শিপুল ইসলাম, তারাগঞ্জ (রংপুর)
পৈতৃক সূত্রে পাওয়া ১৮ শতক জমি আর দিনমজুরের আয়ের টাকায় সংসার চলত না রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নের পূর্ব কুর্শা গ্রামের সফিকুল ইসলামের। সঞ্চয় ছিল শূন্য। বিপদে পড়লে অন্যের কাছে হাত বাড়াতে হতো। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে প্রায় উপোস থাকতে হতো। এ অবস্থায় স্ত্রীর গয়না বিক্রি করে শুরু করেন মাছ চাষ।
সময়টা ২০০৯ সাল। আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি সফিকুল ইসলামকে। মাছ চাষ ভাগ্য বদলে দিয়েছে তাঁর। বর্তমান মাছ চাষ করে বছরের দুই লাখ ৫০ হাজার টাকা আয় করছেন। তাকে দেখে উৎসাহিত হয়ে গ্রামের আরও অনেকেই মাছ চাষে ঝুঁকে পড়েছেন। এখন মাছের কল্যাণে গোটা গ্রাম থেকে পালিয়ে গেছে অভাব। গ্রামটি পরিচিতি পেয়েছ মাছের গ্রাম হিসেবে।
তারাগঞ্জ উপজেলা সদর থেকে এক কিলোমিটার দূরে পূর্ব কুর্শা গ্রামের অবস্থান। গ্রামটির জনসংখ্যা আট শত। পরিবার সংখ্যা ১৮০ টি। এই গ্রামেরই যুবক সফিকুল ইসলাম। সম্প্রতি সরেজমিনে তাঁর বাড়িতে যাওয়ার পথে চোখে পড়ে অভাবনীয় এক দৃশ্য। গ্রামের মাঠ জুড়ে অসংখ্য পুকুর। গ্রামটির সব নারী-পুরুষকেই দেখা গেল কর্মব্যস্ত। কেউ পুকুরে মাছ ধরছে, কেউ মাছের খাদ্য তৈরি করছে।
প্রতিটি বাড়িতে দেখা গেল স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানা ও বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা। ঘরে ঘরে আছে বিদ্যুৎ সংযোগ ও টেলিভিশন। সফিকুলের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল তিনি জেলেদের সঙ্গে পুকুরে মাছ ধরছেন। সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে পুকুর থেকে উঠে এসে মাছ চাষের গল্প শোনালেন।
সফিকুলেরা চার ভাই বোন। সবার বড় তিনি। বাবার পৈতৃক সূত্রে পাওয়া ১৮ শতক জমি চাষের আয়ে সংসার চলতো না। দিনমজুরি করে সংসার চালাতেন। কাজ পেলে খাবার জুটতো, না হলে অনাহারে দিন কাটতো। তাঁর কষ্টের কথা শুনে বুড়িরহাট গ্রামের আফজাল হোসেন তাঁকে মাছ চাষের পরামর্শ দেন। ২০০৯ সালে স্ত্রীর গয়না বিক্রি করে ওই গ্রামের জিকরুল কাজীর একটি পুকুর ১৪ হাজার টাকায় এক বছরের জন্য লিজ নেন। তারাগঞ্জের বালাবাড়ি মৎস্য উৎপাদন খামার থেকে রুই, কাতলা, মৃগেল, সিলভার কার্প, সরপুটির পোনা এনে পুকুরে ছাড়েন। প্রথম বছরেই তাঁর লাভ হয় ৪৫ হাজার টাকা। এরপর পুকুরের আয়তন বাড়িয়ে দেন। লিজ নেন আরও দুটি পুকুর।
এখন চারটি পুকুরে মাছের চাষের পাশাপাশি পোনা মাছ বিক্রির ব্যবসা করছেন। মাছ ও পোনা বিক্রির আয়ের টাকায় পাকা বাড়ি করেছেন। ৫৫ শতক জমি কিনেছেন। সেই জমিতেও পুকুর করে করছেন মাছের চাষ। বর্তমান তাঁর মাসিক আয় গড়ে ২০ থেকে ২২ হাজার টাকা।
নিজের সংসারে সচ্ছলতা আনার পাশাপাশি গ্রামের অন্যদের কথাও ভুলে যাননি সফিকুল। তাঁদেরও পরামর্শ দিয়ে মাছ চাষে উৎসাহিত করেছেন। তাঁর দেখাদেখি গ্রামটির অনেকে মাছ ও পোনা বিক্রির ব্যবসা করে স্বাবলম্বী হয়েছেন। এ গ্রামে এখন কম বেশি সবার পুকুর রয়েছে।
লাল কাজী, মাহাবুল হোসেন, কাজী আব্দুর রাজ্জাক, কাজী জিকরুল হক মাছ চাষ করে মাসিক ১৫ থেকে ১৬ হাজার টাকা আয় করছেন। সফিকুলকে মডেল ধরে ওই গ্রামের দুলাল হোসেন, আব্দুর রহমান, রেজাউল, রাজু আহম্মেদসহ অনেকেই মাছের খামারের মালিক।
ওই গ্রামের বেলাল হোসেন তাঁর সাত বিঘা জমিতে শুধু ধান চাষ করে ১০ সদস্যের পরিবার চালাতে হিমশিম খেতেন। সফিকুলকে দেখে ২০১৫ সালে দুই বিঘা জমিতে একটি পুকুর খনন করে মাছ ও বাড়ির পাশে হলুদ, বেগুনের চাষ করে এক বছরে ৮০ হাজার টাকা আয় করেন। এ টাকায় আর একটি পুকুর খনন করে এখন দুটি পুকুরে মাছের চাষ করে বছরে লাখ টাকা আয় করছেন।
শিক্ষিত যুবক মশিয়ার রহমান গ্রামের শিশুদের প্রাইভেট পড়িয়ে সংসার চালাতেন। ২০১৪ সালে পৈতৃক সূত্রে পাওয়া দুটি পুকুরে গড়ে তোলেন মৎস্য খামার। চাষ করেন রুই, কাতলা, তেলাপিয়া, সিলভার কার্প। মাছ চাষের টাকায় এখন সুখের সংসার তাঁর।
পোনা উৎপাদনকারী সফিকুল ইসলাম বলেন, মাছ চাষের চেয়েও পোনার ব্যবসায় লাভ বেশি। প্রথমে এক কেজি পোনা ৪ হাজার টাকায় কিনে আনতে হয়। আরও আট হাজার টাকা খরচ করে এক বিঘার একটি পুকুরে ২০ দিন লালন-পালন করে ৩০ হাজার টাকা বিক্রি করা যায় সেই পোনা।
উপজেলা সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, সফিকুল ইসলাম মাছ চাষিদের কাছে মডেল। মৎস্য বিভাগ থেকে তাঁকে পরামর্শ দেওয়া হয়। তাঁকে দেখে গ্রামটির অনেকেই মাছ চাষে ভাগ্য বদল করেছেন। এই গ্রামের মাছ ও পোনা বাইরের জেলায় রপ্তানি করা হচ্ছে।
পৈতৃক সূত্রে পাওয়া ১৮ শতক জমি আর দিনমজুরের আয়ের টাকায় সংসার চলত না রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নের পূর্ব কুর্শা গ্রামের সফিকুল ইসলামের। সঞ্চয় ছিল শূন্য। বিপদে পড়লে অন্যের কাছে হাত বাড়াতে হতো। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে প্রায় উপোস থাকতে হতো। এ অবস্থায় স্ত্রীর গয়না বিক্রি করে শুরু করেন মাছ চাষ।
সময়টা ২০০৯ সাল। আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি সফিকুল ইসলামকে। মাছ চাষ ভাগ্য বদলে দিয়েছে তাঁর। বর্তমান মাছ চাষ করে বছরের দুই লাখ ৫০ হাজার টাকা আয় করছেন। তাকে দেখে উৎসাহিত হয়ে গ্রামের আরও অনেকেই মাছ চাষে ঝুঁকে পড়েছেন। এখন মাছের কল্যাণে গোটা গ্রাম থেকে পালিয়ে গেছে অভাব। গ্রামটি পরিচিতি পেয়েছ মাছের গ্রাম হিসেবে।
তারাগঞ্জ উপজেলা সদর থেকে এক কিলোমিটার দূরে পূর্ব কুর্শা গ্রামের অবস্থান। গ্রামটির জনসংখ্যা আট শত। পরিবার সংখ্যা ১৮০ টি। এই গ্রামেরই যুবক সফিকুল ইসলাম। সম্প্রতি সরেজমিনে তাঁর বাড়িতে যাওয়ার পথে চোখে পড়ে অভাবনীয় এক দৃশ্য। গ্রামের মাঠ জুড়ে অসংখ্য পুকুর। গ্রামটির সব নারী-পুরুষকেই দেখা গেল কর্মব্যস্ত। কেউ পুকুরে মাছ ধরছে, কেউ মাছের খাদ্য তৈরি করছে।
প্রতিটি বাড়িতে দেখা গেল স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানা ও বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা। ঘরে ঘরে আছে বিদ্যুৎ সংযোগ ও টেলিভিশন। সফিকুলের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল তিনি জেলেদের সঙ্গে পুকুরে মাছ ধরছেন। সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে পুকুর থেকে উঠে এসে মাছ চাষের গল্প শোনালেন।
সফিকুলেরা চার ভাই বোন। সবার বড় তিনি। বাবার পৈতৃক সূত্রে পাওয়া ১৮ শতক জমি চাষের আয়ে সংসার চলতো না। দিনমজুরি করে সংসার চালাতেন। কাজ পেলে খাবার জুটতো, না হলে অনাহারে দিন কাটতো। তাঁর কষ্টের কথা শুনে বুড়িরহাট গ্রামের আফজাল হোসেন তাঁকে মাছ চাষের পরামর্শ দেন। ২০০৯ সালে স্ত্রীর গয়না বিক্রি করে ওই গ্রামের জিকরুল কাজীর একটি পুকুর ১৪ হাজার টাকায় এক বছরের জন্য লিজ নেন। তারাগঞ্জের বালাবাড়ি মৎস্য উৎপাদন খামার থেকে রুই, কাতলা, মৃগেল, সিলভার কার্প, সরপুটির পোনা এনে পুকুরে ছাড়েন। প্রথম বছরেই তাঁর লাভ হয় ৪৫ হাজার টাকা। এরপর পুকুরের আয়তন বাড়িয়ে দেন। লিজ নেন আরও দুটি পুকুর।
এখন চারটি পুকুরে মাছের চাষের পাশাপাশি পোনা মাছ বিক্রির ব্যবসা করছেন। মাছ ও পোনা বিক্রির আয়ের টাকায় পাকা বাড়ি করেছেন। ৫৫ শতক জমি কিনেছেন। সেই জমিতেও পুকুর করে করছেন মাছের চাষ। বর্তমান তাঁর মাসিক আয় গড়ে ২০ থেকে ২২ হাজার টাকা।
নিজের সংসারে সচ্ছলতা আনার পাশাপাশি গ্রামের অন্যদের কথাও ভুলে যাননি সফিকুল। তাঁদেরও পরামর্শ দিয়ে মাছ চাষে উৎসাহিত করেছেন। তাঁর দেখাদেখি গ্রামটির অনেকে মাছ ও পোনা বিক্রির ব্যবসা করে স্বাবলম্বী হয়েছেন। এ গ্রামে এখন কম বেশি সবার পুকুর রয়েছে।
লাল কাজী, মাহাবুল হোসেন, কাজী আব্দুর রাজ্জাক, কাজী জিকরুল হক মাছ চাষ করে মাসিক ১৫ থেকে ১৬ হাজার টাকা আয় করছেন। সফিকুলকে মডেল ধরে ওই গ্রামের দুলাল হোসেন, আব্দুর রহমান, রেজাউল, রাজু আহম্মেদসহ অনেকেই মাছের খামারের মালিক।
ওই গ্রামের বেলাল হোসেন তাঁর সাত বিঘা জমিতে শুধু ধান চাষ করে ১০ সদস্যের পরিবার চালাতে হিমশিম খেতেন। সফিকুলকে দেখে ২০১৫ সালে দুই বিঘা জমিতে একটি পুকুর খনন করে মাছ ও বাড়ির পাশে হলুদ, বেগুনের চাষ করে এক বছরে ৮০ হাজার টাকা আয় করেন। এ টাকায় আর একটি পুকুর খনন করে এখন দুটি পুকুরে মাছের চাষ করে বছরে লাখ টাকা আয় করছেন।
শিক্ষিত যুবক মশিয়ার রহমান গ্রামের শিশুদের প্রাইভেট পড়িয়ে সংসার চালাতেন। ২০১৪ সালে পৈতৃক সূত্রে পাওয়া দুটি পুকুরে গড়ে তোলেন মৎস্য খামার। চাষ করেন রুই, কাতলা, তেলাপিয়া, সিলভার কার্প। মাছ চাষের টাকায় এখন সুখের সংসার তাঁর।
পোনা উৎপাদনকারী সফিকুল ইসলাম বলেন, মাছ চাষের চেয়েও পোনার ব্যবসায় লাভ বেশি। প্রথমে এক কেজি পোনা ৪ হাজার টাকায় কিনে আনতে হয়। আরও আট হাজার টাকা খরচ করে এক বিঘার একটি পুকুরে ২০ দিন লালন-পালন করে ৩০ হাজার টাকা বিক্রি করা যায় সেই পোনা।
উপজেলা সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, সফিকুল ইসলাম মাছ চাষিদের কাছে মডেল। মৎস্য বিভাগ থেকে তাঁকে পরামর্শ দেওয়া হয়। তাঁকে দেখে গ্রামটির অনেকেই মাছ চাষে ভাগ্য বদল করেছেন। এই গ্রামের মাছ ও পোনা বাইরের জেলায় রপ্তানি করা হচ্ছে।
সৈয়দ মুজতবা আলীর ‘দেশে বিদেশে’ বইয়ের হরফুন মৌলা বা সকল কাজের কাজী আবদুর রহমানের বলা একটি বাক্য—‘ইনহাস্ত ওয়াতানাম’—‘এই আমার জন্মভূমি’। সে কথা বলার সময় আফগানি আবদুর রহমানের চোখেমুখে যে অম্লান দ্যুতি ছড়িয়ে পড়েছিল, সে কথা দিব্যি অনুভব করে নেওয়া যায়...
৮ ঘণ্টা আগেবিআরটিসির বাস দিয়ে চালু করা বিশেষায়িত বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) লেনে অনুমতি না নিয়েই চলছে বেসরকারি কোম্পানির কিছু বাস। ঢুকে পড়ছে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। উল্টো পথে চলছে মোটরসাইকেল। অন্যদিকে বিআরটিসির মাত্র ১০টি বাস চলাচল করায় সোয়া চার হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্প থেকে...
১৭ দিন আগেগাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
২৪ নভেম্বর ২০২৪ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
২০ নভেম্বর ২০২৪