Ajker Patrika

‘বাজার করতে সব শেষ সংসার চালামু ক্যামনে’

কালাই (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৮ মার্চ ২০২২, ২০: ৩৩
‘বাজার করতে সব শেষ সংসার চালামু ক্যামনে’

জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার তিশরাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আবুল কালাম (৬৫)। কৃষিকাজ করেই চলে তাঁর সাত সদস্যের সংসার। কিন্তু যে হারে তেল-সবজির দাম বাড়ছে, তাতে কীভাবে সংসার চালাবেন—এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন। গত বছর এক লিটারের বোতলজাত ভোজ্যতেল কিনলেও এখন সেটির দাম প্রায় দ্বিগুণ। তাই খোলা তেল কিনতে দেখা গেছে তাঁকে।

শুধু আবুল কালাম নন, ভোজ্যতেল, সবজি আর নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় সংসার চালানো নিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন তাঁর মতো কালাই উপজেলার হাজারো মানুষ।

গতকাল সোমবার উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজার ঘুরে দেখা গেছে, খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৮৫-১৯০ টাকা কেজি। বোতলজাত তেল বিক্রি হচ্ছে ১৬৮-১৭০ টাকায়। নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।

পাঁচ লিটারের বোতল কিনতে হচ্ছে ৭৮০-৮০০ টাকায়। গত সপ্তাহে আটা ও চিনির দাম প্রতি কেজিতে বেড়েছে ৫ টাকা করে। প্যাকেটজাত আটা প্রতি কেজি ৩৮-৪০ ও খোলা আটা ৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর চিনি বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়।

এক সপ্তাহের ব্যবধানে সবজিতে ১৫-২০ টাকা পর্যন্ত দর বেড়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে কাঁচা মরিচ ও করলার। প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ এক সপ্তাহ আগে ছিল ৬০ টাকা, এখন ১০০ টাকা, করলা ১৪০, পটোল ১২০-১৪০, পেঁয়াজ ৫০-৬০, শজনে ডাঁটা ২৪০, বেগুন ৩০-৪০, শসা ৩৫-৪০ ও শিম ৬০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।

কাঁচাবাজারে আসা ক্রেতা আব্দুল হাকিম বলেন, ‘শাকসবজির ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসে দাম নিম্ন আয়ের মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। গরুর মাংসের মূল্য বৃদ্ধি দেখে মুরগি কিনতে গেলাম, সেখানেও দেখি চড়া দাম। এখন ডিম আর কিছু সবজি কিনে নিয়ে বাড়ি যাচ্ছি।’

দিনমজুর জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘দিন আনি দিন খায়। এক দিন কাজ না করলে ধার করতে হয়। সবকিছুর দাম দিন দিন বেড়ে গেলেও মজুরির দাম বাড়ে না। বাজার করতে এসে সব টাকা শেষ হয়ে গেছে, এখন সংসার চালামু ক্যামনে।’

অপর দিকে দোকানে মূল্যতালিকা টাঙানোর কথা থাকলেও ব্যবসায়ীরা তা মানছেন না। ফলে প্রতিদিনই দামের পার্থক্য দেখতে হয় ক্রেতাদের।

এদিকে দাম কিছুটা নাগালে থাকায় ক্রেতারা ব্রয়লার মুরগি এবং ডিম কিনছেন বেশি। যদিও সপ্তাহে দাম বেড়েছে ১০ টাকা। ব্রয়লার ১৬০ টাকা, সোনালি মুরগি ২৬০ ও দেশি ৩০০-৩২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর ফার্মের ডিম বিক্রি হচ্ছে প্রতি হালি ৩৫-৪০ টাকায়।

উপজেলার খুচরা সবজি ব্যবসায়ী খায়রুল কাজী বলেন, ‘আমরা বেশি দামে কিনে বেশি দামে বিক্রি করছি। এ কারণে সব সময় ক্রেতাদের ক্ষোভের মুখে পড়তে হয়।’

উপজেলার মোস্তফা স্টোরের স্বত্বাধিকারী রুদ্র ফারদিন বলেন, ‘খাদ্যসামগ্রীর মধ্যে ভোজ্যতেলের দাম বেড়েছে দ্বিগুণ। খুচরা বাজারে খোলা সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ১৬৮-১৭০ ও কেজি ১৮৫-১৯০ টাকা দরে এবং বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৬৮-১৭০ টাকায় বিক্রি করছি।’

এদিকে মাছের বাজারে যেন আগুন! মাছ বিক্রেতা শ্যামল চন্দ্র মালী বলেন, প্রতি কেজি রুই ২৪০, সিলভার বড় ২৬০, মাগুর ৮০০, শিং ৪০০, শৌল ৬০০, মৃণাল কার্প ২৬০, বৃকেট ২০০, কই মাছ ৩২০, পাঙাশ ১৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

জয়পুরহাট জেলা জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক ফজলে এলাহী বলেন, ‘প্রত্যেক দোকান বা প্রতিষ্ঠানে পণ্যের মূল্যতালিকা সহজে দৃশ্যমান স্থানে প্রদর্শন করতে হবে। এ ছাড়া আমাদের বাজার মনিটরিং অব্যাহত রয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রশিক্ষণ ছাড়াই মাঠে ৪২৬ সহায়ক পুলিশ কর্মকর্তা

গ্রাহকের ২,৬৩৫ কোটি টাকা দিচ্ছে না ৪৬ বিমা কোম্পানি

‘এই টাকা দিয়ে কী হয়, আমি এত চাপ নিচ্ছি, লাখ পাঁচেক দিতে বলো’, ওসির অডিও ফাঁস

১০০ বছর পর জানা গেল ‘অপ্রয়োজনীয়’ প্রত্যঙ্গটি নারীর প্রজননের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়: তিন দফা দাবিতে সোমবার মাঠে নামছেন শিক্ষার্থীরা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত