Ajker Patrika

সাহিত্যের পথে

সম্পাদকীয়
সাহিত্যের পথে

লেখালেখি ও রাজনীতি একসঙ্গে চলছিল। এ সময় একদিন তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় গেলেন সিউড়ীতে। কংগ্রেসের কাজে। সেখানে এক উকিলবাড়িতে পেলেন মলাট ছেঁড়া ‘কালি ও কলম’। আলোটা বাড়িয়ে অদ্ভুত নামের অদ্ভুত এক লেখা পড়ল তাঁর চোখে। লেখকের নাম ‘শ্রীপ্রেমেন্দ্র মিত্র’। লেখার নাম ‘পোনাঘাট পেরিয়ে’। অপূর্ব লাগল গল্পটা। এরপর আরেকটি গল্প শৈলজানন্দ মুখোপাধ্যায়ের লেখা।

এর আগে অবশ্য তারাশঙ্কর ‘স্রোতের কুটো’ নামে একটি গল্প লিখে ‘পূর্ণিমা’য় পাঠিয়েছেন। পূর্ণিমা কর্তৃপক্ষের তা ভালো লাগেনি। এরপর অনেক গল্পের প্লট মাথায় এল।

লিখলেন কিছু। পূর্ণিমায় না পাঠিয়ে এক বিখ্যাত পত্রিকায় পাঠালেন ‘রসকলি’ নামের গল্পটি। পোস্টকার্ড লিখে জানতে চাইলেন গল্পটি মনোনীত হয়েছে কি না। বারবার লেখেন আর বারবার উত্তর পান, ‘গল্পটি সম্পাদকের বিবেচনাধীন আছে’।

সাত-আট মাস পর তারাশঙ্কর গেলেন সেই অফিসে। গিয়ে বললেন, ‘আমার একটা গল্প…।’

‘রেখে যান।’ ‘না, অনেক আগে পাঠিয়েছি।’ ‘কী নাম আপনার? গল্পের নাম?’ দুটোই বলা হলে ভদ্রলোক বললেন, ‘ওটা এখনো দেখা হয়নি।’

রাগ হলো তারাশঙ্করের। গল্পটি উঠিয়ে নিয়ে এলেন। ঠিক করলেন, আর সাহিত্যের পথ মাড়াবেন না। মধ্য কলকাতা থেকে দক্ষিণ কলকাতা পর্যন্ত হেঁটে আসার পথে চোখ ভরে গেল জলে। রাজনীতিতেই থাকলেন, সাহিত্য বাদ। এলাকার উন্নয়নে ঢেলে দিলেন মন-প্রাণ।

একদিন পোস্ট অফিসে গিয়ে দেখেন ‘কল্লোল’ পত্রিকার ছাপ মারা এক খাম। একজন লেখকের গল্প ফেরত এসেছে। আবার মাথায় চাপল লেখালেখির ভূত। ‘রসকলি’র পাণ্ডুলিপি পাঠিয়ে দিলেন কল্লোলে। দিন চারেক পরেই কল্লোলের গোল ছাপ দেওয়া সাদা পোস্টকার্ডে এল পবিত্র গঙ্গোপাধ্যায়ের চিঠি: ‘আপনার গল্পটি মনোনীত হইয়াছে।

ফাল্গুন মাসেই ছাপা হইবে। আপনি এত দিন চুপ করিয়া ছিলেন কেন?’

‘রসকলি’ প্রশংসিত হলো। ‘হারানো সুর’ লিখে পাঠালেন। ‘কালি ও কলম’ পত্রিকায় গল্প দুটির প্রশংসাসূচক সমালোচনা ছাপা হলো। রাজনীতির পথ থেকে সাহিত্যের পথে চলে এলেন তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়।

সূত্র: তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়, আমার সাহিত্যজীবন, পৃষ্ঠা ২৩-৩৩

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

স্ত্রী রাজি নন, সাবেক সেনাপ্রধান হারুনের মরদেহের ময়নাতদন্ত হবে না: পুলিশ

বাকৃবির ৫৭ শিক্ষকসহ ১৫৪ জনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা

বাংলাদেশে ফেরত পাঠাতে পারে সরকার, ভয়ে কলকাতায় দিলীপ কুমারের আত্মহত্যা

শাহজালালের তৃতীয় টার্মিনালে অবতরণ করল প্রথম ফ্লাইট

সাবেক সেনাপ্রধান হারুন ছিলেন চট্টগ্রাম ক্লাবের গেস্ট হাউসে, দরজা ভেঙে বিছানায় মিলল তাঁর লাশ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত