আ.লীগের ১০ নেতা বহিষ্কার

শরীয়তপুর সদর উপজেলার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়া নিয়ে আওয়ামী লীগের ১০ নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে সভা করে তাদের বহিষ্কার করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শরীয়তপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অনল কুমার দে।

শরীয়তপুর জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, দ্বিতীয় দফায় ১১ নভেম্বর শরীয়তপুর সদর উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। নির্বাচনে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় ৭ ইউনিয়নের ১০ নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। ২৬ অক্টোবর মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিনে প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করায় কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তে তাঁদের বহিষ্কার করা হয়েছে।

বহিষ্কৃত ১০ আওয়ামী লীগ নেতা হলেন, রুদ্রকর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি বর্তমান চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান ঢালী, তুলাসার ইউনিয়নের সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য জাহিদুল ইসলাম ফকির, মাহামুদপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি বর্তমান চেয়ারম্যান শাহজাহান ঢালী, আওয়ামী লীগ নেতা শাহীন তালুকদার, সদর উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ইরানি বেগম, ডোমসার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য মাস্টার মজিবুর রহমান, শৌলপাড়া ইউনিয়নে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আব্দুল মান্নান খান ভাষানী, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি ইস্কান্দার সরদার, পালং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য আজাহার খান ও আঙ্গারিয়া ইউনিয়নের জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আনোয়ার হোসেন হাওলাদার।

আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী হিসেবে নৌকা প্রতীক নিয়ে সদর উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে মনোনয়ন পেয়েছেন-বিনোদপুর ইউনিয়নে আব্দুল হামিদ সাকিদার, চন্দ্রপুর ইউনিয়নে আব্দুস সালাম খান, চিতলিয়া ইউনিয়নে হারুন অর রশীদ হাওলাদার, আঙ্গারিয়া ইউনিয়নে আসমা আক্তার, ডোমসার ইউনিয়নে মিজান মোহাম্মদ খান, পালং ইউনিয়নে আবুল হোসেন দেওয়ান, তুলাসার ইউনিয়নে জামাল হোসেন, রুদ্রকর ইউনিয়নে সিরাজুল ইসলাম ঢালী, শৌলপারা ইউনিয়নে আলমগীর হোসেন খান ও মাহমুদপুর ইউনিয়নে লিয়াকত হোসেন তালুকদার। এর মধ্যে চন্দ্রপুর, চিতলিয়া ও বিনোদপুর ইউনিয়নে একক প্রার্থী থাকায় চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।

বহিষ্কার হওয়া তুলাসার ইউনিয়নের স্বতন্ত্র (আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী) প্রার্থী জাহিদুল ইসলাম ফকির আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ছাত্রজীবন থেকে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে আছি। মনোনয়নের ক্ষেত্রে স্থানীয় সাধারণ ভোটার ও দলীয় নেতা-কর্মীদের মতামত উপেক্ষা করা হয়েছে। ভোটার ও দলীয় নেতা-কর্মীদের চাপে প্রার্থী হয়েছি। বহিষ্কার সংক্রান্ত এখনো কোনো চিঠি বা রেজুলেশনের কপি পাইনি।’

শরীয়তপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অনল কুমার দে বলেন, ‘যারা দলীয় সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন, তাদের প্রত্যেককেই বহিষ্কার করা হয়েছে। দলীয় মনোনয়ন ফরমে তাঁরা অঙ্গীকার করেছিলেন, দলীয় প্রার্থী যিনি হবেন তার জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবেন। অঙ্গীকার ভঙ্গ করলে তাঁরা বহিষ্কার হবেন। তাদের সেই ঘোষণা অনুযায়ী দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থী হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাদের বহিষ্কারাদেশ কার্যকর হয়েছে।’