Ajker Patrika

সংস্কারের অভাবে খাল সরু পানিপ্রবাহ বন্ধে ফসলহানি

জয়পুরহাট প্রতিনিধি
আপডেট : ২০ এপ্রিল ২০২২, ১৩: ২০
Thumbnail image

সংস্কারের অভাবে জয়পুরহাট সদর উপজেলার কোমরগ্রাম-বানিয়াপাড়া খালের প্রায় তিন কিলোমিটার জায়গার বিভিন্ন অংশ সরু হয়ে গেছে। বন্ধ হয়ে গেছে খালের প্রাণপ্রবাহ। এর প্রভাব পড়ছে কোমরগ্রাম-বানিয়াপাড়া ফসলি মাঠে। প্রায় দু শ বিঘা জমি এর জন্য জলাবদ্ধতার কবলে পড়ে। ফলে ব্যাহত হয় ফসলের উৎপাদন।

কোথাও কোথাও কচুরিপানা আর আগাছায় ভরে গেছে। ফলে সামান্য বৃষ্টি হলেই দ্রুত নিষ্কাশনের অভাবে এখানে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়।

সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, কৃষকদের দুর্দশার কথা চিন্তা করে আগামী এক বছরের মধ্যেই খালটি পুনঃখননের ব্যবস্থা করা হবে।

কোমরগ্রামের কৃষক ওয়ারেছ বলেন, ‘অতিরিক্ত জলাবদ্ধতার কারণে গেল মৌসুমে মাঠে আগাম জাতের আলু রোপণ করতে পারিনি। ১০-১৫ দিন পরে আলু লাগাতে হয়েছে। ফলে মণপ্রতি আমরা ৩০০-৪০০ টাকা কম দাম পেয়েছি। কারণ ১০-১৫ দিন আগে যে আলু বিক্রি করা হয়েছে ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা মণ দরে, ১০-১৫ দিন পরে সেই আলু বিক্রি করতে হয়েছে ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা মণ দরে।’

কৃষক ওয়ারেছ আরও বলেন, ‘বর্তমানে মাঠে শসা, করলা, দু-তিন জাতের তরমুজ চাষ করেছি। এর মধ্যে শসা, করলা বিক্রি করা শুরু করেছি। তরমুজের জালি আসা শুরু হয়েছে। আর কিছুদিন পরে তরমুজও বিক্রি করা যাবে। কিন্তু এরই মধ্যে যদি কালবৈশাখীর প্রভাবে ঝড়বৃষ্টি হয়; তাহলে আমরা ক্ষতির মুখে পড়ব। কেননা, আমাদের মাঠের পানি নিষ্কাশনের জন্য কোমরগ্রাম-বানিয়াপাড়া খাল সংস্কারের অভাবে সামান্য বৃষ্টিতে মাঠে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। তাই এই ফসলগুলো নিয়ে বেশ চিন্তিত আছি।’

অনুরূপ আশঙ্কার কথা বললেন কৃষক নুরুল ইসলাম, তসলিম উদ্দিন, মোবিনুল ইসলাম, নুরুন্নবীসহ অনেকে।

কোমরগ্রাম-বানিয়াপাড়া খাল সংস্কার বিষয়ে বুম্বু ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোল্লা শামসুল আলম বলেন, ‘কোমরগ্রাম-বানিয়াপাড়া খালটি সংস্কারের অভাবে অল্প বৃষ্টিতেই ফসলের মাঠে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়, এ কথাটি আমার অজানা নয়। এ জন্য অনেক সময় ফসলহানির মুখে পড়তে হয় কৃষকদের। তাই কৃষকদের দুর্দশার কথা চিন্তা করে সংশ্লিষ্ট বিভাগে খালটি পুনর্খননের জন্য যোগাযোগ করছি। আশা করছি, আগামী এক বছরের মধ্যেই খালটির পুনর্খনন করা সম্ভব হবে।’

এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের জয়পুরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আতিকুর রহমান বলেন, ‘পানি উন্নয়ন বোর্ড ছাড়া এ ধরনের খাল সংস্কারের কাজ করে থাকে এলজিইডি, বিএমডিএ এবং সওজ বিভাগ। খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে, তাঁরা কি এ খাল সংস্কারের কোনো উদ্যোগ নিয়েছে কি না। যদি এ ধরনের উদ্যোগ না নিয়ে থাকে, তাহলে আমরা এটি সংস্কারের উদ্যোগ নেব।’

তবে ইতিমধ্যে তাঁরা বেশ কিছু খালের সংস্কারের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবরে প্রস্তাবনা পাঠিয়েছেন। এখন খোঁজ নিয়ে দেখবেন, কোমরগ্রাম-বানিয়াপাড়া খালটি এই প্রস্তাবনার মধ্যে আছে কি না। যদি না থাকে, তাহলে আগামী অর্থবছরের মধ্যে যাতে খালটির সংস্কার করা সম্ভব হয়, সে জন্য প্রস্তাব পাঠানো হবে বলে তিনি জানান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত