মামুনুর রশীদ

এবার ঈদ ও পয়লা বৈশাখ প্রায় কাছাকাছি সময়ে পড়েছে। তাতে গ্রীষ্মের এই দাবদাহে আরও উষ্ণ হয়ে উঠেছে বিপণিবিতান, ফুটপাতের বাজার এবং ছোটখাটো শহর ও উপজেলার বাজারগুলো। এমনকি গ্রাম পর্যায়েও এর একটা প্রভাব লক্ষ করা যায়। সেই সঙ্গে আছে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর বৈসাবি, বিজু এবং আরও কিছু অনুষ্ঠান। রাজধানীর বাজারে ভিড় প্রচণ্ড, বিকেল থেকে শুরু হয়ে মাঝরাত পর্যন্ত এই বাজার চলতে থাকে। এই গ্রীষ্মের গরমের মধ্যেও কেনাকাটায় আগ্রহী হচ্ছেন অনেক মানুষ। কেউ কেউ রোজা রেখে এই দাবদাহের মধ্যে মার্কেট থেকে মার্কেটে ছুটছেন।
জানা গেল, সোয়া কোটি লোক এবার শহর থেকে গ্রামে যাবে। পরিবহনের অপ্রতুল ব্যবস্থায় এবারও তীব্র যানজট এবং দুর্ঘটনার একটা ছড়াছড়ি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তবু মানুষের গ্রামযাত্রার বিরাম নেই। বাংলাদেশের মানুষের গ্রামনীতির কোনো তুলনা নেই। শহরে স্থায়ীভাবে বসবাস করার পরও পালাপার্বণে ঠিকই গ্রামে যাবে মানুষ। অনেক পরিবারেরই গ্রামে বাড়ি আছে কিন্তু সেগুলো তালাবদ্ধ। সেসব বাড়িঘর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে মাত্র কয়েক দিনের জন্য বাসযোগ্য করে তোলা হয়। দিন কয়েক পর চলে আসে দমবন্ধ করা ম্যাচবাক্সের শহর ঢাকায়।
পৃথিবীর অন্যান্য দেশে, এমনকি পাশের দেশেও ছুটিতে গ্রামে না গিয়ে দেশে-বিদেশে বেড়াতে যায় মানুষ। অবশ্য কারও কারও গ্রামেও যাওয়া হয়। জীবিকার তাগিদে শহরে থাকে এবং ছুটির সময়ে নতুন কোনো আনন্দ আবিষ্কারের স্থান খুঁজে বেড়ায়। সেখান থেকে প্রেরণা নিয়ে ঘরে ফেরে। যে শহরটায় তারা থাকে, সেটিও বাসযোগ্য। আমাদের রাজধানীর মতো এমন দমবন্ধ করা আবাসন নেই, সবুজের সমারোহ নেই, শিশুদের জন্য পার্ক নেই; বিপণিবিতান, রেস্টুরেন্ট, হাসপাতাল, ক্লিনিক আর স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে একটা ঠাসা পরিস্থিতি নেই।
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের পর মানুষ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাত থেকে রক্ষা পেতে নদীর ওপারে জিনজিরা, শুভাঢ্যায় আশ্রয় নিয়েছিল। কিন্তু গত পঞ্চাশ বছরের ব্যবধানে সেই জায়গাগুলো শহরের চেয়েও বেশি ঘিঞ্জি এবং আবাসের একেবারে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। সেখানকার পৌরসভাগুলো বাড়িঘর, কলকারখানা নির্মাণের প্রয়োজনে কোনো আইনকানুনের প্রয়োগ করতে পারেনি। প্রভাবশালী লোকেরা যে যার ইচ্ছেমতো যেকোনো স্থাপনা নির্মাণ করে পথঘাটকে রুদ্ধ করে দিয়েছে। জেলা শহরগুলো এবং যেসব শহরে পৌরসভা আছে, সেই সব শহরের নির্মাণ আইনের ক্ষেত্রে যেসব ব্যবস্থা নেওয়ার প্রয়োজন ছিল তা-ও নেওয়া হয়নি। তাই যেকোনো উপজেলায় এখন প্রচুর যানজট ও অপরিকল্পিতভাবে দোকানপাট, বিপণিবিতান, প্রাইভেট স্কুল-কলেজ গড়ে তোলা হচ্ছে। বাংলাদেশের গ্রামীণ পরিবেশের যে সৌন্দর্য তা কোথাও পাওয়া যায় না।
বর্তমানে আরেকটা ঝোঁক তৈরি হয়েছে, সেটা হচ্ছে রিসোর্ট বানানো। ফসলি জমি ও দরিদ্র মানুষের ঘরবাড়ি, জায়গাজমি কিনে নব্য ধনিকশ্রেণি গ্রামে অথবা ছোট ছোট শহরতলিতে বিলাসবহুল রিসোর্ট নির্মাণ করছে। বিদেশে টাকা পাচার করার পরেও যে কালোটাকা থাকে, তা দিয়ে কিছু লোক এই রিসোর্টগুলো নির্মাণ করা শুরু করে। শুধু তা-ই নয়, যেকোনো বড় রাস্তার পাশে বড় বড় ফ্যাক্টরি করার প্রবণতা দিগন্ত ঢেকে দিচ্ছে। এই ছোট্ট আয়তনের দেশেও অনেক জায়গা অনাবাদি অবস্থায় পড়ে আছে। কুয়াকাটা সমুদ্রের পাড়েও একটা বিশাল জায়গাজুড়ে গড়ে উঠতে পারে শিল্প এলাকা। যেখানে রপ্তানিযোগ্য কারখানাগুলো অনায়াসে বিদেশে পণ্য সরবরাহের একটা সুযোগ সৃষ্টি করতে পারে। চট্টগ্রাম থেকে টেকনাফ পর্যন্ত মেরিন ড্রাইভের পাশেও অনেক গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা নির্মাণ করা যেতে পারে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে সবকিছুর কেন্দ্র ঢাকা। অসংখ্য কলকারখানা ঢাকা কিংবা ঢাকার আশপাশে নির্মিত হয়ে একটা বড় ধরনের সামাজিক জট তৈরি করছে। ভূমিগ্রাসীরা শহরগুলোকে যেন একটা সোনার খনি হিসেবে পেয়ে গেছে।
সরকার বিভিন্ন সময়ে শুধু রাজধানীর জন্য নানা ধরনের পরিকল্পনা দিয়ে থাকে, কিন্তু সেগুলো প্রভাবিত করাও যেকোনো সিন্ডিকেটের পক্ষে কঠিন কাজ নয়। একদা ধানমন্ডি বসবাসের একটি আদর্শ জায়গা ছিল। পরিকল্পিতভাবে রাস্তাঘাট, লেক, কমিউনিটি সেন্টার-স্কুল-কলেজ-হাসপাতাল—এসবের ব্যবস্থা রেখেই এই আবাসিক এলাকাটি একটি সুস্থ স্থান হিসেবে বিবেচিত হতো। কিন্তু কালক্রমে এই এলাকা একটি বাণিজ্যিক স্থানে পরিণত হয়েছে। অসংখ্য রেস্তোরাঁ, স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়-ক্লিনিকে এলাকাটি ভরে গেছে। এ বিষয়ে আদালতের রায় থাকা সত্ত্বেও প্রভাবশালী লোকেরা তাদের স্থাপনা গুটিয়ে নেয়নি। সর্বোচ্চ আদালতের রায়ও তারা অমান্য করে চলেছে।
একই ঘটনার ধারাবাহিকতা সব শহরেই। চট্টগ্রাম শহরটি আজ থেকে ২০-৩০ বছর আগেও পাহাড়, সমুদ্র, বনানী মিলে একটি অসাধারণ নান্দনিক শহর হিসেবে বিবেচিত হতো। কিন্তু সেই চট্টগ্রামও কলকারখানা, অপরিকল্পিত পথঘাট এবং ম্যাচবাক্সের অ্যাপার্টমেন্টের জঞ্জালে পরিণত হয়েছে। একদা রেলের শহর চট্টগ্রাম এখন অটোমোবাইলের চলাচলে বিধ্বস্ত, যানজট সেখানেও নিত্যসঙ্গী হয়ে দাঁড়িয়েছে। চট্টগ্রামের পথ ধরে কক্সবাজার ছিল একটি অত্যন্ত চমৎকার প্রাকৃতিক সমুদ্রসৈকত। সেখানেও নির্মাণের এমন তীব্র প্রতিযোগিতা যে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য নিঃশেষ হয়ে শহরটি কংক্রিটের স্তূপ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সমুদ্রসৈকত দখল হতে হতে তা হয়ে দাঁড়িয়েছে এক আবর্জনার ভাগাড়। সেসব স্থানে আমরা যদি সৃজনশীল পথ আবিষ্কার করতে পারতাম, অবশ্যই পৃথিবীর দীর্ঘতম সাগরসৈকতকে রক্ষা করা যেত। বাণিজ্যিকীকরণের প্রভাবে তা ভেস্তে যেতে বসেছে। সেন্ট মার্টিন এতকাল নানা সামুদ্রিক উপাদানে একটি চমৎকার দ্বীপ হিসেবে মানুষকে আনন্দ-বিনোদন দিয়েছে। কিন্তু সে অবস্থা এখন আর নেই।
বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত ইট-কংক্রিটের বিকল্প কিছু নেই। আমরা ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের বসবাসের জন্য নানান প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে তৈরি বাড়িঘর বা জাতীয় কোনো স্থাপত্যকে অনুসরণ করতে পারতাম। এর জন্য দেশের স্থপতিদের গুরুত্ব দিয়ে যদি শহর পরিকল্পনার দায়িত্ব দেওয়া হতো তাহলে বাংলাদেশ একটি জাতীয় স্থাপত্য পেত। দেশে আকাশচুম্বী অট্টালিকায় বিপণিবিতান গড়ে তোলা হচ্ছে।
মোগলরা এই ঢাকা শহরে সপ্তদশ শতাব্দীতে একটি আন্তর্জাতিক মানের স্থাপত্যের উদাহরণ দিয়েছিল। ব্রিটিশের আগ্রাসী বিধ্বস্ত পরিকল্পনায় তা হারিয়ে গেছে। রাজনীতিবিদেরা এসবকে কখনোই গুরুত্ব দিতে চাননি। তাঁদের পরিকল্পনায় কোনো নতুন ভাবনা আনেননি। ফলে মানুষ একটু যে শান্তির আশায় গ্রামে যায়, সেখানেও একই প্রবণতা—দালানকোঠা। একটা সময় আসবে, এই আগ্রহও কমে যাবে। মানুষ সব জায়গায়ই শ্বাসরুদ্ধ অবস্থায় থাকতে থাকতে অসংস্কৃতিমান হয়ে উঠবে।
এখনো ঢাকা শহরে পয়লা বৈশাখ হয় রমনার বটমূলে, ভাগ্যিস বটমূলটি এখনো আছে। শহরের বাইরে কতগুলো বটমূল রয়েছে তার হিসাব কেউ দিতে পারবে না। এখনো বাংলাদেশের কিছু কিছু জায়গায় বটমূল আছে, তাকে রক্ষা করার দায়িত্ব কে নেবে? সরকারের পক্ষে নেওয়া অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ, সরকারি বন সংরক্ষকেরা রাজনৈতিক শক্তির প্রশ্রয়ে ধ্বংস করে ফেলেছে। নীতিনির্ধারক, প্রভাবশালী মহল এবং রাজনীতিকেরা আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের কাছে কোনো দায়বদ্ধতা মানেন না। একদা সুজলা-সুফলা প্রাকৃতিক নান্দনিক সৌন্দর্যে ভরপুর বাংলাদেশকে আমরা কোথায় রেখে যাচ্ছি? সেটা ভাবার একটু অবকাশ যদি সৃষ্টি হতো, তাহলে এই মেট্রোরেল, ফ্লাইওভার এগুলো অনেক আগেই নির্মিত হতে পারত।
এখনো রাস্তায় আদিম ব্যবস্থায় ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ হয়ে থাকে, এর কারণ খুঁজে পাওয়া যায় না। ব্রিটিশরা নিষ্ঠুর শোষণ করে নিজের দেশের সম্পদ বাড়িয়ে ভারতবর্ষকে দরিদ্র অবস্থায় রেখে গেল। সেই সঙ্গে রেখে গেল ধর্মের নামে দুই সহিংস জাতি। সেই দারিদ্র্য ও হিংসাকে আমরা বহন করে চলছি যুগের পর যুগ। কিন্তু বাংলাদেশের অভ্যুদয় হয়েছিল একটি অসাম্প্রদায়িক সাংস্কৃতিক রাষ্ট্র হিসেবে। তার প্রতি সামাজিকদের যে ভূমিকা, তা-ও আমরা পালন করতে পারিনি। সামাজিকেরা বিষয়টি নিয়ে কি ভাববেন?
মামুনুর রশীদ, নাট্যব্যক্তিত্ব

এবার ঈদ ও পয়লা বৈশাখ প্রায় কাছাকাছি সময়ে পড়েছে। তাতে গ্রীষ্মের এই দাবদাহে আরও উষ্ণ হয়ে উঠেছে বিপণিবিতান, ফুটপাতের বাজার এবং ছোটখাটো শহর ও উপজেলার বাজারগুলো। এমনকি গ্রাম পর্যায়েও এর একটা প্রভাব লক্ষ করা যায়। সেই সঙ্গে আছে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর বৈসাবি, বিজু এবং আরও কিছু অনুষ্ঠান। রাজধানীর বাজারে ভিড় প্রচণ্ড, বিকেল থেকে শুরু হয়ে মাঝরাত পর্যন্ত এই বাজার চলতে থাকে। এই গ্রীষ্মের গরমের মধ্যেও কেনাকাটায় আগ্রহী হচ্ছেন অনেক মানুষ। কেউ কেউ রোজা রেখে এই দাবদাহের মধ্যে মার্কেট থেকে মার্কেটে ছুটছেন।
জানা গেল, সোয়া কোটি লোক এবার শহর থেকে গ্রামে যাবে। পরিবহনের অপ্রতুল ব্যবস্থায় এবারও তীব্র যানজট এবং দুর্ঘটনার একটা ছড়াছড়ি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তবু মানুষের গ্রামযাত্রার বিরাম নেই। বাংলাদেশের মানুষের গ্রামনীতির কোনো তুলনা নেই। শহরে স্থায়ীভাবে বসবাস করার পরও পালাপার্বণে ঠিকই গ্রামে যাবে মানুষ। অনেক পরিবারেরই গ্রামে বাড়ি আছে কিন্তু সেগুলো তালাবদ্ধ। সেসব বাড়িঘর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে মাত্র কয়েক দিনের জন্য বাসযোগ্য করে তোলা হয়। দিন কয়েক পর চলে আসে দমবন্ধ করা ম্যাচবাক্সের শহর ঢাকায়।
পৃথিবীর অন্যান্য দেশে, এমনকি পাশের দেশেও ছুটিতে গ্রামে না গিয়ে দেশে-বিদেশে বেড়াতে যায় মানুষ। অবশ্য কারও কারও গ্রামেও যাওয়া হয়। জীবিকার তাগিদে শহরে থাকে এবং ছুটির সময়ে নতুন কোনো আনন্দ আবিষ্কারের স্থান খুঁজে বেড়ায়। সেখান থেকে প্রেরণা নিয়ে ঘরে ফেরে। যে শহরটায় তারা থাকে, সেটিও বাসযোগ্য। আমাদের রাজধানীর মতো এমন দমবন্ধ করা আবাসন নেই, সবুজের সমারোহ নেই, শিশুদের জন্য পার্ক নেই; বিপণিবিতান, রেস্টুরেন্ট, হাসপাতাল, ক্লিনিক আর স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে একটা ঠাসা পরিস্থিতি নেই।
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের পর মানুষ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাত থেকে রক্ষা পেতে নদীর ওপারে জিনজিরা, শুভাঢ্যায় আশ্রয় নিয়েছিল। কিন্তু গত পঞ্চাশ বছরের ব্যবধানে সেই জায়গাগুলো শহরের চেয়েও বেশি ঘিঞ্জি এবং আবাসের একেবারে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। সেখানকার পৌরসভাগুলো বাড়িঘর, কলকারখানা নির্মাণের প্রয়োজনে কোনো আইনকানুনের প্রয়োগ করতে পারেনি। প্রভাবশালী লোকেরা যে যার ইচ্ছেমতো যেকোনো স্থাপনা নির্মাণ করে পথঘাটকে রুদ্ধ করে দিয়েছে। জেলা শহরগুলো এবং যেসব শহরে পৌরসভা আছে, সেই সব শহরের নির্মাণ আইনের ক্ষেত্রে যেসব ব্যবস্থা নেওয়ার প্রয়োজন ছিল তা-ও নেওয়া হয়নি। তাই যেকোনো উপজেলায় এখন প্রচুর যানজট ও অপরিকল্পিতভাবে দোকানপাট, বিপণিবিতান, প্রাইভেট স্কুল-কলেজ গড়ে তোলা হচ্ছে। বাংলাদেশের গ্রামীণ পরিবেশের যে সৌন্দর্য তা কোথাও পাওয়া যায় না।
বর্তমানে আরেকটা ঝোঁক তৈরি হয়েছে, সেটা হচ্ছে রিসোর্ট বানানো। ফসলি জমি ও দরিদ্র মানুষের ঘরবাড়ি, জায়গাজমি কিনে নব্য ধনিকশ্রেণি গ্রামে অথবা ছোট ছোট শহরতলিতে বিলাসবহুল রিসোর্ট নির্মাণ করছে। বিদেশে টাকা পাচার করার পরেও যে কালোটাকা থাকে, তা দিয়ে কিছু লোক এই রিসোর্টগুলো নির্মাণ করা শুরু করে। শুধু তা-ই নয়, যেকোনো বড় রাস্তার পাশে বড় বড় ফ্যাক্টরি করার প্রবণতা দিগন্ত ঢেকে দিচ্ছে। এই ছোট্ট আয়তনের দেশেও অনেক জায়গা অনাবাদি অবস্থায় পড়ে আছে। কুয়াকাটা সমুদ্রের পাড়েও একটা বিশাল জায়গাজুড়ে গড়ে উঠতে পারে শিল্প এলাকা। যেখানে রপ্তানিযোগ্য কারখানাগুলো অনায়াসে বিদেশে পণ্য সরবরাহের একটা সুযোগ সৃষ্টি করতে পারে। চট্টগ্রাম থেকে টেকনাফ পর্যন্ত মেরিন ড্রাইভের পাশেও অনেক গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা নির্মাণ করা যেতে পারে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে সবকিছুর কেন্দ্র ঢাকা। অসংখ্য কলকারখানা ঢাকা কিংবা ঢাকার আশপাশে নির্মিত হয়ে একটা বড় ধরনের সামাজিক জট তৈরি করছে। ভূমিগ্রাসীরা শহরগুলোকে যেন একটা সোনার খনি হিসেবে পেয়ে গেছে।
সরকার বিভিন্ন সময়ে শুধু রাজধানীর জন্য নানা ধরনের পরিকল্পনা দিয়ে থাকে, কিন্তু সেগুলো প্রভাবিত করাও যেকোনো সিন্ডিকেটের পক্ষে কঠিন কাজ নয়। একদা ধানমন্ডি বসবাসের একটি আদর্শ জায়গা ছিল। পরিকল্পিতভাবে রাস্তাঘাট, লেক, কমিউনিটি সেন্টার-স্কুল-কলেজ-হাসপাতাল—এসবের ব্যবস্থা রেখেই এই আবাসিক এলাকাটি একটি সুস্থ স্থান হিসেবে বিবেচিত হতো। কিন্তু কালক্রমে এই এলাকা একটি বাণিজ্যিক স্থানে পরিণত হয়েছে। অসংখ্য রেস্তোরাঁ, স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়-ক্লিনিকে এলাকাটি ভরে গেছে। এ বিষয়ে আদালতের রায় থাকা সত্ত্বেও প্রভাবশালী লোকেরা তাদের স্থাপনা গুটিয়ে নেয়নি। সর্বোচ্চ আদালতের রায়ও তারা অমান্য করে চলেছে।
একই ঘটনার ধারাবাহিকতা সব শহরেই। চট্টগ্রাম শহরটি আজ থেকে ২০-৩০ বছর আগেও পাহাড়, সমুদ্র, বনানী মিলে একটি অসাধারণ নান্দনিক শহর হিসেবে বিবেচিত হতো। কিন্তু সেই চট্টগ্রামও কলকারখানা, অপরিকল্পিত পথঘাট এবং ম্যাচবাক্সের অ্যাপার্টমেন্টের জঞ্জালে পরিণত হয়েছে। একদা রেলের শহর চট্টগ্রাম এখন অটোমোবাইলের চলাচলে বিধ্বস্ত, যানজট সেখানেও নিত্যসঙ্গী হয়ে দাঁড়িয়েছে। চট্টগ্রামের পথ ধরে কক্সবাজার ছিল একটি অত্যন্ত চমৎকার প্রাকৃতিক সমুদ্রসৈকত। সেখানেও নির্মাণের এমন তীব্র প্রতিযোগিতা যে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য নিঃশেষ হয়ে শহরটি কংক্রিটের স্তূপ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সমুদ্রসৈকত দখল হতে হতে তা হয়ে দাঁড়িয়েছে এক আবর্জনার ভাগাড়। সেসব স্থানে আমরা যদি সৃজনশীল পথ আবিষ্কার করতে পারতাম, অবশ্যই পৃথিবীর দীর্ঘতম সাগরসৈকতকে রক্ষা করা যেত। বাণিজ্যিকীকরণের প্রভাবে তা ভেস্তে যেতে বসেছে। সেন্ট মার্টিন এতকাল নানা সামুদ্রিক উপাদানে একটি চমৎকার দ্বীপ হিসেবে মানুষকে আনন্দ-বিনোদন দিয়েছে। কিন্তু সে অবস্থা এখন আর নেই।
বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত ইট-কংক্রিটের বিকল্প কিছু নেই। আমরা ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের বসবাসের জন্য নানান প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে তৈরি বাড়িঘর বা জাতীয় কোনো স্থাপত্যকে অনুসরণ করতে পারতাম। এর জন্য দেশের স্থপতিদের গুরুত্ব দিয়ে যদি শহর পরিকল্পনার দায়িত্ব দেওয়া হতো তাহলে বাংলাদেশ একটি জাতীয় স্থাপত্য পেত। দেশে আকাশচুম্বী অট্টালিকায় বিপণিবিতান গড়ে তোলা হচ্ছে।
মোগলরা এই ঢাকা শহরে সপ্তদশ শতাব্দীতে একটি আন্তর্জাতিক মানের স্থাপত্যের উদাহরণ দিয়েছিল। ব্রিটিশের আগ্রাসী বিধ্বস্ত পরিকল্পনায় তা হারিয়ে গেছে। রাজনীতিবিদেরা এসবকে কখনোই গুরুত্ব দিতে চাননি। তাঁদের পরিকল্পনায় কোনো নতুন ভাবনা আনেননি। ফলে মানুষ একটু যে শান্তির আশায় গ্রামে যায়, সেখানেও একই প্রবণতা—দালানকোঠা। একটা সময় আসবে, এই আগ্রহও কমে যাবে। মানুষ সব জায়গায়ই শ্বাসরুদ্ধ অবস্থায় থাকতে থাকতে অসংস্কৃতিমান হয়ে উঠবে।
এখনো ঢাকা শহরে পয়লা বৈশাখ হয় রমনার বটমূলে, ভাগ্যিস বটমূলটি এখনো আছে। শহরের বাইরে কতগুলো বটমূল রয়েছে তার হিসাব কেউ দিতে পারবে না। এখনো বাংলাদেশের কিছু কিছু জায়গায় বটমূল আছে, তাকে রক্ষা করার দায়িত্ব কে নেবে? সরকারের পক্ষে নেওয়া অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ, সরকারি বন সংরক্ষকেরা রাজনৈতিক শক্তির প্রশ্রয়ে ধ্বংস করে ফেলেছে। নীতিনির্ধারক, প্রভাবশালী মহল এবং রাজনীতিকেরা আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের কাছে কোনো দায়বদ্ধতা মানেন না। একদা সুজলা-সুফলা প্রাকৃতিক নান্দনিক সৌন্দর্যে ভরপুর বাংলাদেশকে আমরা কোথায় রেখে যাচ্ছি? সেটা ভাবার একটু অবকাশ যদি সৃষ্টি হতো, তাহলে এই মেট্রোরেল, ফ্লাইওভার এগুলো অনেক আগেই নির্মিত হতে পারত।
এখনো রাস্তায় আদিম ব্যবস্থায় ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ হয়ে থাকে, এর কারণ খুঁজে পাওয়া যায় না। ব্রিটিশরা নিষ্ঠুর শোষণ করে নিজের দেশের সম্পদ বাড়িয়ে ভারতবর্ষকে দরিদ্র অবস্থায় রেখে গেল। সেই সঙ্গে রেখে গেল ধর্মের নামে দুই সহিংস জাতি। সেই দারিদ্র্য ও হিংসাকে আমরা বহন করে চলছি যুগের পর যুগ। কিন্তু বাংলাদেশের অভ্যুদয় হয়েছিল একটি অসাম্প্রদায়িক সাংস্কৃতিক রাষ্ট্র হিসেবে। তার প্রতি সামাজিকদের যে ভূমিকা, তা-ও আমরা পালন করতে পারিনি। সামাজিকেরা বিষয়টি নিয়ে কি ভাববেন?
মামুনুর রশীদ, নাট্যব্যক্তিত্ব
মামুনুর রশীদ

এবার ঈদ ও পয়লা বৈশাখ প্রায় কাছাকাছি সময়ে পড়েছে। তাতে গ্রীষ্মের এই দাবদাহে আরও উষ্ণ হয়ে উঠেছে বিপণিবিতান, ফুটপাতের বাজার এবং ছোটখাটো শহর ও উপজেলার বাজারগুলো। এমনকি গ্রাম পর্যায়েও এর একটা প্রভাব লক্ষ করা যায়। সেই সঙ্গে আছে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর বৈসাবি, বিজু এবং আরও কিছু অনুষ্ঠান। রাজধানীর বাজারে ভিড় প্রচণ্ড, বিকেল থেকে শুরু হয়ে মাঝরাত পর্যন্ত এই বাজার চলতে থাকে। এই গ্রীষ্মের গরমের মধ্যেও কেনাকাটায় আগ্রহী হচ্ছেন অনেক মানুষ। কেউ কেউ রোজা রেখে এই দাবদাহের মধ্যে মার্কেট থেকে মার্কেটে ছুটছেন।
জানা গেল, সোয়া কোটি লোক এবার শহর থেকে গ্রামে যাবে। পরিবহনের অপ্রতুল ব্যবস্থায় এবারও তীব্র যানজট এবং দুর্ঘটনার একটা ছড়াছড়ি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তবু মানুষের গ্রামযাত্রার বিরাম নেই। বাংলাদেশের মানুষের গ্রামনীতির কোনো তুলনা নেই। শহরে স্থায়ীভাবে বসবাস করার পরও পালাপার্বণে ঠিকই গ্রামে যাবে মানুষ। অনেক পরিবারেরই গ্রামে বাড়ি আছে কিন্তু সেগুলো তালাবদ্ধ। সেসব বাড়িঘর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে মাত্র কয়েক দিনের জন্য বাসযোগ্য করে তোলা হয়। দিন কয়েক পর চলে আসে দমবন্ধ করা ম্যাচবাক্সের শহর ঢাকায়।
পৃথিবীর অন্যান্য দেশে, এমনকি পাশের দেশেও ছুটিতে গ্রামে না গিয়ে দেশে-বিদেশে বেড়াতে যায় মানুষ। অবশ্য কারও কারও গ্রামেও যাওয়া হয়। জীবিকার তাগিদে শহরে থাকে এবং ছুটির সময়ে নতুন কোনো আনন্দ আবিষ্কারের স্থান খুঁজে বেড়ায়। সেখান থেকে প্রেরণা নিয়ে ঘরে ফেরে। যে শহরটায় তারা থাকে, সেটিও বাসযোগ্য। আমাদের রাজধানীর মতো এমন দমবন্ধ করা আবাসন নেই, সবুজের সমারোহ নেই, শিশুদের জন্য পার্ক নেই; বিপণিবিতান, রেস্টুরেন্ট, হাসপাতাল, ক্লিনিক আর স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে একটা ঠাসা পরিস্থিতি নেই।
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের পর মানুষ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাত থেকে রক্ষা পেতে নদীর ওপারে জিনজিরা, শুভাঢ্যায় আশ্রয় নিয়েছিল। কিন্তু গত পঞ্চাশ বছরের ব্যবধানে সেই জায়গাগুলো শহরের চেয়েও বেশি ঘিঞ্জি এবং আবাসের একেবারে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। সেখানকার পৌরসভাগুলো বাড়িঘর, কলকারখানা নির্মাণের প্রয়োজনে কোনো আইনকানুনের প্রয়োগ করতে পারেনি। প্রভাবশালী লোকেরা যে যার ইচ্ছেমতো যেকোনো স্থাপনা নির্মাণ করে পথঘাটকে রুদ্ধ করে দিয়েছে। জেলা শহরগুলো এবং যেসব শহরে পৌরসভা আছে, সেই সব শহরের নির্মাণ আইনের ক্ষেত্রে যেসব ব্যবস্থা নেওয়ার প্রয়োজন ছিল তা-ও নেওয়া হয়নি। তাই যেকোনো উপজেলায় এখন প্রচুর যানজট ও অপরিকল্পিতভাবে দোকানপাট, বিপণিবিতান, প্রাইভেট স্কুল-কলেজ গড়ে তোলা হচ্ছে। বাংলাদেশের গ্রামীণ পরিবেশের যে সৌন্দর্য তা কোথাও পাওয়া যায় না।
বর্তমানে আরেকটা ঝোঁক তৈরি হয়েছে, সেটা হচ্ছে রিসোর্ট বানানো। ফসলি জমি ও দরিদ্র মানুষের ঘরবাড়ি, জায়গাজমি কিনে নব্য ধনিকশ্রেণি গ্রামে অথবা ছোট ছোট শহরতলিতে বিলাসবহুল রিসোর্ট নির্মাণ করছে। বিদেশে টাকা পাচার করার পরেও যে কালোটাকা থাকে, তা দিয়ে কিছু লোক এই রিসোর্টগুলো নির্মাণ করা শুরু করে। শুধু তা-ই নয়, যেকোনো বড় রাস্তার পাশে বড় বড় ফ্যাক্টরি করার প্রবণতা দিগন্ত ঢেকে দিচ্ছে। এই ছোট্ট আয়তনের দেশেও অনেক জায়গা অনাবাদি অবস্থায় পড়ে আছে। কুয়াকাটা সমুদ্রের পাড়েও একটা বিশাল জায়গাজুড়ে গড়ে উঠতে পারে শিল্প এলাকা। যেখানে রপ্তানিযোগ্য কারখানাগুলো অনায়াসে বিদেশে পণ্য সরবরাহের একটা সুযোগ সৃষ্টি করতে পারে। চট্টগ্রাম থেকে টেকনাফ পর্যন্ত মেরিন ড্রাইভের পাশেও অনেক গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা নির্মাণ করা যেতে পারে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে সবকিছুর কেন্দ্র ঢাকা। অসংখ্য কলকারখানা ঢাকা কিংবা ঢাকার আশপাশে নির্মিত হয়ে একটা বড় ধরনের সামাজিক জট তৈরি করছে। ভূমিগ্রাসীরা শহরগুলোকে যেন একটা সোনার খনি হিসেবে পেয়ে গেছে।
সরকার বিভিন্ন সময়ে শুধু রাজধানীর জন্য নানা ধরনের পরিকল্পনা দিয়ে থাকে, কিন্তু সেগুলো প্রভাবিত করাও যেকোনো সিন্ডিকেটের পক্ষে কঠিন কাজ নয়। একদা ধানমন্ডি বসবাসের একটি আদর্শ জায়গা ছিল। পরিকল্পিতভাবে রাস্তাঘাট, লেক, কমিউনিটি সেন্টার-স্কুল-কলেজ-হাসপাতাল—এসবের ব্যবস্থা রেখেই এই আবাসিক এলাকাটি একটি সুস্থ স্থান হিসেবে বিবেচিত হতো। কিন্তু কালক্রমে এই এলাকা একটি বাণিজ্যিক স্থানে পরিণত হয়েছে। অসংখ্য রেস্তোরাঁ, স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়-ক্লিনিকে এলাকাটি ভরে গেছে। এ বিষয়ে আদালতের রায় থাকা সত্ত্বেও প্রভাবশালী লোকেরা তাদের স্থাপনা গুটিয়ে নেয়নি। সর্বোচ্চ আদালতের রায়ও তারা অমান্য করে চলেছে।
একই ঘটনার ধারাবাহিকতা সব শহরেই। চট্টগ্রাম শহরটি আজ থেকে ২০-৩০ বছর আগেও পাহাড়, সমুদ্র, বনানী মিলে একটি অসাধারণ নান্দনিক শহর হিসেবে বিবেচিত হতো। কিন্তু সেই চট্টগ্রামও কলকারখানা, অপরিকল্পিত পথঘাট এবং ম্যাচবাক্সের অ্যাপার্টমেন্টের জঞ্জালে পরিণত হয়েছে। একদা রেলের শহর চট্টগ্রাম এখন অটোমোবাইলের চলাচলে বিধ্বস্ত, যানজট সেখানেও নিত্যসঙ্গী হয়ে দাঁড়িয়েছে। চট্টগ্রামের পথ ধরে কক্সবাজার ছিল একটি অত্যন্ত চমৎকার প্রাকৃতিক সমুদ্রসৈকত। সেখানেও নির্মাণের এমন তীব্র প্রতিযোগিতা যে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য নিঃশেষ হয়ে শহরটি কংক্রিটের স্তূপ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সমুদ্রসৈকত দখল হতে হতে তা হয়ে দাঁড়িয়েছে এক আবর্জনার ভাগাড়। সেসব স্থানে আমরা যদি সৃজনশীল পথ আবিষ্কার করতে পারতাম, অবশ্যই পৃথিবীর দীর্ঘতম সাগরসৈকতকে রক্ষা করা যেত। বাণিজ্যিকীকরণের প্রভাবে তা ভেস্তে যেতে বসেছে। সেন্ট মার্টিন এতকাল নানা সামুদ্রিক উপাদানে একটি চমৎকার দ্বীপ হিসেবে মানুষকে আনন্দ-বিনোদন দিয়েছে। কিন্তু সে অবস্থা এখন আর নেই।
বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত ইট-কংক্রিটের বিকল্প কিছু নেই। আমরা ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের বসবাসের জন্য নানান প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে তৈরি বাড়িঘর বা জাতীয় কোনো স্থাপত্যকে অনুসরণ করতে পারতাম। এর জন্য দেশের স্থপতিদের গুরুত্ব দিয়ে যদি শহর পরিকল্পনার দায়িত্ব দেওয়া হতো তাহলে বাংলাদেশ একটি জাতীয় স্থাপত্য পেত। দেশে আকাশচুম্বী অট্টালিকায় বিপণিবিতান গড়ে তোলা হচ্ছে।
মোগলরা এই ঢাকা শহরে সপ্তদশ শতাব্দীতে একটি আন্তর্জাতিক মানের স্থাপত্যের উদাহরণ দিয়েছিল। ব্রিটিশের আগ্রাসী বিধ্বস্ত পরিকল্পনায় তা হারিয়ে গেছে। রাজনীতিবিদেরা এসবকে কখনোই গুরুত্ব দিতে চাননি। তাঁদের পরিকল্পনায় কোনো নতুন ভাবনা আনেননি। ফলে মানুষ একটু যে শান্তির আশায় গ্রামে যায়, সেখানেও একই প্রবণতা—দালানকোঠা। একটা সময় আসবে, এই আগ্রহও কমে যাবে। মানুষ সব জায়গায়ই শ্বাসরুদ্ধ অবস্থায় থাকতে থাকতে অসংস্কৃতিমান হয়ে উঠবে।
এখনো ঢাকা শহরে পয়লা বৈশাখ হয় রমনার বটমূলে, ভাগ্যিস বটমূলটি এখনো আছে। শহরের বাইরে কতগুলো বটমূল রয়েছে তার হিসাব কেউ দিতে পারবে না। এখনো বাংলাদেশের কিছু কিছু জায়গায় বটমূল আছে, তাকে রক্ষা করার দায়িত্ব কে নেবে? সরকারের পক্ষে নেওয়া অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ, সরকারি বন সংরক্ষকেরা রাজনৈতিক শক্তির প্রশ্রয়ে ধ্বংস করে ফেলেছে। নীতিনির্ধারক, প্রভাবশালী মহল এবং রাজনীতিকেরা আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের কাছে কোনো দায়বদ্ধতা মানেন না। একদা সুজলা-সুফলা প্রাকৃতিক নান্দনিক সৌন্দর্যে ভরপুর বাংলাদেশকে আমরা কোথায় রেখে যাচ্ছি? সেটা ভাবার একটু অবকাশ যদি সৃষ্টি হতো, তাহলে এই মেট্রোরেল, ফ্লাইওভার এগুলো অনেক আগেই নির্মিত হতে পারত।
এখনো রাস্তায় আদিম ব্যবস্থায় ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ হয়ে থাকে, এর কারণ খুঁজে পাওয়া যায় না। ব্রিটিশরা নিষ্ঠুর শোষণ করে নিজের দেশের সম্পদ বাড়িয়ে ভারতবর্ষকে দরিদ্র অবস্থায় রেখে গেল। সেই সঙ্গে রেখে গেল ধর্মের নামে দুই সহিংস জাতি। সেই দারিদ্র্য ও হিংসাকে আমরা বহন করে চলছি যুগের পর যুগ। কিন্তু বাংলাদেশের অভ্যুদয় হয়েছিল একটি অসাম্প্রদায়িক সাংস্কৃতিক রাষ্ট্র হিসেবে। তার প্রতি সামাজিকদের যে ভূমিকা, তা-ও আমরা পালন করতে পারিনি। সামাজিকেরা বিষয়টি নিয়ে কি ভাববেন?
মামুনুর রশীদ, নাট্যব্যক্তিত্ব

এবার ঈদ ও পয়লা বৈশাখ প্রায় কাছাকাছি সময়ে পড়েছে। তাতে গ্রীষ্মের এই দাবদাহে আরও উষ্ণ হয়ে উঠেছে বিপণিবিতান, ফুটপাতের বাজার এবং ছোটখাটো শহর ও উপজেলার বাজারগুলো। এমনকি গ্রাম পর্যায়েও এর একটা প্রভাব লক্ষ করা যায়। সেই সঙ্গে আছে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর বৈসাবি, বিজু এবং আরও কিছু অনুষ্ঠান। রাজধানীর বাজারে ভিড় প্রচণ্ড, বিকেল থেকে শুরু হয়ে মাঝরাত পর্যন্ত এই বাজার চলতে থাকে। এই গ্রীষ্মের গরমের মধ্যেও কেনাকাটায় আগ্রহী হচ্ছেন অনেক মানুষ। কেউ কেউ রোজা রেখে এই দাবদাহের মধ্যে মার্কেট থেকে মার্কেটে ছুটছেন।
জানা গেল, সোয়া কোটি লোক এবার শহর থেকে গ্রামে যাবে। পরিবহনের অপ্রতুল ব্যবস্থায় এবারও তীব্র যানজট এবং দুর্ঘটনার একটা ছড়াছড়ি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তবু মানুষের গ্রামযাত্রার বিরাম নেই। বাংলাদেশের মানুষের গ্রামনীতির কোনো তুলনা নেই। শহরে স্থায়ীভাবে বসবাস করার পরও পালাপার্বণে ঠিকই গ্রামে যাবে মানুষ। অনেক পরিবারেরই গ্রামে বাড়ি আছে কিন্তু সেগুলো তালাবদ্ধ। সেসব বাড়িঘর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে মাত্র কয়েক দিনের জন্য বাসযোগ্য করে তোলা হয়। দিন কয়েক পর চলে আসে দমবন্ধ করা ম্যাচবাক্সের শহর ঢাকায়।
পৃথিবীর অন্যান্য দেশে, এমনকি পাশের দেশেও ছুটিতে গ্রামে না গিয়ে দেশে-বিদেশে বেড়াতে যায় মানুষ। অবশ্য কারও কারও গ্রামেও যাওয়া হয়। জীবিকার তাগিদে শহরে থাকে এবং ছুটির সময়ে নতুন কোনো আনন্দ আবিষ্কারের স্থান খুঁজে বেড়ায়। সেখান থেকে প্রেরণা নিয়ে ঘরে ফেরে। যে শহরটায় তারা থাকে, সেটিও বাসযোগ্য। আমাদের রাজধানীর মতো এমন দমবন্ধ করা আবাসন নেই, সবুজের সমারোহ নেই, শিশুদের জন্য পার্ক নেই; বিপণিবিতান, রেস্টুরেন্ট, হাসপাতাল, ক্লিনিক আর স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে একটা ঠাসা পরিস্থিতি নেই।
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের পর মানুষ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাত থেকে রক্ষা পেতে নদীর ওপারে জিনজিরা, শুভাঢ্যায় আশ্রয় নিয়েছিল। কিন্তু গত পঞ্চাশ বছরের ব্যবধানে সেই জায়গাগুলো শহরের চেয়েও বেশি ঘিঞ্জি এবং আবাসের একেবারে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। সেখানকার পৌরসভাগুলো বাড়িঘর, কলকারখানা নির্মাণের প্রয়োজনে কোনো আইনকানুনের প্রয়োগ করতে পারেনি। প্রভাবশালী লোকেরা যে যার ইচ্ছেমতো যেকোনো স্থাপনা নির্মাণ করে পথঘাটকে রুদ্ধ করে দিয়েছে। জেলা শহরগুলো এবং যেসব শহরে পৌরসভা আছে, সেই সব শহরের নির্মাণ আইনের ক্ষেত্রে যেসব ব্যবস্থা নেওয়ার প্রয়োজন ছিল তা-ও নেওয়া হয়নি। তাই যেকোনো উপজেলায় এখন প্রচুর যানজট ও অপরিকল্পিতভাবে দোকানপাট, বিপণিবিতান, প্রাইভেট স্কুল-কলেজ গড়ে তোলা হচ্ছে। বাংলাদেশের গ্রামীণ পরিবেশের যে সৌন্দর্য তা কোথাও পাওয়া যায় না।
বর্তমানে আরেকটা ঝোঁক তৈরি হয়েছে, সেটা হচ্ছে রিসোর্ট বানানো। ফসলি জমি ও দরিদ্র মানুষের ঘরবাড়ি, জায়গাজমি কিনে নব্য ধনিকশ্রেণি গ্রামে অথবা ছোট ছোট শহরতলিতে বিলাসবহুল রিসোর্ট নির্মাণ করছে। বিদেশে টাকা পাচার করার পরেও যে কালোটাকা থাকে, তা দিয়ে কিছু লোক এই রিসোর্টগুলো নির্মাণ করা শুরু করে। শুধু তা-ই নয়, যেকোনো বড় রাস্তার পাশে বড় বড় ফ্যাক্টরি করার প্রবণতা দিগন্ত ঢেকে দিচ্ছে। এই ছোট্ট আয়তনের দেশেও অনেক জায়গা অনাবাদি অবস্থায় পড়ে আছে। কুয়াকাটা সমুদ্রের পাড়েও একটা বিশাল জায়গাজুড়ে গড়ে উঠতে পারে শিল্প এলাকা। যেখানে রপ্তানিযোগ্য কারখানাগুলো অনায়াসে বিদেশে পণ্য সরবরাহের একটা সুযোগ সৃষ্টি করতে পারে। চট্টগ্রাম থেকে টেকনাফ পর্যন্ত মেরিন ড্রাইভের পাশেও অনেক গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা নির্মাণ করা যেতে পারে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে সবকিছুর কেন্দ্র ঢাকা। অসংখ্য কলকারখানা ঢাকা কিংবা ঢাকার আশপাশে নির্মিত হয়ে একটা বড় ধরনের সামাজিক জট তৈরি করছে। ভূমিগ্রাসীরা শহরগুলোকে যেন একটা সোনার খনি হিসেবে পেয়ে গেছে।
সরকার বিভিন্ন সময়ে শুধু রাজধানীর জন্য নানা ধরনের পরিকল্পনা দিয়ে থাকে, কিন্তু সেগুলো প্রভাবিত করাও যেকোনো সিন্ডিকেটের পক্ষে কঠিন কাজ নয়। একদা ধানমন্ডি বসবাসের একটি আদর্শ জায়গা ছিল। পরিকল্পিতভাবে রাস্তাঘাট, লেক, কমিউনিটি সেন্টার-স্কুল-কলেজ-হাসপাতাল—এসবের ব্যবস্থা রেখেই এই আবাসিক এলাকাটি একটি সুস্থ স্থান হিসেবে বিবেচিত হতো। কিন্তু কালক্রমে এই এলাকা একটি বাণিজ্যিক স্থানে পরিণত হয়েছে। অসংখ্য রেস্তোরাঁ, স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়-ক্লিনিকে এলাকাটি ভরে গেছে। এ বিষয়ে আদালতের রায় থাকা সত্ত্বেও প্রভাবশালী লোকেরা তাদের স্থাপনা গুটিয়ে নেয়নি। সর্বোচ্চ আদালতের রায়ও তারা অমান্য করে চলেছে।
একই ঘটনার ধারাবাহিকতা সব শহরেই। চট্টগ্রাম শহরটি আজ থেকে ২০-৩০ বছর আগেও পাহাড়, সমুদ্র, বনানী মিলে একটি অসাধারণ নান্দনিক শহর হিসেবে বিবেচিত হতো। কিন্তু সেই চট্টগ্রামও কলকারখানা, অপরিকল্পিত পথঘাট এবং ম্যাচবাক্সের অ্যাপার্টমেন্টের জঞ্জালে পরিণত হয়েছে। একদা রেলের শহর চট্টগ্রাম এখন অটোমোবাইলের চলাচলে বিধ্বস্ত, যানজট সেখানেও নিত্যসঙ্গী হয়ে দাঁড়িয়েছে। চট্টগ্রামের পথ ধরে কক্সবাজার ছিল একটি অত্যন্ত চমৎকার প্রাকৃতিক সমুদ্রসৈকত। সেখানেও নির্মাণের এমন তীব্র প্রতিযোগিতা যে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য নিঃশেষ হয়ে শহরটি কংক্রিটের স্তূপ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সমুদ্রসৈকত দখল হতে হতে তা হয়ে দাঁড়িয়েছে এক আবর্জনার ভাগাড়। সেসব স্থানে আমরা যদি সৃজনশীল পথ আবিষ্কার করতে পারতাম, অবশ্যই পৃথিবীর দীর্ঘতম সাগরসৈকতকে রক্ষা করা যেত। বাণিজ্যিকীকরণের প্রভাবে তা ভেস্তে যেতে বসেছে। সেন্ট মার্টিন এতকাল নানা সামুদ্রিক উপাদানে একটি চমৎকার দ্বীপ হিসেবে মানুষকে আনন্দ-বিনোদন দিয়েছে। কিন্তু সে অবস্থা এখন আর নেই।
বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত ইট-কংক্রিটের বিকল্প কিছু নেই। আমরা ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের বসবাসের জন্য নানান প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে তৈরি বাড়িঘর বা জাতীয় কোনো স্থাপত্যকে অনুসরণ করতে পারতাম। এর জন্য দেশের স্থপতিদের গুরুত্ব দিয়ে যদি শহর পরিকল্পনার দায়িত্ব দেওয়া হতো তাহলে বাংলাদেশ একটি জাতীয় স্থাপত্য পেত। দেশে আকাশচুম্বী অট্টালিকায় বিপণিবিতান গড়ে তোলা হচ্ছে।
মোগলরা এই ঢাকা শহরে সপ্তদশ শতাব্দীতে একটি আন্তর্জাতিক মানের স্থাপত্যের উদাহরণ দিয়েছিল। ব্রিটিশের আগ্রাসী বিধ্বস্ত পরিকল্পনায় তা হারিয়ে গেছে। রাজনীতিবিদেরা এসবকে কখনোই গুরুত্ব দিতে চাননি। তাঁদের পরিকল্পনায় কোনো নতুন ভাবনা আনেননি। ফলে মানুষ একটু যে শান্তির আশায় গ্রামে যায়, সেখানেও একই প্রবণতা—দালানকোঠা। একটা সময় আসবে, এই আগ্রহও কমে যাবে। মানুষ সব জায়গায়ই শ্বাসরুদ্ধ অবস্থায় থাকতে থাকতে অসংস্কৃতিমান হয়ে উঠবে।
এখনো ঢাকা শহরে পয়লা বৈশাখ হয় রমনার বটমূলে, ভাগ্যিস বটমূলটি এখনো আছে। শহরের বাইরে কতগুলো বটমূল রয়েছে তার হিসাব কেউ দিতে পারবে না। এখনো বাংলাদেশের কিছু কিছু জায়গায় বটমূল আছে, তাকে রক্ষা করার দায়িত্ব কে নেবে? সরকারের পক্ষে নেওয়া অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ, সরকারি বন সংরক্ষকেরা রাজনৈতিক শক্তির প্রশ্রয়ে ধ্বংস করে ফেলেছে। নীতিনির্ধারক, প্রভাবশালী মহল এবং রাজনীতিকেরা আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের কাছে কোনো দায়বদ্ধতা মানেন না। একদা সুজলা-সুফলা প্রাকৃতিক নান্দনিক সৌন্দর্যে ভরপুর বাংলাদেশকে আমরা কোথায় রেখে যাচ্ছি? সেটা ভাবার একটু অবকাশ যদি সৃষ্টি হতো, তাহলে এই মেট্রোরেল, ফ্লাইওভার এগুলো অনেক আগেই নির্মিত হতে পারত।
এখনো রাস্তায় আদিম ব্যবস্থায় ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ হয়ে থাকে, এর কারণ খুঁজে পাওয়া যায় না। ব্রিটিশরা নিষ্ঠুর শোষণ করে নিজের দেশের সম্পদ বাড়িয়ে ভারতবর্ষকে দরিদ্র অবস্থায় রেখে গেল। সেই সঙ্গে রেখে গেল ধর্মের নামে দুই সহিংস জাতি। সেই দারিদ্র্য ও হিংসাকে আমরা বহন করে চলছি যুগের পর যুগ। কিন্তু বাংলাদেশের অভ্যুদয় হয়েছিল একটি অসাম্প্রদায়িক সাংস্কৃতিক রাষ্ট্র হিসেবে। তার প্রতি সামাজিকদের যে ভূমিকা, তা-ও আমরা পালন করতে পারিনি। সামাজিকেরা বিষয়টি নিয়ে কি ভাববেন?
মামুনুর রশীদ, নাট্যব্যক্তিত্ব

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২০ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

এবার ঈদ ও পয়লা বৈশাখ প্রায় কাছাকাছি সময়ে পড়েছে। তাতে গ্রীষ্মের এই দাবদাহে আরও উষ্ণ হয়ে উঠেছে বিপণিবিতান, ফুটপাতের বাজার এবং ছোটখাটো শহর ও উপজেলার বাজারগুলো। এমনকি গ্রাম পর্যায়েও এর একটা প্রভাব লক্ষ করা যায়। সেই সঙ্গে আছে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর বৈসাবি, বিজু এবং আরও কিছু অনুষ্ঠান।
১৩ এপ্রিল ২০২৩
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

এবার ঈদ ও পয়লা বৈশাখ প্রায় কাছাকাছি সময়ে পড়েছে। তাতে গ্রীষ্মের এই দাবদাহে আরও উষ্ণ হয়ে উঠেছে বিপণিবিতান, ফুটপাতের বাজার এবং ছোটখাটো শহর ও উপজেলার বাজারগুলো। এমনকি গ্রাম পর্যায়েও এর একটা প্রভাব লক্ষ করা যায়। সেই সঙ্গে আছে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর বৈসাবি, বিজু এবং আরও কিছু অনুষ্ঠান।
১৩ এপ্রিল ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২০ দিন আগে
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

এবার ঈদ ও পয়লা বৈশাখ প্রায় কাছাকাছি সময়ে পড়েছে। তাতে গ্রীষ্মের এই দাবদাহে আরও উষ্ণ হয়ে উঠেছে বিপণিবিতান, ফুটপাতের বাজার এবং ছোটখাটো শহর ও উপজেলার বাজারগুলো। এমনকি গ্রাম পর্যায়েও এর একটা প্রভাব লক্ষ করা যায়। সেই সঙ্গে আছে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর বৈসাবি, বিজু এবং আরও কিছু অনুষ্ঠান।
১৩ এপ্রিল ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২০ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

এবার ঈদ ও পয়লা বৈশাখ প্রায় কাছাকাছি সময়ে পড়েছে। তাতে গ্রীষ্মের এই দাবদাহে আরও উষ্ণ হয়ে উঠেছে বিপণিবিতান, ফুটপাতের বাজার এবং ছোটখাটো শহর ও উপজেলার বাজারগুলো। এমনকি গ্রাম পর্যায়েও এর একটা প্রভাব লক্ষ করা যায়। সেই সঙ্গে আছে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর বৈসাবি, বিজু এবং আরও কিছু অনুষ্ঠান।
১৩ এপ্রিল ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২০ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫