Ajker Patrika

লোকালয়ে হাতি আসা ঠেকাতে সৌরবিদ্যুতের বেড়া

কাপ্তাই (রাঙামাটি) প্রতিনিধি
আপডেট : ২২ মে ২০২২, ১২: ২০
লোকালয়ে হাতি আসা ঠেকাতে সৌরবিদ্যুতের বেড়া

রাঙামাটির কাপ্তাইয়ে লোকালয়ে বন্য হাতির আসা ফেরাতে ‘সোলার ফেন্সিং’ নির্মাণ করছে বন বিভাগ। প্রায় ৮ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে সোলার ফেন্সিংয়ের নির্মাণকাজ দুই মাসের মধ্যে শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এতে হাতি ও মানুষের দ্বন্দ্বের অবসান হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

বন বিভাগ বলছে, সোলার ফেন্সিং সিস্টেম প্রযুক্তির মাধ্যমে বন্য হাতির পাল লোকালয়ে আসা রোধ সম্ভব হবে। হাতির পাল লোকালয়ে আসার চেষ্টা করলে সোলার ফেন্সিংয়ে হালকা বৈদ্যুতিক শক খেয়ে ফিরে যাবে, তবে এতে হাতির প্রাণহানি ঘটবে না।

কাপ্তাই বন বিভাগের তথ্যমতে, গত দুই বছরে কাপ্তাইয়ে বন্য হাতির আক্রমণে পর্যটকসহ ৮ জন নিহত ও অর্ধশতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন। একই সময়ে বন্য হাতির পাল মানুষের বাড়িঘরে আক্রমণ করছে। হাতির আক্রমণে খেত-খামারের ফসলসহ ফলদ ও বনজ বাগান বেশ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

বন বিভাগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার কাপ্তাই-নৌবাহিনী সড়ক ও কাপ্তাই-আসামবস্তি সড়কে প্রতিদিন শত শত মানুষ চলাচল করে। বিশেষ করে সেনাবাহিনীর কাপ্তাই শহীদ মোয়াজ্জম ঘাঁটি ও কাপ্তাই জীবতলী ৭ আর ই ব্যাটালিয়নের কারণে সড়ক দুটিতে পথচারী বেশি চলাচল করে। এ ছাড়া কাপ্তাই লেক প্যারাডাইস ও লেকশোর পিকনিক স্পট এলাকায় প্রচুর পর্যটকের আগমন ঘটে।

এদিকে কয়েক বছর কাপ্তাইয়ের ওই সড়কসহ পাহাড়ি লোকালয়ে বন্য হাতির উপদ্রব বেড়েছে। প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। এতে তৈরি হওয়া হাতি-মানুষ দ্বন্দ্ব অবসানে কাপ্তাইয়ে সোলার ফেন্সিং নির্মাণ করা হচ্ছে।

গত শুক্রবার কাপ্তাইয়ের নৌবাহিনী সড়কের পাশে গিয়ে দেখা যায়, হাতি চলাচলের পথে সোলার ফেন্সিং নির্মাণকাজে ব্যস্ত শ্রমিক ও বন বিভাগের কর্মীরা।

নির্মাণকাজের দায়িত্ব থাকা সিভিল ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম আকাশ জানান, সোলার ফেন্সিংয়ের জন্য ৮ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে প্রায় ৮০০টি পিলার নির্মাণ করা হবে। ১০ ফুট উচ্চতার পিলারের মধ্যে ৩ ফুট মাটির নিচে ও ৭ ফুট ওপরে থাকবে। ইতিমধ্যে ৫০টি পিলারের নির্মাণকাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। বাকি পিলারগুলোর কাজ চলছে বলে তিনি জানান।

কাপ্তাই বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা খন্দকার মাহমুদুল হক মুরাদ জানান, কাপ্তাইয়ের গভীর জঙ্গলে বেশ কয়েকটি বন্য হাতির পাল রয়েছে। অনেক সময় বনে খাবার না পেয়ে হাতিগুলো লোকালয়ে চলে আসে। এ সময় মানুষের ঘরবাড়ি, ফসলসহ জানমালের ক্ষতি করে। তাই বন্য হাতির অভয়ারণ্যগুলো চিহ্নিত করে সেখানে কলাগাছসহ হাতির খাবার বৃদ্ধির পাশাপাশি মানুষের সঙ্গে দ্বন্দ্ব নিরসনে সোলার ফেন্সিং নির্মাণ শুরু করেছে বন বিভাগ। এতে বন্য হাতি লোকালয়ে আসার প্রবণতা অনেকটা কমে যাবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুনতাসির জাহান জানান, ইতিমধ্যে কাপ্তাইয়ে সোলার ফেন্সিং নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে। হাতি-মানুষ দ্বন্দ্ব নিরসনে সোলার ফেন্সিং গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে তিনি মনে করেন।

কাপ্তাইয়ের বন বিভাগের সহ-ব্যবস্থাপনা কমিটির (সিএমসি) সভাপতি কাজী মাকসুদুর রহমান বাবুল জানান, হাতি-মানুষ দ্বন্দ্ব নিরসনে সোলার ফেন্সিংয়ের পাশাপাশি বন্য হাতির বাসস্থান ও খাবারসংকট দূর করতে বিভিন্ন উদ্যোগ নিতে হবে। তাহলে সাফল্য পাওয়া সম্ভব হবে বলে তিনি জানান।

১৯৯৯ সালে প্রায় সাড়ে ১৩ হাজার ভূমির ওপর কাপ্তাই ন্যাশনাল পার্ক স্থাপন করে বন অধিদপ্তর। এখানে বন্য হাতি, হরিণ, বুনো বিড়ালসহ বিভিন্ন জাতের জীবজন্তু ও নানা জাতের পাখির অবাধ বিচরণ রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারতের ভিসা নীতি দুই দেশের মানুষের মধ্যে সম্পর্কে প্রভাব ফেলছে: বলছেন কূটনীতিকেরা

ফাইনালে ভারতের ‘যম’কে খেলানো নিয়ে দোটানায় নিউজিল্যান্ড

বিকেলে সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে ছাত্রদল ও এনসিপি

নিষিদ্ধ হিযবুত তাহ্‌রীরের মিছিল, পুলিশের টিয়ার শেল ও সাউন্ড গ্রেনেডে ছত্রভঙ্গ

ভারত ও যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠকে বাংলাদেশ প্রসঙ্গ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত