলনে ছাত্র, শ্রমিক ও জনতার স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন ছিল। এখন খবর পাওয়া যাচ্ছে, ছাত্রদের মধ্যে গঠিত একটা ক্ষুদ্র অংশ এর সব সাংগঠনিক চিন্তা করত। কিন্তু মনে রাখতে হবে, গণ-অভ্যুত্থান ঘটেছে ব্যাপক মানুষের অংশগ্রহণে। এই আন্দোলনের পেছনে যদি আমরা সব শ্রেণি-পেশার শক্তিকে সংগঠিত করতে পারতাম, তাহলে কিন্তু আমাদের নেতৃত্বেরও প্রভাব থাকত।
আগস্টের গণ-অভ্যুত্থান স্বতঃস্ফূর্ত হলেও এখন শোনা যাচ্ছে এর নেপথ্যে ছিল দক্ষিণপন্থী ও প্রতিক্রিয়াশীল শক্তি। এখন দেখা যাচ্ছে, অনেক ক্ষেত্রে ওই দক্ষিণপন্থী ও প্রতিক্রিয়াশীল শক্তি প্রভাব বিস্তার করছে। আমরা কিন্তু সরকারকে হুঁশিয়ার করে বলেছি, আপনারা যদি তাদের প্রভাবে এই অন্তর্বর্তী সরকার পরিচালনা করতে চান, তাহলে গণ-অভ্যুত্থানের চেতনাকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হবে এবং এটা গ্রহণযোগ্যতা পাবে না। উদাহরণ দিয়ে বলা যায়, পাঠ্যপুস্তক কমিটি গঠন ও বাতিল করা, সংবিধান সংস্কার কমিটির প্রধান হিসেবে প্রথম যাঁর নাম প্রস্তাব করা হলো, পরবর্তী সময়ে তাঁকেই আবার বাদ দেওয়া। দেখা যাচ্ছে, বিভিন্ন জায়গায় এক দখলদারত্বের বিদায়ে নতুন আরেক দখলদারত্ব কায়েম হচ্ছে। অনেক জায়গায় শিক্ষকদের বিরুদ্ধে অমানবিক আচরণের ঘটনা ঘটেছে। বিভিন্ন জায়গায় প্রতিক্রিয়াশীল শক্তি জেঁকে বসছে—এ সবকিছুই কিন্তু এই গণ-অভ্যুত্থানের চেতনাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।
আজকের পত্রিকা: ১৫ বছরের শাসনামলে আওয়ামী লীগ স্বৈরাচারী হয়ে উঠেছিল। কিন্তু এটাই কি বাংলাদেশে প্রথম স্বৈরাচার? বারবার স্বৈরাচারী শাসন কেন আসে?
রুহিন হোসেন প্রিন্স: এটা তো প্রথম স্বৈরাচার নয়। আমরা স্বৈরাচারী আইয়ুব খানের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছি। স্বৈরাচারী এরশাদ সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছি। আমরা বিভিন্ন সময়ে যারা সামরিক আইন জারি করে শাসনক্ষমতায় এসেছে, তাদের বিরুদ্ধেও আন্দোলন করেছি। কিন্তু এবারের বিষয়টা হয়েছে, আওয়ামী লীগ দীর্ঘ সময় ধরে ক্ষমতায় থেকে কর্তৃত্ববাদী এবং ভয়ের রাজত্ব কায়েম করে জনগণকে মর্যাদাহীন করেছে। সবচেয়ে বড় ব্যাপার হলো, যেভাবে হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে তারা ক্ষমতায় থাকতে চেয়েছে, যেটা অতীতে কখনো ঘটেনি। এ কারণে শেখ হাসিনা কর্তৃত্ববাদী, স্বৈরাচার এবং ফ্যাসিস্ট হিসেবে জনগণের কাছে প্রতিভাত হয়েছেন।
আর স্বৈরাচারী শাসন তো একটা ব্যবস্থা। আমাদের প্রচলিত যে সাংবিধানিক ব্যবস্থা, সেটাই কিন্তু দিনদিন স্বৈরাচার হিসেবে গড়ে তুলতে সহায়তা করে। আমরা বামপন্থীরা অতীতে এবং এখনো যে আন্দোলন করছি এবং স্লোগান তুলেছি, ‘দুঃশাসন হটাও, ব্যবস্থা বদলাও’—এর জন্য বামপন্থী বিকল্প গড়ে তোলার কথা বলে আসছি। কিন্তু আমরা তো ব্যবস্থাটার বদল করতে পারিনি।
আমরা বলি, রাজনীতি হলো উপরিকাঠামো আর অর্থনীতি হলো এর ভিত্তিকাঠামো। যদি আমাদের অর্থনীতির কাঠামোটা এমন থাকে, যেখানে যে কেউ লুটপাট করতে পারে এবং কাঠামোটা যদি দুর্বৃত্তায়িত রাজনীতি দিয়ে আবদ্ধ হতে হয়, মানে উৎপাদনের সঙ্গে সম্পর্ক না থেকে অসৎ আমলা আর অসৎ ব্যবসায়ীরা যদি অসৎ উপায়ে উপার্জন করেন, তাহলে এই দুর্বৃত্তায়িত অর্থনীতি আবার দুর্বৃত্তায়িত রাজনীতিরই জন্ম দেয়, যা অবশ্যম্ভাবীভাবে কর্তৃত্ববাদী ও স্বৈরাচারী রাজনীতি প্রতিষ্ঠা করে। এটা ভাঙতে হলে অনেকগুলো জায়গায় হাত দিতে হবে, নইলে নতুন রাজনীতি নির্মাণ করা সম্ভব না। যেমন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান, নির্বাচনীব্যবস্থা সংস্কার যত দিন পর্যন্ত না করতে পারছি, তত দিন পর্যন্ত স্বৈরাচারী ব্যবস্থাটা তৈরি হওয়ার সুযোগ চালু থাকবে।
আজকের পত্রিকা: আওয়ামী লীগ ক্ষমতা থেকে সরতেই বিএনপি দখলদারি চালাচ্ছে। সরকার ধর্মীয় রাজনীতির সঙ্গে আপস করছে। এগুলোকে কীভাবে দেখছেন?
রুহিন হোসেন প্রিন্স: এ দুটোই অগ্রহণযোগ্য। আমাদের অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধানের সঙ্গে গত ১২ আগস্ট দেখা করার সুযোগ হয়েছিল। আমাদের দলের পক্ষ থেকে আমি তাঁকে পরিষ্কার করে বলেছিলাম, এই গণ-অভ্যুত্থানে কোনো দল বা গোষ্ঠী জয়ী হয়নি। সুতরাং এক দখলদারের পরিবর্তে আরেক দখলদার আসবে, সেটাকে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। সুতরাং আপনারা নির্দেশ দেন, কেউ যদি জোর করে দখল করে, তাদের উচ্ছেদ করা হবে। প্রশাসনে নিয়োগ, বদলির ক্ষেত্রেও নীতিমালা প্রণয়নের ভিত্তিতে দলনিরপেক্ষ, যোগ্য ও দক্ষ ব্যক্তিদের নিয়োগ দিতে হবে।
আমার কাছে মনে হয়, এ সরকারের বড় দুর্বলতা হলো, কোনো কোনো ক্ষেত্রে সাম্প্রদায়িক অপশক্তি এবং দীর্ঘ সময় ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপিকে কিছু কিছু জায়গায় প্রশ্রয় দেওয়ার কারণে তারা বিভিন্ন অপকর্ম করার সুযোগ পাচ্ছে। আমরা মনে করি, এখনই এসব দমন করা দরকার। তা না হলে গণ-অভ্যুত্থানই প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে দাঁড়াবে।
আজকের পত্রিকা: সংবিধান সংশোধন নাকি সংবিধান নতুন করে লেখা উচিত?
রুহিন হোসেন প্রিন্স: প্রথম কথা হলো, আমূল পরিবর্তনের রায় এদের কে দিয়েছে? আমূল পরিবর্তনের কথা কোনো ব্যক্তি বললে আমি প্রশ্ন তুলতে পারি না। যারা মুক্তিযুদ্ধ মানে না, তারা তো এই সংবিধান ছুড়ে ফেলে দিতে চাইবে। আর এটাকে শুধু একটা গঠনতন্ত্র বলে সংবিধান বাতিল করে দেওয়া কিন্তু তাদের লক্ষ্য।
এ সরকারের কোনো ম্যান্ডেট নেই যে তারা সংবিধান পুনর্লিখন করবে। কিন্তু আমরা মনে করি, বাহাত্তরের সংবিধানের মূল চারটা ভিত্তি হলো আমাদের মুক্তিযুদ্ধের অর্জন। আমরা বামপন্থীরা দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছি, আমাদের সংবিধানের অনেক অসম্পূর্ণতা আছে, সেসব দূর করতে হবে। সংস্কার করা নিয়ে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। এই সংবিধানের কোন কোন বিষয় সংস্কার হতে পারে, সেসব নিয়ে আলোচনা হতে পারে এবং প্রয়োজনীয় সংস্কার করতে হবে। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে যে চার মূলনীতি, সেটাকে ঠিক রেখে। এর বাইরে কেউ যদি সংবিধান পুনর্লিখনের মাধ্যমে সংবিধান ছুড়ে দিতে চায়, আমরা তাদের সাবধান করে দিতে চাই, এটা আমরা করতে দেব না।
আজকের পত্রিকা: অরাজকতাও তো চলছে। পরিবর্তনের আশা কি রাখতে পারছেন?
রুহিন হোসেন প্রিন্স: আমি আপনার সঙ্গে যে মুহূর্তে কথা বলছি এবং সরকার যেভাবে চলছে, তাতে পরিবর্তনের কোনো আলামত দেখছি না। এটা আমার এক নম্বর কথা। দুই নম্বর কথা হচ্ছে, আমরা অনেক আগে থেকে বলে আসছি, কিছু করতে হলে রাজনৈতিক দলগুলোকে আস্থায় নিয়ে করতে হবে। কিন্তু সরকার মনে হয় রাজনৈতিক দলগুলোকে উপেক্ষা করছে। তারা সবার সরকার না বলে একটা অংশের সরকার বলছে।
এমনকি বেশ কিছু সংস্কারের কমিটি করা হলো আমাদের সঙ্গে কথা না বলে। জনগণের তাৎক্ষণিক সমস্যা, যেমন দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, জানমালের নিরাপত্তা এবং দখলদারত্ব যদি উচ্ছেদ করতে পারে, তাহলে অরাজক পরিস্থিতি কিছুটা হলেও নিয়ন্ত্রণ করা যাবে বলে আমার ধারণা।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২০ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

রুহিন হোসেন প্রিন্স বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক। এর আগে তিনি পার্টির সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য ছিলেন। তিনি বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি।
০৬ অক্টোবর ২০২৪
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

রুহিন হোসেন প্রিন্স বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক। এর আগে তিনি পার্টির সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য ছিলেন। তিনি বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি।
০৬ অক্টোবর ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২০ দিন আগে
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

রুহিন হোসেন প্রিন্স বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক। এর আগে তিনি পার্টির সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য ছিলেন। তিনি বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি।
০৬ অক্টোবর ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২০ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

রুহিন হোসেন প্রিন্স বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক। এর আগে তিনি পার্টির সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য ছিলেন। তিনি বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি।
০৬ অক্টোবর ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২০ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫