হাসান মামুন

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সাবেক মেয়র ও ক্ষমতাসীন দল থেকে দ্বিতীয় দফায় ‘চিরদিনের জন্য বহিষ্কৃত’ জাহাঙ্গীর আলমের মা জায়েদা খাতুন জিতে যেতে পারেন, এটা সম্ভবত কেউই ভাবতে পারেননি। নিবন্ধটি লেখার সময় জাতীয় দৈনিকগুলোয় তাঁর চমকপ্রদ বিজয় নিয়ে বিশ্লেষণধর্মী প্রতিবেদন দেখতে পাচ্ছি। এই নিবন্ধকারেরও কিছু পর্যবেক্ষণ আছে। গভীর রাতে ওই সিটি নির্বাচনের ফল ঘোষণা শেষ হলে ফেসবুকে একটা মন্তব্য করেছিলাম। সেটা এখানে পুনরুল্লেখ করি। এমন লিখেছিলাম যে বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ ফিরিয়ে আনার কাজে সহায়তা করতে যুক্তরাষ্ট্র আলাদা করে যে ‘ভিসা নীতি’ গ্রহণের কথা প্রকাশ করে গাজীপুরে নির্বাচন শুরুর ঠিক আগের রাতে, সেটা আর মাত্র এক দিন আগে করা হলে ওখানে ভোট আরও বাড়ত এবং ক্ষমতাসীন দলের মেয়র প্রার্থী আরও বেশি ভোটে পরাস্ত হতেন। এটা এখনো আমার ধারণা।
সংবাদপত্রে গাজীপুরের নির্বাচনের ফল নিয়ে করা বিশ্লেষণে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতির প্রভাবের বিষয়টি দেখি আরও অনেকে এনেছেন। কেউ কেউ আবার এর প্রভাব অত নেই বলতে চেয়েছেন। নানান পর্যবেক্ষণ ও মত তো থাকবেই। এগুলো অবাধে প্রচারিত হওয়াও দরকার। ফেসবুক পোস্টে আমি অবশ্য শুধু বলতে চেয়েছিলাম, আগের রাতে বাংলাদেশের নির্বাচন ঘিরে গৃহীত ওই পদক্ষেপের খবর প্রচার হওয়ায় ভোটারদের সাহস বেড়েছে। পরে অনেকে এটাও বলছেন, নির্বাচনে অনিয়ম করলে সংশ্লিষ্টদের, এমনকি পরিবারের সদস্যদের যুক্তরাষ্ট্রে ভিসা পেতে সমস্যা হতে পারে ভেবে সরকার, নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনের লোকজন অন্তত ভোটের দিন নির্বাচন-প্রক্রিয়ায় দৃশ্যমান কোনো হস্তক্ষেপ করেননি। আমার অবশ্য এতটা মনে হয় না। এমনও মনে হয়, নানান কারণে গাজীপুর নির্বাচনকে (অংশগ্রহণমূলক করতে না পারলেও) স্বচ্ছভাবে সম্পন্ন করার ব্যাপারে সরকারপক্ষের একটা ইতিবাচক অবস্থান ছিল। তারা হয়তো ভেবেছিল, দল মনোনীত শক্তিশালী প্রার্থীই জয়ী হবেন। বহিষ্কৃত জাহাঙ্গীর আলমের অনালোচিত মা আর কী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন—এমন একটা মনোবৃত্তি হয়তো তাদের গ্রাস করেছিল। আওয়ামী লীগের প্রার্থীও তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী সবাইকে হালকা করে দেখছিলেন বলে অনেকে মনে করেন।
নির্বাচনে এসব উপাদান তো কাজ করেই। মাঠের বিরোধী দল বিএনপি ঘোষণা দিয়ে এই নির্বাচন বর্জন করলেও তাদের কর্মী-সমর্থকেরা যে তৎপর ছিলেন, সেটাও বোধ হয় বিবেচনায় নেননি ক্ষমতাসীনেরা। বিএনপি আবার কাউন্সিলর পদে প্রার্থী হওয়া বেশ কজনকে একইভাবে ‘চিরতরে’ বহিষ্কার করেছিল। যদিও কাউন্সিলররা দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করেন না; তা সত্ত্বেও তারা এত কঠোরতা দেখিয়েছিল কেন, বোধগম্য নয়। তবে নির্বাচনে লড়ে বিএনপির বেশ কজন কিন্তু কাউন্সিলর পদে জিতে গেছেন। এখন শোনা যাচ্ছে, তাঁরা নাকি স্বতন্ত্র বা বিদ্রোহী প্রার্থী জায়েদা খাতুনের পক্ষে কাজ করেছেন। দেখা যাচ্ছে, ওই সব এলাকায় বেশি ভোট পেয়ে এগিয়ে গেছেন এই প্রবীণা। বুদ্ধি করে নিজের পাশাপাশি তাঁকেও প্রার্থী করেছিলেন সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম। তিনি সঠিকভাবেই আশঙ্কা করেছিলেন, তাঁর প্রার্থিতা যেভাবেই হোক বাতিল হবে। নির্বাচনী প্রচারণা পুরোদমে চলাকালে তাঁকে দুদকেও ডাকা হয়েছিল দুর্নীতির অভিযোগে। এসবে দুদকের কাজ প্রশ্নবিদ্ধ হওয়ার পাশাপাশি নির্বাচনও যে উল্টোভাবে প্রভাবিত হয়েছে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই।
গাজীপুর আওয়ামী লীগের পুরোনো দুর্গ বলে পরিচিত। আর সেখানে যেভাবেই হোক, নিজের জায়গা পোক্ত করে নিয়েছিলেন জাহাঙ্গীর আলম। দলের উচ্চপর্যায়েও তাঁর শক্ত যোগাযোগ আছে বলে কানাঘুষা শোনা যায়। জায়েদা খাতুন সেখান থেকে প্রকাশ্য সহায়তা না পেলেও এ অবস্থায় দলীয় প্রার্থী বেশি সুবিধা করতে পারেননি বলেই ধরে নেওয়া যায়। আর এটা বলাই বাহুল্য, সরকারবিরোধী ভোট গেছে জায়েদার পক্ষে। এর একাংশ আবার পেয়েছেন হাতপাখা প্রতীকে দাঁড়ানো ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী। তিনি তৃতীয় হলেও লক্ষ করলাম, মিডিয়ায় সেটা কম প্রচারিত হয়েছে। এসব করে তো লাভ নেই, ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থীরা স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অনেক দিন ধরেই উল্লেখযোগ্য ভোট পাচ্ছেন। বিএনপি নির্বাচন বর্জন করে চলায় তাঁরা সরকারবিরোধী ভোটারদের সমর্থন পাচ্ছেন, এটা অনেকের মত। ধর্মীয় মনোভাবের মানুষজন তাঁদের পছন্দমতো প্রার্থীর পক্ষে অবস্থান নিচ্ছেন, এমনটাও অনেকে বলেন। কেননা অংশগ্রহণমূলক হচ্ছে না বলে ভোট পড়ছে অব্যাহতভাবে কম এবং বিএনপির সমর্থকেরা নাকি ভোট বর্জনই করে চলেছেন। তবে অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়, গাজীপুরে সেটা হয়নি। আর আমার মত হলো, যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতি গ্রহণের খবর আর মাত্র এক দিন আগে এলে তার প্রভাব পড়ত আরও বেশি এবং সরকারবিরোধীরা আরও বেশি করে ভোট দিতে আসায় জায়েদা খাতুন জয়ী হতেন বড় ব্যবধানে।
যা-ই হোক, যা হয়নি তা তো হয়নি। যা হয়েছে, তারই মূল্যায়ন করা যাবে। ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগও নাকি এই পরাজয়ের মূল্যায়ন করবে। তবে সেটি করতে করতে আগামী মাসের মধ্যে আরও চার সিটিতে ভোট সম্পন্ন করবে নির্বাচন কমিশন। গাজীপুরের নির্বাচন তারা যেভাবে সম্পন্ন করেছে; কখনো কখনো কিছু কঠোর পদক্ষেপ নিয়ে, সেই ধারা তাদের এখন অব্যাহত রাখতে সচেষ্ট হতে হবে। সরকার, নির্বাচন কমিশন ও মাঠপর্যায় পর্যন্ত প্রশাসন কী করছে, সেটা এখন আরও বেশি পর্যবেক্ষণ করবেন যুক্তরাষ্ট্রসহ তার মিত্র দেশের প্রতিনিধিরা। ওই সব অঞ্চলের ভোটারসহ সারা দেশের মানুষেরই আগ্রহ আরও বেড়ে যাবে বাকি চারটি নির্বাচনে। মিডিয়ায়ও এগুলোর খবর আরও বেশি করে আসবে। এতে একটা প্রত্যাশার চাপ তৈরি হবে প্রধানত নির্বাচন কমিশনের ওপর। সরকার আর প্রশাসনের ওপরও। গাজীপুরের নির্বাচনের চেয়ে নেতিবাচক কিছু ঘটলে তার সমালোচনা তীব্র থেকে তীব্রতর হবে এবং কোনো কোনোটা হয়তো হয়ে যাবে ইস্যু। সৃষ্ট পরিস্থিতিতে সরকার সেটা ‘অ্যাফোর্ড’ করতে পারবে কি? বিএনপি সুনির্দিষ্ট বক্তব্য দিয়ে এসব নির্বাচন বর্জন করছে—সন্দেহ নেই। তারা অংশ না নেওয়ায় নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হচ্ছে না, সেটাও ঠিক। কিন্তু তাদের সমর্থকেরা তো এসব নির্বাচনে ঠিকই অংশ নেবেন, এমনকি এখন আরও উৎসাহী হয়ে। ভোটারদের একটা বড় অংশ আবার নতুন। অনেক দিন তাঁরা হয়তো কোনো নির্বাচনেই ভোট দিতে যেতে উৎসাহী হননি। তাঁরাও গাজীপুরের অভিজ্ঞতায় ভোটকেন্দ্রে যেতে উজ্জীবিত হবেন মনে হয়।
যত দূর জানি, বাকি সিটি নির্বাচনগুলোও ইভিএমে অনুষ্ঠিত হবে এবং ভোটকেন্দ্রে বসানো হবে সিসি ক্যামেরা। ভোটগ্রহণের এই নতুন ব্যবস্থাপনাও মানুষকে ভোটাধিকার প্রয়োগে উৎসাহী করবে বলে মনে হয়। ইভিএমের কিছু টেকনিক্যাল সমস্যায় ভোটদানে দেরি হচ্ছে অবশ্য। ভোট গণনা আর ফল প্রকাশেও কিছু বিলম্ব লক্ষ করা গেছে গাজীপুরে। তাতে সন্দেহ-অবিশ্বাসও দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। এমন ক্ষেত্রে ফেসবুকে দ্রুত উঠে আসা মানুষের তীব্র মতামতও একটা চাপ, যা এখন আরও বেশি করে পড়বে নির্বাচন কমিশন ও সরকারের ওপর। সরকার তো ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট সংশোধন করে এটাকে ভয়ভীতিমুক্ত করে তোলার ব্যাপারেও প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। সুতরাং মনে হয়, নির্বাচনসহ বিভিন্ন জরুরি বিষয়ে নাগরিকদের অভিমত প্রদানের প্রবাহ আরও জোরালো হবে। বাংলাদেশের জন্য আলাদা করে দেওয়া যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতিতে মতপ্রকাশের স্বাধীনতাও অবারিত করতে বলা হয়েছে। এই পদক্ষেপকে সরকার এখন পর্যন্ত ইতিবাচকভাবে নেওয়ার পক্ষেই কথাবার্তা বলছে। সরকার বলছে, আমরা তো ‘সুষ্ঠু নির্বাচন’ই করতে চাই। প্রধানমন্ত্রী নিজে একাধিকবার এমন মনোভাব ব্যক্ত করেছেন। এ অবস্থায় বাকি সিটি নির্বাচনগুলো অংশগ্রহণমূলক না হলেও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার সুযোগ তো রয়েই গেছে। কোনো কোনো নির্বাচনবোদ্ধা হয়তো বলবেন, বেছে নেওয়ার মতো যথেষ্টসংখ্যক প্রার্থী না থাকলে নির্বাচন তো অর্থবহ হয় না। এ বক্তব্যে কিছু সত্যতা থাকলেও ভোটাররা কিন্তু তাঁদের অংশগ্রহণ অনেক বাড়িয়ে দেবেন চোখের সামনে থাকা প্রার্থীদের নিয়েই।
গাজীপুরে কি সেটা ঘটতে দেখা যায়নি? বরিশালেও হয়তো একই ঘটনা ঘটবে হাতপাখা মার্কার প্রার্থীকে ঘিরে। ২৭ মের আজকের পত্রিকায় ছোট্ট করে তাঁর যে সাক্ষাৎকার এসেছে, তাতে এই প্রার্থীকে বেশ আত্মপ্রত্যয়ী মনে হয়। সেখানেও ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীর মনোনয়ন ঘিরে বড় বিভক্তি আছে স্থানীয় পর্যায়ে এবং সেটা দূরীকরণের উদ্যোগ সফল হতে দেখা যাচ্ছে না। দীর্ঘদিন ধরে রাষ্ট্রক্ষমতার বিশ্বস্ত সহযোগী জাতীয় পার্টির প্রার্থীরাও গরম কথা বলছেন। পরিস্থিতি ঘুরছে বলেই মনে হয়। এ অবস্থায় সরকারপক্ষ মাথা গরম করে কিছু করে ফেললে সেটা হিতে বিপরীত হওয়ার শঙ্কাই বেশি। সিটি নির্বাচনে যা-ই ঘটুক, তাতে তো আর সরকারের বদল ঘটবে না। সরকার থেকেই যাবে এবং সিটি নির্বাচন চলাকালেও তাকে জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে সার্বিক পরিস্থিতি সামলানোর কাজে মনোনিবেশ করতে হবে বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে।
লেখক: সাংবাদিক, বিশ্লেষক

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সাবেক মেয়র ও ক্ষমতাসীন দল থেকে দ্বিতীয় দফায় ‘চিরদিনের জন্য বহিষ্কৃত’ জাহাঙ্গীর আলমের মা জায়েদা খাতুন জিতে যেতে পারেন, এটা সম্ভবত কেউই ভাবতে পারেননি। নিবন্ধটি লেখার সময় জাতীয় দৈনিকগুলোয় তাঁর চমকপ্রদ বিজয় নিয়ে বিশ্লেষণধর্মী প্রতিবেদন দেখতে পাচ্ছি। এই নিবন্ধকারেরও কিছু পর্যবেক্ষণ আছে। গভীর রাতে ওই সিটি নির্বাচনের ফল ঘোষণা শেষ হলে ফেসবুকে একটা মন্তব্য করেছিলাম। সেটা এখানে পুনরুল্লেখ করি। এমন লিখেছিলাম যে বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ ফিরিয়ে আনার কাজে সহায়তা করতে যুক্তরাষ্ট্র আলাদা করে যে ‘ভিসা নীতি’ গ্রহণের কথা প্রকাশ করে গাজীপুরে নির্বাচন শুরুর ঠিক আগের রাতে, সেটা আর মাত্র এক দিন আগে করা হলে ওখানে ভোট আরও বাড়ত এবং ক্ষমতাসীন দলের মেয়র প্রার্থী আরও বেশি ভোটে পরাস্ত হতেন। এটা এখনো আমার ধারণা।
সংবাদপত্রে গাজীপুরের নির্বাচনের ফল নিয়ে করা বিশ্লেষণে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতির প্রভাবের বিষয়টি দেখি আরও অনেকে এনেছেন। কেউ কেউ আবার এর প্রভাব অত নেই বলতে চেয়েছেন। নানান পর্যবেক্ষণ ও মত তো থাকবেই। এগুলো অবাধে প্রচারিত হওয়াও দরকার। ফেসবুক পোস্টে আমি অবশ্য শুধু বলতে চেয়েছিলাম, আগের রাতে বাংলাদেশের নির্বাচন ঘিরে গৃহীত ওই পদক্ষেপের খবর প্রচার হওয়ায় ভোটারদের সাহস বেড়েছে। পরে অনেকে এটাও বলছেন, নির্বাচনে অনিয়ম করলে সংশ্লিষ্টদের, এমনকি পরিবারের সদস্যদের যুক্তরাষ্ট্রে ভিসা পেতে সমস্যা হতে পারে ভেবে সরকার, নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনের লোকজন অন্তত ভোটের দিন নির্বাচন-প্রক্রিয়ায় দৃশ্যমান কোনো হস্তক্ষেপ করেননি। আমার অবশ্য এতটা মনে হয় না। এমনও মনে হয়, নানান কারণে গাজীপুর নির্বাচনকে (অংশগ্রহণমূলক করতে না পারলেও) স্বচ্ছভাবে সম্পন্ন করার ব্যাপারে সরকারপক্ষের একটা ইতিবাচক অবস্থান ছিল। তারা হয়তো ভেবেছিল, দল মনোনীত শক্তিশালী প্রার্থীই জয়ী হবেন। বহিষ্কৃত জাহাঙ্গীর আলমের অনালোচিত মা আর কী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন—এমন একটা মনোবৃত্তি হয়তো তাদের গ্রাস করেছিল। আওয়ামী লীগের প্রার্থীও তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী সবাইকে হালকা করে দেখছিলেন বলে অনেকে মনে করেন।
নির্বাচনে এসব উপাদান তো কাজ করেই। মাঠের বিরোধী দল বিএনপি ঘোষণা দিয়ে এই নির্বাচন বর্জন করলেও তাদের কর্মী-সমর্থকেরা যে তৎপর ছিলেন, সেটাও বোধ হয় বিবেচনায় নেননি ক্ষমতাসীনেরা। বিএনপি আবার কাউন্সিলর পদে প্রার্থী হওয়া বেশ কজনকে একইভাবে ‘চিরতরে’ বহিষ্কার করেছিল। যদিও কাউন্সিলররা দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করেন না; তা সত্ত্বেও তারা এত কঠোরতা দেখিয়েছিল কেন, বোধগম্য নয়। তবে নির্বাচনে লড়ে বিএনপির বেশ কজন কিন্তু কাউন্সিলর পদে জিতে গেছেন। এখন শোনা যাচ্ছে, তাঁরা নাকি স্বতন্ত্র বা বিদ্রোহী প্রার্থী জায়েদা খাতুনের পক্ষে কাজ করেছেন। দেখা যাচ্ছে, ওই সব এলাকায় বেশি ভোট পেয়ে এগিয়ে গেছেন এই প্রবীণা। বুদ্ধি করে নিজের পাশাপাশি তাঁকেও প্রার্থী করেছিলেন সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম। তিনি সঠিকভাবেই আশঙ্কা করেছিলেন, তাঁর প্রার্থিতা যেভাবেই হোক বাতিল হবে। নির্বাচনী প্রচারণা পুরোদমে চলাকালে তাঁকে দুদকেও ডাকা হয়েছিল দুর্নীতির অভিযোগে। এসবে দুদকের কাজ প্রশ্নবিদ্ধ হওয়ার পাশাপাশি নির্বাচনও যে উল্টোভাবে প্রভাবিত হয়েছে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই।
গাজীপুর আওয়ামী লীগের পুরোনো দুর্গ বলে পরিচিত। আর সেখানে যেভাবেই হোক, নিজের জায়গা পোক্ত করে নিয়েছিলেন জাহাঙ্গীর আলম। দলের উচ্চপর্যায়েও তাঁর শক্ত যোগাযোগ আছে বলে কানাঘুষা শোনা যায়। জায়েদা খাতুন সেখান থেকে প্রকাশ্য সহায়তা না পেলেও এ অবস্থায় দলীয় প্রার্থী বেশি সুবিধা করতে পারেননি বলেই ধরে নেওয়া যায়। আর এটা বলাই বাহুল্য, সরকারবিরোধী ভোট গেছে জায়েদার পক্ষে। এর একাংশ আবার পেয়েছেন হাতপাখা প্রতীকে দাঁড়ানো ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী। তিনি তৃতীয় হলেও লক্ষ করলাম, মিডিয়ায় সেটা কম প্রচারিত হয়েছে। এসব করে তো লাভ নেই, ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থীরা স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অনেক দিন ধরেই উল্লেখযোগ্য ভোট পাচ্ছেন। বিএনপি নির্বাচন বর্জন করে চলায় তাঁরা সরকারবিরোধী ভোটারদের সমর্থন পাচ্ছেন, এটা অনেকের মত। ধর্মীয় মনোভাবের মানুষজন তাঁদের পছন্দমতো প্রার্থীর পক্ষে অবস্থান নিচ্ছেন, এমনটাও অনেকে বলেন। কেননা অংশগ্রহণমূলক হচ্ছে না বলে ভোট পড়ছে অব্যাহতভাবে কম এবং বিএনপির সমর্থকেরা নাকি ভোট বর্জনই করে চলেছেন। তবে অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়, গাজীপুরে সেটা হয়নি। আর আমার মত হলো, যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতি গ্রহণের খবর আর মাত্র এক দিন আগে এলে তার প্রভাব পড়ত আরও বেশি এবং সরকারবিরোধীরা আরও বেশি করে ভোট দিতে আসায় জায়েদা খাতুন জয়ী হতেন বড় ব্যবধানে।
যা-ই হোক, যা হয়নি তা তো হয়নি। যা হয়েছে, তারই মূল্যায়ন করা যাবে। ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগও নাকি এই পরাজয়ের মূল্যায়ন করবে। তবে সেটি করতে করতে আগামী মাসের মধ্যে আরও চার সিটিতে ভোট সম্পন্ন করবে নির্বাচন কমিশন। গাজীপুরের নির্বাচন তারা যেভাবে সম্পন্ন করেছে; কখনো কখনো কিছু কঠোর পদক্ষেপ নিয়ে, সেই ধারা তাদের এখন অব্যাহত রাখতে সচেষ্ট হতে হবে। সরকার, নির্বাচন কমিশন ও মাঠপর্যায় পর্যন্ত প্রশাসন কী করছে, সেটা এখন আরও বেশি পর্যবেক্ষণ করবেন যুক্তরাষ্ট্রসহ তার মিত্র দেশের প্রতিনিধিরা। ওই সব অঞ্চলের ভোটারসহ সারা দেশের মানুষেরই আগ্রহ আরও বেড়ে যাবে বাকি চারটি নির্বাচনে। মিডিয়ায়ও এগুলোর খবর আরও বেশি করে আসবে। এতে একটা প্রত্যাশার চাপ তৈরি হবে প্রধানত নির্বাচন কমিশনের ওপর। সরকার আর প্রশাসনের ওপরও। গাজীপুরের নির্বাচনের চেয়ে নেতিবাচক কিছু ঘটলে তার সমালোচনা তীব্র থেকে তীব্রতর হবে এবং কোনো কোনোটা হয়তো হয়ে যাবে ইস্যু। সৃষ্ট পরিস্থিতিতে সরকার সেটা ‘অ্যাফোর্ড’ করতে পারবে কি? বিএনপি সুনির্দিষ্ট বক্তব্য দিয়ে এসব নির্বাচন বর্জন করছে—সন্দেহ নেই। তারা অংশ না নেওয়ায় নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হচ্ছে না, সেটাও ঠিক। কিন্তু তাদের সমর্থকেরা তো এসব নির্বাচনে ঠিকই অংশ নেবেন, এমনকি এখন আরও উৎসাহী হয়ে। ভোটারদের একটা বড় অংশ আবার নতুন। অনেক দিন তাঁরা হয়তো কোনো নির্বাচনেই ভোট দিতে যেতে উৎসাহী হননি। তাঁরাও গাজীপুরের অভিজ্ঞতায় ভোটকেন্দ্রে যেতে উজ্জীবিত হবেন মনে হয়।
যত দূর জানি, বাকি সিটি নির্বাচনগুলোও ইভিএমে অনুষ্ঠিত হবে এবং ভোটকেন্দ্রে বসানো হবে সিসি ক্যামেরা। ভোটগ্রহণের এই নতুন ব্যবস্থাপনাও মানুষকে ভোটাধিকার প্রয়োগে উৎসাহী করবে বলে মনে হয়। ইভিএমের কিছু টেকনিক্যাল সমস্যায় ভোটদানে দেরি হচ্ছে অবশ্য। ভোট গণনা আর ফল প্রকাশেও কিছু বিলম্ব লক্ষ করা গেছে গাজীপুরে। তাতে সন্দেহ-অবিশ্বাসও দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। এমন ক্ষেত্রে ফেসবুকে দ্রুত উঠে আসা মানুষের তীব্র মতামতও একটা চাপ, যা এখন আরও বেশি করে পড়বে নির্বাচন কমিশন ও সরকারের ওপর। সরকার তো ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট সংশোধন করে এটাকে ভয়ভীতিমুক্ত করে তোলার ব্যাপারেও প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। সুতরাং মনে হয়, নির্বাচনসহ বিভিন্ন জরুরি বিষয়ে নাগরিকদের অভিমত প্রদানের প্রবাহ আরও জোরালো হবে। বাংলাদেশের জন্য আলাদা করে দেওয়া যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতিতে মতপ্রকাশের স্বাধীনতাও অবারিত করতে বলা হয়েছে। এই পদক্ষেপকে সরকার এখন পর্যন্ত ইতিবাচকভাবে নেওয়ার পক্ষেই কথাবার্তা বলছে। সরকার বলছে, আমরা তো ‘সুষ্ঠু নির্বাচন’ই করতে চাই। প্রধানমন্ত্রী নিজে একাধিকবার এমন মনোভাব ব্যক্ত করেছেন। এ অবস্থায় বাকি সিটি নির্বাচনগুলো অংশগ্রহণমূলক না হলেও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার সুযোগ তো রয়েই গেছে। কোনো কোনো নির্বাচনবোদ্ধা হয়তো বলবেন, বেছে নেওয়ার মতো যথেষ্টসংখ্যক প্রার্থী না থাকলে নির্বাচন তো অর্থবহ হয় না। এ বক্তব্যে কিছু সত্যতা থাকলেও ভোটাররা কিন্তু তাঁদের অংশগ্রহণ অনেক বাড়িয়ে দেবেন চোখের সামনে থাকা প্রার্থীদের নিয়েই।
গাজীপুরে কি সেটা ঘটতে দেখা যায়নি? বরিশালেও হয়তো একই ঘটনা ঘটবে হাতপাখা মার্কার প্রার্থীকে ঘিরে। ২৭ মের আজকের পত্রিকায় ছোট্ট করে তাঁর যে সাক্ষাৎকার এসেছে, তাতে এই প্রার্থীকে বেশ আত্মপ্রত্যয়ী মনে হয়। সেখানেও ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীর মনোনয়ন ঘিরে বড় বিভক্তি আছে স্থানীয় পর্যায়ে এবং সেটা দূরীকরণের উদ্যোগ সফল হতে দেখা যাচ্ছে না। দীর্ঘদিন ধরে রাষ্ট্রক্ষমতার বিশ্বস্ত সহযোগী জাতীয় পার্টির প্রার্থীরাও গরম কথা বলছেন। পরিস্থিতি ঘুরছে বলেই মনে হয়। এ অবস্থায় সরকারপক্ষ মাথা গরম করে কিছু করে ফেললে সেটা হিতে বিপরীত হওয়ার শঙ্কাই বেশি। সিটি নির্বাচনে যা-ই ঘটুক, তাতে তো আর সরকারের বদল ঘটবে না। সরকার থেকেই যাবে এবং সিটি নির্বাচন চলাকালেও তাকে জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে সার্বিক পরিস্থিতি সামলানোর কাজে মনোনিবেশ করতে হবে বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে।
লেখক: সাংবাদিক, বিশ্লেষক
হাসান মামুন

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সাবেক মেয়র ও ক্ষমতাসীন দল থেকে দ্বিতীয় দফায় ‘চিরদিনের জন্য বহিষ্কৃত’ জাহাঙ্গীর আলমের মা জায়েদা খাতুন জিতে যেতে পারেন, এটা সম্ভবত কেউই ভাবতে পারেননি। নিবন্ধটি লেখার সময় জাতীয় দৈনিকগুলোয় তাঁর চমকপ্রদ বিজয় নিয়ে বিশ্লেষণধর্মী প্রতিবেদন দেখতে পাচ্ছি। এই নিবন্ধকারেরও কিছু পর্যবেক্ষণ আছে। গভীর রাতে ওই সিটি নির্বাচনের ফল ঘোষণা শেষ হলে ফেসবুকে একটা মন্তব্য করেছিলাম। সেটা এখানে পুনরুল্লেখ করি। এমন লিখেছিলাম যে বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ ফিরিয়ে আনার কাজে সহায়তা করতে যুক্তরাষ্ট্র আলাদা করে যে ‘ভিসা নীতি’ গ্রহণের কথা প্রকাশ করে গাজীপুরে নির্বাচন শুরুর ঠিক আগের রাতে, সেটা আর মাত্র এক দিন আগে করা হলে ওখানে ভোট আরও বাড়ত এবং ক্ষমতাসীন দলের মেয়র প্রার্থী আরও বেশি ভোটে পরাস্ত হতেন। এটা এখনো আমার ধারণা।
সংবাদপত্রে গাজীপুরের নির্বাচনের ফল নিয়ে করা বিশ্লেষণে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতির প্রভাবের বিষয়টি দেখি আরও অনেকে এনেছেন। কেউ কেউ আবার এর প্রভাব অত নেই বলতে চেয়েছেন। নানান পর্যবেক্ষণ ও মত তো থাকবেই। এগুলো অবাধে প্রচারিত হওয়াও দরকার। ফেসবুক পোস্টে আমি অবশ্য শুধু বলতে চেয়েছিলাম, আগের রাতে বাংলাদেশের নির্বাচন ঘিরে গৃহীত ওই পদক্ষেপের খবর প্রচার হওয়ায় ভোটারদের সাহস বেড়েছে। পরে অনেকে এটাও বলছেন, নির্বাচনে অনিয়ম করলে সংশ্লিষ্টদের, এমনকি পরিবারের সদস্যদের যুক্তরাষ্ট্রে ভিসা পেতে সমস্যা হতে পারে ভেবে সরকার, নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনের লোকজন অন্তত ভোটের দিন নির্বাচন-প্রক্রিয়ায় দৃশ্যমান কোনো হস্তক্ষেপ করেননি। আমার অবশ্য এতটা মনে হয় না। এমনও মনে হয়, নানান কারণে গাজীপুর নির্বাচনকে (অংশগ্রহণমূলক করতে না পারলেও) স্বচ্ছভাবে সম্পন্ন করার ব্যাপারে সরকারপক্ষের একটা ইতিবাচক অবস্থান ছিল। তারা হয়তো ভেবেছিল, দল মনোনীত শক্তিশালী প্রার্থীই জয়ী হবেন। বহিষ্কৃত জাহাঙ্গীর আলমের অনালোচিত মা আর কী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন—এমন একটা মনোবৃত্তি হয়তো তাদের গ্রাস করেছিল। আওয়ামী লীগের প্রার্থীও তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী সবাইকে হালকা করে দেখছিলেন বলে অনেকে মনে করেন।
নির্বাচনে এসব উপাদান তো কাজ করেই। মাঠের বিরোধী দল বিএনপি ঘোষণা দিয়ে এই নির্বাচন বর্জন করলেও তাদের কর্মী-সমর্থকেরা যে তৎপর ছিলেন, সেটাও বোধ হয় বিবেচনায় নেননি ক্ষমতাসীনেরা। বিএনপি আবার কাউন্সিলর পদে প্রার্থী হওয়া বেশ কজনকে একইভাবে ‘চিরতরে’ বহিষ্কার করেছিল। যদিও কাউন্সিলররা দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করেন না; তা সত্ত্বেও তারা এত কঠোরতা দেখিয়েছিল কেন, বোধগম্য নয়। তবে নির্বাচনে লড়ে বিএনপির বেশ কজন কিন্তু কাউন্সিলর পদে জিতে গেছেন। এখন শোনা যাচ্ছে, তাঁরা নাকি স্বতন্ত্র বা বিদ্রোহী প্রার্থী জায়েদা খাতুনের পক্ষে কাজ করেছেন। দেখা যাচ্ছে, ওই সব এলাকায় বেশি ভোট পেয়ে এগিয়ে গেছেন এই প্রবীণা। বুদ্ধি করে নিজের পাশাপাশি তাঁকেও প্রার্থী করেছিলেন সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম। তিনি সঠিকভাবেই আশঙ্কা করেছিলেন, তাঁর প্রার্থিতা যেভাবেই হোক বাতিল হবে। নির্বাচনী প্রচারণা পুরোদমে চলাকালে তাঁকে দুদকেও ডাকা হয়েছিল দুর্নীতির অভিযোগে। এসবে দুদকের কাজ প্রশ্নবিদ্ধ হওয়ার পাশাপাশি নির্বাচনও যে উল্টোভাবে প্রভাবিত হয়েছে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই।
গাজীপুর আওয়ামী লীগের পুরোনো দুর্গ বলে পরিচিত। আর সেখানে যেভাবেই হোক, নিজের জায়গা পোক্ত করে নিয়েছিলেন জাহাঙ্গীর আলম। দলের উচ্চপর্যায়েও তাঁর শক্ত যোগাযোগ আছে বলে কানাঘুষা শোনা যায়। জায়েদা খাতুন সেখান থেকে প্রকাশ্য সহায়তা না পেলেও এ অবস্থায় দলীয় প্রার্থী বেশি সুবিধা করতে পারেননি বলেই ধরে নেওয়া যায়। আর এটা বলাই বাহুল্য, সরকারবিরোধী ভোট গেছে জায়েদার পক্ষে। এর একাংশ আবার পেয়েছেন হাতপাখা প্রতীকে দাঁড়ানো ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী। তিনি তৃতীয় হলেও লক্ষ করলাম, মিডিয়ায় সেটা কম প্রচারিত হয়েছে। এসব করে তো লাভ নেই, ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থীরা স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অনেক দিন ধরেই উল্লেখযোগ্য ভোট পাচ্ছেন। বিএনপি নির্বাচন বর্জন করে চলায় তাঁরা সরকারবিরোধী ভোটারদের সমর্থন পাচ্ছেন, এটা অনেকের মত। ধর্মীয় মনোভাবের মানুষজন তাঁদের পছন্দমতো প্রার্থীর পক্ষে অবস্থান নিচ্ছেন, এমনটাও অনেকে বলেন। কেননা অংশগ্রহণমূলক হচ্ছে না বলে ভোট পড়ছে অব্যাহতভাবে কম এবং বিএনপির সমর্থকেরা নাকি ভোট বর্জনই করে চলেছেন। তবে অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়, গাজীপুরে সেটা হয়নি। আর আমার মত হলো, যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতি গ্রহণের খবর আর মাত্র এক দিন আগে এলে তার প্রভাব পড়ত আরও বেশি এবং সরকারবিরোধীরা আরও বেশি করে ভোট দিতে আসায় জায়েদা খাতুন জয়ী হতেন বড় ব্যবধানে।
যা-ই হোক, যা হয়নি তা তো হয়নি। যা হয়েছে, তারই মূল্যায়ন করা যাবে। ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগও নাকি এই পরাজয়ের মূল্যায়ন করবে। তবে সেটি করতে করতে আগামী মাসের মধ্যে আরও চার সিটিতে ভোট সম্পন্ন করবে নির্বাচন কমিশন। গাজীপুরের নির্বাচন তারা যেভাবে সম্পন্ন করেছে; কখনো কখনো কিছু কঠোর পদক্ষেপ নিয়ে, সেই ধারা তাদের এখন অব্যাহত রাখতে সচেষ্ট হতে হবে। সরকার, নির্বাচন কমিশন ও মাঠপর্যায় পর্যন্ত প্রশাসন কী করছে, সেটা এখন আরও বেশি পর্যবেক্ষণ করবেন যুক্তরাষ্ট্রসহ তার মিত্র দেশের প্রতিনিধিরা। ওই সব অঞ্চলের ভোটারসহ সারা দেশের মানুষেরই আগ্রহ আরও বেড়ে যাবে বাকি চারটি নির্বাচনে। মিডিয়ায়ও এগুলোর খবর আরও বেশি করে আসবে। এতে একটা প্রত্যাশার চাপ তৈরি হবে প্রধানত নির্বাচন কমিশনের ওপর। সরকার আর প্রশাসনের ওপরও। গাজীপুরের নির্বাচনের চেয়ে নেতিবাচক কিছু ঘটলে তার সমালোচনা তীব্র থেকে তীব্রতর হবে এবং কোনো কোনোটা হয়তো হয়ে যাবে ইস্যু। সৃষ্ট পরিস্থিতিতে সরকার সেটা ‘অ্যাফোর্ড’ করতে পারবে কি? বিএনপি সুনির্দিষ্ট বক্তব্য দিয়ে এসব নির্বাচন বর্জন করছে—সন্দেহ নেই। তারা অংশ না নেওয়ায় নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হচ্ছে না, সেটাও ঠিক। কিন্তু তাদের সমর্থকেরা তো এসব নির্বাচনে ঠিকই অংশ নেবেন, এমনকি এখন আরও উৎসাহী হয়ে। ভোটারদের একটা বড় অংশ আবার নতুন। অনেক দিন তাঁরা হয়তো কোনো নির্বাচনেই ভোট দিতে যেতে উৎসাহী হননি। তাঁরাও গাজীপুরের অভিজ্ঞতায় ভোটকেন্দ্রে যেতে উজ্জীবিত হবেন মনে হয়।
যত দূর জানি, বাকি সিটি নির্বাচনগুলোও ইভিএমে অনুষ্ঠিত হবে এবং ভোটকেন্দ্রে বসানো হবে সিসি ক্যামেরা। ভোটগ্রহণের এই নতুন ব্যবস্থাপনাও মানুষকে ভোটাধিকার প্রয়োগে উৎসাহী করবে বলে মনে হয়। ইভিএমের কিছু টেকনিক্যাল সমস্যায় ভোটদানে দেরি হচ্ছে অবশ্য। ভোট গণনা আর ফল প্রকাশেও কিছু বিলম্ব লক্ষ করা গেছে গাজীপুরে। তাতে সন্দেহ-অবিশ্বাসও দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। এমন ক্ষেত্রে ফেসবুকে দ্রুত উঠে আসা মানুষের তীব্র মতামতও একটা চাপ, যা এখন আরও বেশি করে পড়বে নির্বাচন কমিশন ও সরকারের ওপর। সরকার তো ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট সংশোধন করে এটাকে ভয়ভীতিমুক্ত করে তোলার ব্যাপারেও প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। সুতরাং মনে হয়, নির্বাচনসহ বিভিন্ন জরুরি বিষয়ে নাগরিকদের অভিমত প্রদানের প্রবাহ আরও জোরালো হবে। বাংলাদেশের জন্য আলাদা করে দেওয়া যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতিতে মতপ্রকাশের স্বাধীনতাও অবারিত করতে বলা হয়েছে। এই পদক্ষেপকে সরকার এখন পর্যন্ত ইতিবাচকভাবে নেওয়ার পক্ষেই কথাবার্তা বলছে। সরকার বলছে, আমরা তো ‘সুষ্ঠু নির্বাচন’ই করতে চাই। প্রধানমন্ত্রী নিজে একাধিকবার এমন মনোভাব ব্যক্ত করেছেন। এ অবস্থায় বাকি সিটি নির্বাচনগুলো অংশগ্রহণমূলক না হলেও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার সুযোগ তো রয়েই গেছে। কোনো কোনো নির্বাচনবোদ্ধা হয়তো বলবেন, বেছে নেওয়ার মতো যথেষ্টসংখ্যক প্রার্থী না থাকলে নির্বাচন তো অর্থবহ হয় না। এ বক্তব্যে কিছু সত্যতা থাকলেও ভোটাররা কিন্তু তাঁদের অংশগ্রহণ অনেক বাড়িয়ে দেবেন চোখের সামনে থাকা প্রার্থীদের নিয়েই।
গাজীপুরে কি সেটা ঘটতে দেখা যায়নি? বরিশালেও হয়তো একই ঘটনা ঘটবে হাতপাখা মার্কার প্রার্থীকে ঘিরে। ২৭ মের আজকের পত্রিকায় ছোট্ট করে তাঁর যে সাক্ষাৎকার এসেছে, তাতে এই প্রার্থীকে বেশ আত্মপ্রত্যয়ী মনে হয়। সেখানেও ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীর মনোনয়ন ঘিরে বড় বিভক্তি আছে স্থানীয় পর্যায়ে এবং সেটা দূরীকরণের উদ্যোগ সফল হতে দেখা যাচ্ছে না। দীর্ঘদিন ধরে রাষ্ট্রক্ষমতার বিশ্বস্ত সহযোগী জাতীয় পার্টির প্রার্থীরাও গরম কথা বলছেন। পরিস্থিতি ঘুরছে বলেই মনে হয়। এ অবস্থায় সরকারপক্ষ মাথা গরম করে কিছু করে ফেললে সেটা হিতে বিপরীত হওয়ার শঙ্কাই বেশি। সিটি নির্বাচনে যা-ই ঘটুক, তাতে তো আর সরকারের বদল ঘটবে না। সরকার থেকেই যাবে এবং সিটি নির্বাচন চলাকালেও তাকে জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে সার্বিক পরিস্থিতি সামলানোর কাজে মনোনিবেশ করতে হবে বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে।
লেখক: সাংবাদিক, বিশ্লেষক

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সাবেক মেয়র ও ক্ষমতাসীন দল থেকে দ্বিতীয় দফায় ‘চিরদিনের জন্য বহিষ্কৃত’ জাহাঙ্গীর আলমের মা জায়েদা খাতুন জিতে যেতে পারেন, এটা সম্ভবত কেউই ভাবতে পারেননি। নিবন্ধটি লেখার সময় জাতীয় দৈনিকগুলোয় তাঁর চমকপ্রদ বিজয় নিয়ে বিশ্লেষণধর্মী প্রতিবেদন দেখতে পাচ্ছি। এই নিবন্ধকারেরও কিছু পর্যবেক্ষণ আছে। গভীর রাতে ওই সিটি নির্বাচনের ফল ঘোষণা শেষ হলে ফেসবুকে একটা মন্তব্য করেছিলাম। সেটা এখানে পুনরুল্লেখ করি। এমন লিখেছিলাম যে বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ ফিরিয়ে আনার কাজে সহায়তা করতে যুক্তরাষ্ট্র আলাদা করে যে ‘ভিসা নীতি’ গ্রহণের কথা প্রকাশ করে গাজীপুরে নির্বাচন শুরুর ঠিক আগের রাতে, সেটা আর মাত্র এক দিন আগে করা হলে ওখানে ভোট আরও বাড়ত এবং ক্ষমতাসীন দলের মেয়র প্রার্থী আরও বেশি ভোটে পরাস্ত হতেন। এটা এখনো আমার ধারণা।
সংবাদপত্রে গাজীপুরের নির্বাচনের ফল নিয়ে করা বিশ্লেষণে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতির প্রভাবের বিষয়টি দেখি আরও অনেকে এনেছেন। কেউ কেউ আবার এর প্রভাব অত নেই বলতে চেয়েছেন। নানান পর্যবেক্ষণ ও মত তো থাকবেই। এগুলো অবাধে প্রচারিত হওয়াও দরকার। ফেসবুক পোস্টে আমি অবশ্য শুধু বলতে চেয়েছিলাম, আগের রাতে বাংলাদেশের নির্বাচন ঘিরে গৃহীত ওই পদক্ষেপের খবর প্রচার হওয়ায় ভোটারদের সাহস বেড়েছে। পরে অনেকে এটাও বলছেন, নির্বাচনে অনিয়ম করলে সংশ্লিষ্টদের, এমনকি পরিবারের সদস্যদের যুক্তরাষ্ট্রে ভিসা পেতে সমস্যা হতে পারে ভেবে সরকার, নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনের লোকজন অন্তত ভোটের দিন নির্বাচন-প্রক্রিয়ায় দৃশ্যমান কোনো হস্তক্ষেপ করেননি। আমার অবশ্য এতটা মনে হয় না। এমনও মনে হয়, নানান কারণে গাজীপুর নির্বাচনকে (অংশগ্রহণমূলক করতে না পারলেও) স্বচ্ছভাবে সম্পন্ন করার ব্যাপারে সরকারপক্ষের একটা ইতিবাচক অবস্থান ছিল। তারা হয়তো ভেবেছিল, দল মনোনীত শক্তিশালী প্রার্থীই জয়ী হবেন। বহিষ্কৃত জাহাঙ্গীর আলমের অনালোচিত মা আর কী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন—এমন একটা মনোবৃত্তি হয়তো তাদের গ্রাস করেছিল। আওয়ামী লীগের প্রার্থীও তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী সবাইকে হালকা করে দেখছিলেন বলে অনেকে মনে করেন।
নির্বাচনে এসব উপাদান তো কাজ করেই। মাঠের বিরোধী দল বিএনপি ঘোষণা দিয়ে এই নির্বাচন বর্জন করলেও তাদের কর্মী-সমর্থকেরা যে তৎপর ছিলেন, সেটাও বোধ হয় বিবেচনায় নেননি ক্ষমতাসীনেরা। বিএনপি আবার কাউন্সিলর পদে প্রার্থী হওয়া বেশ কজনকে একইভাবে ‘চিরতরে’ বহিষ্কার করেছিল। যদিও কাউন্সিলররা দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করেন না; তা সত্ত্বেও তারা এত কঠোরতা দেখিয়েছিল কেন, বোধগম্য নয়। তবে নির্বাচনে লড়ে বিএনপির বেশ কজন কিন্তু কাউন্সিলর পদে জিতে গেছেন। এখন শোনা যাচ্ছে, তাঁরা নাকি স্বতন্ত্র বা বিদ্রোহী প্রার্থী জায়েদা খাতুনের পক্ষে কাজ করেছেন। দেখা যাচ্ছে, ওই সব এলাকায় বেশি ভোট পেয়ে এগিয়ে গেছেন এই প্রবীণা। বুদ্ধি করে নিজের পাশাপাশি তাঁকেও প্রার্থী করেছিলেন সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম। তিনি সঠিকভাবেই আশঙ্কা করেছিলেন, তাঁর প্রার্থিতা যেভাবেই হোক বাতিল হবে। নির্বাচনী প্রচারণা পুরোদমে চলাকালে তাঁকে দুদকেও ডাকা হয়েছিল দুর্নীতির অভিযোগে। এসবে দুদকের কাজ প্রশ্নবিদ্ধ হওয়ার পাশাপাশি নির্বাচনও যে উল্টোভাবে প্রভাবিত হয়েছে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই।
গাজীপুর আওয়ামী লীগের পুরোনো দুর্গ বলে পরিচিত। আর সেখানে যেভাবেই হোক, নিজের জায়গা পোক্ত করে নিয়েছিলেন জাহাঙ্গীর আলম। দলের উচ্চপর্যায়েও তাঁর শক্ত যোগাযোগ আছে বলে কানাঘুষা শোনা যায়। জায়েদা খাতুন সেখান থেকে প্রকাশ্য সহায়তা না পেলেও এ অবস্থায় দলীয় প্রার্থী বেশি সুবিধা করতে পারেননি বলেই ধরে নেওয়া যায়। আর এটা বলাই বাহুল্য, সরকারবিরোধী ভোট গেছে জায়েদার পক্ষে। এর একাংশ আবার পেয়েছেন হাতপাখা প্রতীকে দাঁড়ানো ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী। তিনি তৃতীয় হলেও লক্ষ করলাম, মিডিয়ায় সেটা কম প্রচারিত হয়েছে। এসব করে তো লাভ নেই, ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থীরা স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অনেক দিন ধরেই উল্লেখযোগ্য ভোট পাচ্ছেন। বিএনপি নির্বাচন বর্জন করে চলায় তাঁরা সরকারবিরোধী ভোটারদের সমর্থন পাচ্ছেন, এটা অনেকের মত। ধর্মীয় মনোভাবের মানুষজন তাঁদের পছন্দমতো প্রার্থীর পক্ষে অবস্থান নিচ্ছেন, এমনটাও অনেকে বলেন। কেননা অংশগ্রহণমূলক হচ্ছে না বলে ভোট পড়ছে অব্যাহতভাবে কম এবং বিএনপির সমর্থকেরা নাকি ভোট বর্জনই করে চলেছেন। তবে অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়, গাজীপুরে সেটা হয়নি। আর আমার মত হলো, যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতি গ্রহণের খবর আর মাত্র এক দিন আগে এলে তার প্রভাব পড়ত আরও বেশি এবং সরকারবিরোধীরা আরও বেশি করে ভোট দিতে আসায় জায়েদা খাতুন জয়ী হতেন বড় ব্যবধানে।
যা-ই হোক, যা হয়নি তা তো হয়নি। যা হয়েছে, তারই মূল্যায়ন করা যাবে। ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগও নাকি এই পরাজয়ের মূল্যায়ন করবে। তবে সেটি করতে করতে আগামী মাসের মধ্যে আরও চার সিটিতে ভোট সম্পন্ন করবে নির্বাচন কমিশন। গাজীপুরের নির্বাচন তারা যেভাবে সম্পন্ন করেছে; কখনো কখনো কিছু কঠোর পদক্ষেপ নিয়ে, সেই ধারা তাদের এখন অব্যাহত রাখতে সচেষ্ট হতে হবে। সরকার, নির্বাচন কমিশন ও মাঠপর্যায় পর্যন্ত প্রশাসন কী করছে, সেটা এখন আরও বেশি পর্যবেক্ষণ করবেন যুক্তরাষ্ট্রসহ তার মিত্র দেশের প্রতিনিধিরা। ওই সব অঞ্চলের ভোটারসহ সারা দেশের মানুষেরই আগ্রহ আরও বেড়ে যাবে বাকি চারটি নির্বাচনে। মিডিয়ায়ও এগুলোর খবর আরও বেশি করে আসবে। এতে একটা প্রত্যাশার চাপ তৈরি হবে প্রধানত নির্বাচন কমিশনের ওপর। সরকার আর প্রশাসনের ওপরও। গাজীপুরের নির্বাচনের চেয়ে নেতিবাচক কিছু ঘটলে তার সমালোচনা তীব্র থেকে তীব্রতর হবে এবং কোনো কোনোটা হয়তো হয়ে যাবে ইস্যু। সৃষ্ট পরিস্থিতিতে সরকার সেটা ‘অ্যাফোর্ড’ করতে পারবে কি? বিএনপি সুনির্দিষ্ট বক্তব্য দিয়ে এসব নির্বাচন বর্জন করছে—সন্দেহ নেই। তারা অংশ না নেওয়ায় নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হচ্ছে না, সেটাও ঠিক। কিন্তু তাদের সমর্থকেরা তো এসব নির্বাচনে ঠিকই অংশ নেবেন, এমনকি এখন আরও উৎসাহী হয়ে। ভোটারদের একটা বড় অংশ আবার নতুন। অনেক দিন তাঁরা হয়তো কোনো নির্বাচনেই ভোট দিতে যেতে উৎসাহী হননি। তাঁরাও গাজীপুরের অভিজ্ঞতায় ভোটকেন্দ্রে যেতে উজ্জীবিত হবেন মনে হয়।
যত দূর জানি, বাকি সিটি নির্বাচনগুলোও ইভিএমে অনুষ্ঠিত হবে এবং ভোটকেন্দ্রে বসানো হবে সিসি ক্যামেরা। ভোটগ্রহণের এই নতুন ব্যবস্থাপনাও মানুষকে ভোটাধিকার প্রয়োগে উৎসাহী করবে বলে মনে হয়। ইভিএমের কিছু টেকনিক্যাল সমস্যায় ভোটদানে দেরি হচ্ছে অবশ্য। ভোট গণনা আর ফল প্রকাশেও কিছু বিলম্ব লক্ষ করা গেছে গাজীপুরে। তাতে সন্দেহ-অবিশ্বাসও দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। এমন ক্ষেত্রে ফেসবুকে দ্রুত উঠে আসা মানুষের তীব্র মতামতও একটা চাপ, যা এখন আরও বেশি করে পড়বে নির্বাচন কমিশন ও সরকারের ওপর। সরকার তো ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট সংশোধন করে এটাকে ভয়ভীতিমুক্ত করে তোলার ব্যাপারেও প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। সুতরাং মনে হয়, নির্বাচনসহ বিভিন্ন জরুরি বিষয়ে নাগরিকদের অভিমত প্রদানের প্রবাহ আরও জোরালো হবে। বাংলাদেশের জন্য আলাদা করে দেওয়া যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতিতে মতপ্রকাশের স্বাধীনতাও অবারিত করতে বলা হয়েছে। এই পদক্ষেপকে সরকার এখন পর্যন্ত ইতিবাচকভাবে নেওয়ার পক্ষেই কথাবার্তা বলছে। সরকার বলছে, আমরা তো ‘সুষ্ঠু নির্বাচন’ই করতে চাই। প্রধানমন্ত্রী নিজে একাধিকবার এমন মনোভাব ব্যক্ত করেছেন। এ অবস্থায় বাকি সিটি নির্বাচনগুলো অংশগ্রহণমূলক না হলেও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার সুযোগ তো রয়েই গেছে। কোনো কোনো নির্বাচনবোদ্ধা হয়তো বলবেন, বেছে নেওয়ার মতো যথেষ্টসংখ্যক প্রার্থী না থাকলে নির্বাচন তো অর্থবহ হয় না। এ বক্তব্যে কিছু সত্যতা থাকলেও ভোটাররা কিন্তু তাঁদের অংশগ্রহণ অনেক বাড়িয়ে দেবেন চোখের সামনে থাকা প্রার্থীদের নিয়েই।
গাজীপুরে কি সেটা ঘটতে দেখা যায়নি? বরিশালেও হয়তো একই ঘটনা ঘটবে হাতপাখা মার্কার প্রার্থীকে ঘিরে। ২৭ মের আজকের পত্রিকায় ছোট্ট করে তাঁর যে সাক্ষাৎকার এসেছে, তাতে এই প্রার্থীকে বেশ আত্মপ্রত্যয়ী মনে হয়। সেখানেও ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীর মনোনয়ন ঘিরে বড় বিভক্তি আছে স্থানীয় পর্যায়ে এবং সেটা দূরীকরণের উদ্যোগ সফল হতে দেখা যাচ্ছে না। দীর্ঘদিন ধরে রাষ্ট্রক্ষমতার বিশ্বস্ত সহযোগী জাতীয় পার্টির প্রার্থীরাও গরম কথা বলছেন। পরিস্থিতি ঘুরছে বলেই মনে হয়। এ অবস্থায় সরকারপক্ষ মাথা গরম করে কিছু করে ফেললে সেটা হিতে বিপরীত হওয়ার শঙ্কাই বেশি। সিটি নির্বাচনে যা-ই ঘটুক, তাতে তো আর সরকারের বদল ঘটবে না। সরকার থেকেই যাবে এবং সিটি নির্বাচন চলাকালেও তাকে জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে সার্বিক পরিস্থিতি সামলানোর কাজে মনোনিবেশ করতে হবে বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে।
লেখক: সাংবাদিক, বিশ্লেষক

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২১ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সাবেক মেয়র ও ক্ষমতাসীন দল থেকে দ্বিতীয় দফায় ‘চিরদিনের জন্য বহিষ্কৃত’ জাহাঙ্গীর আলমের মা জায়েদা খাতুন জিতে যেতে পারেন, এটা সম্ভবত কেউই ভাবতে পারেননি। নিবন্ধটি লেখার সময় জাতীয় দৈনিকগুলোয় তাঁর চমকপ্রদ বিজয় নিয়ে বিশ্লেষণধর্মী প্রতিবেদন দেখতে পাচ্ছি। এই নিবন্ধকারেরও কিছু প
২৯ মে ২০২৩
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সাবেক মেয়র ও ক্ষমতাসীন দল থেকে দ্বিতীয় দফায় ‘চিরদিনের জন্য বহিষ্কৃত’ জাহাঙ্গীর আলমের মা জায়েদা খাতুন জিতে যেতে পারেন, এটা সম্ভবত কেউই ভাবতে পারেননি। নিবন্ধটি লেখার সময় জাতীয় দৈনিকগুলোয় তাঁর চমকপ্রদ বিজয় নিয়ে বিশ্লেষণধর্মী প্রতিবেদন দেখতে পাচ্ছি। এই নিবন্ধকারেরও কিছু প
২৯ মে ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২১ দিন আগে
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সাবেক মেয়র ও ক্ষমতাসীন দল থেকে দ্বিতীয় দফায় ‘চিরদিনের জন্য বহিষ্কৃত’ জাহাঙ্গীর আলমের মা জায়েদা খাতুন জিতে যেতে পারেন, এটা সম্ভবত কেউই ভাবতে পারেননি। নিবন্ধটি লেখার সময় জাতীয় দৈনিকগুলোয় তাঁর চমকপ্রদ বিজয় নিয়ে বিশ্লেষণধর্মী প্রতিবেদন দেখতে পাচ্ছি। এই নিবন্ধকারেরও কিছু প
২৯ মে ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২১ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সাবেক মেয়র ও ক্ষমতাসীন দল থেকে দ্বিতীয় দফায় ‘চিরদিনের জন্য বহিষ্কৃত’ জাহাঙ্গীর আলমের মা জায়েদা খাতুন জিতে যেতে পারেন, এটা সম্ভবত কেউই ভাবতে পারেননি। নিবন্ধটি লেখার সময় জাতীয় দৈনিকগুলোয় তাঁর চমকপ্রদ বিজয় নিয়ে বিশ্লেষণধর্মী প্রতিবেদন দেখতে পাচ্ছি। এই নিবন্ধকারেরও কিছু প
২৯ মে ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২১ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫