Ajker Patrika

ধর্মঘটে স্থবির জনজীবন

জামালপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ০৫ ডিসেম্বর ২০২১, ১৬: ৫৩
ধর্মঘটে স্থবির জনজীবন

টানা পরিবহন ধর্মঘটে সারা দেশের মতো জামালপুরেও স্থবির হয়ে পড়েছে জনজীবন। চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন সব শ্রেণিপেশার মানুষ। হঠাৎ জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে গত শুক্রবার সকাল থেকে পরিবহন মালিক ও শ্রমিকেরা ধর্মঘট শুরু করে।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, পরিবহন ধর্মঘট অব্যাহত থাকলে নিত্যপণ্যের দাম আরও বেড়ে যাবে। দ্রুত এর সমাধান দরকার। এজন্য তারা সরকারের দৃষ্টি কামনা করেন।

জানা গেছে, বাস চলাচল বন্ধ থাকায় মানুষ যাতায়াতে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। ট্রাক বন্ধ থাকায় শীতের সবজি রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠানো যাচ্ছে না। অন্যান্য পণ্য পরিবহনেও স্থবিরতা নেমে এসেছে। ধর্মঘটের প্রভাব পড়েছে সব জায়গায়।

শহরের আনন্দগঞ্জ বাজারে মাছের আড়তে গিয়ে দেখা গেছে, মাছের সংকট। মাছ ব্যবসায়ী নাছির বলেন, ৩দিন ধরে ধর্মঘট। এই কারণে দেশের বিভিন্নস্থান থেকে মাছ আসা বন্ধ রয়েছে। জেলার আশপাশ থেকে যে মাছ বাজারে উঠছে তা দিয়ে জেলার চাহিদা পূরণ হচ্ছে না। শহরের কাচারীপাড়ার বাসিন্দা সুলতানা বেগম বলেন, আড়ত ঘুরে চাহিদা মতো মাছ পাচ্ছে না। বাড়িতে মেহমান। তাই বড় মাছ কিনতে এসেছি। কোনো মাছই পেলাম না। আব্দুল বারেক বলেন, মাছ না পেয়ে শুঁটকি মাছ কিনেছি।

জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে বহির্বিভাগে গিয়ে দেখা যায় রোগীর সংখ্যা কিছুটা কম। ধর্মঘটের কারণে গাড়ি বন্ধ। তাই দূরদূরান্ত থেকে বহির্বিভাগে প্রাথমিক চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। স্বাভাবিক সময় বহির্বিভাগের সামনে রোগীর ভিড় থাকে। কিন্তু গতকাল বর্হিবিভাগের সামনে মাত্র ৫-৬ জন রোগী দেখা গেছে।

আব্দুর রহিম নামে এক ব্যক্তি বলেন, ধর্মঘটের কারণে রোগী কমে গেছে। উপজেলা থেকে রোগী আসছে। বকশীগঞ্জের সালাম বলেন, সকালে সিএনজি দিয়ে এসেছি। ৬০ টাকার ভাড়া ৮০ টাকা নিয়েছে।

জামালপুর বাস টার্মিনালে গিয়ে গেছে, পরিবহন ড্রাইভারেরা সারি সারিভাবে বাস রেখে দিয়েছেন। ড্রাইভার মোফাজল হোসেন বলেন, সরকার যখন যা ইচ্ছা তাই করবে আর আমরা পাবলিকের হাতে মার খাব। সরকারের উচিত পরিবহন মালিকদের সঙ্গে বসে তেলের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া।

ইসলামপুর উপজেলার ইসলামইল হোসেন বলেন, সরকার আর পরিবহন মালিকদের রেষারেষিতে আমরা সাধারণ মানুষ বিপদে পড়েছি। বাস যাত্রী আব্দুল করিম বলেন, বাসে যাতায়াত করি। এতে অনেক সুবিধা হয়। এখন খরচ বেশি হচ্ছে। তিনি বলেন, ত্রিশাল যাবো। এখন ট্রেনে ময়মনসিংহ নেমে আবার রিকশা অটোরিকশায় যেতে হবে। বাস বন্ধ থাকায় আমরা নাজেহাল হচ্ছি।

জামালপুর চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক ইকরামুল হক নবিন বলেন, পরিবহন ধর্মঘটের কারণে সব ধরনের মালামাল আসা বন্ধ রয়েছে। চাল, ডাল, সার, তেলসহ নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী আসছে না। পরিবহন ধর্মঘট অব্যাহত থাকলে নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যাবে। তিনি দ্রুত এর সমাধানের জন্য সরকারের দৃষ্টি কামনা করেন।

সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সভাপতি জাহাঙ্গীর সেলিম বলেন, ধর্মঘটের কারণে এক দিকে সাধারণ যাত্রীরা দুর্ভোগে পড়েছেন। সাধারণ মানুষের পণ্যমূল্য ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে। সবজি থেকে শুরু করে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়ে গেছে। ৫০ টাকা কেজির বেগুন ৮০ টাকা, কপি ৬০ টাকা ছিল প্রতি কেজি। বর্তমানে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পেঁয়াজ ৫৪ থেকে ৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তিনি অবিলম্বে তেলের দাম কমানোর দাবি জানান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত