Ajker Patrika

প্রকাশ্যে কেটে নেওয়া হলো সরকারি রাস্তার মাটি

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাভার ও ধামরাই (ঢাকা) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৪ এপ্রিল ২০২২, ০৯: ০৮
প্রকাশ্যে কেটে নেওয়া হলো সরকারি রাস্তার মাটি

ঢাকার ধামরাইয়ের সোমভাগ ইউনিয়নের পুরোনো ডাউটিয়া গ্রাম থেকে পাঁচ শ গজ দূরেই ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক। গ্রামের দুই পাশে দুটি রাস্তা থাকলেও সম্প্রতি স্থানীয় কয়েকজন একটি রাস্তা কেটে ফেলায় গ্রামবাসী তা ব্যবহার করতে পারছে না।

এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পুরোনো ডাউটিয়া গ্রামে অন্তত তিন হাজার মানুষের বসবাস, যাদের অধিকাংশই বিভিন্ন কারখানার শ্রমিক। এসব মানুষের চলাচলের জন্য গ্রামের দুই পাশে দুটি রাস্তা রয়েছে। গত সোমবার একটি রাস্তা কেটে ফেলায় তাদের চলাচলে সমস্যা হচ্ছে।

গত বৃহস্পতিবার পুরোনো ডাউটিয়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, গ্রামের দুই পাশে দুটি রাস্তা থাকলেও তা সরাসরি ব্যবহারের সুযোগ নেই গ্রামের বাসিন্দাদের। গ্রামের লোকজনকে এ-বাড়ি ও-বাড়ির ওপর দিয়ে যেকোনো এক রাস্তা হয়ে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক ব্যবহার করতে হয়। একটি রাস্তা কেটে দেওয়ায় গ্রামের অর্ধেক লোক চরম ভোগান্তিতে পড়েছে।

গ্রামের ব্যবসায়ী শরিফুল ইসলাম বলেন, গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ডাউটিয়া গ্রামে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। এর জেরে ওই জাকির হোসেন, জুয়েল, সোহেল রানাসহ কয়েকজন ব্যক্তি গত সোমবার সন্ধ্যার পরপরই এক্সকাভেটর দিয়ে রাস্তার মাটি কাটতে শুরু করেন। পরে তিনিসহ স্থানীয় বাসিন্দারা বাধা দিলে তাঁরা চলে যান।

শরিফুল বলেন, পরের দিন পুনরায় তাঁরা এক্সকাভেটর নিয়ে এসে সড়ক কেটে দেন। বিষয়টি তিনি লিখিতভাবে ধামরাইয়ের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে জানিয়েছেন।

জানতে চাইলে অভিযুক্ত জুয়েল বলেন, সরকারি অর্থায়নে রাস্তাটি নির্মাণ করা হয়নি। নির্মাণসামগ্রী পরিবহনের জন্য শরিফুল ইসলামের অনুরোধে গ্রামের লোকজন তাঁদের ব্যক্তিমালিকানাধীন জমি ব্যবহার করতে দিয়েছিলেন। তিনি জমির ওপর সড়ক নির্মাণ করে তা ব্যবহার করছিলেন। বাড়ির নির্মাণকাজ শেষ হওয়ায় জমির মালিকেরা ওই রাস্তার মাটি অপসারণ করছেন।

স্থানীয় ব্যবসায়ী রাজু আহমেদ বলেন, গ্রামের দুই পাশে দুটি রাস্তা থাকলেও ওই রাস্তা ব্যবহার করতে অধিকাংশ লোককেই মানুষের বাড়ির ওপর দিয়ে চলাচল করতে হয়। মানুষের চলাচলের সুবিধার জন্য গ্রামের পাশ দিয়ে আরও একটি রাস্তা নির্মাণ করে দুই রাস্তার সঙ্গে সংযোগ করে দিতে হবে। তাহলে গ্রামের মানুষকে আর কারও বাড়ির ওপর দিয়ে চলতে হবে না।

সোমভাগ ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আজাহারুল ইসলাম বলেন, ২৫ বছর আগে সরকারি অর্থায়নে রাস্তাটি নির্মাণ করা হয়েছিল। চলাচলের সুবিধার জন্য পরে শরিফুল ব্যক্তিগত অর্থে ওই রাস্তা প্রশস্ত করেন। সড়কের যে অংশে কাটা হয়েছে, তা কোনো ব্যক্তির নয়, সড়ক ও জনপথের জমি।

সোমভাগ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রভাষক মোহাম্মদ আওলাদ হোসেন জানান, ‘ইউএনও স্যার আমাকে ফোন করে বলেছেন এ বিষয়ে একটু দেখেন। যারা ক্ষতিগ্রস্ত এবং যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তারা আমাদের কাছে আসলে আমার জন্য একটু সুবিধা হয়। আমি আন্তরিক এটি সমাধানের জন্য।’

জানতে চাইলে ধামরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতিকুর রহমান বলেন, রাস্তা কাটার বিষয়ে একটি অভিযোগ পাওয়া গেছে।

ধামরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হোসাইন মোহাম্মদ হাই জকী বলেন, ‘অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও ওসিকে বলেছি। তাঁরা বিষয়টা দেখছেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত