Ajker Patrika

শিক্ষক-প্রশাসন বিরোধ প্রকাশ্যে

মিনহাজ তুহিন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
শিক্ষক-প্রশাসন বিরোধ প্রকাশ্যে

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) সিন্ডিকেটে শিক্ষক প্রতিনিধি ছাড়া আর কোনো সভা না করতে উপাচার্যকে চিঠি দিয়েছে আওয়ামী ও বামপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন হলুদ দল। একই সঙ্গে চিঠিতে  ৩০ নভেম্বরের মধ্যে সিন্ডিকেটে শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া চিঠিতে সম্প্রতি ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. হেলাল উদ্দিন নিজামীর বিরুদ্ধে প্রশাসন অবমাননাকর পদক্ষেপ নিয়েছে উল্লেখ করে ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়। একই সঙ্গে হলুদ দলের বেশ কয়েকজন শিক্ষকের পদোন্নতির আবেদন দীর্ঘদিন ধরে ফেলে রেখে তাঁদের পরে আবেদনকারীদের পদোন্নতি দিয়ে চরম বৈষম্য সৃষ্টি করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। অতিরিক্ত শিক্ষক নিয়োগে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে বলেও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়। সব মিলিয়ে আওয়ামী ও বামপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন হলুদ দল ও প্রশাসনের মধ্যে বিরোধ স্পষ্ট হচ্ছে।

গত সোমবার সংগঠনের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. সেকান্দর চৌধুরীর সই করা চিঠিটি উপাচার্য অধ্যাপক শিরীণ আখতার বরাবর পাঠানো হয়। চিঠির একটি কপি আজকের পত্রিকার হাতে এসেছে। চিঠিতে বলা হয়, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রদত্ত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ১৯৭৩ অনুযায়ী সিন্ডিকেটসহ অন্যান্য বিধিবদ্ধ পর্ষদের শূন্য পদসমূহ দ্রুততম সময়ে পূরণ করা আবশ্যক। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটে শিক্ষকদের প্রতিনিধিত্বকারী অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছয়টি পদ দীর্ঘদিন ধরে শূন্য বিধায় শিক্ষকদের অধিকার ও বিশ্ববিদ্যালয় আইন মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্ন হচ্ছে। অতএব, ৩০ নভেম্বরের মধ্যে সিন্ডিকেটে শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করতে হবে। শিক্ষক প্রতিনিধিবিহীন আর কোনো সিন্ডিকেট সভা না করার জন্য দাবি জানানো হচ্ছে।

সম্প্রতি প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী পদের অতিরিক্ত শিক্ষক নিয়োগে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে উল্লেখ করে চিঠিতে বলা হয়, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সিন্ডিকেট সভায় বিজ্ঞাপনের অতিরিক্ত নিয়োগকে শুদ্ধাচার পরিপন্থী ঘোষণা দিয়েছে। সংশোধনপূর্বক অতিরিক্ত নিয়োগ প্রদান করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তির ক্ষতি করা হয়েছে। এসবের অপনোদন করতে হবে।’

চিঠিতে উপাচার্য-ডিন বাগ্‌বিতণ্ডার বিষয়ে বলা হয়, ‘ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. হেলাল উদ্দিন নিজামীর বিরুদ্ধে প্রশাসন অবমাননা ও নিবর্তনমূলক পদক্ষেপে হলুদ দলের সভায় গভীর উদ্বেগ ও তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়। ভবিষ্যতে কোনো শিক্ষককে যেন প্রশাসনের রোষানলের শিকার না হতে হয় সেই দাবি জানাই।’

চিঠিতে হলুদ দলের বেশ কয়েকজন শিক্ষকের পদোন্নতির আবেদন দীর্ঘদিন ধরে ফেলে রেখে তাঁদের পরে আবেদনকারীদের পদোন্নতি দিয়ে চরম বৈষম্য সৃষ্টি করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। এ ছাড়া, অতিসম্প্রতি কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের সাবেক ডিন অধ্যাপক ড. মো. সেকান্দর চৌধুরীকে সাদা কাগজে মাত্র ৩০ মিনিটের নোটিশে বাংলাদেশ স্টাডিজ বিভাগের সভাপতির পদ থেকে অত্যন্ত অপমানজনকভাবে অব্যাহতি দেওয়ার ঘটনাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশের অন্তরায় বলে উল্লেখ করা হয়।

এর আগে গত ৩ নভেম্বর সিন্ডিকেটে অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক, সহকারী অধিকার ও প্রভাষক ক্যাটাগরিতে নির্বাচন দিতে উপাচার্যকে চিঠি দেয় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। পরে ২২ দিন পরও নির্বাচনের কোনো উদ্যোগ না নেওয়ায় এ বিষয়ে উপাচার্যের কাছে জানতে চান ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন অধ্যাপক হেলাল উদ্দীন নিজামী। এ সময় উপাচার্য বসা থেকে উঠে ডিনকে শাসাতে থাকেন এবং নির্বাচন দেবেন না বলে জানান। পরে এ বিষয়ে গণমাধ্যমকে বক্তব্য দেওয়ায় ডিনকে ব্যাখ্যা দিতে চিঠি দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

জানতে চাইলে হলুদ দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মো. সেকান্দর চৌধুরী চিঠি পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করলেও কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। ড. সেকান্দর চৌধুরী বলেন, ‘স্ট্যান্ডিং কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বুধবার (আজ) এই বিষয়ে গণমাধ্যমকে জানানো হবে।’

এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতারকে মোবাইল ফোনে কল দিলেও তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

‘ভারতে ঢুকে’ পাকিস্তানি সেনাদের গুলি, সীমান্তে সংঘাত গড়াল ষষ্ঠ দিনে

বন্ধুকে ছাত্রলীগ সাজিয়ে পুলিশে দিয়ে তাঁর প্রেমিকাকে ধর্ষণ করলেন ছাত্রদল নেতা

মানিকগঞ্জে রাতের আঁধারে স্থানান্তর করা বিদ্যালয় ভবন পরিদর্শনে কর্মকর্তারা

পরিপাকতন্ত্রের ওষুধের পেছনেই মানুষের ব্যয় সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত