Ajker Patrika

মাস্তি করেই মিঠুনের বাজিমাত

রিমন রহমান, রাজশাহী
আপডেট : ০৮ ডিসেম্বর ২০২১, ১০: ১৪
মাস্তি করেই মিঠুনের বাজিমাত

কোনো মহা আয়োজন নেই, বিষয়গুলো খুবই সাদামাটা। গ্রামের বখাটে তরুণ-তরুণীরা যা যা করেন, তেমনই কর্মকাণ্ড। অথচ এসব কর্মকাণ্ড দেখিয়েই ইউটিউব চ্যানেলে এক কোটির বেশি গ্রাহক জুটিয়েছেন নওগাঁর নিয়ামতপুরের এক তরুণ। তাঁর চ্যানেল এখন ব্যক্তিপর্যায়ে দেশে সবচেয়ে বড় ইউটিউব চ্যানেল।

মতিউর রহমান মিঠুন নামে এই তরুণের চার বছর আগেও ভালো একটি স্মার্টফোন ছিল না। বন্ধুর স্মার্টফোন ধার করে ভিডিও করতেন। এডিটও করতেন অন্যের স্মার্টফোনে। সেই মিঠুন এখন পুরোদস্তুর পেশাদার নির্মাতা। তাঁর চ্যানেলের নাম ‘মহা ফান টিভি’। সেখান থেকে মাসে আয় লাখ লাখ টাকা। ২০টি পরিবার চলে তাঁর চ্যানেলের আয়ে।

নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার কালাইডাঙ্গা গ্রামের এই তরুণ ইতিমধ্যে দেশের সব নামীদামি ইউটিউবারকে পেছনে ফেলে দিয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার তাঁর চ্যানেলে গ্রাহক (সাবস্ক্রাইবার) ছিল ১ কোটি ১৬ লাখ।

২০১৬ সালে নিয়ামতপুর ডিগ্রি কলেজ থেকে বিএ পাস করে ৫-৭ হাজার টাকা বেতনের একটি চাকরির জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরেছেন। কিন্তু পাননি। এরপর সিদ্ধান্ত নেন ইউটিউবে ভিডিও দেবেন। এক বন্ধুর সঙ্গে মিলে স্থির করেন মজার মজার ভিডিও বানাবেন। যাতে কোনো কথা থাকবে না, শুধু অঙ্গভঙ্গি দেখেই মানুষ মজা পাবে। শুরু হলো সেই কাজ।

মিঠুন বলেন, ধীরে ধীরে দল বড় হতে থাকল। এখন দলে ২০ জন কাজ করেন। এদের একজন হলেন মোহাম্মদ শামীম। ভালো রেজুলেশনের ভিডিও করার জন্য শুরুতে এই শামীমের স্মার্টফোন ধার নিয়েছিলেন মিঠুন। সেই ফোনে চলত ভিডিও ধারণ এবং এডিটিংয়ের কাজ। মিঠুনসহ অভিনয় করতেন পাঁচজন। রাত জেগে মিঠুন এডিটিং শিখতেন ইউটিউবেরই ভিডিও দেখে দেখে। নিজের চ্যানেলে কিছু ভিডিও দেওয়ার পর ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে ইউটিউব থেকে প্রথমবার আট হাজার টাকা আয় করেন। এরপরই ভিডিও বানানোর ঝোঁক বেড়ে যায়। কেনেন একটা পুরোনো ল্যাপটপ। দলে লোকের সংখ্যা বাড়ানো হয়। পরের মাসে আয় হয় ৪০ হাজার টাকা। এবার দুই তরুণীকেও দলে নেন। শুরুতে শুধু ইউটিউব চ্যানেলের জন্য ভিডিও বানান। পরে দেখলেন, তাঁর বানানো ভিডিও বিভিন্ন ফেসবুক পেজে আপলোড হচ্ছে। অন্যরা সেখান থেকে আয় করছে। এরপর ফেসবুকে পেজ খোলেন। এখন দুটো থেকেই আয় হচ্ছে।

মিঠুন জানালেন, প্রতি মাসে গড়ে পাঁচটি ভিডিও আপলোড করেন। পাঁচ-ছয় মিনিটের এসব ভিডিওতে থাকে একদল তরুণ ও দুই তরুণীর মজার সব কার্যকলাপ। বরেন্দ্র অঞ্চলের মাঠে-ঘাটে এসব ভিডিও ধারণ করা হয়। মিঠুনই এসব ভিডিওর ‘পরিচালক’। মিঠুনের দলে যাঁরা কাজ করেন তাঁরা মাসিক বেতনভুক্ত। এদের বাড়িভাড়া, খাবার, চিকিৎসা, যাতায়াত—সব খরচই দেন মিঠুন।

মিঠুনের ভিডিওতে নানা জিনিস ভেঙে চুরমার করতে দেখা যায়। মাঠে-ঘাটে এসব করতে দেখে গ্রামের লোকেরা একসময় তাঁকে পাগল বলতেন। মিঠুনের কথায়, গ্রামবাসী তাঁকে বখাটেও বলেছিলেন। সে কারণে দূরে গিয়ে লুকিয়ে লুকিয়ে শুটিং করতেন। এখন গ্রামের সবাই তাঁকে সহযোগিতাও করেন, গর্বও করেন।

মিঠুন বললেন, মাস্তি করেই পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ইউটিউব চ্যানেলের স্বপ্ন দেখেন তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ডিএনসিসির পদ ছাড়লেন এস্তোনিয়ার নাগরিক আমিনুল ইসলাম

ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিল নিয়ে ভারতের সঙ্গে উত্তেজনা, চ্যালেঞ্জের মুখে বাংলাদেশ

এনআইডির নাম ও জন্মতারিখ সংশোধনের দায়িত্বে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তারা

পদত্যাগ করব না, আলোচনা করে সমাধান করব: কুয়েট উপাচার্য

কাশ্মীরে পর্যটকদের ওপর অতর্কিত গুলি, নিহত ২৬

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত