Ajker Patrika

অনিয়ম তদন্তে সংসদীয় কমিটি

গাজীপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ১৩ ডিসেম্বর ২০২১, ১২: ৫৩
অনিয়ম তদন্তে সংসদীয় কমিটি

গাজীপুরে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজে অনুমোদনহীনভাবে সাড়ে ১৪ কোটি টাকার মালামাল কেনার অনিয়ম তদন্তে তিন সদস্যের সংসদীয় কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে এক মাসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

গত ৯ ডিসেম্বর স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের আর্থিক ব্যবস্থাপনা শাখার সহকারী সচিব পূরবী পাল স্বাক্ষরিত এক চিঠির সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

চিঠি সূত্রে আরও জানা গেছে, সরকারি হিসাব সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির ৫২তম বৈঠকে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজের জন্য ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ১৪ কোটি ৫৪ লাখ ২০ হাজার টাকার মালামাল কেনায় অনিয়মের বিষয়টি আলোচিত হয়েছে। সংসদীয় কমিটির সভায় আলোচনার পর গৃহীত সিদ্ধান্ত থেকে দেখা যায়, মেডিকেল কলেজের জন্য কেনা মালামাল হাসপাতালে বিতরণ করা এবং সেগুলো স্থাপন ও কার্যকর করা বাদেই সরবরাহকারীকে চূড়ান্ত বিল পরিশোধ করা হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

নিরীক্ষার সময় ক্যাশ বই, বিল ভাউচার, স্টক বই ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট রেকর্ডপত্র থেকে দেখা যায়, মেডিকেল কলেজের জন্য কেনা মালামাল পরে হাসপাতালে ব্যবহারের জন্য দেওয়া হয়, যা ঠিক হয়নি। এতে আরও বলা হয়েছে, হাসপাতালগুলো নিজস্ব সাবজেক্ট ম্যানেজমেন্টের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত হয় এবং তারা নিজেরা ব্যবহারের জন্য মালামাল কিনে থাকেন। তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজের চাহিদা বাদেই এসব কেনাকাটা করা হয়েছে, ফলে সরকারি অর্থের অপব্যবহার হয়েছে।

এ জন্য সাংসদ মনজুর হোসেন, আহসানুল ইসলাম টিটু ও মুস্তফা লুৎফুল্লাহকে নিয়ে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটি কেনাকাটার অনিয়ম সম্পর্কে অধিকতর নিশ্চিত হওয়ার জন্য সরেজমিনে পরিদর্শন ও সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র যাচাই করে আগামী এক মাসের মধ্যে রিপোর্ট করবেন।

অনিয়মের মাধ্যমে যেসব মালামাল কেনা হয়েছে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে—৩৫ লাখ টাকা মূল্যের প্লাটিলেট এক্সিগো মিটার, প্লাটিলেট ফাংশন অ্যানালাইজারের মূল্য দেখানো হয়েছে ৪৫ লাখ টাকা, মাল্টি চ্যানেল মাইক্রো পিপেটের মূল্য ৭ লাখ টাকা, গ্যাস ইলেকট্রিসিটি মেশিন ১৬ লাখ টাকা, অটোমেটিক কোয়াগুলেশন অ্যানালাইজার ৫১ লাখ ২০ হাজার টাকা, ইউরিন ল্যাব অটোমেশন ১১ কোটি ৫০ লাখ টাকা, মাফলি ফার্নেস ১৬ লাখ টাকা, ভ্যাকসিন অ্যান্ড আইস পেক ফ্রিজার ৭২ লাখ টাকা, হট এয়ার কভার ১৩ লাখ টাকা, প্লাজমা ইয়ার স্যানিটাইজার অয়েল মাউন্টেড ১৭ লাখ টাকা, আইস মেকার (২০ কেজি) ৪০ লাখ টাকা, লার্জ স্পিড সেন্ট্রিফিউজ ১৩ লাখ টাকা, লার্জ ক্যাপাসিটি রেফ্রিজারেটেড ১৫ লাখ টাকা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক চিকিৎসক অভিযোগ করেছেন, এসব যন্ত্রপাতি অত্যন্ত নিম্নমানের ছিল এবং এগুলো যেসব কাজের জন্য কেনা হয়েছিল সেসব কাজ করা সম্ভব ছিল না। এসব যন্ত্রপাতি গ্রহণ করার সময় কোনো নিয়মনীতি মানা হয়নি। যে মানের যন্ত্রপাতি দেওয়ার কথা ছিল, তাও দেওয়া হয়নি।

এ বিষয়ে সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সুভাষ চন্দ্র সাহা বলেন, ‘আমার সময়ে কেনা মালামালের বিষয়ে অডিট আপত্তি হয়েছে। এখন একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তাঁরা তদন্ত করে দেখবেন। প্রতিবেদন পেলে বিস্তারিত বলা যাবে।’

মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ আবদুল কাদের বলেন, ‘সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা তদন্ত কমিটিকে সব রকম সহায়তা করব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত