Ajker Patrika

বন্ধুকে কাঁদিয়ে হাসবে বন্ধু

উপল বড়ুয়া, ঢাকা
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২২, ২০: ৩৮
বন্ধুকে কাঁদিয়ে হাসবে বন্ধু

কখনো কখনো সময় বন্ধুকে দাঁড় করিয়ে দেয় মুখোমুখি লড়াইয়ে। অনেক দিনের চেনা-পরিচয়ের বন্ধুত্ব ভুলে বড় হয়ে ওঠে জয়-পরাজয়। ১৮ ডিসেম্বর লুসাইল স্টেডিয়ামে তেমন আরেকটি লড়াই দেখতে যাচ্ছে ফুটবলবিশ্ব। কাতার থেকে বিশ্বকাপ শিরোপা নিয়ে ফিরতে মুখোমুখি হয়ে যাচ্ছেন পিএসজির আক্রমণভাগের দুই তারকা লিওনেল মেসি ও কিলিয়ান এমবাপ্পে। এক মাসের যুদ্ধে শেষ হাসি হাসবেন কে?

মেসির নৈপুণ্যে ৮ বছর পর আবারও বিশ্বকাপের ফাইনালে আর্জেন্টিনা। লা আলবিসেলেস্তেদের ৩৬ বছরের অপেক্ষা ঘোচাতেও মরিয়া তিনি। ক্যারিয়ারের শেষ বিশ্বকাপ খেলতে আসা ৩৫ বছর বয়সী ফরোয়ার্ডের হাতে শুধু আর্জেন্টাইনরা নন, শিরোপা দেখতে চান অসংখ্য ফুটবলপ্রেমীও। তবে এমবাপ্পে নিশ্চয় চাইবেন না, তাঁর ক্লাব সতীর্থ হাসতে হাসতে বাড়ি ফিরুক।

এ যেন বাংলা চলচ্চিত্র ‘বন্ধু তুমি শত্রু তুমি’র মতো আরেক চিত্রনাট্যের দৃশ্যায়নের অপেক্ষা। আব্দুল জব্বারের গাওয়া, ‘শত্রু তুমি বন্ধু তুমি’ গানটিও এক্ষেত্রে মনে পড়ে যায়।

মেসির সঙ্গে এমবাপ্পে এক বছর ধরে পার্ক দে প্রিন্সেসের ড্রেসিংরুম ভাগাভাগি করে আসছেন। কিন্তু ফরাসি ফরোয়ার্ড এখন ভুলেও গাইবেন না, ‘তুমি বন্ধু আমার চিরসুখে থাকো’।

অধরা বিশ্বকাপ জয় যে মেসিকে এনে দিতে পারে ‘চিরসুখ’। সেরাদের চিরস্থায়ী আসন পাকাপোক্ত করা তো বটে। এর আগে চারটি বিশ্বকাপ খেলেও শিরোপা জেতা হয়নি। ২০১৪ বিশ্বকাপের ফাইনালে তাঁকে মাঠ ছাড়তে হয়েছিল একরাশ হতাশা নিয়ে। কিন্তু এমবাপ্পে মাত্র ১৯ বছর বয়সেই সেই স্বাদ পেয়ে গেছেন। এবার সংখ্যাটা দুই করে ফরাসিদের হৃদয়ে ‘অমরত্ব’ পেতে চাইবেন তিনি।

বার্সেলোনা ছেড়ে গত বছর প্যারিসে সংসার পেতেছেন মেসি। যেখানে তিনি এমবাপ্পের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে জিতেছেন লিগ ওয়ান। সতীর্থ হলেও অবশ্য ১২ বছরের ছোট এমবাপ্পের সঙ্গে সেভাবে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠেনি তাঁর। বরং মেসির রসায়নটা পুরোনো বন্ধু নেইমারের সঙ্গে। তারপরও তো সতীর্থ বলে কথা! মেসি-পরবর্তী ফুটবলবিশ্বের সেরা তারকাও ভাবা হচ্ছে এমবাপ্পেকে। লুসাইলের ফাইনালটা তাই দুই প্রজন্মের লড়াইও। ফুটবলবিশ্বে বন্ধুকে শত্রু বানিয়ে কাঁদানো নতুন নয়। ক্লাব বা আন্তর্জাতিক ফুটবলে তা কতশতবারই তো দেখা গেছে। মেসি-এমবাপ্পেরও সেই অভিজ্ঞতা অনেক পুরোনো। এমবাপ্পে তো কদিন আগে তাঁর পিএসজি সতীর্থ আশরাফ হাকিমিকে কাঁদিয়েছেন মরক্কোকে সেমিফাইনাল থেকে বিদায় করে।

শুধু শিরোপার জন্য নয়, কাতার বিশ্বকাপে মেসি-এমবাপ্পের লড়াইটা গোল্ডেন বুট ও গোল্ডেন বলেরও। মেসি ৫ গোলের সঙ্গে করেছেন ৩ অ্যাসিস্ট। এমবাপ্পের ৫ গোল ও ২ অ্যাসিস্ট। সর্বোচ্চ গোলদাতাদের তালিকাও এই দুজনের দখলে। মেসি-এমবাপ্পে ছাড়াও লুসাইলের ফাইনাল দিয়ে পুনর্মিলনী ঘটছে আরও বেশ কজন তারকার, যাঁরা ক্লাবের সতীর্থ। কিন্তু দেশের জন্য ‘রণাঙ্গনে’ নামবেন ‘শত্রু’ বেশে।

ফ্রান্সের রাফায়েল ভারান ও আর্জেন্টিনার লিসান্দ্রো মার্তিনেজের কথাই ধরুন। দুজনই ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের রক্ষণভাগের অন্যতম দুই সেনা। কিন্তু কাতার বিশ্বকাপে তাঁরা কথা বলবেন চোখে চোখ রেখে। জুভেন্টাসের দুই মিডফিল্ডার আনহেল দি মারিয়া ও আদ্রিয়াঁ রাবিওর গল্পটাও ঠিক তেমন। দুজনে অবশ্য সেমিফাইনালে খেলেননি।

তবে ফাইনালে ক্লাবের বন্ধুত্ব ভুলে যেতে চাইবেন তাঁরা। দুই টটেনহাম তারকা উগো লরিস ও ক্রিস্তিয়ান রোমেরো এবং আতলেতিকো মাদ্রিদের দুই মিডফিল্ডার আঁতোয়া গ্রিজমান-রদ্রিগো দি পলও চাইবেন বন্ধুকে কাঁদিয়ে নিজে হাসতে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত