শাহরিয়ার হাসান, ঢাকা

গভীর রাতের নিস্তব্ধতা ভেঙে বিকট শব্দে বেপরোয়া গতিতে স্বল্প দূরত্বে গাড়ি চলে। সাপ্তাহিক ছুটির আমেজ এলেই এই প্রতিযোগিতা শুরু হয় গুলশান ও বিমানবন্দর সড়কে। বিএমডব্লিউ, মার্সিডিজ ও রেঞ্জরোভারের মতো নামী ব্র্যান্ডের দামি গাড়ি নিয়ে প্রতিযোগিতায় নামেন রাজধানীর বিত্তশালী ব্যক্তিদের সন্তানেরা। স্বল্প দূরত্বের এই প্রতিযোগিতার নাম ‘ড্র্যাগ রেস’ (DRAG RACE)। এসব প্রতিযোগিতায় যেমন হরহামেশা দুর্ঘটনা ঘটে, তেমনি স্থানীয় বাসিন্দারাও প্রচণ্ড বিরক্ত। কিন্তু দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের কেউই এতে গা করেন না। কারণ প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সন্তানদের আটকে রাখার ক্ষমতা তাঁদের নেই।
খোদ ট্রাফিক পুলিশের হিসাবে দেখা গেছে, গত ছয় মাসে গুলশান-বনানী ও বিমানবন্দর সড়কে এই প্রতিযোগিতার কারণে ৩১টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে আহত হয়েছেন অর্ধশত মানুষ। কিন্তু একটি ঘটনায়ও থানা-পুলিশ সরাসরি কোনো মামলা নেয়নি। তারা মামলা করেছে মোটরযান আইনে, তবে সে সংখ্যাও কম নয়। এ সময়ে মোটরযান আইনে ১৭৩টি গাড়ির জরিমানা করা হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, এসব ঘটনায় আহত ব্যক্তিদের অভিযোগ আমলে না নিয়ে উল্টো আপসের মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা করে পুলিশ।
বিত্তশালী ব্যক্তিদের সন্তানদের এই গোপন প্রতিযোগিতার কথা গুলশান ও বনানী থানার পুলিশ, গুলশান বিভাগের পুলিশ এবং ট্রাফিক পুলিশের কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন। ঢাকা মহানগর ট্রাফিক পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মো. মুনিবুর রহমান আজকের পত্রিকাকে জানান, চোখের সামনে পড়লেই তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়। তবে গভীর রাতে সব পয়েন্টে ট্রাফিক পুলিশ না থাকার সুযোগে কেউ কেউ বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। আর গুলশান থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আমিনুল ইসলাম জানান, বড়লোকের ছেলেরা এসব গাড়ি চালান। ধরলেও আটকে রাখা যায় না। নানা মহলের ফোন আসতে থাকে।
সম্প্রতি এই প্রতিযোগিতা নিয়ে গুলশানের বাসিন্দা সাবেক এক বিচারপতি অভিযোগ করার পর পুলিশ সদর দপ্তরের নির্দেশে ২৫টি গাড়ি ও গাড়ির চালককে চিহ্নিত করেছিল গুলশান থানার পুলিশ। তাতে দেখা গেছে, প্রতিযোগীদের বেশির ভাগই পড়াশোনা করেন অস্ট্রেলিয়া, মালয়েশিয়া, কানাডা বা যুক্তরাষ্ট্রে। ছুটিতে এসে তাঁরা গাড়ি নিয়ে মধ্যরাতে বেরিয়ে পড়েন। তাঁদের বাবারা কেউ শিল্পপতি, কেউ পোশাক কারখানা বা রেস্তোরাঁর মালিক, কেউবা রাজনীতিবিদ। বিদ্যুৎ প্ল্যান্টের মালিকও আছেন এই তালিকায়। কিন্তু কারও বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তবে পুলিশের খোঁজ নেওয়ার পর কেউ কেউ প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া বন্ধ করেছেন।
পুলিশের কাছ থেকে পাওয়া তালিকা ধরে আজকের পত্রিকার পক্ষ থেকে অনেকের সঙ্গে কথা বলা হয়। তাঁরা প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন। কিন্তু তাঁদের অভিভাবকেরা এসব মানতে নারাজ। তাঁরা বলেছেন, ছেলেরা যে একটু জোরে গাড়ি চালায়, সেটা নিছক বিনোদন; কোনো অপরাধ নয়।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক কমিশনার নাঈম আহমেদ বলেছেন, এসব ঘটনায় সব সময় দণ্ডবিধির ৩৩৮ ক ধারা অনুযায়ী বেপরোয়া বা অবহেলা করে জনপথে গাড়ি চালানোর অভিযোগ এনে মামলা করা প্রয়োজন। যার শাস্তি হবে তিন বছর পর্যন্ত যেকোনো মেয়াদের সশ্রম বা বিনা শ্রম কারাদণ্ড। প্রতিযোগিতার মতো ঘটনায় পুলিশকে মোটরযান আইনের মামলা থেকে বের হয়ে আসা উচিত। কেননা ওই তরুণদের কাছে ১০-২০ হাজার টাকা জরিমানা কিছুই না।
এই প্রতিবেদক এক মাস ধরে খোঁজ করে জানতে পারেন, প্রতি সপ্তাহের বৃহস্পতি, শুক্র ও শনিবার গভীর রাতে গুলশান-বনানী ও বিমানবন্দর সড়কে এই প্রতিযোগিতা হয়। কখনো নির্দিষ্ট দূরত্বে সময় ধরে আবার কখনো দল বেঁধে প্রতিযোগিতা চলে। এর রুটগুলো হলো, গুলশান পুলিশ প্লাজা থেকে গুলশান-১ চত্বর, গুলশান-১ থেকে ২ নম্বর চত্বর, গুলশান-২ থেকে পাকিস্তান দূতাবাস, মহাখালী থেকে কুড়িল বিশ্বরোড হয়ে আবার মহাখালী ফিরে আসা। তবে এসব প্রতিযোগিতায় কোনো আর্থিক লেনদেন বা পুরস্কার আছে কি না তা কেউ বলতে পারেননি। সংশ্লিষ্ট সবাই বলেছেন, এটা উঠতি বয়সী তরুণদের বাহাদুরি দেখানোর প্রতিযোগিতা।
৫ জানুয়ারি রাতে গুলশান-২-এ হোটেল ওয়েস্টিনের সামনে দিয়ে বিকট শব্দ করে গুলশান-২ চত্বরের দিকে যাচ্ছিল একটি গাড়ি। গাড়িটির পিছু নেয় ট্রাফিক পুলিশের একটি বাইক। বুঝতে পেরে গাড়িটি পিংক সিটির সামনে এসে আবাসিক এলাকায় ঢুকে পড়ে। এই প্রতিবেদক গাড়িটির পিছু নিয়ে দেখতে পান এটি গুলশানের ১২৯ রোডের ২২ নম্বর বাসায় ঢুকেছে। কিন্তু বাড়ির কেউ এ নিয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হননি। ঘটনার তিন দিন পর ৮ জানুয়ারি সন্ধ্যায় আবার ওই বাসায় যান এই প্রতিবেদক। জানতে পারেন, সেদিন গাড়িটি চালাচ্ছিলেন তাহমিদুর রহমান নামের এক তরুণ। তিনি একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। উচ্চ শব্দে গাড়ি চালানো এবং প্রতিযোগিতার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘গুলশানের সব ওসি-ডিসি আমাকে চেনেন। কেউ কখনো বাধা দেননি।’
গুলশানের ব্যবসায়ী নাহিদ নেওয়াজ নিজের একটি অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করে জানান, গত বছরের আগস্টে তিনি স্ত্রীসহ (জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা) রাতে গুলশান-২ থেকে নিকেতনের বাসায় ফিরছিলেন। হঠাৎ পেছন থেকে এসে একটি গাড়ি ধাক্কা দেয়। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তাঁদের গাড়ি একটা দোকানের ভেতরে ঢুকে পড়ে। গাড়ি থেকে নেমে দেখেন, তাঁদের ধাক্কা দেওয়া গাড়িটি রেসিং কার। সেই দুর্ঘটনায় তাঁরা প্রাণে বেঁচে গেলেও ভেঙে চুরমার হয়ে যায় তাঁদের গাড়িটি।
এদিকে পুলিশের প্রতিবেদনের তথ্য ও অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ঢাকার রাস্তায় যাঁরা প্রতিযোগিতা করেন, তাঁদের একজন বারিধারার শেইরেন ইসলাম। বাবা শিল্পপতি শাহরিয়ার আহম্মেদ। তাঁদের বাসার তত্ত্বাবধায়ক রিয়াজ বলেন, ছয় মাস আগে মিতসুবিশি একটি গাড়ি নিয়ে রেসিং করছিলেন শেইরেন। দুর্ঘটনার পর গাড়িটি বিক্রি করে দেওয়া হয়। ঘটনাটির তদন্ত করেন গুলশান থানার এএসআই সাহবুদ্দিন। জানতে চাইলে শাহরিয়ার আহম্মেদ এ বিষয়ে কিছু বলতে রাজি হননি।
গত বছর ২৩ জুন বিএমডব্লিউ ব্র্যান্ডের একটি গাড়ি গুলশান-২ নম্বর চত্বরের আইল্যান্ডে তুলে দেন জিয়াদ রহমান নামে এক তরুণ। ওই সময় এক পথচারী ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান। থাকেন গুলশানের ৯৫ সড়কে। পড়াশোনা করেন মালয়েশিয়া। করোনার পর দেশে এসেছেন। জিয়ানের বাবার নাম আরিফ ইবনে রহমান একটি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের মালিক। সন্তানের রেসিং নিয়ে তিনি বলেন, একটু বেশি গতিতে গাড়ি চালালেই রেসিং হয় না।
নিজের মার্সিডিজ ব্র্যান্ডের গাড়িতে অতিরিক্ত হলার বা স্পোর্টস সাইলেন্সার লাগিয়ে চলাফেরা করেন গুলশান-২-এর ৭২ নম্বর রোডের তরুণ হাসানুল ইসলাম। ২৮ বছরের এই তরুণ দুটি তৈরি পোশাক কারখানা দেখাশোনা করেন। রেসিং নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা ঠিক রেসিং না, তবে শব্দ করে গাড়ি চালাতে ভালো লাগে।
গুলশানেরই আরেক তরুণ সাদ্দাম হোসেন পড়াশোনা করেন কানাডায়। গত বছরের জুলাইয়ে রেসিং করতে গিয়ে গুলশান থানার পুলিশের জেরার মুখে পড়েন। পুলিশ তাঁর বাবাকে থানায় ডেকে ছেলেকে বুঝিয়ে দেয়।
গুলশান বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান বলেন, দুর্ঘটনার সংবাদ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ওই তরুণদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। মোটরযান আইনে মামলা দিয়ে পরিবারের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়। অভিযুক্ত ব্যক্তিরা প্রভাবশালী হওয়ায় অনেক ক্ষেত্রে রেগুলার মামলা দেওয়া যায় না।
গাড়ি নিয়ে প্রতিযোগিতা করেন বনানীর আই ব্লকের এক নম্বর রোডের সৈয়দ তানজিল আহম্মেদ। একাধিকবার তিনি পুলিশের হাতে আটক হয়েছেন। তানজিলের বাবা সৈয়দ গালিব আহমেদ তৈরি পোশাক কারখানার মালিক। ছেলের রেসিং নিয়ে করা প্রশ্নের জবাবে গালিব আহমেদ বলেন, দুর্ঘটনা না ঘটালে এতে কোনো সমস্যা নেই।
মধ্যরাতে রেসিং করতে গিয়ে পুলিশের জরিমানা গুনেছেন পূর্ব জুরাইনের তরুণ তারেক আজিজ। ২৬ জুন রাতে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা গুনতে হয়েছে তাঁকে। গুলশান থানার এসআই সুজন চন্দ্র দে বলেন, তারেক আজিজ মাঝেমধ্যেই গুলশানে রেসিং করতে আসেন।
খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, মধ্যরাতে যাঁরা বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালান, তাঁদের প্রায় সবার গাড়িতেই বিশেষ ধরনের সাইলেন্সার (ধোঁয়া নির্গমনের পথ) লাগানো আছে। এর নাম স্পোর্টস সাইলেন্সার বা হলার। এতে গাড়ি চলার সময় বিকট শব্দ হয়। সেই শব্দের তালে বাড়তে থাকে গাড়ির গতি।
রাজধানীর কাকরাইলের কার হাউস ও বাংলামোটরে একাধিক গাড়ির দোকানে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এই সাইলেন্সারের দাম ৫ হাজার থেকে ২ লাখ টাকা পর্যন্ত। এগুলো বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) পরিচালক (রোড সেফটি) শেখ মোহাম্মাদ মাহবুব ই রব্বানী বলেন, দেশে আইন অনুযায়ী গাড়িতে স্বাভাবিকের চেয়ে অতিরিক্ত শব্দ হয়, এমন কিছু গাড়ি ব্যবহারের অনুমোদন নেই।
পুলিশের রমনা ট্রাফিক বিভাগের সার্জেন্ট কাজল বলেন, সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮-এর ৮৪ ধারা অনুযায়ী শব্দ নিয়ন্ত্রণের মাত্রা পরিবর্তন করা হলে জরিমানা করার বিধান রয়েছে।
অভিজাত এলাকার সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, সপ্তাহে এই তিন দিন পুলিশের পক্ষ থেকে এলাকায় চেকপোস্ট বাড়ানো হয়। এমনই এক চেকপোস্টে দায়িত্বে থাকেন গুলশান থানার সহকারী পরিদর্শক (এসআই) আলমগীর হোসেন। তিনি বলেন, ছুটির দিনে শুধু গুলশানেই ১২টি চেকপোস্ট থাকে। চেকপোস্টে প্রতিরাতে ৭-৮টি করে মামলা দেওয়া হয়।পুলিশের এই এসআইয়ের অভিযোগ, যাঁরা এমন প্রতিযোগিতায় অংশ নেন, তাঁরা অধিকাংশই মাদকাসক্ত। প্রায় সময়ই গাড়িতে বিভিন্ন ধরনের মাদক পাওয়া যায়।
গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসান বলেন, গুলশানে বসবাসকারীদের অভিযোগের ভিত্তিতে মাঝে মাঝে পুলিশ অভিযানে নামে। গত কয়েক মাসে অন্তত এমন ৩০টি স্পোর্টস হলারের গাড়ি আটক করে ১৫-২০ হাজার টাকা করে জরিমানা করেছেন। তবে রেসিং এখন অনেকটাই কমেছে।
এদিকে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ আছে, উচ্চবিত্ত পরিবারের এই সন্তানরা প্রতিযোগিতা করতে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটালেও এসব দুর্ঘটনায় ফৌজদারি মামলা নেয় না পুলিশ। আর কোনো ভুক্তভোগী মামলা করতে গেলে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের পক্ষ হয়ে পুলিশই আপস করার প্রস্তাব দেয়।
গত ১১ ডিসেম্বর রাতে মহাখালী থেকে বিমানবন্দরে দিকে প্রতিযোগিতা করার সময় মার্সিডিজ ব্র্যান্ডের একটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নৌসদর দপ্তরের সামনে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশাকে ধাক্কা দেয়। এতে পাঁচজন আহত হন। কিন্তু ঘণ্টাখানেক পরে গাড়িসহ দুজনকেই ছেড়ে দেন বনানী থানা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গাড়িচালক ছিলেন জিন্নাত জামান নামের এক তরুণ। জিন্নাতের বাবা একটি শিল্প গ্রুপের মালিক। জিন্নাতের সঙ্গে থাকা মুশফিক বলেন, বেশি গতির কারণে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরে আজম মিয়া বলেন, এ ঘটনায় থানায় কেউ অভিযোগ করেননি বলেই আপস হয়েছে।
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক তৌহিদুল হক বলেন, ঢাকার রাস্তায় এই ঘটনাগুলো পুলিশের সামনেই হয়। কিন্তু তাদের জবাবদিহি আনতে পুলিশ ব্যর্থ হয়। কারণ পুলিশ সদস্যরা মনে করেন, এরা কোনো না কোনোভাবে প্রভাবশালী। তবে এসব বন্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকেই এগিয়ে আসতে হবে। পাশাপাশি গণমাধ্যমকেও শক্তিশালী ভূমিকা পালন করতে হবে।

গভীর রাতের নিস্তব্ধতা ভেঙে বিকট শব্দে বেপরোয়া গতিতে স্বল্প দূরত্বে গাড়ি চলে। সাপ্তাহিক ছুটির আমেজ এলেই এই প্রতিযোগিতা শুরু হয় গুলশান ও বিমানবন্দর সড়কে। বিএমডব্লিউ, মার্সিডিজ ও রেঞ্জরোভারের মতো নামী ব্র্যান্ডের দামি গাড়ি নিয়ে প্রতিযোগিতায় নামেন রাজধানীর বিত্তশালী ব্যক্তিদের সন্তানেরা। স্বল্প দূরত্বের এই প্রতিযোগিতার নাম ‘ড্র্যাগ রেস’ (DRAG RACE)। এসব প্রতিযোগিতায় যেমন হরহামেশা দুর্ঘটনা ঘটে, তেমনি স্থানীয় বাসিন্দারাও প্রচণ্ড বিরক্ত। কিন্তু দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের কেউই এতে গা করেন না। কারণ প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সন্তানদের আটকে রাখার ক্ষমতা তাঁদের নেই।
খোদ ট্রাফিক পুলিশের হিসাবে দেখা গেছে, গত ছয় মাসে গুলশান-বনানী ও বিমানবন্দর সড়কে এই প্রতিযোগিতার কারণে ৩১টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে আহত হয়েছেন অর্ধশত মানুষ। কিন্তু একটি ঘটনায়ও থানা-পুলিশ সরাসরি কোনো মামলা নেয়নি। তারা মামলা করেছে মোটরযান আইনে, তবে সে সংখ্যাও কম নয়। এ সময়ে মোটরযান আইনে ১৭৩টি গাড়ির জরিমানা করা হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, এসব ঘটনায় আহত ব্যক্তিদের অভিযোগ আমলে না নিয়ে উল্টো আপসের মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা করে পুলিশ।
বিত্তশালী ব্যক্তিদের সন্তানদের এই গোপন প্রতিযোগিতার কথা গুলশান ও বনানী থানার পুলিশ, গুলশান বিভাগের পুলিশ এবং ট্রাফিক পুলিশের কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন। ঢাকা মহানগর ট্রাফিক পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মো. মুনিবুর রহমান আজকের পত্রিকাকে জানান, চোখের সামনে পড়লেই তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়। তবে গভীর রাতে সব পয়েন্টে ট্রাফিক পুলিশ না থাকার সুযোগে কেউ কেউ বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। আর গুলশান থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আমিনুল ইসলাম জানান, বড়লোকের ছেলেরা এসব গাড়ি চালান। ধরলেও আটকে রাখা যায় না। নানা মহলের ফোন আসতে থাকে।
সম্প্রতি এই প্রতিযোগিতা নিয়ে গুলশানের বাসিন্দা সাবেক এক বিচারপতি অভিযোগ করার পর পুলিশ সদর দপ্তরের নির্দেশে ২৫টি গাড়ি ও গাড়ির চালককে চিহ্নিত করেছিল গুলশান থানার পুলিশ। তাতে দেখা গেছে, প্রতিযোগীদের বেশির ভাগই পড়াশোনা করেন অস্ট্রেলিয়া, মালয়েশিয়া, কানাডা বা যুক্তরাষ্ট্রে। ছুটিতে এসে তাঁরা গাড়ি নিয়ে মধ্যরাতে বেরিয়ে পড়েন। তাঁদের বাবারা কেউ শিল্পপতি, কেউ পোশাক কারখানা বা রেস্তোরাঁর মালিক, কেউবা রাজনীতিবিদ। বিদ্যুৎ প্ল্যান্টের মালিকও আছেন এই তালিকায়। কিন্তু কারও বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তবে পুলিশের খোঁজ নেওয়ার পর কেউ কেউ প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া বন্ধ করেছেন।
পুলিশের কাছ থেকে পাওয়া তালিকা ধরে আজকের পত্রিকার পক্ষ থেকে অনেকের সঙ্গে কথা বলা হয়। তাঁরা প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন। কিন্তু তাঁদের অভিভাবকেরা এসব মানতে নারাজ। তাঁরা বলেছেন, ছেলেরা যে একটু জোরে গাড়ি চালায়, সেটা নিছক বিনোদন; কোনো অপরাধ নয়।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক কমিশনার নাঈম আহমেদ বলেছেন, এসব ঘটনায় সব সময় দণ্ডবিধির ৩৩৮ ক ধারা অনুযায়ী বেপরোয়া বা অবহেলা করে জনপথে গাড়ি চালানোর অভিযোগ এনে মামলা করা প্রয়োজন। যার শাস্তি হবে তিন বছর পর্যন্ত যেকোনো মেয়াদের সশ্রম বা বিনা শ্রম কারাদণ্ড। প্রতিযোগিতার মতো ঘটনায় পুলিশকে মোটরযান আইনের মামলা থেকে বের হয়ে আসা উচিত। কেননা ওই তরুণদের কাছে ১০-২০ হাজার টাকা জরিমানা কিছুই না।
এই প্রতিবেদক এক মাস ধরে খোঁজ করে জানতে পারেন, প্রতি সপ্তাহের বৃহস্পতি, শুক্র ও শনিবার গভীর রাতে গুলশান-বনানী ও বিমানবন্দর সড়কে এই প্রতিযোগিতা হয়। কখনো নির্দিষ্ট দূরত্বে সময় ধরে আবার কখনো দল বেঁধে প্রতিযোগিতা চলে। এর রুটগুলো হলো, গুলশান পুলিশ প্লাজা থেকে গুলশান-১ চত্বর, গুলশান-১ থেকে ২ নম্বর চত্বর, গুলশান-২ থেকে পাকিস্তান দূতাবাস, মহাখালী থেকে কুড়িল বিশ্বরোড হয়ে আবার মহাখালী ফিরে আসা। তবে এসব প্রতিযোগিতায় কোনো আর্থিক লেনদেন বা পুরস্কার আছে কি না তা কেউ বলতে পারেননি। সংশ্লিষ্ট সবাই বলেছেন, এটা উঠতি বয়সী তরুণদের বাহাদুরি দেখানোর প্রতিযোগিতা।
৫ জানুয়ারি রাতে গুলশান-২-এ হোটেল ওয়েস্টিনের সামনে দিয়ে বিকট শব্দ করে গুলশান-২ চত্বরের দিকে যাচ্ছিল একটি গাড়ি। গাড়িটির পিছু নেয় ট্রাফিক পুলিশের একটি বাইক। বুঝতে পেরে গাড়িটি পিংক সিটির সামনে এসে আবাসিক এলাকায় ঢুকে পড়ে। এই প্রতিবেদক গাড়িটির পিছু নিয়ে দেখতে পান এটি গুলশানের ১২৯ রোডের ২২ নম্বর বাসায় ঢুকেছে। কিন্তু বাড়ির কেউ এ নিয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হননি। ঘটনার তিন দিন পর ৮ জানুয়ারি সন্ধ্যায় আবার ওই বাসায় যান এই প্রতিবেদক। জানতে পারেন, সেদিন গাড়িটি চালাচ্ছিলেন তাহমিদুর রহমান নামের এক তরুণ। তিনি একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। উচ্চ শব্দে গাড়ি চালানো এবং প্রতিযোগিতার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘গুলশানের সব ওসি-ডিসি আমাকে চেনেন। কেউ কখনো বাধা দেননি।’
গুলশানের ব্যবসায়ী নাহিদ নেওয়াজ নিজের একটি অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করে জানান, গত বছরের আগস্টে তিনি স্ত্রীসহ (জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা) রাতে গুলশান-২ থেকে নিকেতনের বাসায় ফিরছিলেন। হঠাৎ পেছন থেকে এসে একটি গাড়ি ধাক্কা দেয়। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তাঁদের গাড়ি একটা দোকানের ভেতরে ঢুকে পড়ে। গাড়ি থেকে নেমে দেখেন, তাঁদের ধাক্কা দেওয়া গাড়িটি রেসিং কার। সেই দুর্ঘটনায় তাঁরা প্রাণে বেঁচে গেলেও ভেঙে চুরমার হয়ে যায় তাঁদের গাড়িটি।
এদিকে পুলিশের প্রতিবেদনের তথ্য ও অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ঢাকার রাস্তায় যাঁরা প্রতিযোগিতা করেন, তাঁদের একজন বারিধারার শেইরেন ইসলাম। বাবা শিল্পপতি শাহরিয়ার আহম্মেদ। তাঁদের বাসার তত্ত্বাবধায়ক রিয়াজ বলেন, ছয় মাস আগে মিতসুবিশি একটি গাড়ি নিয়ে রেসিং করছিলেন শেইরেন। দুর্ঘটনার পর গাড়িটি বিক্রি করে দেওয়া হয়। ঘটনাটির তদন্ত করেন গুলশান থানার এএসআই সাহবুদ্দিন। জানতে চাইলে শাহরিয়ার আহম্মেদ এ বিষয়ে কিছু বলতে রাজি হননি।
গত বছর ২৩ জুন বিএমডব্লিউ ব্র্যান্ডের একটি গাড়ি গুলশান-২ নম্বর চত্বরের আইল্যান্ডে তুলে দেন জিয়াদ রহমান নামে এক তরুণ। ওই সময় এক পথচারী ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান। থাকেন গুলশানের ৯৫ সড়কে। পড়াশোনা করেন মালয়েশিয়া। করোনার পর দেশে এসেছেন। জিয়ানের বাবার নাম আরিফ ইবনে রহমান একটি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের মালিক। সন্তানের রেসিং নিয়ে তিনি বলেন, একটু বেশি গতিতে গাড়ি চালালেই রেসিং হয় না।
নিজের মার্সিডিজ ব্র্যান্ডের গাড়িতে অতিরিক্ত হলার বা স্পোর্টস সাইলেন্সার লাগিয়ে চলাফেরা করেন গুলশান-২-এর ৭২ নম্বর রোডের তরুণ হাসানুল ইসলাম। ২৮ বছরের এই তরুণ দুটি তৈরি পোশাক কারখানা দেখাশোনা করেন। রেসিং নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা ঠিক রেসিং না, তবে শব্দ করে গাড়ি চালাতে ভালো লাগে।
গুলশানেরই আরেক তরুণ সাদ্দাম হোসেন পড়াশোনা করেন কানাডায়। গত বছরের জুলাইয়ে রেসিং করতে গিয়ে গুলশান থানার পুলিশের জেরার মুখে পড়েন। পুলিশ তাঁর বাবাকে থানায় ডেকে ছেলেকে বুঝিয়ে দেয়।
গুলশান বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান বলেন, দুর্ঘটনার সংবাদ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ওই তরুণদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। মোটরযান আইনে মামলা দিয়ে পরিবারের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়। অভিযুক্ত ব্যক্তিরা প্রভাবশালী হওয়ায় অনেক ক্ষেত্রে রেগুলার মামলা দেওয়া যায় না।
গাড়ি নিয়ে প্রতিযোগিতা করেন বনানীর আই ব্লকের এক নম্বর রোডের সৈয়দ তানজিল আহম্মেদ। একাধিকবার তিনি পুলিশের হাতে আটক হয়েছেন। তানজিলের বাবা সৈয়দ গালিব আহমেদ তৈরি পোশাক কারখানার মালিক। ছেলের রেসিং নিয়ে করা প্রশ্নের জবাবে গালিব আহমেদ বলেন, দুর্ঘটনা না ঘটালে এতে কোনো সমস্যা নেই।
মধ্যরাতে রেসিং করতে গিয়ে পুলিশের জরিমানা গুনেছেন পূর্ব জুরাইনের তরুণ তারেক আজিজ। ২৬ জুন রাতে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা গুনতে হয়েছে তাঁকে। গুলশান থানার এসআই সুজন চন্দ্র দে বলেন, তারেক আজিজ মাঝেমধ্যেই গুলশানে রেসিং করতে আসেন।
খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, মধ্যরাতে যাঁরা বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালান, তাঁদের প্রায় সবার গাড়িতেই বিশেষ ধরনের সাইলেন্সার (ধোঁয়া নির্গমনের পথ) লাগানো আছে। এর নাম স্পোর্টস সাইলেন্সার বা হলার। এতে গাড়ি চলার সময় বিকট শব্দ হয়। সেই শব্দের তালে বাড়তে থাকে গাড়ির গতি।
রাজধানীর কাকরাইলের কার হাউস ও বাংলামোটরে একাধিক গাড়ির দোকানে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এই সাইলেন্সারের দাম ৫ হাজার থেকে ২ লাখ টাকা পর্যন্ত। এগুলো বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) পরিচালক (রোড সেফটি) শেখ মোহাম্মাদ মাহবুব ই রব্বানী বলেন, দেশে আইন অনুযায়ী গাড়িতে স্বাভাবিকের চেয়ে অতিরিক্ত শব্দ হয়, এমন কিছু গাড়ি ব্যবহারের অনুমোদন নেই।
পুলিশের রমনা ট্রাফিক বিভাগের সার্জেন্ট কাজল বলেন, সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮-এর ৮৪ ধারা অনুযায়ী শব্দ নিয়ন্ত্রণের মাত্রা পরিবর্তন করা হলে জরিমানা করার বিধান রয়েছে।
অভিজাত এলাকার সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, সপ্তাহে এই তিন দিন পুলিশের পক্ষ থেকে এলাকায় চেকপোস্ট বাড়ানো হয়। এমনই এক চেকপোস্টে দায়িত্বে থাকেন গুলশান থানার সহকারী পরিদর্শক (এসআই) আলমগীর হোসেন। তিনি বলেন, ছুটির দিনে শুধু গুলশানেই ১২টি চেকপোস্ট থাকে। চেকপোস্টে প্রতিরাতে ৭-৮টি করে মামলা দেওয়া হয়।পুলিশের এই এসআইয়ের অভিযোগ, যাঁরা এমন প্রতিযোগিতায় অংশ নেন, তাঁরা অধিকাংশই মাদকাসক্ত। প্রায় সময়ই গাড়িতে বিভিন্ন ধরনের মাদক পাওয়া যায়।
গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসান বলেন, গুলশানে বসবাসকারীদের অভিযোগের ভিত্তিতে মাঝে মাঝে পুলিশ অভিযানে নামে। গত কয়েক মাসে অন্তত এমন ৩০টি স্পোর্টস হলারের গাড়ি আটক করে ১৫-২০ হাজার টাকা করে জরিমানা করেছেন। তবে রেসিং এখন অনেকটাই কমেছে।
এদিকে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ আছে, উচ্চবিত্ত পরিবারের এই সন্তানরা প্রতিযোগিতা করতে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটালেও এসব দুর্ঘটনায় ফৌজদারি মামলা নেয় না পুলিশ। আর কোনো ভুক্তভোগী মামলা করতে গেলে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের পক্ষ হয়ে পুলিশই আপস করার প্রস্তাব দেয়।
গত ১১ ডিসেম্বর রাতে মহাখালী থেকে বিমানবন্দরে দিকে প্রতিযোগিতা করার সময় মার্সিডিজ ব্র্যান্ডের একটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নৌসদর দপ্তরের সামনে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশাকে ধাক্কা দেয়। এতে পাঁচজন আহত হন। কিন্তু ঘণ্টাখানেক পরে গাড়িসহ দুজনকেই ছেড়ে দেন বনানী থানা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গাড়িচালক ছিলেন জিন্নাত জামান নামের এক তরুণ। জিন্নাতের বাবা একটি শিল্প গ্রুপের মালিক। জিন্নাতের সঙ্গে থাকা মুশফিক বলেন, বেশি গতির কারণে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরে আজম মিয়া বলেন, এ ঘটনায় থানায় কেউ অভিযোগ করেননি বলেই আপস হয়েছে।
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক তৌহিদুল হক বলেন, ঢাকার রাস্তায় এই ঘটনাগুলো পুলিশের সামনেই হয়। কিন্তু তাদের জবাবদিহি আনতে পুলিশ ব্যর্থ হয়। কারণ পুলিশ সদস্যরা মনে করেন, এরা কোনো না কোনোভাবে প্রভাবশালী। তবে এসব বন্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকেই এগিয়ে আসতে হবে। পাশাপাশি গণমাধ্যমকেও শক্তিশালী ভূমিকা পালন করতে হবে।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২০ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গভীর রাতের নিস্তব্ধতা ভেঙে বিকট শব্দে বেপরোয়া গতিতে স্বল্প দূরত্বে গাড়ি চলে। সাপ্তাহিক ছুটির আমেজ এলেই এই প্রতিযোগিতা শুরু হয় গুলশান ও বিমানবন্দর সড়কে। বিএমডব্লিউ, মার্সিডিজ ও রেঞ্জরোভারের মতো নামী ব্র্যান্ডের দামি গাড়ি নিয়ে প্রতিযোগিতায় নামেন রাজধানীর বিত্তশালী ব্যক্তিদের সন্তানেরা। স্বল্প দূরত্বের
১২ জানুয়ারি ২০২২
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

গভীর রাতের নিস্তব্ধতা ভেঙে বিকট শব্দে বেপরোয়া গতিতে স্বল্প দূরত্বে গাড়ি চলে। সাপ্তাহিক ছুটির আমেজ এলেই এই প্রতিযোগিতা শুরু হয় গুলশান ও বিমানবন্দর সড়কে। বিএমডব্লিউ, মার্সিডিজ ও রেঞ্জরোভারের মতো নামী ব্র্যান্ডের দামি গাড়ি নিয়ে প্রতিযোগিতায় নামেন রাজধানীর বিত্তশালী ব্যক্তিদের সন্তানেরা। স্বল্প দূরত্বের
১২ জানুয়ারি ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২০ দিন আগে
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

গভীর রাতের নিস্তব্ধতা ভেঙে বিকট শব্দে বেপরোয়া গতিতে স্বল্প দূরত্বে গাড়ি চলে। সাপ্তাহিক ছুটির আমেজ এলেই এই প্রতিযোগিতা শুরু হয় গুলশান ও বিমানবন্দর সড়কে। বিএমডব্লিউ, মার্সিডিজ ও রেঞ্জরোভারের মতো নামী ব্র্যান্ডের দামি গাড়ি নিয়ে প্রতিযোগিতায় নামেন রাজধানীর বিত্তশালী ব্যক্তিদের সন্তানেরা। স্বল্প দূরত্বের
১২ জানুয়ারি ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২০ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

গভীর রাতের নিস্তব্ধতা ভেঙে বিকট শব্দে বেপরোয়া গতিতে স্বল্প দূরত্বে গাড়ি চলে। সাপ্তাহিক ছুটির আমেজ এলেই এই প্রতিযোগিতা শুরু হয় গুলশান ও বিমানবন্দর সড়কে। বিএমডব্লিউ, মার্সিডিজ ও রেঞ্জরোভারের মতো নামী ব্র্যান্ডের দামি গাড়ি নিয়ে প্রতিযোগিতায় নামেন রাজধানীর বিত্তশালী ব্যক্তিদের সন্তানেরা। স্বল্প দূরত্বের
১২ জানুয়ারি ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২০ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫