Ajker Patrika

জোড়াতালি দিয়ে স্বাস্থ্যসেবা

সরাইল (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২১, ১৪: ৫৮
জোড়াতালি দিয়ে স্বাস্থ্যসেবা

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার পাকশিমুল কমিউনিটি ক্লিনিক তিন বছর ধরে পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে। বর্তমানে জোড়াতালি দিয়ে স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যে গত পাঁচ মাস ধরে নেই ক্লিনিকের কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি)। সপ্তাহে দুই দিন একজন স্বাস্থ্যকর্মী দিয়ে নামমাত্র সেবা দেওয়া হয় এখানে। এতে স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে আশপাশের কয়েক গ্রামের মানুষ।

গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে সরেজমিন দেখা গেছে, ক্লিনিকটি তালাবদ্ধ। জানালাগুলো সব চুরি হয়ে গেছে। ভেতরে ইঁদুর ব্যাঙের বাসা। ময়লা-আবর্জনার স্তূপ। ক্লিনিকের রুমগুলো মাটি ও আবর্জনায় ভরে যাচ্ছে। ক্লিনিকটিকে দেখলে মনে হয় শতবছরের পরিত্যক্ত জরাজীর্ণ ভবন।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, মূল ভবনটি পরিত্যক্ত হওয়ায় যথাযথ স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এলাকাবাসী। অন্যদিকে ক্লিনিকটির চার-পাঁচ বছর ধরে ব্যবস্থাপনা কমিটির কোনো কর্মকাণ্ড নেই। নামমাত্র কমিটি থাকলেও তার কোনো কার্যকারিতা নেই।

পাকশিমুল গ্রামের অসহায় বৃদ্ধা আসিয়া খাতুন বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ। টাকার কারণে ওষুধ কিন্না খাইতে পারি না। কমিউনিটি হাসপাতাল থেইক্কা টেকা ছাড়া ওষুধ আনতাম। অনেক উপকার হইত। এক বছর ধইরা ডাক্তার নাই। তাই ওষুধও পাই না।’

স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, মানুষের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে দেশের অন্যান্য স্থানের মতো উপজেলার পাকশিমুল ইউনিয়নের আশপাশের কয়েক গ্রামের জনসাধারণকে স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার উদ্দেশ্যে ১৯৯৭ সালে ক্লিনিকটি নির্মাণ করা হয়। তৎকালীন পাকশিমুল গ্রামের আব্দুল জাব্বার কমিউনিটি ক্লিনিকের জন্য চার শতক জমি দান করলেও এখন ওই জমির মালিকানা দাবি করছেন পাকশিমুল গ্রামের অন্য এক ব্যক্তি।

স্থানীয় ইউপি সদস্য ও ক্লিনিকটির ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মোতালেব মিয়া বলেন, ‘কমিটির সদস্য মোট কতজন তা বলতে পারব না; ভুলে গেছি। চার-পাঁচ বছর ধরে কোনো মিটিং হয়নি। কিন্তু ক্লিনিকের অবস্থা এতই খারাপ যে, এখানে বসে স্বাস্থ্যকর্মীরা স্বাস্থ্যসেবা দিতে পারেন না। জরুরি ভিত্তিতে ক্লিনিকটি সংস্কার করা প্রয়োজন।’

পাকশিমুল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘কমিউনিটি ক্লিনিকের জানালাগুলো সব চোরে নিয়ে গেছে। একটা মামলা-সংক্রান্ত ঝামেলার কারণে তখন এলাকায় ছিলাম না। থাকলে হয়তো এমনটি হতো না। ক্লিনিকটি দীর্ঘদিন ধরে পরিত্যক্ত থাকায় প্রকৃত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সাধারণ গরিব মানুষ।’

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা নোমান মিয়া বলেন, কমিউনিটি ক্লিনিকটি সংস্কারের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন পাঠানো হয়েছে। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, শিগগির ওখানে নতুন ভবন করা হবে।

ক্লিনিকের কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) পলাশ আহমেদ ক্লিনিকে পাঁচ মাস ধরে না আসার বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে ডা. নোমান মিয়া আজকের পত্রিকাকে বলেন, তিনি এখন সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আছেন। করোনা টিকাদান কার্যক্রমে কাজ করছেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জনবল কম থাকায় তাঁকে জরুরি ভিত্তিতে সেখানে নেওয়া হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত