Ajker Patrika

সোনালি শিষে দুলছে স্বপ্ন

আবিদুর রহমান, কোম্পানীগঞ্জ
আপডেট : ২১ নভেম্বর ২০২১, ১৩: ২১
সোনালি শিষে দুলছে স্বপ্ন

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার মাঠে মাঠে দুলছে সোনালি ধানের শিষ। কাঙ্ক্ষিত ফলনের আশায় কৃষকের চোখে-মুখে দেখা দিয়েছে খুশির ঝিলিক। ইতিমধ্যে নতুন ধান কাটার প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন কৃষকেরা। বিভিন্ন বাড়ির সামনে ধান সেদ্ধ করা ও শুকানোর জন্য জায়গা তৈরি করছেন নারীরা।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, এ বছর উপজেলার ৮ হাজার ৯৫৪ হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ হয়েছে। গত বছর এই ধানের চাষ হয় ৮ হাজার হেক্টর জমিতে। গত বছরে বিঘাপ্রতি শুকনো ধান হয়েছে ২০ মণ। এ বছর তা বেড়ে ২২-২৩ মণ হওয়ার আশা করছে চাষিরা।

 এ বছর উপজেলায় উচ্চ ফলনশীল জাতের মধ্যে ব্রি ধান-৫১,৫২ ও বি-আর ১০ সবচেয়ে বেশি চাষ হয়েছে।

এ ছাড়া বি-আর ২২,২৩, ব্রি ধান-৩০,৩২, ৩৪,৩৯, ৪৯,৭১, ৭৫,৮৭, ৯৪ ও স্থানীয় মালতি, বিরইন, কাল জিরা, পাইজম জাতের ধান চাষ করেছেন কৃষকেরা।

উপজেলা কৃষি অফিসের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. মানিক মিয়া আজকের পত্রিকাকে বলেন, এ বছর হেক্টর প্রতি ধানের গড় উৎপাদন হয়েছে প্রায় ৫ দশমিক ৫ মেট্রিক টন। বন্যায় বীজতলা নষ্ট না হলে উৎপাদন আরও বাড়ত।

একই দপ্তরের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা ও পূর্ব ইসলামপুর ইউনিয়নের দায়িত্বে থাকা মাহমুদা বলেন, ইউনিয়নের ভাটরাই ও ঢালারপাড়সহ কয়েকটি গ্রামে ধান কাটা শুরু হয়েছে। এক সপ্তাহ পরে পুরোদমে ধান কাটা ও মাড়াই শুরু হয়ে যাবে।

দক্ষিণ রনিখাই ইউনিয়নের দায়িত্বে থাকা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা দিলোয়ার হোসেন বলেন, এই ইউনিয়নের খাগাইল, কায়েতগাঁও, মহিষখেড়, সুন্দাউড়া, গৌরিনগর, রাজাপুর, দরাকুল ও পূর্ণাছগাম গ্রামে আমনের ভালো ফলন হয়েছে। কৃষকেরা ধান কেটে ঘরে তোলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

গতকাল শনিবার উপজেলার নয়াগাঙ্গেরপাড়, লাছুখাল, পাড়ুয়া, খায়েরগাঁও, বালুচর, উৎমা, কামালবস্তি, মাঝেরগাঁও, ঢালারপাড়, রাজনগর এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সোনালি ধানে ছেয়ে গেছে বিস্তৃত এলাকা। সড়কের পাশের ধানখেতগুলোর এমন রূপে মুগ্ধ পথচারীরা।

নয়াগাঙ্গেরপাড় গ্রামের কৃষক শাহিন মিয়া বলেন, ‘এবার ধানের ফলন ভালো হয়েছে। তাই আমরা খুশি।’

পূর্ব ইসলামপুর ইউনিয়নের নতুন জীবনপুর গ্রামে বাড়ির আঙিনার সামনে এক নারী চুলা তৈরি করছিলেন। তিনি বলেন, আর এক সপ্তাহ পর ধান কাটা শুরু হবে। কাটা ধান মাড়াই করার পর চাল করার জন্য সেদ্ধ করতে হবে। এ জন্য তিনি চুলা তৈরি করে রাখছেন।

চাঁনপুর গ্রামের কৃষক মো. খলিল মিয়া বলেন, জমিতে ধান কাটার পর মাড়াই করার জন্য বাড়ির আঙিনা প্রস্তুত করা হচ্ছে।

দক্ষিণ রনিখাই ইউনিয়নের খাগাইল গ্রামের কৃষক ফয়জুল হক জানান, তিনি পাঁচ একর জমিতে রোপা আমনের আবাদ করেছেন। ফলন ভালো হয়েছে। ধান কাটার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

ইসলামপুর পশ্চিম ইউনিয়নের পাড়ুয়া গ্রামের কৃষক সিরাজুল ইসলাম জানান, এ বছর তিনি ১২ একর জমিতে রোপা আমনের চাষ করেছেন। আশানুরূপ ফলন হয়েছে। ফসল ঘরে তোলার কাজ শুরু করেছেন।

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আগাম জাতের রোপণ করা আমন ধান আগামভাবেই কাটা শুরু হয়েছে। ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহ থেকে পুরোদমে ধান কাটা শুরু হয়ে যাবে। এ বছর সন্তোষজনক ফলন হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত